ইয়েমেনে অন্তর্বর্তী পরিষদ ও মানসুর হাদির মধ্যে সমঝোতার খবর দিল রিয়াদ
সৌদি আরব ইয়েমেনের পদত্যাগকারী প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্তর্বর্তী পরিষদের মধ্যে নতুন করে সমঝোতার খবর দিয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইয়েমেনের বর্তমান পরিস্থিতি বিশেষ করে নতুন এই সমঝোতাকে দুদিক থেকে মূল্যায়ন করতে হবে। প্রথমত, ইয়েমেনের হুথি সমর্থক ন্যাশনাল স্যালভেশন সরকারের সঙ্গে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের মধ্যে এখনো যুদ্ধ চলছে। আর দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্তর্বর্তী পরিষদ ও পদত্যাগকারী প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর হাদির মধ্যে এখনো তীব্র মতবিরোধ বজায় রয়েছে। প্রথম দিকে সৌদি আরব ভেবেছিল মাত্র এক মাসের যুদ্ধে হুথি আনসারুল্লাহ যোদ্ধাদেরকে রাজধানী সানা থেকে বিতাড়িত করা যাবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা জনপ্রিয় হুথিদের মোকাবেলায় শুধু যে ব্যর্থ হয়েছে তাই নয় এমনকি নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ মিটাতেও সক্ষম হয়নি।
গত বছর গ্রীষ্ম থেকে সৌদি সমর্থনপুষ্ট পদত্যাগী মানসুর হাদির সরকারের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্তর্বর্তী পরিষদের মধ্যকার তীব্র বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। বিরোধ নিরসনের জন্য গত নভেম্বরে রিয়াদে দুপক্ষের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে দুপক্ষ মিলে দক্ষিণ ইয়েমেনে ঐক্যমত্যের সরকার গঠনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু এরপর আট মাস পেরিয়ে গেলেও ঐক্যমত্যের সরকার তো গঠিত হয়নি বরং তাদের মধ্যকার বিরোধ আরো তীব্রতর হয়েছে। এমনকি দুপক্ষই নিজেদের মধ্যে শক্তির মহড়াও চালিয়েছিল।
এ অবস্থা চলতে থাকায় বিরোধ মীমাংসার জন্য সৌদি আরব ফের মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করে। এরপরই সৌদি সরকার ওই দুই গ্রুপের মধ্যে নতুন করে সমঝোতার খবর দিল। এবারও দক্ষিণ ইয়েমেনে ওই দুই গ্রুপের মধ্যে ঐক্যমত্যের সরকার গঠনের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে বলে রিয়াদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া নতুন এ সরকারের অধীনে ২৪টি মন্ত্রণালয় থাকবে এবং আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এসব মন্ত্রণালয় গঠন করা হবে। তবে দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্তর্বর্তী পরিষদের হাতে মাত্র চারটি মন্ত্রণালয় দেয়া হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের সমঝোতাও গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সমঝোতার মতোই পরিণতি ভোগ করবে। কারণ গত কয়েক মাসে দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্তর্বর্তী পরিষদ তাদের কর্মকাণ্ড ও আচরণে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে তারা সৌদি সমর্থনপুষ্ট মানসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ও যোগ্যতাসম্পন্ন।
এদিকে, দৈনিক আল আখবার পত্রিকা এক নিবন্ধে জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্তর্বর্তী পরিষদ আটটি মন্ত্রণালয় চেয়েছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদেরকে চারটি মন্ত্রণালয় দেয়া হয়েছে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এবারের রিয়াদ সমঝোতায় সব সামরিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং তাদেরকে মানসুর হাদির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে বলে বলা হচ্ছে। এ বিষয়টি তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ অনেক গ্রুপ ও গোত্র রয়েছে যারা এটা মেনে নেবে না। এ অবস্থায় ইয়েমেনের পরিস্থিতি কোনদিকে যায় সেটাই এখন দেখার বিষয়। #
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩০