ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২ ১৮:৩২ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ১৩ ফেব্রুয়ারি রোববারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • ইয়েমেনে অপহৃত ৫ জাতিসংঘ কর্মীর একজন বাংলাদেশি-প্রথম আলো
  • এইচএসসির ফল প্রকাশ-পাসের হার ৯৫.২৬ –যুগান্তর
  • মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশে হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়েছে-মানবজমিন
  • আওয়ামী লীগ কি ভারতের কংগ্রেসের পরিণতির পথে যাচ্ছে? -ইত্তেফাক
  • শিগগির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওযা হবে: প্রধানমন্ত্রী-কালের কণ্ঠ

ভারতের শিরোনাম:

  • তৃণমূল-আইপ্যাক সম্পর্ক কি জুড়বে? যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন মমতা নিজে-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • হিজাব পরা মেয়েই একদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবে, দাবি আসাদুদ্দিন ওয়াইসির-আজকাল 
  • সতর্ক করা হলেও ব্যবস্থা নেয়নি কেন্দ্র,দেশের সর্ববৃহৎ ব্যাংক জালিয়াতি নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি কংগ্রেসের– সংবাদ প্রতিদিন

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. সাগর-রুনি হত্যা মামলার চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে র‌্যাব। সংস্থাটি বলছে, মামলাটির তদন্ত এখনো চলছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। কী বলবেন আপনি?

২. সিরিয়ায় হামলা বন্ধ করতে ইসরাইলের প্রতি রাশিয়ার আহ্বান। বিষয়টিতে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

জনাব সিরাজুল ইসলাম আপনাকে আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:

এইচএসসির ফল প্রকাশ, পাশের হার ৯৫.২৬-যুগান্তর

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে।

রোববার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট থেকে এ ফল ঘোষণা করা হয়। গণভবন থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে ফলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ কি ভারতের কংগ্রেসের পরিণতির পথে যাচ্ছে? একথা লেখা হয়েছে আবদুল গাফফার চৌধুরীর মতামত কলামে। ইত্তেফাকে পরিবেশিত এ কলামে লেখা হয়েছে, কলকাতার এক সাংবাদিকের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ হচ্ছিল। তিনি ঢাকার কাগজেও লেখেন এবং মাঝেমধ্যে ঢাকায় আসেন। তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, বাংলাদেশের পরিস্হিতি সম্ব‌ন্ধে কী মনে করেন?

একটু ম্লানকণ্ঠে তিনি বললেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ভারতের কংগ্রেসের রাজনীতির মতো চলছে মনে হয়। এখন আশঙ্কা করছি, আওয়ামী লীগ কংগ্রেসের পরিণতি বহন না করে। কংগ্রেস দুটি বড় ভুল করেছে। একটি দুর্নীতিকে প্রশ্রয়দান এবং অন্যটি ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি বর্জন। আপনার মনে আছে, কংগ্রেস বিজেপির কাছে পরাজিত হওয়ার পর সোনিয়া গান্ধী আবার কংগ্রেসকে ক্ষমতায় এনেছিলেন। তার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। তাতে কংগ্রেস আবার ক্ষমতায় ফিরে আসে। কিন্তু গত নির্বাচনকালে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষতা ত্যাগ করে। রাহুল গান্ধী ঘোষণা করেন, তিনি শিবভক্ত।

সোনিয়া, রাহুল ও  প্রিয়াঙ্কা

মা সোনিয়া গান্ধী ও বোন প্রিয়াংকাকে নিয়ে শিবমন্দিরে ধরনা দিতে শুরু করেন। তার আগে নরসীমা রাও যখন ভারতের কংগ্রেসী প্রধানমন্ত্রী তখন বাবরি মসজিদ ভাঙার ব্যাপারে টুঁ-শব্দটি করেননি। তখন থেকেই মনে হচ্ছিল কংগ্রেস দ্রুত গতিতে তার ১০০ বছরের ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি থেকে সরে আসছে। তার পরিণতি কংগ্রেস আজ আর একটি উল্লেখযোগ্য পার্টি নয়।

