ফিফা শান্তি পুরস্কার: ট্রাম্পকে সত্যি সম্মানিত করা হলো নাকি এটা তোষামোদি?
-
ফিফা শান্তি পুরস্কার: ট্রাম্পকে সত্যি সম্মানিত করা হলো নাকি এটা তোষামোদি?
পার্সটুডে- ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে "শান্তি পুরস্কার" দিয়ে নয়া পুরস্কার চালু করেছে এই সংগঠন। এই সিদ্ধান্ত তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ফিফার এই সিদ্ধান্তকে ট্রাম্পের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং অনেকেই এটিকে স্পষ্ট তোষামোদ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসি'র জন এফ কেনেডি সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টস ক্রীড়া ও রাজনৈতিক প্রদর্শনীর এক মঞ্চে পরিণত হয়। ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের চূড়ান্ত ড্র অনুষ্ঠানে একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফিফার নতুন 'শান্তি পুরস্কার' দেওয়া হয়, যা সঙ্গে সঙ্গেই তীব্র বিতর্কের জন্ম দেয়। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে যৌথভাবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে।
এই নতুন পুরস্কারের আনুষ্ঠানিক নাম হচ্ছে "ফিফা পিস অ্যাওয়ার্ড – ফুটবল বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করে"। ফিফা সভাপতি জিয়ানি ইনফান্তিনো প্রশংসায় ভরা হাসি নিয়ে ট্রাম্পের গলায় সোনার মেডেল পরিয়ে দিয়ে বলে, “এই সুন্দর মেডেলটি আপনি যেকোনো স্থানে পরতে পারেন।” ট্রাম্পও খুব খুশি হয়ে
ফিফা বলেছে, এই পুরস্কার প্রতি বছর এমন ব্যক্তিদের দেওয়া হবে যারা “বিশ্বে শান্তি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠায় অসাধারণ ভূমিকা রাখেন।”
অনেকে এই পুরস্কারকে প্রকৃত সম্মান প্রদান নয়, বরং ২০২৬ বিশ্বকাপকে সফল করার লক্ষ্যে ট্রাম্পকে খুশি রাখার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, এটা স্পষ্ট চাটুকারিতা।
ফিফা এমন একটি সংস্থা যা ঐতিহ্যগতভাবে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা প্রদর্শনের দাবি করে থাকে। এই সংস্থাটি এই পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে সরাসরি রাজনীতির মাঠে পা রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মানবাধিকার কর্মীসহ বহু বিশ্লেষক এটাকে হালকা, তুচ্ছ ও অনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ট্রাম্পকে শান্তি পুরস্কার দেওয়াকে কেউ কেউ ঐক্যের প্রতীক নয়, বরং রাজনীতি ও খেলাধুলার বিরল মিশ্রণের একটি স্পষ্ট নমুনা হিসেবে দেখছেন। ট্রাম্প ব্যক্তিগত পুরস্কারের তালিকায় নতুন আরেকটি মেডেল যোগ করলেন, কিন্তু ফিফা এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নিজের স্বাধীনতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্নের মুখে পড়ল।
এই বার্ষিক পুরস্কার কি ক্রীড়া- কূটনীতির হাতিয়ার হয়ে উঠবে, নাকি রাজনৈতিক দুর্নীতির প্রতীক?—এ প্রশ্নের উত্তর ভবিষ্যতে ফিফার আচরণই দেবে।
তবে যে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যায় তাহলো- এই ঘটনা ফুটবলের মাঠ থেকে শুরু হলেও তা বিশ্ব রাজনৈতিক অঙ্গনের আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে আরও একবার প্রমাণিত হয়েছে, ক্রীড়াঙ্গনকে রাজনীতিমুক্ত হিসেবে দাবি করা হলেও সেখানে রাজনীতি সবসময় সক্রিয় থাকে।#
পার্সটুডে/এসএ/৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।