জুন ০৭, ২০২২ ১৮:১৩ Asia/Dhaka
  • বেহুদা প্যাঁচাল-হুদার হুঁশ, ইভিএম এবং চ্যালেঞ্জ

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি বাবুল আখতার শুরু করছি ৭ জুনের মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসর। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, ‘কিছু একটা ঘটেছে’-প্রথম আলো

  • অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: আইজিপি-যুগান্তর
  • ‘সহিংসতামুক্ত, সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করে জাপান’-কালের কণ্ঠ
  • হত্যার হুমকি, পুলিশি পাহারায় কোথায় গেলেন সালমান’-ইত্তেফাক
  • বেহুদা প্যাঁচাল-হুদার হুঁশ, ইভিএম এবং চ্যালেঞ্জ-মানবজমিন

  • বিএনপির অপপ্রচারের জবাব কাজের মাধ্যমে দেবে আ.লীগ : ওবায়দুল কাদের-এনটিভিবিডি অনলাইন

ভারতের শিরোনাম:

  • মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্যের জের, গোয়া থেকে গ্রেপ্তার ইউটিউবার রোদ্দুর রায়-সংবাদ প্রতিদিন
  • বিজেপি নেত্রীর কু-মন্তব্যের জের, তীব্র নিন্দা এবার তালিবান মুখপাত্রেরও!  -আজকাল 
  • তৃণমূল ক্ষমতায় না থাকলে কোনও প্রকল্পও থাকবে না, মমতার বার্তা আলিপুরদুয়ারে-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

জনাব সিরাজুল ইসলাম কথাবার্তার বিশ্লেষণে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি। 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

কথাবার্তার প্রশ্ন (৭ জুন)
১. পুলিশ সদস্যকে কিল-ঘুষি, ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে। ঘটনাটি রাজশাহীতে ঘটেছে। দৈনিক মানবজমিনে প্রকাশিত খবর সম্পর্কে আপনি কি বলবেন?
২. বিমান আটকে দেয়ার ঘটনা ‘জঘন্য, নজিরবিহীন ও অকল্পনীয়’। কয়েকটি দেশ রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে না দেয়ার পর এই কথা বলেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। আসলে ইউক্রেন-রাশিয়া পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:

বেহুদা প্যাঁচাল-হুদার হুঁশ, ইভিএম এবং চ্যালেঞ্জ-মানবজমিন

একি বললেন কে এম নূরুল হুদা? তিনি কি হুঁশে আছেন? হুঁশে থাকলে তো এমনটা বলার কথা নয়। যে ব্যক্তি ইভিএমে ভোটের জন্য রীতিমতো লড়াই করেছেন তিনি কিনা এখন বলছেন, ইভিএমে কিছুটা ত্রুটি আছে! কি সেই ত্রুটি? তার কথা- ইভিএমের ব্যালট ইউনিটকে টেকনোলজির আওতায় আনা যায়নি। এটা কমপ্লেক্সিটির জন্য। এখানেও ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো। প্রশ্ন হলো এ ত্রুটি নিয়ে তিনি কীভাবে ইভিএমে একের পর এক নির্বাচন করে গেছেন। জেনে বুঝে ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও তার ভোট নেয়া কি বৈধ হয়েছে? সাংবিধানিক পদে থেকে তিনি কীভাবে প্রকাশ্যে এমন অবৈধ কাজ করলেন? নিজে জেনে বুঝে এমন কাজ করায় তার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় যে কেউ নিতে পারে। 

মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবিতার একটি লাইন- ‘এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে’ খুব মনে পড়ছে। সিইসি থাকাকালে কে এম নূরুল হুদার অনেক বক্তব্য আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এখন তিনি অবসর সময় কাটাচ্ছেন। এ অবস্থায় শনিবার তার দেয়া বক্তব্য দেশজুড়ে ফের নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এমনিতেই ইভিএম নিয়ে বিতর্ক সেই শুরু থেকেই।