যে কংগ্রেস ভারতের স্বাধীনতা ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে অর্জন করেছে, তা থেকে সরে এসে নিজেকে বিজেপির চেয়েও বেশি হিন্দুত্ববাদী দল প্রমাণ করতে গিয়ে আজ তার এই পরিণতি। আগামী নির্বাচনেও কংগ্রেস দিল্লির মসনদে বসতে পারবে কি না সন্দেহ। আমরা যারা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করি, তারা আপনার দেশের আওয়ামী লীগ রাজনীতির দিকেও লক্ষ্য রেখেছি এবং মনে মনে কামনা করছি আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি থেকে যেন সরে না আসে এবং মৌলবাদীদের সঙ্গে হাত না মেলায়।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশে হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়েছে-মানবজমিন

এইচ এসসির ফল প্রকাশ

রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া থেকে শুরু করে জিম্বাবুয়েতে আরোপ করা কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশি অ্যাক্টিভিস্টদের কোনো সন্দেহ নেই যে, দুই মাস আগে যুক্তরাষ্ট্র শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেছে। বিস্তারিত রেকর্ড রাখা মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের মতে, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রায় ২,৫০০ বাংলাদেশি নাগরিক নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত এবং আরও কয়েকশ মানুষ জোরপূর্বক গুম হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, 'অধিকার' গত চার বছরে প্রায় ১,২০০ বা প্রতি মাসে গড়ে ২৫ টি মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করেছে। কিন্তু তাদের মতে, ওয়াশিংটন গত ১০ ডিসেম্বর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং এর সাতজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ম্যাগনিটস্কি অ্যাক্ট এর আওতায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর আর কোনো হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। আট বছর আগে নিখোঁজ এক ব্যক্তির বোন এবং জোরপূর্বক গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার শত শত পরিবারের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন 'মায়ের ডাক' এর সমন্বয়কারী আফরোজা ইসলাম আঁখি বলছিলেন, "এই নিষেধাজ্ঞাটা যদি অনেক আগেই দেওয়া হত, তাহলে অনেকগুলো প্রাণ বাঁচানো যেত"। মার্কসবাদী বিদ্রোহী এবং ইসলামপন্থী চরমপন্থা মোকাবিলার পাশাপাশি মানবপাচার রোধ করার জন্য ২০০৪ সালে র‍্যাব গঠন করা হয়েছিল। র‍্যাব তার লক্ষ্য নির্দয়ভাবে অনুসরণ করলেও এর কর্মকর্তারা একে কার্যকর বলে থাকেন।

অতি সম্প্রতি এর লক্ষ্যবস্তু ছিল মূলত অভিযুক্ত অপরাধী এবং মাদক ব্যবসায়ীরা। কর্তৃপক্ষ জোরালোভাবে জানায় যে, কেবল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বৈধ অপারেশনে গুলি বিনিময়ের সময়ই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

সাগর রুনি হত্যাকাণ্ড

কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, রাজনৈতিকভাবে বিরোধী ব্যক্তিরাও নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মারা গেছেন এবং নিহতদের ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়াকে অগ্রাহ্য করার জন্যই বন্দুকযুদ্ধের আয়োজন করা হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি) এর অন্তত ১৮ জন কর্মীকে র‍্যাব তুলে নিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে আঁখির ভাই সাজেদুল ইসলাম সুমনও ছিলেন।

আঁখি এএফপিকে বলেন, "আমার মা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতিদিন র‌্যাব সদর দফতরে যেতেন কারণ আমরা শুনেছিলাম যে র‌্যাব অফিসাররা তাকে আটক করেছে। কিন্তু ও আর ফিরে আসেনি।"

