সিরিয়ার সংবিধান প্রণয়ন বিষয়ক কমিটির বৈঠক ফের ব্যর্থ: বিশ্লেষকদের অভিমত
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i99074-সিরিয়ার_সংবিধান_প্রণয়ন_বিষয়ক_কমিটির_বৈঠক_ফের_ব্যর্থ_বিশ্লেষকদের_অভিমত
সিরিয়ার সংবিধান প্রণয়ন বিষয়ক কমিটির ষষ্ঠ বৈঠক শেষ হওয়ার পর সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত গিয়ের পিটারসন এ বৈঠকের ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এবারের আলোচনায় কোনো ফলাফল বেরিয়ে আসেনি যা খুবই হতাশাজনক। এমনকি পরবর্তী আলোচনা বা বৈঠকের তারিখও ঘোষণা করা হয়নি বলে তিনি জানান।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
অক্টোবর ২৪, ২০২১ ১৬:৫০ Asia/Dhaka

সিরিয়ার সংবিধান প্রণয়ন বিষয়ক কমিটির ষষ্ঠ বৈঠক শেষ হওয়ার পর সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত গিয়ের পিটারসন এ বৈঠকের ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এবারের আলোচনায় কোনো ফলাফল বেরিয়ে আসেনি যা খুবই হতাশাজনক। এমনকি পরবর্তী আলোচনা বা বৈঠকের তারিখও ঘোষণা করা হয়নি বলে তিনি জানান।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত ২২৫৪ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী সিরিয়ায় সংবিধান প্রণয়ন বিষয়ক বিশেষ কমিটির বৈঠক শুরু হয়েছিল। এ ব্যাপারে কাজের কতদূর অগ্রগতি হয়েছে তা দেখভাল করার দায়িত্ব নিরাপত্তা পরিষদের। নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী সিরিয়ার সংবিধান প্রণয়ন বিষয়ক কমিটির মোট সদস্য সংখ্যা ১৫০ জন। এর মধ্যে সরকার পক্ষের ৫০ জন, সরকার বিরোধীদের পক্ষ থেকে ৫০ জন এবং বাকি ৫০ জন প্রতিনিধিদেরকে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৪৫ সদস্যের আরেকটি ছোট কমিটি গঠন করা হয়েছিল যাদের কাজ হচ্ছে সংবিধানের  খসড়া প্রস্তাব প্রণয়ন করা।

সিরিয়ায় সংবিধান প্রণয়ন বিষয়ক কমিটি গঠনের বিষয়ে  জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এমন সময় প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল যখন ২০১২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারিতে অর্থাৎ বিদেশি মদদপুষ্ট দায়েশ বা আইএস সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব শুরুর এক বছর পর সিরিয়ার পঞ্চম সংবিধান গণভোটের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়েছিল। কিন্তু সিরিয়ার বিরোধীরা সংশোধিত ওই সংবিধান মানতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর সিরিয়ার সরকার সংবিধান প্রণয়ন বিষয়ক কমিটি গঠনে জাতিসংঘে গৃহীত প্রস্তাব মেনে নেয়।

সিরিয়ায় নতুন সংবিধান প্রণয়ন বিষয়ক প্রথম ও দ্বিতীয় দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের নভেম্বরে, তৃতীয় দফা আলোচনা গত বছর আগস্টে এবং  চতুর্থ দফা আলোচনা গত বছর ডিসেম্বরে এবং পঞ্চম দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল চলতি বছর জানুয়ারির ২৬ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত। জেনেভায় এ সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছিল। সর্বশেষ ষষ্ঠ দফা আলোচনা গত ১৮ অক্টোবর শুরু হয়েছিল এবং কোনো ফলাফল ছাড়াই ২২ অক্টোবর তা শেষ হয়। কিন্তু গত দুই বছরে ষষ্ঠ দফা আলোচনা সত্বেও কেন তা সফল হয়নি সেটাই এখন প্রশ্ন। 

সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত গিয়ের পিটারসন নতুন সংবিধান প্রণয়নের বিষয়ে মতবিরোধ থাকার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, সংলাপকে সফল করার জন্য যেসব পদক্ষেপ নেয়া দরকার ছিল তা নেয়া হয়নি। বৈঠকে অংশ নেয়া অনারব কোনো কোনো আলোচক দেশের নাম 'সিরিয়ান আরব রিপাবলিক' বাদ দেয়ার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু সিরিয়ার সরকারী প্রতিনিধিরা তা মানতে অস্বীকৃতি জানান। সিরিয়ায় বিদেশি দখলদারিত্ব ইস্যু মতবিরোধের আরেকটি বড় কারণ ছিল। সরকার বিদেশি দখলদারদের বিষয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিল কিন্তু প্রতিপক্ষের প্রতিনিধিরা এর বিরোধিতা করে। তাদের মতে সরকার দখলদার শক্তি বলতে মার্কিন সেনা উপস্থিতির কথা বলছে এবং এর সাথে সংবিধান প্রণয়ের বিষয়টি জড়িত করা ঠিক নয়।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, সিরিয়ার সরকার বিরোধী হিসেবে যারা সংবিধান প্রণয়ন বিষয়ক বৈঠকে অংশ নিয়েছেন তারা সবাই বাইরের কোনো না কোনো দেশের দ্বারা প্রভাবিত এবং ওই সব দেশের নির্দেশ মতো কথাবার্তা বলছে যা সিরিয়া সরকারের পক্ষে মেনে নেয়া কঠিন। এসব কারণে সংবিধান প্রণয়ন বিষয়ক বৈঠক এখন পর্যন্ত সফল হয়নি বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। #       

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন