ইরানের ওপর ইউরোপীয় ৩ দেশের নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার নেপথ্যে
https://parstoday.ir/bn/news/world-i128122-ইরানের_ওপর_ইউরোপীয়_৩_দেশের_নিষেধাজ্ঞা_বহাল_রাখার_নেপথ্যে
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বলেছেন, ইউরোপের তিনটি দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি তাকে দেয়া একটি চিঠিতে ঘোষণা করেছে যে ইরানের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কিত যেসব মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেগুলোকে তারা বহাল রাখতে চায়।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩ ১৭:২৭ Asia/Dhaka

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বলেছেন, ইউরোপের তিনটি দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি তাকে দেয়া একটি চিঠিতে ঘোষণা করেছে যে ইরানের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কিত যেসব মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেগুলোকে তারা বহাল রাখতে চায়।

অথচ পরমাণু সমঝোতা অনুযায়ী আগামী মাসের ১৮ অক্টোবরের মধ্যে এসব নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।জেসিপিওএ'র  প্রতিশ্রুতিগুলো ইরান মেনে চলছে না তিনটি ইউরোপীয় দেশের এই  দাবির কথা উল্লেখ করে বোরেল আরো বলেন, এসব দেশ তাকে দেয়া চিঠিতে জেসিপিওএ'র কাঠামোর মধ্যে ইরানের প্রতিশ্রুতি না মেনে চলার কারণে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এই সমস্যাটি জেসিপিওএ'র জয়েন্ট কমিশন যাতে বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার (ডিআরএম) অধীনে নিয়ে যায় তার জন্য এসব দেশ তার কাছে অনুরোধ জাানিয়েছে। 

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি জারি করে ঘোষণা করেছে যে, ফ্রান্স এবং জার্মানির সঙ্গে একত্রে মিলে তারা ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ আইনে রূপান্তরিত করবে এবং ইইউ এবং যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা যেগুলো ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল তা বলবৎ থাকবে।  .

২০১৫ সালের জুলাইয়ে জারি করা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব অনুসারে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রমের উপর এই সংস্থার আরোপিত সমস্ত নিষেধাজ্ঞা ২০২৩ সালের অক্টোবরে শেষ হবে। ফলে ক্ষেপণাস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার ক্ষেত্রে ৩ ইউরোপীয় দেশের পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এটিকে জেসিপিওএর এর মাধ্যমে ইরানের উপর চাপ বজায় রাখার পশ্চিমের নীতির ধারাবাহিকতা বলে মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালের মে মাসে পরমাণু সমঝোতা থেকে নিজেকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেয়। জেসিপিওএ'র বিপরীতে তারা এখন দাবি করছে যে তারা ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইরানের ওপর থেকে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণ অবসানের বিষয়ে চিন্তিত এবং এসব নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখার জন্য নানা অজুহাত সৃষ্টি করতে তারা এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। একদিকে তার ইউরোপীয় মিত্রদের সহযোগিতা অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস প্রতিনিধি পরিষদে সম্প্রতি একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করে যার মাধ্যমে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন উৎপাদন ও রপ্তানিকে লক্ষ্য করে এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা বলা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় ইরানের অস্ত্র রপ্তানি বিশেষ করে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে অগ্রযাত্রা রোধ করার জন্য নতুন নতুন নিষেধাজ্ঞা এবং অন্যান্য ব্যবস্থার মাধ্যমে ওয়াশিংটন বাইডেন প্রশাসনের পদক্ষেপগুলোকে তীব্র করতে চায়।

যাইহোক, সাম্প্রতিক বছরগুলোর অভিজ্ঞতা এটা স্পষ্ট হয়েছে আমেরিকা এবং তার মিত্রদের মাধ্যমে ইরান বিরোধী এসব পদক্ষেপ হালে পানি পায় নি এবং ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের বিকাশকে তারা বাধাগ্রস্ত করতে পারিনি। ২০২০ সালের অক্টোবরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর থেকে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার রোধ করার জন্য একটি ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছিল।  মুলত পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী ছয় জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম সদস্য দেশ চীন ও রাশিয়ার  বিরোধীতায় আমেরিকার সেই চেষ্টা ব্যর্থতায় পরিণত হয়েছিল।#  

পার্সটুডে/বাবুল আখতার/১৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।