বাংলাদেশের শীর্ষ মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন 'আইন ও সালিশ কেন্দ্র' এর প্রধান নূর খান লিটন বলছেন, "মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় সরাসরি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মানুষ এতে খুশি এবং অনেকেই কথা বলতে শুরু করেছেন"। অ্যাক্টিভিস্টদের মতে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার প্রায় সকলকেই আটক করার পর গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। রিতা বেগম শেষবারের মতো তার ১৪ বছরের ছেলে রাকিব হাওলাদারকে ২০১৮ সালে পুরান ঢাকার একটি থানায় হাতকড়া পরানো অবস্থায় আটক থাকতে দেখেছিলেন। এর পরের দিন তার বাবা তাকে বলেন যে, মাদক চোরাচালানের দায়ে অভিযুক্ত ছেলেটিকে মারতে মারতে হত্যা করা হয় এবং তারপর গুলি করে দেখানো হয় যে সে গুলি বিনিময়ে মারা গেছে। ওই নারী এএফপিকে বলেন, "তার শরীরের প্রত্যেকটা হাড় ভেঙ্গে দেয়া হয়। তারপর তাকে গুলি করা হয়। আমি কোনো বিচার পাইনি।" তিনি জানান যে, তিনি অভিযোগ দায়েরের চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বলেন "তখন পুলিশ আমার বাড়িতে আসে। তারা আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আমাকে অনেকগুলো কাগজপত্রে সই করিয়ে নেয়। এমনকি তারা আমার মেয়েকে ধর্ষণের হুমকিও দেয়। আমি চাই আমেরিকান নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকুক। আমি চাই না, আর কোনো মা তার সন্তানকে হারাক। অন্য কারো কপাল যেনো আমার মতো না হয়। আমি আমার চোখের মণিকে হারিয়েছি।"

কিছু ক্ষেত্রে র‌্যাব অফিসারদের বিচার করা হয়েছে। ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের দায়ে র‌্যাবের একজন কমান্ডারসহ অন্তত ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে সাধারণত উষ্ণ সম্পর্ক বজায় থাকে। নিরাপত্তা ইস্যুতে সহযোগিতা ছাড়াও বাংলাদেশ প্রায়ই জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ভোট দিয়ে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে সম্পদ জব্দ করা এবং ভিসা না দেওয়া। এগুলো র‌্যাব এবং বর্তমান বা সাবেক র‌্যাব কর্মকর্তাদের উপর আরোপ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক প্রধান বেনজির আহমেদ রয়েছেন যিনি এখন পুলিশ প্রধান হিসেবে কর্মরত। এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এসেছে যখন চীন এশিয়ার অন্যতম এই দরিদ্র দেশটিতে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করছে। এই পদক্ষেপ ঢাকাকে হতবাক করেছে। পররাষ্ট্রসচিব "অসন্তোষ" জানাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করেন।

অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক বাংলাদেশি গবেষক মুবাশ্বার হাসান মনে করেন, নিষেধাজ্ঞাগুলো নিরাপত্তা বাহিনী এবং ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে "ট্যাক্টিকাল স্ট্রাইক" তৈরি করেছে৷ তিনি বলছিলেন, "এর মধ্য দিয়ে পুরো 'সিকিউরিটি এস্টাবলিশমেন্ট'কে নতুন করে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশী কর্মকর্তাদের মধ্যেও উদ্বেগ বেড়ে গেছে যাদের কাছে অবসর গ্রহণের পর এবং প্রশিক্ষণের জন্য পশ্চিমা বিশ্ব জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল"।

তিনি উল্লেখ করেন যে, বাইডেন প্রশাসন সে সমস্ত সরকারগুলোর সাথে যুক্ত ব্যবসাকে লক্ষ্যবস্তু করতে শুরু করেছে যেগুলো তাদের ভাষায় চীনের মতো মানবাধিকারকে দমন করে। তিনি বলেন, "ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে যুক্ত অনেক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।"

মন্তব্যের জন্য র‌্যাব এবং পুলিশের কাছে এএফপি বারবার অনুরোধ করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ একথা অস্বীকার করে যে দেশটির কর্মকর্তারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা জোরপূর্বক গুমের সঙ্গে জড়িত।

তবে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান বলেন: "আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা সংস্থাগুলোতে কর্মরত ব্যক্তিদের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা একটি শিক্ষা। সম্ভবত কেউই এর পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় না।"

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

হিজাব পরা মেয়েই একদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবে, দাবি আসাদুদ্দিন ওয়াইসির-আজকাল