বর্তমান সময়ে এসে এই বিতর্ক এখন তুঙ্গে। সাম্প্রতিক সময়ে ইভিএম নিয়ে মুখ খুলেছেন দুই নির্বাচন কমিশনার। একজন হলেন- নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান। তিনি বলেছেন, ইভিএমের ভুল ধরতে পারলে ১০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার দেয়া হবে। তার এ মন্তব্য নিয়ে খোদ সিইসি কাজী হাবিবুল আওয়ালকেও সাংবাদিকদের সামনে জবাবদিহি করতে হয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ইভিএম প্রস্তুতকারীরা তাদের পণ্য বিক্রি করতে কোনো একসময় এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। এটি একেবারেই আমাদের একান্ত বৈঠকে। তাদের এ বক্তব্যই নির্বাচন কমিশনার হয়তো বলেছেন। কিন্তু এটি আমাদের নিজস্ব বক্তব্য নয়। আমরা এ নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছি। আরও বৈঠক হবে। সিইসি জোর দিয়ে বলেন, ইভিএম নিয়ে আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাইনি। এ আলোচনা শেষ হতে না হতেই নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান মন্তব্য করেন, ইভিএমের বড় চ্যালেঞ্জ গোপন কক্ষের ডাকাত। ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে ডাকাত-সন্ত্রাসী দাঁড়িয়ে থাকাটাই চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ইভিএমে চ্যালেঞ্জ একটাই। এ ছাড়া আর কোনো চ্যালেঞ্জ আমি দেখি না। একটা ডাকাত-সন্ত্রাসী গোপন কক্ষে একজন করে দাঁড়িয়ে থাকে আপনার ভোট হয়ে গেছে চলে যান। দিস ইজ দ্য চ্যালেঞ্জ। 

দেশবাসী আশাবাদী প্রধান দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এক সুরে কথা বলবে। সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আগামী নির্বাচন হবে জমজমাট। এর আগে সব দল মিলে সংকট মোকাবিলায় একটি পন্থা বের করবে। যে পথ দেখাবে আলোর রেখা। যে পথ দেখাবে দেশকে এগিয়ে নেয়ার কৌশল। বিপরীতমুখী অবস্থান থেকে সরে আসবে প্রতিটি রাজনৈতিক দল।

কে এম নূরুল হুদা তার সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইভিএমে নিয়েছেন। সেই নির্বাচন কি সুষ্ঠু হয়েছে? বাহ্যিক চোখে ফকফকা নির্বাচন হলেও অভ্যন্তরে ছিল ডাকাতের থাবা। সেখানকার ভোটাররা দেখেছেন সব। দুটি কেন্দ্রে দেখা যায় ভোট চলছে ঠিকঠাক মতো। আর এ ভোট পড়ছিল স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে। খবর চলে যায় যথাস্থানে। এরপর ডাকাত এসে দাঁড়ায়। ভোটারদের লম্বা লাইন আরও লম্বা হচ্ছে। কিন্তু ধীরগতি। হঠাৎ এ ধীরগতি কেন হলো? এর কারণ উপস্থিত সবাই জেনেছেন। এখানেও প্রশ্ন যে ইভিএম ভোটারদের চাহিদা মেটাতে অক্ষম সেই ইভিএমের ওপর কারও কারও এত দরদ কেন? দেশের ইতিহাসে ইভিএমে এ পর্যন্ত ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ভোটের বেশি কাস্ট হয়নি। ৭০ শতাংশ ভোটারই থেকেছে ভোট দেয়ার বাইরে। যাদের অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট না দিয়ে ফিরে এসেছেন। যে ব্যবস্থা ভোটারদের চাহিদা মেটাতে অক্ষম সেই ব্যবস্থা কেন থাকবে? আর যখন সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদা নিজেই বলছেন ত্রুটির কথা সেখানে তো আর কোনো কথাই থাকে না। কারণ এই ইভিএমকে জিইয়ে রাখতে তাকে বহু কৌশল করতে হয়েছে। দেশবাসীর কাছে বিতর্কিত হতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা থেকে সরে গিয়ে তিনি বললেন, ইভিএমেও গলদ আছে। বলা হয়, রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। এখন দেখছি, সবখানেই একই অবস্থা। 

