ম্যাকরনের ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্য ও ফ্রান্সে সহিংসতা: সুযোগ নিচ্ছেন ট্রাম্প
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন বাকস্বাধীনতার অজুহাতে ইসলাম বিদ্বেষীদের প্রতি সমর্থন জানানোয় বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ইউরোপের বৃহত্তম এ দেশটি তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার মুখে পড়েছে।
এরই জেরে গত বৃহস্পতিবার ফ্রান্সে রক্তক্ষয়ী হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। প্রথমে স্থানীয় সময় সকাল নয়টায় নিস শহরে এক সশস্ত্র ব্যক্তি গির্জায় প্রবেশ করে ছুরি দিয়ে বেশ কয়েকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ সেখান থেকে তিনজনের মৃতদেহ এবং আহত অবস্থায় বেশ ক'জনকে উদ্ধার করেছে। এ ঘটনার পর স্থানীয় গণমাধ্যম আরেকটি খবরে জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব ফ্রান্সের অভিনিউ শহরে ছুরি হাতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। এ ছাড়া ওই দিনই লিওন শহরের পুলিশ এক সশস্ত্র ব্যক্তিকে আটক করতে সক্ষম হয় যে কিনা ছুরি দিয়ে হত্যা মিশন বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিল। এদিকে সৌদি আরবের পুলিশ জানিয়েছে, জেদ্দায় অবস্থিত ফরাসি দূতাবাসের প্রহরীর ওপর এক সৌদি নাগরিক ছুরি দিয়ে হামলা চালিয়েছে এবং পরে তাকে আটক করা হয়।
ফ্রান্সে ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসেবে যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তাতে বোঝা যায় ইসলাম বিদ্বেষ অব্যাহত থাকলে বিশেষ করে বাক স্বাধীনতার নামে প্রেসিডেন্টের মতো শীর্ষ ব্যক্তিত্ব যদি বিশ্বনবীকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্রের প্রতি সমর্থন জানায় তাহলে নিশ্চিতভাবে ওই দেশটিতে অবিশ্বাস্য মাত্রায় সহিংসতা বেড়ে যেতে পারে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন সাম্প্রতিক সহিংস পরিস্থিতির জন্য ইসলাম বিদ্বেষীদের ভূমিকার বিষয়টিকে এড়িয়ে গিয়ে কয়েকজন মুসলমানের পক্ষ থেকে হামলার ঘটনাকে ফলাও করে তুলে ধরে বলেছেন, নিজস্ব মূল্যবোধ রক্ষার প্রশ্নে তার কোনো আপোষ করবে না।
এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন বিশ্বনবীকে অবমাননাকারীদের প্রতি সমর্থন দেয়ায় ওই দেশটিতে চরম নিরাপত্তাহীনতা ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ইরানের পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সাইয়্যেদ হাদি বোরহানি বলেছেন, ফ্রান্স অন্যতম একটি বাকস্বাধীনতার দেশ হয়েও সেদেশে ইসলাম বিদ্বেষের ঘটনা ঘটছে। এদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ এক টুইটবার্তায় গত বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের নিস শহরে হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, উগ্রতা উগ্রতাকে ডেকে আনে।
ওদিকে, ইসলাম অবমাননার ঘটনায় যখন ফ্রান্সে উত্তেজনা ও সহিংস ঘটনা ঘটছে তখন কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী ডোনাল্ড ট্রাম্প এ পরিস্থিতির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি ইসলাম ও সন্ত্রাসবাদকে এক করে দেখানোর চেষ্টা করছেন এবং ফ্রান্সে সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাকে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। তিনি এক টুইটবার্তায় বলেছেন, তার ভাষায় ইসলামপন্থীদের সন্ত্রাসী হামলা দ্রুত বন্ধ হতে হবে। একদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেদেশে মুসলমানদের প্রবেশে বাধা দিচ্ছেন অন্যদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাকরনও নিস শহরে হামলার ঘটনাকে ইসলামপন্থীদের কাজ বলে তুলে ধরছেন।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩১