আদালতে মুরসির মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাল জাতিসংঘ
(last modified Tue, 18 Jun 2019 23:48:48 GMT )
জুন ১৯, ২০১৯ ০৫:৪৮ Asia/Dhaka
  • আদালতের শুনানিতে খাঁচাবন্দি মোহাম্মাদ মুরসি
    আদালতের শুনানিতে খাঁচাবন্দি মোহাম্মাদ মুরসি

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশন (ওএইচসিএইচআর) আদালতে শুনানির সময় মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ মুরসির আকস্মিক মৃত্যুর ব্যাপারে ‘স্বতন্ত্র ও পূর্ণাঙ্গ’ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

ওএইচসিএইচআর-এর মুখপাত্র রুপার্ট কলভিল্লে বলেছেন, আটকাবস্থায় যেকোনো মৃত্যুরই তড়িৎ, নিরপেক্ষ, পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া উচিত। মৃত্যুর আসল কারণ উদঘাটনের জন্য এই তদন্ত একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন হতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরো বলেন, ছয় বছর ধরে মুরসিকে কি পরিবেশে আটক রাখা হয়েছিল তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে; বিশেষ করে তাকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা না দেয়া, আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে না দেয়া এবং তাকে দীর্ঘদিন ধরে কনডেম সেলে রাখার বিষয়ে অবশ্যই তদন্ত হতে হবে।

মুরসি প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় তার সঙ্গে তৎকালীন সেনাপ্রধান সিসি'র সাক্ষাতের দৃশ্য (ফাইল ছবি)

গত সোমবার মিশরের একটি আদালতে ‘বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জন্য গুপ্তচরবৃত্তি’র দায়ে বিচারের শুনানি চলার সময় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন মুরসি এবং তাৎক্ষণিকভাবে মারা যান। তার মৃত্যুর পর মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থকদের প্রতিবাদের আশঙ্কায় মিশরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে।

মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের শীর্ষস্থানীয় নেতা মোহাম্মাদ মুরসি ২০১১ সালে প্রবল গণঅভ্যুত্থানে সাবেক স্বৈরশাসক হোসনি মুবারক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দেশটির প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৩ সালের জুলাই মাসে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনাপ্রধান আব্দেল ফাত্তাহ আস-সিসি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত ও বন্দি করেন।তারপর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মুরসি আর মুক্ত হতে পারেননি।

অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করেন জেনারেল সিসি

অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারি জেনারেল সিসি ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত এক প্রদর্শনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ‘বৈধ’ প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।  তখন থেকে পাশ্চাত্যের সহযোগিতায় তিনি সরকার বিরোধীদের কঠোর হাতে দমন করে আসছেন।

কাতার-ভিত্তিক আল-জাজিরা নিউজ নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট মুরসি গত ৭ মে সর্বশেষ শুনানির দিন কারাগারে তার অপর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যাপারে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিলেন, চিকিৎসার অভাবে তার জীবন বিপদাপন্ন।

গত ২৩ এপ্রিল মিশরের অ্যাটর্নি জেনারেল  ‘বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জন্য গুপ্তচরবৃত্তি’র দায়ে মুরসিসহ অপর ২৩ আসামীর জন্য মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করেন। ওই আবেদনের ব্যাপারে সোমবারের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। #

পার্সটুডে/মো. মুজাহিদুল ইসলাম/১৯

ট্যাগ