গাজায় অসভ্যদের বর্বরতা থামছে না; বিনা চিকিৎসায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনির মৃত্যু
অবরুদ্ধ গাজায় অসভ্য ইসরাইলের পাশবিকতার ৮২তম দিন আজ। উত্তর গাজার জাবালিয়া, দক্ষিণ গাজার খান ইউনুস এবং মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে আজ সকালেও ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে মানবতার শত্রুরা। ইসরাইলের সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় তারা দক্ষিণ গাজার ১০০ পয়েন্টে বোমা ফেলেছে।
গাজায় এ পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন, আহতের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি। হতাহতদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী। আহত মানুষগুলোর চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ ও খাবার নেই। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, গাজায় স্বাস্থ্য-চিকিৎসা খাতে চরম সংকট চলছে; এর চেয়ে খারাপ অবস্থা আর হতে পারে না। ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উপযুক্ত ওষুধ ও চিকিৎসার অভাবে ৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শাহাদাৎবরণ করেছেন।
এর আগে গাজায় যে পরিমাণ ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রবেশ করেছে তা দিয়ে কেবল দুই শতাংশ রোগীর প্রয়োজন মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও একই ধরণের তথ্য দিচ্ছে। নানা কৌশলে গাজাকে বিরান ভূমিতে পরিণত করার চেষ্টা চলছে। বোমা ও কামানের গোলা দিয়ে আবাসিক ভবনগুলোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করার পর লাখ লাখ মানুষ এখন বাস্তুচ্যুত। ঘরহারা মানুষগুলো প্রতিনিয়ত খাবার ও ওষুধের সন্ধানে ছুটছেন, কিন্তু কোথাও খাবার নেই। কোনো মতে খুব সামান্য খেয়ে বেঁচে আছেন তারা।
ঘরহারা মানুষগুলো যেখানেই আশ্রয় নিচ্ছেন সেখানেই বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। ইসরাইল মাঝে মধ্যে কিছু এলাকাকে নিরাপদ বলে ঘোষণা দিয়ে লোকজনকে সেখানে চলে যেতে বলছে। কিন্তু সেখানে জড়ো হওয়ার পর বোমা মেরে তাদেরকে গণভাবে হত্যা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিশ্বের বুকে এমন নির্মমতার নজির নেই। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের সরাসরি সাহায্য ও সমর্থনে ফিলিস্তিনিদের ওপর এই বর্বরতা চলছে।
সভ্য হিসেবে দাবিদার দেশগুলো এই বর্বরতা থামানোর পরিবর্তে অর্থ ও অস্ত্র দিচ্ছে মানুষ হত্যার জন্য। এ কারণে গাজায় গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের দায় শুধু দখলদার ইসরাইলের ওপর বর্তায় না, এ জন্য আমেরিকা ও তার মিত্র দেশগুলোও দায়ী। ভবিষ্যতে শিশু হত্যাকারী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতো নেতাদেরও বিচার করতে হবে।#
পার্সটুডে/এসএ/২৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।