ট্রাম্পের ‘ক্ষমার অর্থনীতি’ কি রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ানোর নতুন হাতিয়ার?
-
ডোনাল্ড ট্রাম্প
পার্সটুডে : একটি মার্কিন গণমাধ্যমের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপক মাত্রায় ক্ষমা প্রদানকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছেন।
'দ্য নিউইয়র্কা'র এক বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদনে ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফা শাসনামলের ক্ষমা প্রদানের নতুন ও নজিরবিহীন দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করে লেখা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নতুন মেয়াদের প্রথম এক বছরেরও কম সময়ে প্রায় দুই হাজার ক্ষমা ও শাস্তি-লঘুকরণ আদেশ জারি করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ক্ষমা ক্ষমতার সবচেয়ে ব্যাপক রাজনৈতিক ব্যবহার।
ইরনার বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, ইংরেজি ভাষার গণমাধ্যম 'দ্য নিউইয়র্কা'র লিখেছে, ট্রাম্প ক্ষমা আবেদন তদারকি দপ্তরের প্রধানকে বরখাস্ত করে নিজের অতি ঘনিষ্ঠদের নিয়োগ দিয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন। সমালোচকরা এটিকে “ক্ষমার অর্থনীতি” (Economy of Pardon) নাম দিয়েছেন। এই ব্যবস্থায় রাজনৈতিক সংযোগ, লবিং অথবা নির্বাচনী প্রচারণায় সহায়তার বিনিময়ে ব্যক্তিরা বড় ধরনের ক্ষমা পাচ্ছেন।
২০২০ সালের নির্বাচনের ফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টায় অভিযুক্ত ট্রাম্পের রাজনৈতিক মিত্র, ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হামলার অভিযুক্তরা এবং কয়েকজন পরিচিত অর্থনৈতিক ব্যক্তিত্ব—এরাই নতুন ক্ষমা তালিকার অংশ।
নিউইয়র্কার লিখেছে, এর মধ্যে কিছু ক্ষমায় স্পষ্ট আর্থিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থ জড়িত। উদাহরণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছে সাবেক বিন্যান্স সিইও'র ক্ষমা। কেউ কেউ আবার হোয়াইট হাউসের কাছের লবিস্টদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ক্ষমা প্রক্রিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করছেন।
এই মার্কিন গণমাধ্যম আরও জানিয়েছে, রিপাবলিকানদের মধ্যে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছে। ফলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, ক্ষমা আদেশের মাধ্যমে ট্রাম্প নিজের অনুগত ভক্ত ও মিত্রদের মধ্যে রাজনৈতিক অবস্থান মজবুত করছেন।
নিউইয়র্কার আরও লিখেছে, এই ধরনের প্রবণতা ছড়িয়ে পড়লে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে তীব্র সমালোচনা বাড়ছে। বিরোধীরা সতর্ক করছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে “দ্বৈত বিচার ব্যবস্থা” তৈরি হতে পারে—যেখানে প্রেসিডেন্টের কাছের লোকেরা রাজনৈতিক ছাড় পাবেন এবং দেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রথম মেয়াদের পুরো চার বছরে মাত্র ২৩৮টি ক্ষমা ও শাস্তি হ্রাস করেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর এক বছরেরও কম সময়ে তিনি প্রায় দুই হাজার ক্ষমা আদেশ জারি করেছেন।#
পার্সটুডে/এমএআর/২০