সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৬ ২০:২০ Asia/Dhaka
  • মক্কায় আজ শুরু হয়েছে হজের মূল পর্ব পালনের প্রস্তুতি

নিরাপত্তাহীনতার ব্যাপক আশঙ্কা সত্ত্বেও পবিত্র মক্কায় আজ শুরু হয়েছে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতার প্রস্তুতি।

গত বছরের ঈদের দিনের শুরুতে মিনায় সৌদি অব্যবস্থাপনার শিকার হয়ে ভিড়ের চাপে হাজার হাজার হজযাত্রী নিহত হওয়ার ভয়াবহ স্মৃতিকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের হজ। ওই ঘটনায় বিশ্বের বহু দেশের হাজি নিহত হলেও সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নিহত হাজি ছিলেন ইরানের।    
সৌদি সরকার ইরান, সিরিয়া ও ইয়েমেনের  হজযাত্রীদের হজের সুযোগ না দেয়ায় এ বছর হজযাত্রীদের সংখ্যা ব্যাপক হারে কমে গেছে। সিরিয়া ও ইয়েমেনের নাগরিকদের গত বছরও হজ করার অনুমতি দেয়নি সৌদি কর্তৃপক্ষ। এইসব আরব দেশ ও ইরানের নাগরিকদের মধ্য হতে হজ করতে ইচ্ছুক লাখ লাখ  মুসলমানকে হজের মত গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত থেকে বঞ্চিতকারী সৌদি কর্তৃপক্ষ গত বছরের মত এ বছরও হজযাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি কোম্পানির ওপর অর্পণ করেছে বলে নানা সংবাদ মাধ্যম খবর দিয়েছে।

সৌদি সরকারের হিসেব অনুযায়ী আজ পর্যন্ত মক্কায় সমবেত হয়েছেন প্রায় ১৫ লাখ হজযাত্রী। আজ সেখানে তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১০৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট।

হজযাত্রীদের অনেকেই এরিমধ্যে ওমরাহ-হজ বা ছোটো হজ শেষ করেছেন। ছোটো হজ শেষ করার জন্য তারা আগামীকাল বিকাল পর্যন্ত সময় পাবেন। এরপর  আগামীকাল রোববার আরাফাহ দিবসে তারা আরাফাতের ময়দানে কিছু সময় থেকে সন্ধ্যার সময় মিনার দিকে রওনা দেবেন বড় হজের আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে। 
সৌদি সরকার নানা ধরনের বাধা আরোপ করায় ও ইরানি হজযাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষার আশ্বাস না দেয়ায় চলতি বছরের হজে হজযাত্রী না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে ইরানের ইসলামী সরকার।  
মক্কা ও মদিনায় এবং এ দুই পবিত্র শহরে পৌঁছার পথগুলো নিরাপদ থাকলে প্রত্যেক সুস্থ ও আর্থিক সঙ্গতির অধিকারী মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ পালন করা ফরজ বা অবশ্য-পালনীয় কর্তব্য।
গত বছরের হজের সময় মিনায় ভিড়ের চাপে ইরানের অন্তত ৪৬৪ জন হজযাত্রীসহ সারা বিশ্বের প্রায় আড়াই হাজার হজযাত্রী প্রাণ হারান। কোনো কোনো দেশের হিসেব অনুযায়ী নিহত হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫ হাজার বা তারও বেশি। এ ছাড়াও হজ শুরু হওয়ার আগে মসজিদুল হারামের আঙিনায় ক্রেন ভেঙ্গে পড়ার ঘটনায় প্রাণ হারান ১০০’রও বেশি হজযাত্রী। এ ঘটনায়ও নিহত হন ১১ জন ইরানি হজযাত্রী। 
সৌদি সরকার তার প্রাথমিক ঘোষণায় মিনায় ৭৭০ জন হজযাত্রী নিহত হওয়ার কথা ঘোষণা করে। পরে নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকা সত্ত্বেও সৌদি সরকার এ ব্যাপারে মৃতের সংখ্যা যোগ করা বন্ধ করে রাখে। 
গত সোমবার হজবাণীতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামনেয়ী বলেছেন, গত বছরের মিনা ট্র্যাজেডি ও মক্কায় ক্রেন ভেঙে পড়ার দুটি ঘটনার জন্যই সৌদি শাসকরা দায়ী।
হজ ও মক্কা-মদিনার পরিচালনা ইসলামী সম্মেলন সংস্থার মাধ্যমে বা বহু-জাতিক ব্যবস্থাপনায় হওয়া উচিত বলে ইরান দাবি করে আসছে এবং এ ব্যাপারে মুসলিম জাতি ও সরকারগুলোকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে ইসলামী এই দেশটির নেতৃবৃন্দ। #

পার্সটুডে/মু.আ.হুসাইন/১০
 

ট্যাগ