ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি খেলোয়াড় নাকি দর্শক?
https://parstoday.ir/bn/news/world-i153646-ইউরোপীয়_ইউনিয়ন_কি_খেলোয়াড়_নাকি_দর্শক
পার্সটুডে - মনে হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্বের রাজনৈতিক খেলোয়াড় থেকে অনেকটাই বাদ পড়েছে এবং ইরানের ক্ষেত্রে, ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে ব্রাসেলসের ভূমিকা আগের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
(last modified 2025-11-03T07:23:42+00:00 )
নভেম্বর ০২, ২০২৫ ১৭:১৬ Asia/Dhaka
  • ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি খেলোয়াড় নাকি দর্শক?
    ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি খেলোয়াড় নাকি দর্শক?

পার্সটুডে - মনে হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্বের রাজনৈতিক খেলোয়াড় থেকে অনেকটাই বাদ পড়েছে এবং ইরানের ক্ষেত্রে, ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে ব্রাসেলসের ভূমিকা আগের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যারা একসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমানভাবে একটি বিশ্বশক্তি হয়ে উঠতে চেয়েছিল, এখন আন্তর্জাতিক ঘটনাবলীর ব্যাপারে তারা আগের চেয়ে অনেক বেশি দূরে আছে। ISNA-এর বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, নিরাপত্তা ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরতা এবং এর সদস্যদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে ইইউ'র বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে "একক ইউরোপ"-এর স্বপ্ন আগের চেয়ে অনেক বেশি ম্লান হয়ে গেছে।

"ডোনাল্ড ট্রাম্প" হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার সাথে সাথে, এই প্রক্রিয়াটি আরও গতি পেয়েছে। "আমেরিকা ফার্স্ট" এমন স্লোগান এবং "শক্তির মাধ্যমে শান্তি" নীতির উপর ভিত্তি করে ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতি, ইউরোপের স্বাধীন ভূমিকা অনেক ক্ষুন্ন করেছে। জো বাইডেনের অধীনে পূর্ববর্তী মার্কিন প্রশাসন আন্তঃআটলান্টিক সহযোগিতা জোরদার করার উপর জোর দিলেও, বর্তমান প্রশাসন কার্যত ভিন্ন পথ অবলম্বন করেছে এবং এমনকি ওয়াশিংটনের ইউরোপীয় মিত্রদের অনেক বৈশ্বিক সমীকরণ থেকে বাদ দিয়েছে।

শার্ম আল-শেখ অপমান

এই পরিবর্তন বোঝা যায়, গাজা বিষয়ক শার্ম আল-শেখ শীর্ষ সম্মেলনে ট্রাম্পের আচরণে দেখে, যেখানে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারসহ ইউরোপীয় নেতাদের সাথে তার বৈঠক কেবল আনুষ্ঠানিক ছিল না, বরং ইউরোপের প্রতি রাজনৈতিক অবজ্ঞার স্পষ্ট বার্তাও বহন করছিল। "ফরেন পলিসি" ম্যাগাজিন এ সংক্রান্ত বিশ্লেষণে লিখেছে যে এই নাটকীয় আচরণের মাধ্যমে, ট্রাম্প আসলে বিশ্বব্যাপী ঘটনাবলীতে "ইউরোপীয় প্রভাবের সীমা" চিত্রিত করেছেন। এ ছাড়া ইউরোপ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও মঞ্চ ছেড়ে দিয়েছে। গাজা সংকটে, ওয়াশিংটনই উদ্যোগের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং ইউরোপীয়রা কেবল পর্যবেক্ষক বা দর্শকের ভূমিকায় আছে।

ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে স্ন্যাপব্যাক সক্রিয়  করা এবং ইউরোপের ভূমিকা পালনের সমাপ্তি

এই নিষ্ক্রিয়তা ইরানের ক্ষেত্রেও স্পষ্ট। ইউরোপীয়রা "স্ন্যাপব্যাক" প্রক্রিয়া সক্রিয় করার মতো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পারমাণবিক আলোচনায় তাদের মিথস্ক্রিয়া এবং ভূমিকা পালনের পথ কার্যকরভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। এমন সময় ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয় যখন তিনটি ইউরোপীয় দেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপে, স্ন্যাপব্যাক বাস্তবায়ন করেছে এবং এই ক্ষেত্রে, তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীর চেয়ে নির্বাহী ভূমিকা বেশি পালন করেছে। ইরান আরও ঘোষণা করেছে যে স্ন্যাপব্যাক বাস্তবায়নের মাধ্যমে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে ভবিষ্যতে আর কোনও ভূমিকা রাখতে পারবে না।

ইউক্রেন যুদ্ধ

ইউরোপীয় মহাদেশে যুদ্ধের প্রত্যাবর্তন বা ইউক্রেনের সংঘাতের মতো আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতেও, ইউরোপীয় নেতারা স্বাধীন উদ্যোগ গ্রহণের পরিবর্তে ওয়াশিংটনের নির্দেশের অপেক্ষায় থাকে। ইউরোপ এমন একটি পরিস্থিতিতে রয়েছে যেখানে তারা আগের চেয়েও বেশি বৈশ্বিক ঘটনাবলী থেকে ছিটকে পড়েছে।  অভ্যন্তরীণ বিরোধ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নিরাপত্তা নির্ভরতা এবং একটি সুসংগত বৈদেশিক নীতি কৌশলের অভাব এই মহাদেশটিকে একটি নিষ্ক্রিয় খেলোয়াড়ে পরিণত করেছে।#

পার্সটুডে/এমআরএইচ/২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।