মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আফ্রিকা সফর: ইউক্রেন ইস্যুতে সমর্থন লাভের চেষ্টা
(last modified Wed, 10 Aug 2022 13:35:35 GMT )
আগস্ট ১০, ২০২২ ১৯:৩৫ Asia/Dhaka

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন আফ্রিকার কয়েকটি দেশ সফরকালে নিরাপত্তা, খাদ্য সংকট, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি ছাড়াও ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যাপারে সমর্থন লাভের বিষয়ে ওই দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। ব্লিঙ্কেন দক্ষিণ আফ্রিকা, ডেমোক্রেটিক কঙ্গো ও রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্টদের সাথে সাক্ষাত করেছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর আফ্রিকায় অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের এটাই দ্বিতীয় সফর। ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র যখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে ঠিক তখন মার্কিন সরকার মস্কোর বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন দেয়ার জন্য আফ্রিকার দেশগুলোকে রাজি করানোর চেষ্টা করছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর আফ্রিকার বেশিরভাগ দেশ ওয়াশিংটনের প্রতি সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং তারা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরদার করেছে। গত কয়েক দশকে আফ্রিকার বেশিরভাগ দেশ নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে স্বাধীন নীতি গ্রহণ করেছে এবং তারা আমেরিকা ও ইউরোপের নীতির আনুগত্য করা থেকে বিরত রয়েছে। এ কারণে ইউক্রেন ইস্যুতেও এসব দেশ রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা অব্যাহত রেখেছে এবং পাশ্চাত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।  

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সেইরিল রামাফুজা কূটনৈতিক উপায়ে ইউক্রেন সংকট সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, গত বেশ ক'বছর ধরে পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর বিস্তৃতির নেতিবাচক পরিণতির ব্যাপারে রাশিয়া বারবার সতর্ক করে দেয়া সত্বেও পশ্চিমারা সেটাকে আমলে নেয়নি। তারা যদি রাশিয়ার সতর্কবার্তাকে গুরুত্ব দিত তাহলে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হতো না।

বাস্তবতা হচ্ছে, উগ্র জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতার কারণে বহু বছর ধরে আফ্রিকার দেশগুলো নিরাপত্তাহীনতা ও খাদ্য সংকটের সম্মুখীন। ইউক্রেন সংকট শুরুর পর থেকে আফ্রিকার দেশগুলোতে আরো বেশি খাদ্য সংকট দেখা দেয়ায় ওই দেশগুলো উদ্বিগ্ন। আফ্রিকার দেশগুলো বহু বছর ধরে উপনিবেশিক শাসনের কবলে থাকার কারণে এমনিতেই অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনা মহামারির হানা। গত দুই বছরে করোনা সংক্রমণের মধ্যে আফ্রিকার দেশগুলো আমেরিকাসহ পাশ্চাত্যের দেশগুলোর পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ওষুধসহ অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী ক্ষেত্রে কোনো সহযোগিতা পায়নি। আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার মাত্র এক শতাংশের কম সংখ্যক মানুষ ভ্যাকসিনের সুবিধা পেয়েছে।

বর্তমানে আফ্রিকার বহু দেশ বেকারত্ব ও খাদ্য সংকটের সম্মুখীন। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো আফ্রিকার এই দুর্বলতার সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। অন্যদিকে বৃহৎ শক্তিগুলোও আফ্রিকার এ সংকটকে কাজে লাগিয়ে ওই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আফ্রিকা সফরকে এরই আলোকে মূল্যায়ন করতে হবে। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১০     

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।