দুই 

১৯৮২ সালে বাংলাদেশের বরেণ্য রাজনীতিক আব্দুল মালেক উকিলকে বহিষ্কার করা হয় আওয়ামী লীগ থেকে। এর প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। মালেক উকিল সেদিন বলেছিলেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। এর প্রমাণও দিয়েছিলেন খ্যাতনামা এ উকিল। কয়েকদিন পর তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হয়। দলে তিনি ফিরে এসে প্রমাণ করেছেন তার সেই বক্তব্য। এরপর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত উক্তি হয়ে যায়- রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। তাই তো দেখি এরশাদ আমলে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা আ.স.ম রবকে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভার শপথ নিতে। দীর্ঘ পাঁচ বছর তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দাপটের সঙ্গে দাবড়ে বেড়িয়েছেন গোটা দেশ। মন্ত্রী হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকারের গুণগান গেয়েছেন। কিন্তু এখন সেই রব ঘোর আওয়ামী লীগ বিরোধী। একই সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে সরাসরি জেলখানা থেকে সংসদে এনে হাজির করা হয়। যদিও এরশাদকে হটাতে দীর্ঘ দিন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাজপথে যুগপৎ আন্দোলন করেছে। সে সময় হরতাল, বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া এক টেবিলে বসেছিলেন এরশাদবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়েই। আওয়ামী লীগ ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর নির্বাচনে যাওয়াও রাজনীতির সেই কথা মনে করিয়ে দেয়। শেষ কথা বলতে কিছু নেই। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে বিএনপি। ওই সময় বিতর্কিত মাগুরা উপনির্বাচন মোড় ঘুরিয়ে দেয় রাজনীতির। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবিতে জামায়াত মাঠে নামে। একই সঙ্গে একই দাবিতে মাঠে নামে আওয়ামী লীগ। দীর্ঘ দিন রাজপথে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত যুগপৎ আন্দোলন করে। শেষ পর্যন্ত প্রেস ক্লাবের সামনে জনতার মঞ্চ করে দেশকে প্রায় অচল করে দেয়া হয়। তড়িঘড়ি করে বিএনপি সরকার ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচন করে। পরে বিএনপি সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস করে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। পরবর্তী সময়ে জুনে আরেকটি নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। সরকার গঠন করতে গিয়ে জাতীয় পার্টি আর জাসদ (রব)-এর সমর্থন নিতে হয় আওয়ামী লীগকে। যে এরশাদকে দীর্ঘ আন্দোলনে ক্ষমতা থেকে হটানো হয়, সেই এরশাদের দলের সমর্থনেই আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আসলেই রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। যদি থাকতো তাহলে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের আগে তীব্র আন্দোলন ও বিএনপি সরকারের পতনের মূলে যে জামায়াত সেই জামায়াতকে নিয়ে ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে জোট করতো না বিএনপি। আর ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতার অংশীদারও বানাতো না। আর এই জোটের কারণেই চারদলীয় জোটের অন্যতম শরিক হিসেবে জামায়াত পেয়েছিল বিএনপি’র সব ধরনের অনুকম্পা। শুধু তাই নয়, এরশাদের জাপাকেও আনা হয়েছিল এ জোটে। পল্টন ময়দানের অনশন কর্মসূচিতে একমঞ্চে ছিলেন খালেদা-এরশাদ। কিন্তু এ জোট ভেস্তে যায় ২০০১ সালের নির্বাচনের আগেই। ১/১১-এর আগে ঘোষিত নির্বাচনেও জাতীয় পার্টিকে জোটে আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু জোটে না আসায় এরশাদের মনোনয়ন পর্যন্ত বাতিল করা হয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সে নির্বাচন হয়নি। ক্ষমতায় আসে ১/১১ সরকার। জোটের রাজনীতি করতে গিয়ে বিএনপি ফজলুল হক আমিনীর ইসলামী ঐক্যজোটকে দেয়া হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন। এই আমিনীর দলই এখন বিএনপি জোট থেকে অনেকটা দূরে। ২০০৬ সালের না হওয়া নির্বাচনের আগে এরশাদ যোগ দেন আওয়ামী লীগ জোটে। অন্যদিকে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু যোগ দেন বিএনপি জোটে। অথচ এই আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ১৯৯৬ সালে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের পাঁচ বছর যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এখানেই শেষ নয়, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে অংশ নিয়ে ফের আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই বলেই হয়তো মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে ছাড়তে হয়েছিল নিজের হাতে গড়া আওয়ামী লীগ। অথচ ভাসানীই ছিলেন আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। এক সময় বি. চৌধুরী বিএনপি’র দুই নম্বর ব্যক্তি ছিলেন। বেগম জিয়ার পরই দলে তার অবস্থান ছিল। আর বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগের জন্য কিনা করেছেন। দুই জনকেই দল থেকে বেরিয়ে যেতে হয় বেদনাদায়কভাবে। রাজনীতিতে শেষ কথা নেই বলেই হয়তো আগামী নির্বাচনে বিএনপি’র সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে ঐকমত্যের ঘোষণা দিয়েছেন বাম ঘরানার জুনায়েদ সাকি ও সাইফুল হক।  এক সময় আওয়ামী লীগের ঘোর বিরোধী ছিল যারা আজ তারাই আওয়ামী লীগার। তেমনি আওয়ামী লীগের হয়ে সারাজীবন দলের জন্য কাজ করেছেন এমন ব্যক্তিও এখন আওয়ামী লীগের বাইরে। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বিএনপি প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত। বিএনপি সরকারে একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এখন বিএনপি থেকে অনেক দূরে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এরশাদ সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত হয়েছিলেন। এরপর এরশাদের পতনের পর ভিড়েন বিএনপিতে। দেশের আরেক প্রখ্যাত রাজনীতিক মিজানুর রহমান চৌধুরী আওয়ামী লীগ থেকে এরশাদের মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। হন প্রধানমন্ত্রীও। জীবনের শেষ বেলায় তিনিও ফিরে আসেন নিজ ঘর আওয়ামী লীগে। হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, মতিয়া চৌধুরী, লেনিনরা এক সময় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলেছেন। সেই মতিয়া চৌধুরী এক সময় যোগ দেন আওয়ামী লীগে। আর জোটের রাজনীতি করতে গিয়ে হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন আওয়ামী লীগ সরকারের দাপুটে মন্ত্রীও হন। রাজনীতিতে শেষ কথা নেই বলেই হয়তো আমরা এখনো আশাবাদী দেশের রাজনীতি নিয়ে। 

