ইসরাইলের কয়েকটি কথিত 'মহা-সাফল্য' বা 'বীরত্বের' আসল রহস্য!
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i134510-ইসরাইলের_কয়েকটি_কথিত_'মহা_সাফল্য'_বা_'বীরত্বের'_আসল_রহস্য!
ইহুদিবাদী ইসরাইলের কয়েকটি সাম্প্রতিক কথিত মহা-সাফল্য ও বীরত্বের আসল রূপ বা গোমর ফাঁস হয়েছে।
(last modified 2025-10-29T07:49:47+00:00 )
ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪ ১৩:৩০ Asia/Dhaka

ইহুদিবাদী ইসরাইলের কয়েকটি সাম্প্রতিক কথিত মহা-সাফল্য ও বীরত্বের আসল রূপ বা গোমর ফাঁস হয়েছে।

এসব কথিত বীরত্ব ও মহা-সাফল্যের একটি হল সম্প্রতি গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফাহ এলাকায় এক 'মহা-জটিল অভিযান' চালিয়ে হামাসের কাছ থেকে ফারনান্দো মরম্যান ও লুইস হের নামের দুই ইসরাইলি বন্দিকে মুক্ত করার দাবি! ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রীসভা সম্প্রতি এই দাবি প্রচার করেছেন। 

কিন্তু ইসরাইলের এই দাবি সম্পর্কে ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের অন্যতম শীর্ষ নেতা ওসামা হামদান বলেছেন, ময়দান থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই দুই ইসরাইলি নাগরিক হামাসের কাস্‌সাম ব্রিগেডের সেনাদের হাতে বন্দি ছিল না বরং গত ৭ অক্টোবরের আল-আকসা তুফান নামক ফিলিস্তিনি সামরিক অভিযানের সময় তারা এক বেসামরিক ফিলিস্তিনি পরিবারের হাতে বন্দি হয়েছিল এবং ওই পরিবারই এতদিন তাদেরকে একটি ভবনে ধরে রেখেছিল। সম্প্রতি ইসরাইলি সেনারা তাদের বন্দি থাকার খবর পেয়ে ওই ভবনে প্রবেশ করে এবং কোনো সংঘর্ষ ছাড়াই ওই দুই বন্দিকে মুক্ত করে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে ইসরাইলের দাবি ও আনন্দ প্রকাশের উদ্দেশ্য হল ১২৮ দিন যুদ্ধ করার পর ইসরাইলি সেনারা কিছুটা হলেও সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে বলে দেখানো ও পরাজিত ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনীর মনোবল চাঙ্গা করা। 

ইসরাইলের আরেক মহা-সাফল্য হল, ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র গতকাল বুধবার এক ছবি প্রচার করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে যে হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া আসসানোয়ার গাজার একটি সুড়ঙ্গে অবস্থান করছেন।  ইসরাইল এই ছবি প্রচার করে দেখাতে চেয়েছে যে এটাও তাদের সামরিক অভিযানের এক বিশাল সাফল্য! কিন্তু ইসরাইলি সাংবাদিকরাই তিন মাস আগের ওই ছবি প্রচারের এই উদ্যোগকে একটি কল্পিত সাফল্য বলে উপহাস করছেন। তারা বলেছেন, ইসরাইলের উচিত একটি সত্যিকারের সামরিক সাফল্য অর্জন করা।

ইসরাইলের হিব্রুভাষী দৈনিক হারের্তজ গতকাল জানিয়েছে, ইসরাইলী সশস্ত্র বাহিনীর জাফয়াতি ব্রিগেডের একদল সেনা গাজায় ফিরে গিয়ে আবারও যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং তারা এই ব্রিগেডের সেনা-কমান্ডারদের বলেছেন তারা যেন 'আমাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা উপলব্ধি করেন'। ইসরাইলের সশস্ত্র বাহিনী এই সেনাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের ও  সামরিক আদালতে তাদের বিচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

এদিকে হামাসকে ধ্বংস করার দৃঢ় সংকল্পের ঘোষণা দিয়ে শুরু করা  ইসরাইলি সামরিক অভিযানের ১৩০ তম দিনেও হামাসের সামরিক শাখা কাস্‌সাম ব্রিগেড ব্ল্যাংক পয়েন্ট বা শূন্য দূরত্ব থেকে দখলদার ইসরাইলি সেনা খতম অব্যাহত রাখার খবর দিয়েছে।

সম্প্রতি নিহত দুই ইসরাইলি সেনা 

এক নতুন ভিডিও-চিত্র প্রকাশ করে এই ব্রিগেড বলেছে, খান ইউনিউসে এক হামলায় ইসরাইলের ৬৩০ নম্বর রিজার্ভ ব্রিগেডের কমান্ডার ও আরও কয়েকজন সেনা জাহান্নামবাসী হয়েছেন। এই ভিডিওতে কাস্‌সাম ব্রিগেডের একজন সেনা বলছেন, ইসরাইল দাবি করছে যে হামাসের সেনারা বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের মধ্যেই অবস্থান করছে। কিন্তু আমরা এমন এক স্থানে আছি যে এলাকা থেকে সব বেসামরিক মানুষকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এইসব হীন ও নোংরা শত্রু যুদ্ধের ময়দানে আমাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম নয়। যুদ্ধের ময়দান তারাই ঠিক করে দিয়েছে ও বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের চলে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছে এবং বেসামরিক জনগণ চলে যাওয়ার পর আমরাও সেখানে হাজির হয়েছি। অথচ অপরাধী শত্রুরা, এই কাপুরুষরা আমাদের মোকাবেলা করতে অক্ষম হয়ে কেবল আমাদের নারী, বয়োবৃদ্ধ ও শিশুদের টার্গেট করে শক্তি দেখাচ্ছে। আমরা তাদের বলছি যে আমরা তো যুদ্ধ ক্ষেত্রে উপস্থিতি রয়েছি, সাহস থাকলে আমাদের মুখোমুখি হও।  

ইসরাইলি হানাদার বাহিনী হামাসের সেনা-কমান্ডারদের হত্যার মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে সাধারণ জনগণের ঘরবাড়ি বোমা মেরে ধ্বংস করছে বলে হামাসের ওই সেনা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, সাধারণ বেসামরিক জনগণ তো তোমাদের নির্দেশে এ অঞ্চল ছেড়ে চলে গেছে এবং আমরা এ অঞ্চলে এখন তোমাদের অপেক্ষায় রয়েছি, আসো পারলে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ কর!

 তিনি ইসরাইলের পরাজয় অনিবার্য ও হামাসকে ধ্বংস করার চিন্তাকে অলীক কল্পনা বলে উল্লেখ করে বলেন, হামাস ফিলিস্তিনিদেরকে স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধ করছে বলে ফিলিস্তিনিরাও তাদের সমর্থন করছে এবং ফিলিস্তিনিদের দুঃখ দুর্দশার জন্য যে ইসরাইলই দায়ী সেটা তারা বোঝে। এই ফিলিস্তিনিরা আমাদেরই ভাই-বোন, পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজন, তাদের হৃদয় রয়েছে আমাদের সাথেই।   #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।