বোল্টনের অপ্রকাশিত বক্তব্য ফাঁস; ইমপিচমেন্টে আরো বেশি বেকায়দায় ট্রাম্প
(last modified Mon, 27 Jan 2020 13:14:10 GMT )
জানুয়ারি ২৭, ২০২০ ১৯:১৪ Asia/Dhaka
  • বোল্টনের অপ্রকাশিত বক্তব্য ফাঁস; ইমপিচমেন্টে আরো বেশি বেকায়দায় ট্রাম্প

সাবেক মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন আমেরিকার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তীব্র মতপার্থক্যের জের ধরে ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বর মাসে তার পদ থেকে বহিষ্কৃত হন। তখন থেকেই গণমাধ্যমে এই জল্পনা চলছিল যে, ট্রাম্প প্রশাসনের অনেক গোপন অন্যায় ফাঁস করে দেবে বোল্টন। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ার পর সেই মওকাটি পেয়ে গেছেন সাবেক এই নিরাপত্তা উপদেষ্টা।

মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস আজকের সংখ্যায় লিখেছে, বোল্টনের একটি অপ্রকাশিত বইয়ের অংশবিশেষ তাদের হস্তগত হয়েছে যাতে প্রমাণিত হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার শর্তে ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দিতে রাজি হয়েছিলেন।  

বোল্টন তার বইয়ে স্পষ্ট করে লিখেছেন, ট্রাম্প ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে তাকে বলেছিলেন, তিনি ইউক্রেনকে প্রদেয় ৩৯ কোটি ১০ লাখ ডলারের সামরিক সাহায্য বন্ধ করে দেবেন। ট্রাম্প বোল্টনকে আরো বলেন, ইউক্রেন সরকার যদি ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার সম্ভাব্য সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতে রাজি হয় তবেই তিনি এ সহায়তা ছাড়বেন।

মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট; এখানেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভাগ্য নির্ধারিত হতে যাচ্ছে

বোল্টনের এ স্বীকারোক্তির অর্থ হচ্ছে, মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাট দল ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের যে প্রক্রিয়া নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তার পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি ও দলিলপ্রমাণ রয়েছে। ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ গত মাসের শেষদিকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দু’টি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব পাস করেছে। ওই দু’টি অভিযোগ হচ্ছে, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং কংগ্রেসের দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান।

প্রতিনিধি পরিষদ থেকে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে পাঠানোর পর সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সিনেটে প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করছেন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের আইনজীবীরা তাকে সমর্থন করে বক্তব্য রাখছেন। শুনানি শেষে সিনেট সদস্যরা ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট থাকা না থাকার ব্যাপারে ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন।

ট্রাম্পের ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়ার বিষয়টি ইউক্রেন সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে বলে বোল্টনের সর্বসাম্প্রতিক বক্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা হিসেবে কাজ করবে বলে মনে হচ্ছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় আজ বোল্টনের বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ার পর ডেমোক্র্যাট সদস্যরা সাবেক এই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য সিনেটে তলব করার জোর দাবি তুলেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য এতদিন সিনেটে বোল্টনের উপস্থিতির বিরোধিতা করে আসছিলেন। কিন্তু বোল্টন তার অপ্রকাশিত বইয়ে যা বলেছেন তারপর আর তাকে সাক্ষ্য দেয়া থেকে বিরত রাখা যাবে বলে মনে হয় না। #

পার্সটুডে/এমএমআই/২৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।