আমেরিকার মাথাব্যথার বড় কারণ ইরাকের হাশদ্‌ আশ-শাবি
(last modified Tue, 24 Oct 2017 09:44:11 GMT )
অক্টোবর ২৪, ২০১৭ ১৫:৪৪ Asia/Dhaka

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-এবাদি রাজধানী বাগদাদে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের সঙ্গে সাক্ষাতে দেশটির প্রতিরোধ যোদ্ধা বা স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী হাশ্‌দ আশ-শাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। হাশ্‌দ আশ-শাবির বিরুদ্ধে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হায়দার আল-এবাদি বলেছেন, স্বেচ্ছাসেবী ওই বাহিনী ইরাকসহ এ অঞ্চলের জনগণের একমাত্র ভরসা।

এর আগে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন রিয়াদে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়েরের সঙ্গে সাক্ষাতে তার ভাষায় বলেছেন, "যেসব শিয়া যোদ্ধা ইরাকে এতদিন দায়েশের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল এখন তাদের কাজ শেষ। এখন তাদেরকে নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে।" 

ইরাকের বিভিন্ন দল, সংগঠন ও সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় হাশ্‌দ আশ-শাবি গড়ে উঠেছে। সেই বাহিনী সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তীর্যক মন্তব্য করেছেন। দায়েশ সন্ত্রাসীদের হাতে ইরাকের মসুল শহর পতনের পর দেশটির শীর্ষ শিয়া ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী আল-সিস্তানির নির্দেশে ২০১৪ সালের ১০ জুন ওই বাহিনী গড়ে তোলা হয়। এছাড়া, গত বছর ২৬ নভেম্বর ইরাকি সংসদ হাশদ্‌ আশ-শাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রস্তাব পাশ করে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরাকে তৎপর দায়েশ সন্ত্রাসীদের নির্মূলে হাশদ্‌ আশ-শাবির অসামান্য ভূমিকা রয়েছে। আর এটাই মার্কিন কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তার বড় কারণ। মার্কিন কর্মকর্তারা ইরাকের স্বেচ্ছাসেবী এই বাহিনীকে ওই দেশে আধিপত্য বিস্তারের পথে প্রধান বাধা বলে মনে করছেন। এ কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তারা হাশদ্‌ আশ-শাবির বিরুদ্ধে নানা ভিত্তিহীন অভিযোগ আরোপ ও ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। দায়েশ সন্ত্রাসীরা আমেরিকা ও সৌদি আরবসহ তাদের মিত্রদের দেয়া অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে ২০১৪ সালে ইরাকে হামলা চালায়। তারা ইরাকের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিশাল এলাকা দখল করে সেখানে ভয়াবহ গণহত্যা চালায়।

কিন্তু স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী হাশদ্‌ আশ-শাবি দায়েশের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং এখন সন্ত্রাসীরা প্রায় নির্মূল হওয়ার পথে। হাশদ্‌ আশ-শাবি এমন সময় এ সফলতা দেখিয়েছে যখন মার্কিন নেতৃত্বে সন্ত্রাসবিরোধী কথিত জোট দায়েশ নির্মূলে কোনো ভূমিকাই রাখতে পারে নি। বরং মার্কিন নেতৃত্বে ওই জোট গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে দায়েশকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। এ কারণে ইরাকের জনগণ মার্কিন নেতৃত্বে দায়েশবিরোধী কথিত জোটের তৎপরতা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। এ অবস্থায় মার্কিন কর্মকর্তারা নানা ষড়যন্ত্র ও ভিত্তিহীন অভিযোগের মাধ্যমে নিজেদের অপকর্ম ঢাকার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে তাদের মিথ্যাচারিতা ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাদের জোটের ব্যর্থতা ধামাচাপা দেয়া এবং ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দাবিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তারা এ ক্ষেত্রেও ব্যর্থ হয়ে এখন হাশদ্‌ আশ-শাবির বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন। তবে আমেরিকার এ তৎপরতা ইরাকের ভেতরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। ইরাকের সরকার ও জনগণ হাশদ্‌ আশ-শাবির প্রতি সমর্থন দিয়ে এই বাহিনীর প্রতি তাদের আস্থার বিষয়টি সবাইকে জানান দিয়েছে।#  

পার্সটুডে/মো. রেজওয়ান হোসেন/২৪

 

ট্যাগ