শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত, বিজয়ের পথে রাজাপাকসে
শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপাল্লা সিরিসেনার অংশগ্রহণ ছাড়াই দেশটিতে শনিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠী দায়েশের (আইএস) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি গোষ্ঠী শ্রীলঙ্কার একটি গির্জায় ভয়াবহ বোমা হামলা চালানোর সাত মাস পর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। গত এপ্রিলে চালানো ওই হামলায় অন্তত ২৫০ ব্যক্তি নিহত হয়।
শনিবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০০৯ সালে দেশটির তিন দশকের গৃহযুদ্ধ অবসানের পর এটি শ্রীলঙ্কার তৃতীয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। গত এপ্রিলে গির্জায় বোমা হামলা প্রতিহত করতে ব্যর্থতার জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হওয়ার কারণে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত রয়েছেন।
দেশের কোথাও কোথাও ভোটের দিন সকালে মুসলমানদের ওপর হামলা হলেও শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি নিবন্ধিত ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনের মাহিন্দা দেশপ্রিয় দাবি করেছেন। দেশটির নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এক চতুর্থাংশ ভোট গণনার পর সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোটাবায়া রাজাপাকসে ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন এবং জাগিথ প্রেমাদাসা ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে তাকে অনুসরণ করছিলেন।
রাজাপাকসে ইতোমধ্যে নির্বাচনের জয় দাবি করেছেন এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিত প্রেমাদাসা পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন বলে খবর বেরিয়েছে। তবে সরকারিভাবে ফলাফল নিশ্চিত করা হয়নি।
শনিবার সকালে শ্রীলঙ্কার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জাফনা জেলায় মুসলমানদের বহনকারী একটি গাড়ির বহরে একদল উশৃঙ্খল মানুষ হামলা চালায়। তারা টায়ারে আগুন ধরিয়ে প্রথমে বহরটির গতিরোধ করে এবং এরপর গাড়িগুলোর দিকে গুলিবর্ষণ ও পাথর নিক্ষেপ করে।
শ্রীলঙ্কার পুলিশ দাবি করেছে, পাথরের আঘাতে দুজন নারী আহত হলেও এ হামলায় কেউ নিহত হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।
ব্যালট পেপারে ৩৫ প্রার্থীর দীর্ঘ নামের তালিকা থাকলেও শনিবারের নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোতাভ্য রাজাপাকসে এবং অপর রাজনৈতিক নেতা সাজিত প্রেমাদাসার মধ্যে। রাজাপাকসের ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসের ১০ বছরের শাসনামলে ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সময়ে বহু তামিল নাগরিকের গুম হয়ে যাওয়ার পেছনে গোতাভ্য রাজাপাকসে’কে প্রধান হোতা বলে দায়ী করা হয়। তবে তিনি নিজে দাবি করেন, তিনি ও তার ভাই মিলে তামিলদের বিরুদ্ধে কঠোর না হলে আজ পর্যন্ত তামিল বিদ্রোহের অবসান হতো না।
অন্যদিকে সাজিত প্রেমাদাসা তামিল বিদ্রোহীদের দমন করার জন্য প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের পরিবর্তে তৎকালীন সেনাপ্রধান শরৎ ফনসেকার অবদানকে উল্লেখযোগ্য বলে স্মরণ করেন। তিনি বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ভার ফনসেকার হাতে ন্যস্ত করবেন। প্রেমাদাসা দেশ থেকে দারিদ্র নির্মূল ও জনগণের আবাসিক সুবিধার উন্নতি ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।#
পার্সটুডে/এমএমআই/এআর/১৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।