ব্রিকসের উদ্দেশ্য কী; বিশ্ব ব্যবস্থাকে ভাঙা নাকি নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা
https://parstoday.ir/bn/news/world-i153746-ব্রিকসের_উদ্দেশ্য_কী_বিশ্ব_ব্যবস্থাকে_ভাঙা_নাকি_নতুনভাবে_সংজ্ঞায়িত_করা
পার্সটুডে- পশ্চিমা আধিপত্যের দুর্বলতা ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ব্রিকস উদীয়মান শক্তিগুলোর একটি জোট হিসেবে বর্তমান বৈশ্বিক ব্যবস্থাকে উল্টে দিতে নয়, বরং তাতে সংশোধন আনতে ও সেটাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে চায়। আর এর ভিত্তি হবে বহুপাক্ষিকতা, ন্যায়বিচার ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা।
(last modified 2025-11-28T10:09:50+00:00 )
নভেম্বর ০৬, ২০২৫ ১৬:৩৯ Asia/Dhaka
  • ব্রিকসের উদ্দেশ্য কী; বিশ্ব ব্যবস্থাকে ভাঙা নাকি নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা

পার্সটুডে- পশ্চিমা আধিপত্যের দুর্বলতা ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ব্রিকস উদীয়মান শক্তিগুলোর একটি জোট হিসেবে বর্তমান বৈশ্বিক ব্যবস্থাকে উল্টে দিতে নয়, বরং তাতে সংশোধন আনতে ও সেটাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে চায়। আর এর ভিত্তি হবে বহুপাক্ষিকতা, ন্যায়বিচার ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা।

আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তন ও পশ্চিমা আধিপত্যের প্রভাব কমে যাওয়ার এই সময়টিতে ব্রিকস উদীয়মান শক্তিগুলোর ঐক্যের প্রতীকী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। চীন, রাশিয়া, ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইরানকে গঠিত সংস্থাটি চেষ্টা করছে সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে বিশ্ব ব্যবস্থাকে সংশোধিত রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে যেখানে একাধিপত্যের স্থান নেই।

পার্সটুডে'র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিকস প্রচলিত ধারণার মতো "পশ্চিমা বিরোধী" কাঠামো নয়; বরং এর লক্ষ্য বর্তমান বৈশ্বিক ব্যবস্থার সংস্কার ও পুনর্গঠন। এই জোট মনে করে, পশ্চিমা বিশ্ব নিজেই একতরফা ও দ্বিচারিতার  মাধ্যমে বিশ্বকে বড় ধরণের হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। এর উদাহরণ দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতিতে, যা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নীতির পরিপন্থী, কিংবা ইহুদিবাদী ইসরায়েল ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কিছু দেশের আচরণ এই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে বৈধতাকেও দুর্বল করে দিয়েছে।

এর বিপরীতে, ব্রিকস "আন্তর্জাতিক আইন" ও "জাতিসংঘ সনদ"-এর ভিত্তিতে বিশ্ব ব্যবস্থাকে সুশৃঙ্খল রাখার ওপর জোর দেয়। রাশিয়া ও চীনের নেতারা বহুবার বলেছেন, ভবিষ্যতের ব্যবস্থা হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত ও বহুপক্ষের মতামতের ভিত্তিতে।

এই জোট পশ্চিমা নব্য ঔপনিবেশিক মডেলগুলোকে প্রত্যাখ্যান করে "সমান অংশীদারিত্ব" ও "রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা"-কে সহযোগিতার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, ব্রিকস এমন এক উন্নয়ন মডেল প্রচার করছে, যা কোনো রাজনৈতিক শর্ত ছাড়াই অর্থায়নের সুযোগ দেয়। এ লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে ব্রিকস উন্নয়ন ব্যাংক, যার মাধ্যমে সদস্য ও সহযোগী দেশগুলোকে রাজনৈতিক চাপ ছাড়াই অর্থায়ন করা সম্ভব হবে।

ব্রিকস বিকল্প আর্থিক ও বাণিজ্যিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার ধারণা দিচ্ছে, যাতে পাশ্চাত্য-নির্ভর কাঠামো যেমন ‘সুইফট’-এর বিকল্প তৈরি হয় এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিকে রাজনৈতিক চাপের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতা বন্ধ করা যায়।

কাজেই ব্রিকস বৈশ্বিক ব্যবস্থা বা শৃঙ্খলা ভাঙতে নয়, বরং সেটাকে আরও ন্যায়সঙ্গত ও টেকসইভাবে বিকশিত করতে চায়।#

পার্সটুডে/এসএ/৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।