ট্রাম্প-কেনেডি স্টাইলের গণহত্যা:
আমেরিকা কি জেনেটিক পরিবর্তনের আধুনিক পরীক্ষাগারে পরিণত হচ্ছে?
-
মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র
পার্সটুডে- ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান জানিয়েছে, জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণ বা গণহত্যার মাধ্যমে ইউজেনিক্সের পুরানো পদ্ধতি বাতিল হওয়ায় এখন মার্কিন সরকারের নীতি হলো সমাজের দুর্বল অংশের জন্য জীবনযাত্রাকে পদ্ধতিগতভাবে আরও কঠিন করে তুলে ইউজেনিক্সের নরম (সফ্ট) পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা।
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, আমেরিকায় ‘ইউজেনিক্স’ নামক এই বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রয়োগ করে মানবজাতির উন্নয়ন আর সুস্থ-সবল ভবিষ্যত প্রজন্ম তৈরির নামে হাজার হাজার মানুষকে বন্ধ্যা করা হয়েছিল, এমনকি কেড়ে নেয়া হয় বহু লোকের প্রাণও।
পার্সটুডে বলছে, গার্ডিয়ান পত্রিকা সোমবার এক প্রতিবেদেনে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র পরোক্ষভাবে পরিবেশ, শিক্ষা, অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে 'সফ্ট ইউজেনিক্স' প্রয়োগ করছে। এই পদ্ধতি বা দৃষ্টিভঙ্গির মূল চেতনা হচ্ছে- দুর্বলদের হত্যা করে বুদ্ধিমান জাতি ও বর্ণকে সহযোগিতা করো।
দ্য গার্ডিয়ান আরও লিখেছে, মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র সব সময় তার যৌবনকালের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, সেই সময় মানুষ জানতই না ডায়াবেটিস ও অটিজম কী জিনিস। একই সঙ্গে সে সময় স্থূলতার হার অনেক কম ছিল। তিনি প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবনযাপনের পক্ষেও কথা বলেন।
এই প্রতিবেদনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারের নীতির সমালোচনা করে বলা হয়েছে, সমাজের দুর্বল অংশকে ইচ্ছাকৃতভাবে অবহেলা করার করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেনেডি আসলে শিক্ষা, কর্মসংস্থান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং ভৌগোলিক অবস্থানের মতো বিষয়গুলোকে এড়িয়ে মার্কিন সমাজে সফ্ট ইউজেনিক্স প্রয়োগ করছেন।
প্রতিবেদন অনুসারে, কেনেডির পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসনের আরো অনেকেই এ ধরণের দৃষ্টিভঙ্গি এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করছেন। মনে হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন সম্পর্কে বাড়তি উত্তেজনা এবং উৎসাহের কারণ হলো তারা যুক্তরাষ্ট্র এমনকি বিশ্বের অন্যান্য অংশের মানুষের জেনেটিক গঠনে হস্তক্ষেপ করতে চান। ট্রাম্পের শীর্ষ উপদেষ্টা ইলান মাস্কের উদ্যোগে বৈদেশিক সাহায্য হ্রাস করা হয়েছে। এর ফলে আফ্রিকায় শিশুমৃত্যু এবং এইডস ও ম্যালেরিয়ার ঘটনা ইতিমধ্যেই বৃদ্ধি পেয়েছে।
গার্ডিয়ান এই সমস্ত নীতিকে "সফ্ট ইউজেনিক্স" হিসেবে অভিহিত করে লিখেছে, যদি দুর্বল মানুষদের কাছ থেকে স্বাস্থ্যসেবা এবং জীবন রক্ষাকারী সেবাগুলো কেড়ে নেওয়া হয় তাহলে আপনি প্রকৃতিকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিলেন। এর ফলে শেষ পর্যন্ত কেবল সবচেয়ে যোগ্য মানুষেরাই বেঁচে থাকতে পারবে।
ট্রাম্প প্রশাসনে তৎপর কেনেডির মতো কর্মকর্তাদের মতে, সমাজের ভয়াবহ অবস্থার কারণ হচ্ছে অসুস্থ ব্যক্তিরা। যারা অসুস্থ ব্যক্তিদেরকে স্বাস্থ্যকর খাবার এবং চিকিৎসা সেবা পেতে বাধা দেয় তারা এই অবস্থার জন্য দায়ী নয়।#
পার্সটুডে/এসএ/৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।