বয়কট ও বিক্ষোভের মধ্যেই আজ শপথ নেবেন ট্রাম্প; কেমন হবে আগামীর পথচলা
(last modified Fri, 20 Jan 2017 12:39:25 GMT )
জানুয়ারি ২০, ২০১৭ ১৮:৩৯ Asia/Dhaka
  • বয়কট ও বিক্ষোভের মধ্যেই আজ শপথ নেবেন ট্রাম্প; কেমন হবে আগামীর পথচলা

আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় আমেরিকার ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন সময় তিনি শপথ নিতে যাচ্ছেন যখন তার নীতি-অবস্থানের বিষয়ে আমেরিকায় ব্যাপক অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। ট্রাম্পকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণার পর থেকেই মার্কিন জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

গত ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে হিলারি ক্লিনটন জয়ী হন। তিনি ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় ৩০ লাখ ভোট বেশি পেয়েছেন। কিন্তু বেশ কয়েকটি বড় অঙ্গরাজ্যে সামান্য ব্যবধানে জয় পেয়ে অধিকাংশ ইলেকটোরাল ভোট করায়ত্ত করে ডোনাল্ড ট্রাম্প অপ্রত্যাশিতভাবে বিজয়ী হন। মার্কিনীদের চোখে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের বৈধতা এখনও প্রশ্নবিদ্ধ। ক্ষমতা গ্রহণের তিন দিন আগে প্রকাশিত এক জনমত জরিপ অনুসারে, ৫৫ শতাংশ আমেরিকান ট্রাম্পের প্রতি বিরোধী মনোভাব পোষণ করেন।

নির্বাচনী প্রচারণার সময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নারীদের সম্পর্কে ট্রাম্পের বৈষম্যমূলক বক্তব্যের কারণে হবু প্রেসিডেন্টের প্রতি মার্কিনীরা আস্থা রাখতে পাচ্ছে না। এ ছাড়া ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ক্ষমতা নিয়ে প্রথম দিনই তিনি ওবামাকেয়ার নামে পরিচিত স্বাস্থ্যবিমা কর্মসূচি বাতিল করবেন। ওবামাকেয়ার বাতিল হলে প্রায় দুই কোটি মার্কিনী স্বাস্থ্যবিমা হারাতে পারেন বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

ট্রাম্প কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বন্দীশিবির বন্ধের বিরোধিতা করেছেন। পাশাপাশি হুমকি দিয়ে রেখেছেন ক্ষমতা নেয়ার পর তিনি তার বিরোধীদের জেলে পাঠাবেন। বিরোধী গণমাধ্যমগুলোকেও এর আগে হুমকি দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। সব মিলিয়ে ট্রাম্প মার্কিন সমাজে এরইমধ্যে বর্ণবাদী ও ফ্যাসিস্ট ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। ট্রাম্পের বিরোধীরা বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি অস্পষ্ট।

তবে বিশ্বসংস্থা হিসেবে জাতিসংঘের ভূমিকা এবং আবহাওয়া, পানি ও পরমাণু বিষয়ক বিভিন্ন চুক্তিকে এড়িয়ে যাওয়ার যে ইঙ্গিত এর আগে ট্রাম্প দিয়েছেন তাতে তার পররাষ্ট্রনীতি আক্রমণাত্মক হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে তিনি মুসলমানদের আমেরিকা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং লাখ লাখ অভিবাসীকে বের করে দেয়ার যে হুমকি দিয়েছেন তা দেশটির একশ্রেণীর মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে।

 আজ অভিষেকের দিনেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিভিন্ন সংগঠন। বিক্ষোভ করবেন নারীরাও। ওয়াশিংটনের পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, নারীদের বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন। নারীদের বিক্ষোভ মিছিলে কয়েক লাখ মানুষ অংশ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া মার্কিন কংগ্রেসের ৬০ জন ডেমোক্রেট সদস্য অভিষেক অনুষ্ঠান বয়কটের ঘোষণা করেছেন।

কংগ্রেসম্যানদের অনুষ্ঠান বয়কটের বিষয়টি বাদ দিলেও অনেকের দৃষ্টিতে দেশটির শীর্ষস্থানীয় শিল্পীদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া ট্রাম্পের জন্য সত্যিই কষ্টকর। অনেকের মতে, আমেরিকার বড় বড় শিল্পী পারফর্ম করতে অপারগতা প্রকাশ করায় অভিষেক অনুষ্ঠানের গুরুত্বই ম্লান হয়ে গেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগেই যেভাবে বিতর্কিত হয়েছেন এবং জনসমর্থন হারিয়েছেন তাতে মনে হচ্ছে আগামীতে তিনি বড় ধরনের সংকটের মুখে পড়বেন। তার আগামীর পথচলা খুব একটা মসৃণ হবে না। বর্তমানে মাত্র ৪০ শতাংশ মার্কিনী ট্রাম্পকে সমর্থন করছেন।#

পার্সটুডে/ সোহেল আহম্মেদ/২০

ট্যাগ