ইরাক ও তুরস্কের সম্পর্কে সংকট আর জটিলতা ক্রমেই বাড়ছে যেসব কারণে
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i127252-ইরাক_ও_তুরস্কের_সম্পর্কে_সংকট_আর_জটিলতা_ক্রমেই_বাড়ছে_যেসব_কারণে
তুরস্ক ও ইরাকের মধ্যে নানা বিষয়ে মতবিরোধ ক্রমেই জটিল হচ্ছে। সম্প্রতি বাগদাদে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সফরের পরও এসব ক্ষেত্রে অচলাবস্থা নিরসনের কোনো ইঙ্গিত বা সম্ভাবনা দেখা যায়নি। 
(last modified 2025-11-28T10:09:50+00:00 )
আগস্ট ২৪, ২০২৩ ১৯:১৩ Asia/Dhaka

তুরস্ক ও ইরাকের মধ্যে নানা বিষয়ে মতবিরোধ ক্রমেই জটিল হচ্ছে। সম্প্রতি বাগদাদে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সফরের পরও এসব ক্ষেত্রে অচলাবস্থা নিরসনের কোনো ইঙ্গিত বা সম্ভাবনা দেখা যায়নি। 

উত্তর ইরাক তথা ইরাকি কুর্দিস্তান অঞ্চল থেকে পুনরায় তুরস্কে তেল-রপ্তানির বিষয়ে বাগদাদ ও আঙ্কারা কোনো সমঝোতায় উপনীত হতে ব্যর্থ হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সংকটের আরেকটি বিষয় হল দজলা নদীর ওপর তুরস্কের বাঁধ নির্মাণ যা ইরাকের কৃষিক্ষেত্রে খরাসহ পরিবেশগত নানা মারাত্মক সংকট সৃষ্টি করেছে।

বাগদাদে ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুয়াদ হুসাইন তার তুর্কি সমকক্ষের সঙ্গে সাক্ষাতে বলেছেন, খরার কারণে ইরাকের অর্থনীতি ও কৃষি খাত মারাত্মক হুমকির শিকার হয়েছে। ইরাক তাঁর ভূখণ্ডকে প্রতিবেশী কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহারের সুযোগ দেবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন। তুরস্কের বিচ্ছিন্নতাবাদী কুর্দি গেরিলারা ইরাকে আশ্রয় নিয়ে তুরস্কের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে আসছে-তাই তাদেরকে দমনের অজুহাতে তুরস্ক ইরাকের সীমান্ত সংলগ্ন এক বিশাল এলাকা দখল করে রেখেছে।

নদীর পানির ন্যায্য বণ্টন ও পরিবেশ সংকট নিয়ে তুর্কি ও ইরাকি পক্ষে আলোচনা হলেও ইরাক তার ন্যায্য হিস্যা তুরস্কের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে কিনা তা নিয়ে ঘোর সংশয় রয়েছে।

ইরাকে তুরস্কের একটি সামরিক ঘাঁটির দৃশ্য (ফাইল ফটো)

কুর্দিস্তানের তেল রপ্তানি নিয়ে যে বিরোধ সেক্ষেত্রেও তুর্কি দাবিদাওয়া বাগদাদ মেনে নিবে বলে মনে হয় না। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তুরস্ক বাগদাদের সঙ্গে কোনো চুক্তি না করেই উত্তর ইরাকের তেল নিয়েছে স্থানীয় কুর্দিস্তান স্বশাসিত সরকারের কাছ থেকে। ইরাক এ বিষয়ে আইসিসি বা আন্তর্জাতিক চেম্বার অব কমার্সের আদালতে মামলা দায়ের করায় বাগদাদকে ১৫০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছে ওই আদালত। তুরস্ক আইসিসির ওই রায়ের পর কুর্দিস্তান থেকে তেল আমদানি বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।

তুরস্ক এখন প্রতি এক ব্যারেল তেল রপ্তানি বাবদ ইরাকের কাছ থেকে ৭ ডলার দাবি করছে যাতে ইরাক ওই মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয়। এ ছাড়াও তুরস্ক দীর্ঘকাল ধরে ইরাকের সীমান্তবর্তী একটি অঞ্চল অবৈধভাবে দখল করে রাখায় এ নিয়েও বাগদাদ আঙ্কারার ওপর ক্ষুব্ধ। ইরাক বিষয়টিকে তার সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে মনে করছে। অন্যদিকে কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করেন সিরিয়া ও ইরাকের কোনো কোনো অঞ্চলের ওপর তুরস্কের দৃষ্টিভঙ্গী আধিপত্যকামী বা মোড়লীপনাসুলভ এবং এসব ভূখণ্ডের ওপর তুরস্কের লোলুপ দৃষ্টি থাকতে পারে। 

আন্তর্জাতিক নদীগুলোর ওপর বাঁধ নির্মাণের তুর্কি নীতির কারণে ইরাক ছাড়াও সিরিয়া ও ইরানও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং তুরস্ক নিজেও এতে পরিবেশগত বিপর্যয়ের শিকার হতে বাধ্য। তুরস্ক তার প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছ থেকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ছাড় আদায়ের জন্য পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে এ বিষয়টিও একটি আন্তর্জাতিক সংকটের রূপ নিতে পারে। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/২৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।