১২ দিনের যুদ্ধের পর ইরান সম্পর্কে সৌদি আরবের ধারণা পাল্টে গেছে
-
• সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচির সাথে সাক্ষাৎ করেছেন
পার্সটুডে - অনলাইন প্রকাশনা "ক্র্যাডেল" লিখেছে: সৌদি আরব এই অঞ্চলে ইরানের শক্তিকে একটি অনস্বীকার্য বাস্তবতা বলে মনে করে এবং তাদের দৃষ্টিতে তেহরানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা জরুরি।
অনলাইন প্রকাশনা "ক্র্যাডেল" এক প্রতিবেদনে বলেছে: ১২ দিনের যুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় ইরান পাল্টা শক্ত জবাব দেয়ায় ইসরাইলের দুর্বলতা এবং মার্কিন নিরাপত্তা ছাতার পতন এখন সবার সামনে স্পষ্ট হয়ে গেছে। ইসরাইল-মার্কিন দুর্বলতা সৌদি আরবকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্পর্কে তার পূর্ববর্তী ধারণা ত্যাগ করতে বাধ্য করেছে এবং এখন ইরানকে এই অঞ্চলের একটি অনস্বীকার্য শক্তি হিসেবে বিবেচনা করে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছে।
ইরানি স্টুডেন্টস নিউজ এজেন্সি (আইএসএনএ) এর উদ্ধৃতি দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, ইরান এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধ, আঞ্চলিক শক্তির হিসাব নিকাশ বিশেষ করে পারস্য উপসাগর এলাকায় এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত। ইরানের প্রত্যক্ষ এবং পরিকল্পিত সামরিক হামলা তেল আবিবের কৌশলগত দুর্বলতা প্রকাশ করে দিয়েছে এবং পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর রাজধানীগুলোকে বিশেষ করে রিয়াদকে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্পর্কে তাদের দীর্ঘস্থায়ী ধারণা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করেছে।
গত ১৩ জুন, শুক্রবার সকালে ইসরাইল ইরানের উপর হঠাৎ হামলা চালায়। ১২ দিনের আগ্রাসনে ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক কেন্দ্র, চিকিৎসা কেন্দ্র, এভিন কারাগার এবং আবাসিক এলাকাসহ বেসামরিক স্থানগুলোর ওপর হামলা চালায় যার ফলে বেশ কয়েকজন সিনিয়র সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং বেসামরিক নাগরিক শহীদ হয়েছে।
২২শে জুন, রবিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে মিলে ফোর্দো, ইসফাহান এবং নাতাঞ্জে তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনার উপর বাঙ্কার-বাস্টার বোমা হামলা চালায়। ইরানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের উপর এই আক্রমণ এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন তেহরান এবং ওয়াশিংটন পরোক্ষভাবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করণ এবং ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট দৃশ্যত কূটনীতিকে একটি সুযোগ হিসাবে উল্লেখ করলেও তিনি ইসরাইলের ইরান আক্রমণের পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত ছিলেন এবং এটিকে পূর্ণ সমর্থন করেছিলেন।
তবে, ইরান "ট্রু প্রমিস থ্রি" এবং "বেশরাতে ফতেহ" অভিযানের মাধ্যমে এসব হামলার জবাব দেয়। অবশেষে, ২৪শে জুন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়ে ইরানের উপর ইসরাইলি হামলা বন্ধ করে দেয়।
অনলাইন প্রকাশনা ক্রেডল এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে লিখেছে: আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি এবং উন্নত ড্রোন ব্যবহার করে, তেহরান সাবধানতার সাথে এই সংঘর্ষ পরিচালনা করেছে এবং একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে প্রবেশ এড়িয়ে গেছে, তবে একই সাথে, এটি শত্রুদের কাছে স্পষ্ট বার্তা পাঠিয়েছে যে প্রয়োজনে সংঘাতকে প্রতিরোধ এবং আরও তীব্র করার ক্ষমতা রয়েছে ইরানের।
প্রকাশনাটির মতে, পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলির প্রতি বার্তা ছিল যে "ইরান বিচ্ছিন্ন বা দুর্বল নয়; বরং, তারা বিস্তৃত যুদ্ধে জড়িত না হয়ে বিভিন্ন ফ্রন্টে ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।"#
পার্সটুডে/এমআরএইচ/১২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।