প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সতর্ক করে কলম্বিয়া: উত্তেজনার নতুন অধ্যায় কি শুরু হয়েছে?
-
ডানে:কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো বামে: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তার দেশের সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ না করার জন্য সতর্ক করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন বলেছিলেন যে কোনো দেশ আমেরিকায় মাদক পাচার করবে তার ওপর আক্রমণ করা হবে-তার প্রতিক্রিয়ায় কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এ সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন।
মঙ্গলবার কলম্বিয়ার কথা উল্লেখ করে ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাবে গুস্তাভো পেট্রো সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন: "আমাদের সার্বভৌমত্বকে হুমকি দেবেন না, কারণ আপনি জাগুয়ারকে জাগিয়ে তুলবেন। আমাদের সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ করার অর্থ যুদ্ধ ঘোষণা।" ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেননি যে আমেরিকা কলম্বিয়া আক্রমণ করবে, তবে মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য স্থল আক্রমণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি দেশটির নাম উল্লেখ করেছিলেন।
ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছিলেন: "যদি পাচারকারীরা কোনও নির্দিষ্ট দেশ বা কোনও দেশের মধ্য দিয়ে আসে,অথবা যদি আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাই যে তারা ফেন্টানাইল বা কোকেনের কারখানা তৈরি করছে, তবে তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হবে।" আমি শুনেছি যে কলম্বিয়া কোকেন তৈরি করে। তাদের কোকেনের কারখানা রয়েছে। যে কেউ এটি করে এবং আমাদের দেশে বিক্রি করে তার উপর আক্রমণ করা হবে।
জবাবে, পেট্রো ট্রাম্পকে কলম্বিয়ায় আমন্ত্রণ জানান যাতে তিনি মাদক পাচার ব্যাহত করার জন্য দেশটির প্রচেষ্টা প্রত্যক্ষভাবে দেখতে পারেন। পেট্রো বলেন: "যদি এমন কোনও দেশ থেকে থাকে যারা উত্তর আমেরিকায় হাজার হাজার টন কোকেন ব্যবহার বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছে, তবে তা হল কলম্বিয়া।" তিনি ঘোষণা করেন যে তার সরকার এখন পর্যন্ত আঠারো হাজারেরও বেশি মাদক উৎপাদন কেন্দ্র ধ্বংস করেছে, হাজার হাজার টন কোকেন মার্কিন বাজারে পৌঁছাতে বাধা দিয়েছে।
মাদক পাচার মোকাবেলার অজুহাতে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনা সম্পর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতি গুস্তাভো পেট্রোর প্রতিক্রিয়া হল যে তার দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি যেকোনো হুমকি যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে এই ধরনের পদক্ষেপ কেবল বোগোটা এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে দুই শতাব্দী পুরনো কূটনৈতিক সম্পর্ককেই ধ্বংস করবে না, বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও গুরুতর পরিণতি ডেকে আনবে।
কলম্বিয়ার রাষ্ট্রপতির মন্তব্য দেখায় যে ল্যাটিন আমেরিকান দেশটি বহিরাগত হুমকির বিরুদ্ধে তার স্বাধীনতা এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব বজায় রেখে মাদক পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার ভূমিকা তুলে ধরার চেষ্টা করছে। পেট্রোর সতর্কীকরণ একটি রাজনৈতিক বার্তাও বহন করে: মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অজুহাতে কলম্বিয়া বিদেশী সামরিক হস্তক্ষেপ মেনে নিতে প্রস্তুত নয়।
একই সাথে, এই মৌখিক বিবাদ দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। মাদকের ইস্যুতে কলম্বিয়া-আমেরিকান সম্পর্ক সবসময়ই প্রভাবিত হয়েছে, কিন্তু এবার ট্রাম্পের হুমকির সুর এবং পেট্রোর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় যে সংকটটি এক নজিরবিহীন পরিস্থিতির দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে। যদি ওয়াশিংটন তার অবস্থানে অটল থাকে, তাহলে আমরা সম্ভবত সম্পর্কের শীতলতা এবং এমনকি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা হ্রাস দেখতে পাব।#
পার্সটুডে/এমবিএ/৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।