কর্নাটকের কলেজে হিজাব নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে, যার আঁচ দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। এই আবহেই অল ইন্ডিয়া মজলিশ-এ ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) দলের প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি বলে দিলেন, এক হিজাব পরা মেয়েই একদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবে। আজ একটি ভিডিও টুইট করেছেন ওয়েইসি। কোনও জনসভায় তাঁর বক্তৃতা দেওয়ার ভিডিও সেটি। তাতে তাঁকে বলতে দেখা গেল, ‘যদি আমাদের মেয়েরা বাবা-মাকে বলে যে তারা হিজাব পরতে চায়, তাদের বাবা-মায়েরা সমর্থন দেবেন। তারপর দেখি কে আটকায়।’ এরপরে তাঁর দাবি, হিজাব পরা মুসলিম মেয়েরা কলেজে যাবে, ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর হবে, ম্যাজিস্ট্রেট হবে, ডাক্তার হবে, ব্যবসায়ী হবে। ওয়েইসির কথায়, ‘আমি হয়তো তখন বেঁচে থাকব না, কিন্তু আমার কথা শুনে রাখুন, একদিন হিজাব পরা মেয়েই ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবেন, ইনশাল্লাহ।’ ওয়েইসির এই কথায় জনসভা হাততালি এবং গর্জনে ফেটে পড়ে।

আসাদ উদ্দিন ওয়াইসি

এই ভিডিও এবং বক্তব্য নিয়ে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ওয়েইসিকে প্রশ্ন করেছিল, কিন্তু তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এদিকে তাঁর ভাষণে প্রতিক্রিয়া দিয়ে বিজেপি নেতা তথা উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মা বলেন, ‘বিরোধীরা ষড়যন্ত্র করে উত্তরপ্রদেশে সাম্প্রদায়িকতা ছড়াচ্ছে। সমাজবাদী পার্টির বি-টিম হল এইআইএমআইএম। রাজ্যে এখন উন্নয়নের সুগন্ধ ছড়িয়ে। সাম্প্রদায়িকতার মতো কটু গন্ধের কোনও জায়গা নেই।’  

সংবাদ প্রতিদিনের একটি খবরে লেখা হয়েছে, দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা সামনে এসেছে গতকাল। মোদির রাজ্য গুজরাটের (Gujarat) এবিজি শিপইয়ার্ডের (ABG Shipyard) বিরুদ্ধে ২৮টি ব্যাংকের মোট ২২ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে সিবিআই (CBI) মামলা রুজু করেছে জাহাজ নির্মাণ সংস্থার তিন কর্ণধার ঋষি অগরওয়াল, সন্থানম মুথুস্বামী ও অশ্বিনী কুমারের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এবার কেন্দ্রকে তোপ দাগল কংগ্রেস (Congress)। কংগ্রেসের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন এই সংস্থাকে বিপুল পরিমাণ জমি পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল। কংগ্রেসের দাবি, ২০১৮ সালেই এবিজি শিপইয়ার্ডের দুর্নীতির বিষয়টি নজরে এনেছিল কংগ্রেস। যদিও সেই কথায় আমল দেওয়া মোদি সরকার। 

নয়া বিতর্কের মুখে বিধাননগরের ভোট, শতাধিক অভিযোগ নিয়ে আদালত-চাপ পদ্মের-আনন্দবাজার পত্রিকা

বিধাননগরে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করার দাবিতে আদালতে গিয়েছিল বিজেপি। পাল্টা দাবি জানিয়ে রাজ্য পুলিশেই ভরসা রাখে কমিশন।শনিবার ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে বিধাননগর পুরনিগম এলাকায়। সোমবার ভোট গণনা। সেই সময়ে রাজ্য বিজেপি বিধাননগরের ভোটগ্রহণে অনেক কারচুপি হয়েছে অভিযোগ তুলে আদালতে যেতে পারে। শনিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন বুথে ছাপ্পা ভোট হচ্ছে বলে বিজেপি অভিযোগ তুললেও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে কোথাও পুনর্নিবাচনের দাবি জানায়নি। বরং, কলকাতা হাই কোর্টে নালিশ জানাতে চলেছে।

শনিবারই দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘বিধাননগরের ভোট নিয়ে কমিশনের কাছে আমরা কোনও সুবিচারের আশা করছি না। কেমন ভোট হল তা নিয়ে আমরা আদালতে যাব। কারণ, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোটগ্রহণ হলে তা সুষ্ঠু করার দায়িত্ব দিয়ে যে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতির দায় কমিশনের উপরে বর্তাবে বলে রায় দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট।’’# 

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৩

ট্যাগ