মে ১৬, ২০২১ ১৮:৪৬ Asia/Dhaka

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র কুদস ফোর্সের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কায়ানি ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের পলিটব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। এ সময় ইহুদিবাদী শত্রুদের আগ্রাসনের প্রতিবাদে সফল ও অনন্যসাধারণ জবাব দেয়ার জন্য হামাসের ভূয়সী প্রশংসা করেন জেনারেল কায়ানি। তিনি ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর উপর ইহুদিবাদী ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানান।

আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ ও কুদস শহর থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের জন্য ফিলিস্তিনিদের দেয়া আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পর গত সোমবার থেকে ইসরাইলের সঙ্গে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয় এবং এখনো তা চলছে। গাজা উপত্যকার নাগরিক অধিকার রক্ষা বিষয়ক সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরাইলি সেনাদের নির্বিচার বোমা বর্ষণে গত শনিবার পর্যন্ত ৩৯টি শিশু ও ২২ নারীসহ মোট ১৪০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সমস্ত আইনকানুন লঙ্ঘন করে ইসরাইল ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো সরাসরি ইসরাইলের পক্ষে কথা বলছে। কিন্তু মানবাধিকারের দাবিদার পাশ্চাত্যের দেশগুলোর কেন এ অবস্থান সেটাই এখন প্রশ্ন। গত কয়েক দশক ধরে পশ্চিম এশিয়ার ওপর আধিপত্য বিস্তারের জন্য বৃহৎ দেশগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। প্রকৃতপক্ষে অবৈধভাবে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভূরাজনৈতিক দিক থেকে এ অঞ্চলটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং মুসলিম বিশ্বের এই প্রাণকেন্দ্রে মুসলমানদের শত্রুদের হস্তক্ষেপ ও প্রভাব বিস্তারের কেন্দ্রে পরিণত হয়। অন্য কথায় বলা যায়, ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পর গত ৭০ বছরে এ অঞ্চলে চরম নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী সম্প্রতি এক ভাষণে ইরানসহ সমগ্র পশ্চিম এশিয়ায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য মার্কিন ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, 'ওয়াশিংটন মনে করে এ অঞ্চল যতবেশি অস্থিতিশীল হয়ে থাকবে ততবেশি তাদের লাভ।' তিনি বলেন, এমনকি মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাইকেল লাদিনও এ কথা স্বীকার করেছেন।' মাইকেল লাদিন বলেছেন, মার্কিনীরা চায় ইরান, ইরাক, সিরিয়া ও লেবাননে নৈরাজ্যকর অবস্থা বজায় থাকুক অর্থাৎ তারা চায় না এ অঞ্চলে শান্তি বজায় থাকুক।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, এ অঞ্চলে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও মার্কিন হস্তক্ষেপের জন্য ইসরাইল ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং মুসলমানদের স্বার্থের বিষয়টিকে তারা মোটেও আমলে নিচ্ছে না। লেবাননের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক রাফিক খোরি ইসরাইলের ব্যাপারে মার্কিন নীতির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় যেই আসুক না কেন ইসরাইলের ব্যাপারে তাদের নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনও ইসরাইলকে একা ছেড়ে দেবে না।'

পর্যবেক্ষকরা বলছেন বর্তমানে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতি মার্কিন সমর্থন থেকে বোঝা যায়, মার্কিনীদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে সমগ্র এ অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তোলা। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