তিন.

হ্যাঁ। দেশবাসী আশাবাদী প্রধান দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এক সুরে কথা বলবে। সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আগামী নির্বাচন হবে জমজমাট। এর আগে সব দল মিলে সংকট মোকাবিলায় একটি পন্থা বের করবে। যে পথ দেখাবে আলোর রেখা। যে পথ দেখাবে দেশকে এগিয়ে নেয়ার কৌশল। বিপরীতমুখী অবস্থান থেকে সরে আসবে প্রতিটি রাজনৈতিক দল। প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করে এর সমাধান হবে। রাজনীতিতে শেষ কথা নেই বলেই এমনটা ভাবছে দেশবাসী। ইতিহাস অবশ্য সাক্ষী দেয়, সব কিছুরই শেষ আছে। দেশের রাজনীতির এ সংকটও শেষ হবে। রাজনীতিবিদরা অবশ্যই এ নিয়ে ভাববেন। এটা যত তাড়াতাড়ি হয় ততই মঙ্গল। আর তা না করে যদি সবাই নিজেরটা ভাবেন তাহলে দেশবাসীর আশা গুড়েবালিতে পরিণত হবে। ওই দুই প্রতিবেশীর মতো। এক প্রতিবেশী নারী তার পাশের বাড়িতে গেছেন। তাকে দেখে খুশি হলেন ওই প্রতিবেশী। দুইজনে মিলে অনেক কথা বললেন। এক পর্যায়ে একজন জিজ্ঞেস করলেন আপা, আপনার মেয়ে কেমন আছে শ্বশুরবাড়িতে? উত্তরে বললেন, আপা দোয়া করবেন। আমার মেয়ে খুব সুখী। জামাইটা এত ভালো যে, আমার মেয়ে যা বলে তাই অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। আমি হ্যাপি মেয়ে জামাইকে নিয়ে। এবার ওই প্রতিবেশী জিজ্ঞেস করলেন, মেয়ের কথা শুনলাম। আপনার ছেলে, ছেলের বউ কেমন? আর বলবেন না আপা। ছেলেটাকে নিয়েই যত সমস্যা। একেবারে বউয়ের কথায় উঠে আর বসে। এমন মনোভাব যদি থাকে তাহলে তো কোনো কথাই নেই। সকল আশাই দুরাশায় পরিণত হবে। 

