এরদোগানের স্থূল পররাষ্ট্র নীতি তুরস্কের জাতীয় স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত করছে
(last modified Wed, 11 Aug 2021 08:02:44 GMT )
আগস্ট ১১, ২০২১ ১৪:০২ Asia/Dhaka
  • প্রেসিডেন্ট এরদোগান
    প্রেসিডেন্ট এরদোগান

তুরস্কের সামরিক বাহিনীর সাবেক শীর্ষ পর্যায়ের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল তুর্কের এরতুর্ক বলেছেন, প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের সরকার মান্ধাতা আমলের আদর্শের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত এবং জরুরী ভিত্তিতে তুরস্কের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য এই নীতির পরিবর্তন প্রয়োজন।

তুরস্কের সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা ‘দি ক্রাডেল’ নিউজ ওয়েবসাইটকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আরো বলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তুরস্ক তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে, এজন্য প্রেসিডেন্ট এরদোগানের স্থূল পররাষ্ট্রনীতি দায়ী। এরতুর্ক বলেন, "আমি মনে করি এরদোগানের সরকার আজ যে পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করছে তার জন্য আমাদের দেশ, আমাদের অঞ্চল এবং বিশ্বের বহু জায়গা অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।"

রিয়ার অ্যাডমিরাল এরতুর্ক তার ওই সাক্ষাৎকারে আরো বলেছেন, তুরস্কের পররাষ্ট্রনীতিতে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় পরস্পরবিরোধী নীতি রয়েছে যার কারণে তুরস্ক জাতীয় স্বার্থ কেন্দ্রিক অথবা বিজ্ঞানভিত্তিক কোনো নীতি গ্রহণ করতে পারছে না।

সিরিয়ায় মোতায়েন তুর্ক সেনা

সিরিয়া, লিবিয়া এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগর ইস্যুতে তুরস্কের অবস্থান সম্পর্কে সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেন, প্রেসিডেন্ট এরদোগান সিরিয়া থেকে লিবিয়া পর্যন্ত তুরস্কের সেনা এবং প্রক্সি যোদ্ধা পাঠিয়েছেন কিন্তু সিরিয়ায় তার এই কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। লিবিয়ায় তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডের পক্ষে অবস্থান নিয়ে তাকে ‘জাতীয় অভিযান’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এটি কোনো জাতীয় প্রকল্প নয় বরং এটি ছিল সম্পূর্ণভাবে মান্ধাতা আমলের আদর্শের প্রতি সমর্থন দেয়া।

কৃষ্ণ সাগরে আমেরিকার সঙ্গে নৌমহড়ায় তুরস্ক

অ্যাডমিরাল এরতুর্ক পূর্ব ইউরোপ এবং কৃষ্ণসাগর এলাকা সম্পর্কে তুর্কি সরকারের অবস্থান ও মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর সঙ্গে সামরিক মহড়ায় যোগ দেয়া প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, কৃষ্ণসাগরে আমেরিকা কি চায় তুরস্ক তা জানে। আঙ্কারা জানে যে, রাশিয়াকে অস্থিতিশীল করার জন্য তারা এই দেশটিকে ঘিরে ফেলতে চায়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তুর্কি সরকার এই কাজে এগিয়ে গেছে এবং ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়েছে। আমেরিকার আনুকূল্য পাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ইউক্রেনকে ড্রোন সরবরাহ করেছে। এসব প্রত্যেকটি পদক্ষেপ তুরস্কের জাতীয় স্বার্থবিরোধী। তিনি বলেন, তুর্কি সরকার আমেরিকার সাথে অনেক বেশি মাখামাখি করছে যা ভুল নীতি।

আফগানিস্তানে তুর্কি সেনা মোতায়েন রাখা প্রসঙ্গে অ্যাডমিরাল এরতুর্ক বলেন, দেশের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য এরদোগান সেখানে সৈন্যদেরকে মৃত্যুর মুখে পাঠাচ্ছে। আফগানিস্তানে সেনা পাঠানো শেষ কথা নয় বরং তুরস্ক মারাত্মকভাবে প্রতারিত হয়েছেন। আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েন নিয়ে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে কী ধরনের প্রভাব পড়বে এ প্রশ্নে অ্যাডমিরাল এরতুর্ক বলেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক ১৯২০ সালের আগের অবস্থায় চলে গেছে। ফলে চীন এবং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।#

পার্সটুডে/এসআইবি/১১

ট্যাগ