দশ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ
ফিলিস্তিনিদের গ্যাস সম্পদ দখলের ইসরাইলি ষড়যন্ত্র
গাজায় ১৫৮ ফিলিস্তিনি সাংবাদিকের শাহাদাত, কাস্সাম ব্রিগেডের হামলায় ১০ ইসরাইলি সেনার নরক-প্রাপ্তি ও গজার শহীদদের সংখ্যা ৩৮ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনের কয়েকটি সর্ব-সাম্প্রতিক খবর।
ফিলিস্তিনে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যা যা ঘটেছে সে সম্পর্কে পার্সটুডের রিপোর্ট:
গাজায় শহীদের সংখ্যা ৩৮ হাজারেরও বেশি
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী গত ৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত তথা ২৭৪ দিনের ইসরাইলি আগ্রাসনে শহীদ হয়েছেন গাজার ৩৮ হাজার ৯৮ জন এবং আহত হয়েছে ৮৭ হাজার ৭০৫ জন
দশ হাজারেরও বেশি নিখোঁজ
এ ছাড়াও গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সংখ্যাও দশ হাজারেরও বেশি। ইউরো-মেডিটারেনিয়ান হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, ১০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে ধ্বংস হওয়া বাড়ি এবং ভবনগুলির ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েছে। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে: লাশগুলো তোলার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। দখলদার ইহুদিবাদীরা গাজায় ভারী সাজ-সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। অনেক ফিলিস্তিনি এমনসব কবরে দাফন হয়ে আছেন যেসব কবরের কোনো চিহ্ন নেই।
এদিকে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে শহীদ সাংবাদিকদের সংখ্যা বেড়ে ১৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে। গাজার আননুসাইরাত এলাকায় একটি বাড়িতে ইসরাইলি বোমা বর্ষণে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক আমজাদ যাজজুউহ ও তার স্ত্রী ওয়াফা আবু দ্বাবআনসহ দশ ফিলিস্তিনি শহীদ হন।
১০ ইসরাইলি সেনার নরক-প্রাপ্তি
ওদিকে হামাসের ইজ্জাদ্দিন কাস্সাম ব্রিগেডের এক বিচিত্রময় হামলায় দশ ইহুদিবাদী আগ্রাসী সেনা নরকে যাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছে। সুজাইয়াহ এলাকায় এই অভিযানে ইসরাইলের একটি মিরকাভা ট্যাংকও ধ্বংস হয়েছে।
কিরিয়াত শামুনায় ইসরাইলি কমান্ড সেন্টারে হিজবুল্লাহর গোলা বর্ষণ
গাজায় ও লেবাননে ইসরাইলি হামলার জবাবে লেবাননের জনপ্রিয় ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ কিরিয়াত শামুনাহ'র ইসরাইলি কমান্ড-সেন্টার লক্ষ্য বিপুল সংখ্যক কাতিউষা রকেট নিক্ষেপ করেছে। শালুমি এলাকায় ইসরাইলি সেনাদের একটি সামরিক ভবনও ইসরাইলি রকেট হামলার শিকার হয়েছে।
যুদ্ধ-বিরতি ও বন্দি বিনিময়ের ব্যাপারে হামাসের নতুন প্রস্তাব
হামাস যুদ্ধ-বিরতি ও বন্দি-বিনিময় সংক্রান্ত নতুন প্রস্তাবে প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতির পর ১৬ দিন ধরে গাজায় মানবিক ত্রাণ-সামগ্রী সরবরাহ এবং ইসরাইলি সেনাদের পিছু হটার বিষয়কে সুনিশ্চিত করতে হবে বলে মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছে। এর আগে বাইডেনের প্রস্তাবের জবাবে হামাস বলেছিল যে শুরুতেই ইসরাইলকে নিশ্চয়তা দিতে হবে যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরাইল আর যুদ্ধ শুরু করবে না। এ ব্যাপারে হামাস অটল ছিল। কিন্তু এখন হামাস বলছে ছয় সপ্তাহের প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির পর দ্বিতীয় ধাপে আলোচনার সময় ইসরাইল আবার যুদ্ধ করবে না- এমন একটি নিশ্চয়তা দিতে হবে।
গাজায় যে কোনো বিদেশী সেনা প্রবেশের বিরুদ্ধে হামাসের কঠোর অবস্থান
হামাস এক বিবৃতিতে গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী যে কোনো সম্ভাব্য পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনি জনগণের ইচ্ছার বিরোধী যে কোনো পদক্ষেপ মেনে নেয়া হবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছে। গাজার পরিচালনার বিষয়ে আরোপিত কোনো নেতৃত্ব বা অভিভাবকত্ব মেনে নেবে না ফিলিস্তিনি জনগণ। কারণ এ ধরনের কোনো কিছু আরোপ করা হবে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতা ও নিজ ভাগ্য নির্ধারণের অধিকারের লঙ্ঘন।
ফিলিস্তিনিদের গ্যাস সম্পদ দখলের ইসরাইলি ষড়যন্ত্র
ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজার পানি ও জ্বালানী সম্পদ দখলের জন্য সেখানে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে বলে একটি মার্কিন দৈনিকে খবর এসেছে। গাজার পানি ও জ্বালানী সম্পদ দখলের জন্যই ইসরাইল সেখানকার ভবনগুলো ও অবকাঠামোগুলো ধ্বংস করছে এবং চালিয়ে যাচ্ছে গণহত্যা যাতে ফিলিস্তিনিরা গাজা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয় । আর এভাবে ইসরাইলিরা পুরো গাজার ওপর দখলদারিত্ব কায়েম করে সেখানকার সম্পদ লুট করতে চায়।
এদিকে ইসরাইলের একজন সাবেক সংসদ সদস্য বলেছেন গাজার যুদ্ধ ইসরাইলের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। গাজায় যুদ্ধ বিরতি প্রতিষ্ঠার সময় ঘনিয়ে এসেছে বলে ওই সাংসদ দাবি করেছেন। ইসরাইল গাজায় তেমন কোনো ঘোষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। যুদ্ধ-বন্দি বিনিময়ের বিষয়টি নানা ছাড় আদায়ের মাধ্যম ও এমনকি তা যুদ্ধ অবসানেরও মাধ্যম বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরাইল নিজেই অন্যদের চেয়ে বেশি মাত্রায় এটা বুঝতে পারছে যে সময় ইসরাইলের অনুকুলে যাচ্ছে না। #
পার্সটুডে/০৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।