হামাসের মানবিকতার দৃষ্টান্ত; ইহুদি নারীর সাক্ষাৎকারে ইসরাইলি অপপ্রচারের জবাব
(last modified Fri, 13 Oct 2023 12:40:55 GMT )
অক্টোবর ১৩, ২০২৩ ১৮:৪০ Asia/Dhaka

নিজেকে মজলুম হিসেবে জাহির করার ক্ষেত্রে বিশ্বে ইহুদিবাদীদের জুড়ি নেই। আর গণমাধ্যম জগতে ইহুদিবাদীদের দীর্ঘ দিনের একাধিপত্যের কারণে এই কাজটি তারা খুব সহজেই করতে পারছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় শিশু-ঘাতক ও জালিম এখন হামাসের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়ে নিজেদেরকে মজলুম হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করছে। এর মাধ্যমে গাজার নিষ্পাপ শিশু ও নারীদের নির্বিচারে হত্যাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

বানোয়াট কিছু ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে ফিলিস্তিনিদেরকে নৃশংস ও বর্বর প্রমাণে ওঠেপড়ে লেগেছে পশ্চিমা গণমাধ্যম। যদিও পশ্চিমা গণমাধ্যমেরই কেউ কেউ এসব ছবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। হামাসের যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অংশ হিসেবে মাথা বিচ্ছিন্ন শিশুদের যে ছবি প্রকাশ করা হয়েছে তা কোনোভাবেই যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে স্বীকার করেছে মার্কিন টিভি চ্যানেল এনবিসি। এছাড়া নিহত ফিলিস্তিনি শিশুদের রক্তাক্ত ও বিকৃত নানা ছবি ইহুদি শিশুদের বলে চালিয়ে দিচ্ছে দখলদার ইসরাইলি সরকার। ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য টাইমসও আহত ইসরাইলি শিশুদের খবরে রক্তাক্ত ফিলিস্তিনি শিশুদের ছবি প্রকাশ করেছে।

ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস সব সময় যুদ্ধের নীতি মেনে জালিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এসেছে। অতীতের মতো এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এর প্রমাণ পাওয়া যায় ইসরাইলি টিভি চ্যানেল টুয়েলভ-এ সম্প্রচারিত এক ইহুদি মহিলার সাক্ষাতকার থেকে।

ইসরাইলের দক্ষিণ-পশ্চিমের অবৈধ ইহুদি উপশহরের বাসিন্দা রুতিম ইসরাইলি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, "হঠাৎ শুনতে পাই দরজারের ওপাশে কয়েক জন আরবিতে কথা বলছে। আমার সঙ্গে আমার দুই সন্তান ছিল। আর ওরা ছিল ছয় জন। তারা ঘরে প্রবেশ করার পরপরই আমি ইংরেজিতে তাদেরকে বলি আমার সঙ্গে দুই শিশু রয়েছে। তারা এক মুহূর্তের জন্য আমার দিকে তাকিয়ে বলল- তুমি চিন্তা করো না। আমরা মুসলমান। আমরা তোমাদের কোনো ক্ষতি করব না। আমি আমার সন্তানদের পাশে বসলাম। এরপর ডাইনিং রুম থেকে একটা চেয়ার এনে একজন যোদ্ধা আমাদের পাশে বসল। তারা দুই ঘণ্টা আমাদের বাসায় ছিল। এ সময়টায় একজন আমাদের পাশে বসেছিল। বাকিরা পুরো সময়টায় এদিক ওদিক ঘুরছিল। এদের একজন টেবিলে কলা দেখে বলল- আমি কি খেতে পারি? আমি বলল-অবশ্যই। আমার ছেলেটা খুবই টেনশন করছিল। কিন্তু মেয়েটার ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি। সে তার ট্যাবলেট নিয়ে খেলছিল। বাচ্চারা অস্ত্র দেখে ভয় পায়নি। এর এক পর্যায়ে তারা দরজা বন্ধ করে সবাই চলে যায়।"

হামাস যোদ্ধাদের দেয়াল লেখনী

 

ইসরাইলি টিভি চ্যানেল 'টুয়েলভ' এই সাক্ষাতকারের পর একটি দেয়াল লেখনী প্রদর্শন করে যাতে বলা হয়েছে- '(হামাসের) কাস্সাম ব্রিগেড শিশুদের হত্যা করে না'। যেসব বাড়িতে হামাস যোদ্ধারা প্রবেশ করেছিল সেগুলোর কোনো কোনোটির দেয়ালে এই লেখাটি পাওয়া গেছে। অবশ্য চাপের মুখে ইসরাইলি টিভি চ্যানেলটি এই গুরুত্বপূর্ণ খবর ও সাক্ষাৎকারটি সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে। তবে এরিমধ্যে গোটা বিশ্বের বহু মানুষ ও গণমাধ্যম এই ভিডিও ও খবর রেকর্ড করে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। অনেকেই সাক্ষাৎকারটি ডাউনলোড করে রেখেছেন।

 
এই ভিডিও ছাড়াও আরেকটি ভিডিও গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছে। ঐ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হামাস যোদ্ধারা এক ইসরাইলি নারী ও তার দুই শিশু সন্তানকে ইসরাইলি সীমান্তে মুক্ত করে দিচ্ছে যাতে তারা তাদের উপশহরে চলে যেতে পারে। হামাসের আল-আকসা তুফান অভিযানের সময় এ ধরণের বহু মানবিক ঘটনাই ঘটেছে, কিন্তু এমন একটি মাত্র ঘটনার ভিডিও গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। এর মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হয়, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা সর্বোত্তম মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অন্যদিকে, গাজায় নারী ও শিশুদের হত্যা করে ইসরাইল অকল্পনীয় পাশবিকতা ও নির্মমতার ইতিহাস রচনা করে চলেছে।#

পার্সটুডে/এসএ/১৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।