সৌদি শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের অপসারণ: ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নাকি সামরিক ব্যর্থতার ফল?
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i53681-সৌদি_শীর্ষ_সেনা_কর্মকর্তাদের_অপসারণ_ক্ষমতার_দ্বন্দ্ব_নাকি_সামরিক_ব্যর্থতার_ফল
সৌদি রাজা সালমান বিন আব্দুল আজিজ সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সব পদে রদবদল ঘটিয়েছেন। তিনি সেনাবাহিনী চিফ অব স্টাফ আব্দুর রহমান বিন সালেহ আল-বুনিয়ান, বিমান বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বিন আয়াজ সাহিম এবং স্থল বাহিনীর প্রধান ফাহাদ বিন তুর্কি বিন আব্দুল আজিজকে তাদের পদ থেকে বরখাস্ত করেছেন।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮ ১৮:৪১ Asia/Dhaka

সৌদি রাজা সালমান বিন আব্দুল আজিজ সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সব পদে রদবদল ঘটিয়েছেন। তিনি সেনাবাহিনী চিফ অব স্টাফ আব্দুর রহমান বিন সালেহ আল-বুনিয়ান, বিমান বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বিন আয়াজ সাহিম এবং স্থল বাহিনীর প্রধান ফাহাদ বিন তুর্কি বিন আব্দুল আজিজকে তাদের পদ থেকে বরখাস্ত করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদি সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের অপসারণের ঘটনা কয়েকটি দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়। সৌদি সরকার সম্প্রতি রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বহু কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে যাকে সৌদি রাজার পক্ষ থেকে নীরব অভ্যুত্থান হিসেবে দেখা হচ্ছে। সৌদি আরবে ক্ষমতার লড়াইকে কেন্দ্র করে সামরিক অভ্যুত্থানসহ যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে সৌদি রাজা সালমান বিন আব্দুল আজিজ ও তার পরিবার চিন্তিত। এ কারণে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

পাশ্চাত্যের বিভিন্ন গণমাধ্যম সৌদি আরবের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীকে ক্ষমতার লড়াই বলে মন্তব্য করেছে। কিছুদিন আগে বিবিসি টিভি চ্যানেল "সৌদি রাজ পরিবারে ক্ষমতার যুদ্ধ" শীর্ষক এক প্রতিবেদনে ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দ্ব ও দুর্নীতির নানা দিক তুলে ধরেছে। সৌদি সরকারের বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী সাআদ আল ফাকিয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "রাজ পরিবারের সদস্যরা অত্যন্ত দাম্ভিক এবং স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের। তাদের এ স্বৈরাচারী মনোভাব ক্ষমতার দ্বন্দ্বকে তীব্রতর করেছে।"

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, রাজা সালমান বিন আব্দুল আজিজ প্রচলিত নিয়ম ভঙ্গ করে তার পুত্র মুহাম্মদ বিন সালমানকে যুবরাজ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়ার পর মূলত ক্ষমতার দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। এ দ্বন্দ্ব ও রেষারেষি শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনেই সীমাবদ্ধ থাকবে তা নয় নিরাপত্তা ক্ষেত্রেও যে কোনো সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রচলিত নিয়ম বা সৌদি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল আজিজের অসিয়ত অনুযায়ী ক্ষমতা রাজার কাছ থেকে রাজার ভায়ের হতে হস্তান্তর করার কথা এবং ক্ষমতা তৃতীয় প্রজন্মের হাতে ন্যস্ত করা যাব না।

কেউ কেউ মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন যুদ্ধে সামরিক ক্ষেত্রে ব্যর্থতার কারণে রাজা মোহাম্মদ বিন আব্দুল আজিজ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক পদে রদবদলের পদক্ষেপ নিয়ে থাকতে পারেন। কারণ ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি বাহিনীর পরাজয়ের আলামত ফুটে উঠেছে। সৌদি রাজ পরিবারে বর্তমান ক্ষমতার লড়াই এবং গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে রদবদলের ঘটনাকে ইয়েমেন যুদ্ধে ব্যর্থতা পরবর্তী কম্পন হিসেবে মনে করা হচ্ছে। মিশরের রাজনৈতিক বিশ্লেষক সামেহ আসগারি বলেছেন, "ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবের রাজনৈতিক, সামরিক ও নৈতিক পরাজয়  ঘটেছে। গত তিন বছর ধরে চলা ইয়েমেন যুদ্ধে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করে, হাজার হাজার নারী পুরুষ শিশু হত্যা করে, যুদ্ধ বিমান ও হেলিকপ্টার খুইয়ে সৌদি আরব কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারেনি।"

যাইহোক, ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ ইয়েমেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন শুরু করে সৌদি আরব। রিয়াদ ভেবেছিল অল্প সময়ের মধ্যে আনসারুল্লাহ যোদ্ধাদের পতন ঘটিয়ে তাদের পছন্দের সরকারকে ইয়েমেনে বসাতে পারবে। কিন্তু গত প্রায় তিন বছর অতিক্রান্ত হলেও সৌদি আরব তার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারেনি।# 

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৭