আগামী অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে পাকিস্তানে সংসদ নির্বাচন
নির্বাচনের আগে পদত্যাগের প্রতিশ্রুতি শাহবাজের! আসল রহস্য কোথায়?!
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, তিনি দেশটির সাধারণ নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করবেন এবং দেশের ক্ষমতা অস্থায়ী সরকারের হাতে ন্যস্ত করবেন।
ভারত উপমহাদেশের কোনো কোনো দেশে পার্লামেন্টারি পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য সরকার ক্ষমতা ছেড়ে দেয়, যদিও বাংলাদেশে গত সংসদ নির্বাচনের আগে এর ব্যতিক্রম দেখা গেছে।
বিশ্লেষকরা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণাকে এমন একটি কৌশল হিসেবে দেখছেন যে ঘোষণা দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে শান্ত করার পাশাপাশি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সত্যিকারের পরিবেশ সৃষ্টির ভাব তৈরি করবে। কোনো কোনো বিশ্লেষক বলেছেন, শাহবাজের এই ঘোষণার অর্থ মোটেও এটা নয় যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আগাম নির্বাচনের যে দাবি জানিয়ে আসছেন তা মেনে নেয়া হচ্ছে! শাহবাজ শরীফ ক্ষমতায় আসার পর আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা পালন করেননি।
ইমরান খান সংসদীয় অনাস্থায় ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ক্ষমতাসীন শাহবাজ গত ১৫ মাসে পাকিস্তানের তেহরিকে ইনসাফ দলের সঙ্গে গভীর রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। সম্প্রতি খবর এসেছে যে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হতে পারে। ইমরানকে কারাবন্দি করার বিনিময়েই নির্বাচনের আগে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার ওয়াদা শাহবাজ বাস্তবায়ন করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
শাহবাজ ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখায় যে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করার রাজনৈতিক চাল হিসেবে তিনি এখন দেখাতে চাচ্ছেন যে আমি ক্ষমতালোভী ব্যক্তি নই, বরং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তরের নীতিতে অঙ্গীকারবদ্ধ! আর নির্বাচনের আগে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার সম্ভাব্য পদক্ষেপ আগামী নির্বাচনে তার দল মুসলিম লিগের (নাওয়াজ) ভোট বাড়াতে সহায়তা করবে বলে শাহবাজ আশাবাদী।
শাহবাজ টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে বলেছেন, আগামী অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে পাকিস্তানে সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হবে। ইমরান খানের চার বছরের শাসনামলে পাকিস্তানের রাজনীতি, অর্থনীতি ও বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সংকটের যে আগুন তৈরি হয়েছে তিনি গত ১৫ মাস ধরে তার জঞ্জাল সাফ করার ও আগুন নেভানোর কাজ করেছেন বলেও দাবি করেছেন। ইমরানের কাজকর্মের এ জাতীয় সমালোচনা তার বিরোধীদের জন্য নির্বাচনে প্রচারণার এক বড় উপাদান হয়ে উঠবে।
কিন্তু ইমরানের দল টিআইপিকে নিষিদ্ধ করার ও নির্বাচনে ইমরানের অংশগ্রহণকে নিষিদ্ধ করার যে চেষ্টা ইমরানের বিরোধী শক্তিগুলো চালিয়ে যাচ্ছে তাতে পাকিস্তানে প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ হয়ে পড়বে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
পার্সটুডে/ম.ওয়াকারি/১৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।