ইউক্রেন যুদ্ধ: পুতিনের অভিযোগ, ইউরোপের সঙ্গে আমেরিকার দূরত্ব বৃদ্ধি
-
ইউক্রেন যুদ্ধ: পুতিনের অভিযোগ, ইউরোপের সঙ্গে আমেরিকার দূরত্ব বৃদ্ধি
পার্সটুডে- ইউক্রেন সংকট একটি সংবেদনশীল পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার দ্রুত রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনার দিকে এগোচ্ছে অথচ ইউরোপ রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, যদিও এ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতিকে স্বাগত জানালেও এই অভিযোগ করেছেন যে, পশ্চিমারাই তার দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে। জার্মানি নিজেকে কিয়েভের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার গ্যারান্টর হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
এসব পরিবর্তন শান্তি আলোচনায় ক্ষমতার ভারসাম্যকে আরও জটিল করে তুলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ; প্রস্তাবিত প্যাকেজ ও পুনর্গঠন পরিকল্পনা
সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেন সংকট সমাধানের জন্য একটি শক্তিশালী প্যাকেজ প্রস্তুত করেছে এবং শিগগিরই তা রাশিয়ার কাছে উপস্থাপন করতে চায়। পলিটিকো জানিয়েছে, ২০ থেকে ২১ ডিসেম্বর মিয়ামিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্টিভেন উইটকফ ও জ্যারেড কুশনার এবং রাশিয়ার কিরিল দিমিত্রিয়েভের উপস্থিতিতে আলোচনা হতে পারে। এ অবস্থায় কিয়েভের স্বার্থে যায় এমন কোনো চুক্তির সম্ভাবনাকে কম বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন পুনর্গঠন প্রকল্পের লাভের ৫০ শতাংশ দাবি করছে, যা উইটকফ ও কুশনারের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ইউরোপের ওপর চাপ বাড়িয়েছেন যাতে রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ ইউক্রেনকে ঋণ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়—যা ব্যাপক উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।
পাশ্চাত্যের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অভিযোগ
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে উত্তেজনা বাড়ানো এবং রাশিয়াকে ধ্বংসের চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, যদি ২০২২ সালে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতেন, তবে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। একই সঙ্গে পুতিন নতুন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়ে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেন।
শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে ফাটল
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার সম্পদে হাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শান্তি প্রতিষ্ঠার গঠনমূলক প্রচেষ্টাকে দুর্বল করছে। হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিয়ার্তো ইউরোপের “সামরিক পক্ষপাতিত্বের” সমালোচনা করে বলেন, ব্রাসেলস রাশিয়া–যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় বাধা সৃষ্টি করছে। চীনও রাশিয়ার সম্পদ ব্যবহারের বিরোধিতা করেছে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস বলেন, যুদ্ধবিরতির পর ইউক্রেনের নিরাপত্তার গ্যারান্টর হওয়া উচিত বার্লিনের, তবে জার্মান সেনা মোতায়েনের বিষয়ে তিনি নীরব থাকেন।
সবশেষে এটা বলা যায়, চলমান ঘটনাপ্রবাহ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে শান্তি প্রশ্নে গভীর বিভাজনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, কিন্তু অন্যদিকে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে।#
পার্সটুডে/এসএ
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন