ইসরাইলি নীতি-নৈতিকতা যেভাবে ধর্ষক তৈরি করে
(last modified Wed, 21 Aug 2024 13:24:42 GMT )
আগস্ট ২১, ২০২৪ ১৯:২৪ Asia/Dhaka
  • ইসরাইলি নীতি-নৈতিকতা যেভাবে ধর্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়
    ইসরাইলি নীতি-নৈতিকতা যেভাবে ধর্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়

পার্সটুডে-ইসরাইলিরা বিশ্বাস করে যে 'স্থায়ী যুদ্ধে' বেঁচে থাকার জন্য যে কোনও পদক্ষেপ এমনকি অমানবিক হলেও ন্যায়সঙ্গত।

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের ভয়ানক ঘটনার নৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক দিক বিশ্লেষণ করলে ইহুদিবাদীদের আদর্শিক ও নৈতিক শিক্ষার দিকটি স্পষ্ট হয়ে যায়। পার্সটুডে'র আজকের এই নিবন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ও নৈতিক ওই বিষয়টির ওপর সংক্ষিপ্তভাবে দৃষ্টি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে:

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত সেদি তিমান ডিটেনশন সেন্টারে ইসরাইলি রক্ষীদের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর গণ ধর্ষণের ছবি প্রকাশিত হয়েছে। ওই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক হওয়া সত্ত্বেও ইসরাইলি সমাজের একটি অংশ এই অমানবিক আচরণকে সুরক্ষা দিয়েছে। প্রকাশিত ভিডিওগুলোতে ফিলিস্তিনি বন্দীদের ধর্ষণে নিয়োজিত দশজন রিজার্ভ সৈন্যকে গ্রেপ্তারের পর, এই লোকদের সমর্থনে কিছু সরকারী মন্ত্রীসহ অতি-ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো থেকে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।

ইসরাইলের নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গাভির এ প্রসঙ্গে বলেছেন: নিরাপত্তার স্বার্থে গণধর্ষণ অনুমোদিত।

একইভাবে, অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ নিজেও ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ না করে ওই ভিডিও প্রকাশে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি বরং যারা এই ভিডিওগুলো প্রকাশ করেছে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এসব ঘটনা ইসরাইলিদের অভ্যন্তরীণ নীতি-নৈতিকতার চরম দুরবস্থাকেই তুলে ধরে। গত কয়েক দশকে, ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনিদেরকে পরিকল্পিতভাবে মানবিক মূল্যবোধহীন বলে দেখানোর চেষ্টা করেছে এবং নিজেদেরকে ইসরাইলিদের চেয়ে নিম্ন নৈতিক মানসম্পন্ন মানুষ হিসেবে চিত্রিত করেছে।

অন্য কথায়, ঔপনিবেশবাদ বিরোধী দার্শনিক ফ্রান্সিস ফ্যানন এই ঔপনিবেশিক প্রক্রিয়াকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন ফিলিস্তিনিরা "মানব প্রাণী" হিসাবে পরিচিত।

এইভাবে ফিলিস্তিনিদের নৈতিকভাবে দুর্বল এবং মূল্যহীন হিসাবে দেখা হয়। তাই তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও আগ্রাসনকে কেবল অনৈতিক হিসেবে যে বিবেচনা করা হয় না তাই নয় বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্যাতন করাকে একটি ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হয়। এ জন্যই ইসরাইলি যেসব সেনা ওই আগ্রাসন চালিয়েছিল তারা তাদের নৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং প্রতিপক্ষকে অমানুষ মনে করার কারণে নিজেদেরকে দোষী বলে অনুভব করে না। এমনকি তারা ইসরাইলি সমাজের বৃহৎ অংশের সমর্থনও পেয়ে থাকে।

ইসরাইলিরা বিশ্বাস করে যে এই "স্থায়ী যুদ্ধে" বেঁচে থাকার জন্য যে-কোনো পদক্ষেপই ন্যায়সঙ্গত।

তা ছাড়া পশ্চিমা বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী মধ্যপ্রাচ্যের বর্বরতার বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত। আর মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা সভ্যতার প্রতিনিধি হলো ইসরাইল। সুতরাং ইসরাইলকেই ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। এ কারণে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি সহিংসতাকে পশ্চিমারা ন্যায্য বলে মনে করে।#

পার্সটুডে/এনএম/২১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে  লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