যাকযাকিকে না ছাড়লে বড় আন্দোলনের হুমকি: সংকটের নেপথ্যে আমেরিকা, ইসরাইল ও সৌদি আরব
(last modified Tue, 22 Nov 2016 11:20:02 GMT )
নভেম্বর ২২, ২০১৬ ১৭:২০ Asia/Dhaka

নাইজেরিয়ার বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সমাজ কর্মীরা কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই জেলখানায় আটক প্রখ্যাত মুসলিম নেতা ও আলেম শেইখ যাকযাকির মুক্তির জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তারা হুমকি দিয়ে বলেছেন, লাখ লাখ মানুষের দাবি অনুযায়ী সবার প্রাণপ্রিয় এই ধর্মীয় নেতাকে সরকার যদি আগামী সাত দিনের মধ্যে মুক্তি না দেয় নাইজেরিয়ার সব এলাকাতেই ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়বে। গত কয়েক মাস ধরে সেদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে নাইজেরিয়ার বিভিন্ন প্রদেশ বিশেষ করে কাদুনায় কেন্দ্রীয় সরকারি ভবনের সামনে বহু সংখ্যক মুসলমান শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেছে।

নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী গত সপ্তাহে কাদুনা প্রদেশে ইসলামী আন্দোলনের ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এ ছাড়া, মহানবী হযরত মুহম্মদ (স.)-এর নাতি ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শাহাদাতের চেহলাম বা আরবাইন উপলক্ষে নাইজেরিয়ার মুসলমানরা যখন শোকানুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর সরাসরি গুলি চালায়। ওই হামলায় অন্তত ১০০ মুসলমান নিহত হয়েছে। এসব হামলা ও জুলুমের প্রতিবাদে সেখানকার বহু সংখ্যক মুসলমান সরকার বিরোধী বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

জেলখানায় আটক খ্যাতনামা মুসলিম নেতা ও আলেম শেইখ যাকযাকির ভাই ইয়াকুব বলেছেন, কাদুনা প্রদেশে মুসলমানদের স্থাপনাগুলোর ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার উদ্দেশ্য হচ্ছে নাইজেরিয়ায় ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাস-ঐতিহ্য, স্মৃতি ও চেতনা মুছে ফেলা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নাইজেরিয়ার সীমানা ছাড়িয়ে সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশ জুড়ে ইসলামী আন্দোলনের প্রভাব বিস্তার ও এ সংগঠনের জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চিন্তিত হয়ে পড়েছে নাইজেরিয়ার সরকার ও সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ মহল। তাদের আরো আশঙ্কা আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে জনবহুল দেশ নাইজেরিয়ায় ইসলামী আন্দোলন শক্তিশালী হলে তাদের অনুসারীদের সংখ্যা বহুগুণে বেড়ে যাবে।

বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা গেছে, পাশ্চাত্য বিশেষ করে মার্কিন ঘেঁষা নাইজেরিয়ার  কোনো কোনো কর্মকর্তা সমগ্র ওই মহাদেশে ওয়াশিংটন ও তাদের মিত্রদের অবৈধ স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছে।  সৌদি আরব ও ইসরাইল আশা করছে, নাইজেরিয়ার মতো পদলেহী সরকারকে ব্যবহার করে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে রিয়াদ ও তেলআবিবের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় ওয়াশিংটন তার প্রভাব কাজে লাগাতে পারবে। 

বর্তমানে প্রখ্যাত আলেম শেইখ যাকযাকি প্রায় এক বছর ধরে আটক অবস্থায় রয়েছেন। নাইজেরিয়ার বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সমাজ কর্মীরা মুসলমানদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এবং অবিলম্বে ওই আলেমের মুক্তির দাবি জানিয়েছে  তারা। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও যাকযাকির মুক্তির দাবি জানিয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর নাইজেরিয়ার সেনারা কাদুনা প্রদেশের যারিয়া শহরে ইসলামী আন্দোলনের দফতরে হামলা চালিয়ে শত শত মুসলমানকে শহীদ করে। হত্যাকাণ্ডের পর সেনাবাহিনী তাদেরকে গণকবর দেয়। ১৮ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত নাইজেরিয়ার প্রায় ৫০ শতাংশই হচ্ছে মুসলিম জনগোষ্ঠী।#  

পার্সটুডে/মোঃ রেজওয়ান হোসেন/২২  

 

ট্যাগ