ইরান কেন সুদানের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করে?
https://parstoday.ir/bn/news/world-i153898-ইরান_কেন_সুদানের_সার্বভৌমত্ব_এবং_আঞ্চলিক_অখণ্ডতাকে_সমর্থন_করে
পার্সটুডে-সুদানের সার্বভৌমত্বের প্রতি তেহরানের সমর্থনের ওপর জোর দিয়েছেন ইরানের রাষ্ট্রদূত।
(last modified 2025-11-11T14:44:42+00:00 )
নভেম্বর ১০, ২০২৫ ২০:১৭ Asia/Dhaka
  • সুদানে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হাসান শাহ হোসেইনি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন সালেমের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন
    সুদানে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হাসান শাহ হোসেইনি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন সালেমের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন

পার্সটুডে-সুদানের সার্বভৌমত্বের প্রতি তেহরানের সমর্থনের ওপর জোর দিয়েছেন ইরানের রাষ্ট্রদূত।

পার্সটুডে জানায়, সুদানে নিযুক্ত ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত হাসান শাহ হোসেইনি ৯ নভেম্বর রবিবার পূর্ব সুদানের বন্দর নগরী পোর্ট সুদানে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন সালেমের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন এবং সুদানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি তেহরানের সমর্থনের ওপর জোর দিয়েছেন।

বৈঠকে শাহ হোসেইনি দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে সুদানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচির লিখিত বার্তা হস্তান্তর করেছেন। তিনি সুদানের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের দৃঢ় অবস্থানের ওপর জোর দিয়েছেন এবং বিদেশী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়েছেন।

ইরানের রাষ্ট্রদূত জোর দিয়ে বলেন, ইরান সুদানের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং উত্তর দারফুরের ফাশির শহরে বিদ্রোহী মিলিশিয়াদের দ্বারা সংঘটিত নৃশংস ও নির্মম সন্ত্রাসী অপরাধের নিন্দা জানায়। শাহ হোসেইনি বলেন যে ইরান সুদানে এই জঘন্য কর্মকাণ্ডের সকল স্তরে নিন্দা জানিয়েছে।

বৈঠকে সুদানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুহিউদ্দিন সালেমও সুদানকে রক্ষা করার জন্য ইরানের সরকার এবং জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন যে ইরানের সাথে সুদানের সম্পর্ক ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক।

এর আগে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ি সুদানের উত্তর দারফুরের কেন্দ্রস্থল ফাশির শহরে সশস্ত্র সংঘর্ষের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি অবকাঠামো ধ্বংস এবং শহরের নিরীহ মানুষ হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন। বাকায়ি আরও বলেছেন: আমরা বিশ্বাস করি যে সুদান এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যে-কোনো হস্তক্ষেপ কেবল সেই দেশগুলোর জন্যই নয় বরং সমগ্র অঞ্চলের জন্যই বিরাট ক্ষতির কারণ হবে।

২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতা নিয়ে আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী এবং মোহাম্মদ হামদান দাকলু (হামিদাতি) এর নেতৃত্বে র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে উত্তেজনা এবং র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সকে সেনাবাহিনীতে কীভাবে একীভূত করা যায় তা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল সুদানে গৃহযুদ্ধের এক নতুন দফা শুরু হয় এবং এর অবসানের জন্য আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা এখনও পর্যন্ত নিষ্ফল হয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান সুদান সহ আফ্রিকার দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করেছে। তেহরান সুদানের সার্বভৌমত্বকে সমর্থন করে স্বাধীন আফ্রিকার দেশগুলোর সাথে সংহতি দেখানো, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করা এবং বিদেশী হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার মতো ভূমিকা পালন করেছে। সুদানের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করা এই আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নীতির অংশ যা বেশ কয়েকটি লক্ষ্য রয়েছে:

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করা:

ইরান ও সুদানের কর্মকর্তাদের মধ্যে কূটনৈতিক বৈঠকে, সুদানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে ইরানি রাষ্ট্রদূতের বৈঠকসহ, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বিকাশের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই সম্পর্কগুল আফ্রিকায় ইরানের প্রভাব বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে।

বিদেশী হস্তক্ষেপ মোকাবেলা:

ইরান সবসময় স্বাধীন দেশগুলোতে পশ্চিমা শক্তির সামরিক ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছে। অভ্যন্তরীণ সংঘাত এবং আন্তর্জাতিক চাপসহ বহিরাগত হুমকির বিরুদ্ধে সুদানকে সমর্থন করা এই নীতিরই অংশ।

মুসলিম ও নিপীড়িত দেশগুলোর সাথে সংহতি:

সুদান একটি মুসলিম দেশ যার অভ্যন্তরীণ সংঘাত এবং বহিরাগত চাপের ইতিহাস রয়েছে। ফাশিরের মতো শহরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে ইরান তার মানবিক ও ইসলামী সংহতি প্রদর্শনের চেষ্টা করেছে।

সামগ্রিকভাবে, সুদানের সার্বভৌমত্বের প্রতি তেহরানের সমর্থন কেবল একটি কূটনৈতিক পদক্ষেপ নয় বরং দেশগুলোর স্বাধীনতা জোরদার, পশ্চিমা প্রভাব মোকাবেলা এবং ইসলামী বিশ্ব ও আফ্রিকার সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ইরানি সামষ্টিক নীতিরও অংশ।#

পার্সটুডে/এনএম/১০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।