অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে ইরানের রুট ব্যবহারের ওপর পাকিস্তানের গুরুত্বারোপ
(last modified Sat, 25 Nov 2023 07:55:05 GMT )
নভেম্বর ২৫, ২০২৩ ১৩:৫৫ Asia/Dhaka

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার ইরানের মাধ্যমে আঞ্চলিক যোগাযোগের জন্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা 'ইকো'র অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও বিরাজমান সুবিধা ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছেন।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা ইকো ১৯৮৫ সালে ইরান, পাকিস্তান ও তুরস্কের মধ্যে অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ইকোর সদস্য সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং আফগানিস্তান, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তান এতে যুক্ত হয়। বর্তমান এ সংস্থার দশটি সদস্য রয়েছে। তবে এ সংস্থাটি নিজেদের সুযোগ সুবিধাকে কাজে লাগাতে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। 

তাই, ইরানের সক্ষমতা এবং ইরানের পরিবহন রুট ব্যবহার করার জন্য পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ইকো সংস্থাকে আরও সক্রিয় করার ক্ষেত্রে  আশা বাড়িয়ে দিয়েছে। ইসলামাবাদে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী শ্রেণী এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের এক সমাবেশে পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী তার দেশের উন্নয়নের জন্য ইরানের মাধ্যমে বিশ্বের অন্য অঞ্চলে আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়াতে ইকোর সক্ষমতা কাজে লাগানোর ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন।  তিনি বলেছেন, ইসলামাবাদ মধ্যএশিয়ায় পৌঁছানোর জন্য কোয়েটা-তেফতান রেললাইনের সংস্কার এবং ইরানের বাণিজ্য রুট ব্যবহার করার পদক্ষেপ নিয়েছে।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনসুর আহমাদ খান বলেছেন, "বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে করিডোর এবং যোগাযোগের রাস্তাগুলো আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় নীতি নির্ধারণী ভূমিকা পালন করে। সেকারণে ইরানের সাথে যোগাযোগের রাস্তাগুলো পুনরায় চালু করতে চায় পাকিস্তান। ইকো জোটের গুরুত্বপূর্ণ একটি সক্ষমতা হলো নিজেদের মধ্যেকার সর্বোত্তম যোগাযোগ ব্যবস্থা যা বাইরের দেশগুলোর সাথে যোগাযোগের জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার বলেছেন, ইকোর সদস্য দেশগুলোর সক্ষমতা ব্যবহার, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর এবং সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ পাকিস্তান সরকারের কাছে সবচেয়ে অগ্রাধিকারযোগ্য বিষয়। কারণ পাকিস্তানের কর্মকর্তারা জনগণের চাহিদা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবেন। তিনি পাকিস্তানে ইরানের গ্যাস সরবরাহ লাইন চালু করার কথা উল্লেখ করে বলেন 'পাকিস্তানের সাবেক কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এবং দশকের  পর দশক ধরে কেবল বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।' 

রাজনৈতিক বিশ্লেষক আকরাম আরেফি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ইকো সংস্থার সদস্য হিসেবে পাকিস্তান, ইরান এবং তুরস্কের দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। ইরান এই তিন দেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা ছাড়াও ইউরোপ, মধ্যএশিয়া ও ককেশাস অঞ্চলে যোগাযোগেরও গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব সক্ষমতা ব্যবহার করা হয়নি, তবে এ ব্যাপারে পাকিস্তান সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলেই মনে হচ্ছে।

যাই হোক, ইকো সংস্থা প্রাচীনতম আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সংস্থা হিসাবে যোগাযোগ ও সহযোগিতার মাধ্যম হিসাবে পশ্চিম ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যেও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৫ 

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।