গোলান নিয়ে নেতানিয়াহুর বক্তব্য নাকচ করল নিরাপত্তা পরিষদ
ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি “গোলান মালভূমি চিরদিন তেল আবিবের হাতে থাকবে” বলে যে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ তা নাকচ করে দিয়েছেন। নিউ ইয়র্কে নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধ দ্বার বৈঠকের পর নেতানিয়াহুর বক্তব্য নাকচ করে দেয়া হয়।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের চলতি মাসের সভাপতি চীনা রাষ্ট্রদূত লিউ জেইয়ি এ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ইসরাইলের বক্তব্যে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিষদের সদস্যরা। এ ছাড়া, গোলানের অবস্থান আগের মতই বজায় থাকবে বলেও তারা জোর দিয়ে জানিয়েছেন।
এর আগে নেতানিয়াহুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সিরিয়ার উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল মিকদাদ বলেছেন, অধিকৃত গোলান মালভূমি ফেরত পাওয়ার জন্য সিরিয়ার সামনে যেকোনো ব্যবস্থা নেয়ার পথ খোলা রয়েছে। এ জন্য প্রয়োজনে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালানো হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, নেতানিয়াহুর বক্তব্যের দু’দিন পরই ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোগেরিনি বলেছেন,গোলান মালভূমি দখলে রাখার বিষয়ে ইহুদিবাদী ইসরাইল যে বক্তব্য দিয়েছে তাকে স্বীকৃতি দেয় না ২৮ জাতির জোট ইইউ।
এ ছাড়া, সিরিয়ার গোলান মালভূমির ওপর ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি 'বিলম্ব প্রতিক্রিয়া' দেখিয়েছে। নেতানিয়াহুর হুমকি ও উস্কানিমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে অভিহিত করেছে ওআইসি। ওআইসি’র মহাসচিব আয়াদ মাদানি বলেছেন, মুসলিম দেশগুলোর এ সংস্থা মনে করে, গোলান হচ্ছে সিরিয়া ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
১৯৬৭ সালের ছয় দিনের আরব-ইসরাইল যুদ্ধে সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয় তেল আবিব। এরপর ১৯৭৩-৭৪ সালের যুদ্ধে এই মালভূমি পুনর্দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় সিরিয়া। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে গোলানকে একতরফাভাবে নিজ ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করে নেয় ইসরাইল। কিন্তু এই অন্তর্ভুক্তিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি আন্তর্জাতিক সমাজ। কিন্তু তারপরও গত প্রায় সাড়ে তিন দশকে গোলান মালভূমিতে ৩০টিরও বেশি অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপন করেছে তেল আবিব।#
মূসা রেজা/২৭