তৃণমূল ক্ষমতায় না থাকলে কোনও প্রকল্পও থাকবে না, মমতার বার্তা আলিপুরদুয়ারে-আনন্দবাজার পত্রিকা

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে আলিপুরদুয়ার জেলা খালি হাতে ফিরিয়েছে তৃণমূলকে। উত্তরবঙ্গ জুড়ে খারাপ ফল করেছে তৃণমূল। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারের কর্মিসভায় সেই ‘খেদ’ লুকোলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, জনতার এই রায় তিনি মাথা পেতে নিয়েছেন। কিন্তু দুঃখও পেয়েছেন। এমনকি, এও জানালেন রাজ্যে তৃণমূল না ক্ষমতায় থাকলে জনকল্যাণকর প্রকল্পও থাকবে না।

মমতার কথায়, ‘‘লক্ষীর ভান্ডার, দুয়ারে রেশন, বিনা পয়সায় চিকিৎসা কিছুই হবে না। সব নিজেদের করে নিতে হবে।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘এত কাজ করার পরও হারের জন্য দুঃখ পেয়েছি। বিজেপির মিথ্যা কথায় ভুলে কেন উত্তরবঙ্গে জিতে গেল বিজেপি? কী করেছে বিজেপি?’’ এর পর জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, উত্তরবঙ্গের চা বাগান বন্ধ নিয়ে বিজেপিকে একহাত নেন মমতা। গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতেও কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেন। মমতা কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ড করব। বলেছিল কি বলেনি? আমরা তো করতে দেব না। আসলে ভোটের সময় পাহাড়ের সঙ্গে তরাই ডুয়ার্সের ঝগড়া লাগিয়ে দেয় ওরা (বিজেপি)।’’

মমতার আবেদন, তাঁর দলের কোনও নেতার ভুল কাজের জন্য যেন গোটা দলকে কেউ ভুল না বোঝেন। বলেন, ‘‘ভুল বোঝাবুঝি থাকলে আমায় দোষ দিন। কোনও ভুল করলে আমরা সংশোধনও করি। কিন্তু বিজেপিকে বিশ্বাস করবেন না। ওরা ভুয়ো খবর দিয়ে আপনাদের প্রভাবিত করতে চায়।’’

সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, ‘কিছু একটা ঘটেছে’-প্রথম আলো

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পেছনে ‘কিছু একটা ঘটেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই কিছু একটা ঘটেছে, এটা আমার বিশ্বাস। না হলে এতগুলো প্রাণ যায় না।’

আজ মঙ্গলবার পুরান ঢাকায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে অগ্নিনির্বাপণকর্মী শাকিল তরফদারের জানাজা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

কীভাবে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কার গাফিলতি, স্যাবোট্যাজ বা উদ্দেশ্যমূলক কি না জানতে এনকোয়ারি করতে হবে।’

এই দুর্ঘটনার পেছনে ‘পাওয়ারফুল’ কেউ থাকলে শাস্তি হবে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান পাল্টা প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী কোনো দিন কাউকে ছাড় দিয়েছেন? যারই সংশ্লিষ্টতা থাকুক, শাস্তি পেতে হবে।’

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্য মো. রানা মিয়া, মনিরুজ্জামান, আলাউদ্দিন, মো. শাকিল তরফদার, মিঠু দেওয়ান, রমজানুল ইসলাম, নিপন চাকমা, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও মো. ইমরান হোসেন মজুমদার। 

সীতাকুণ্ডে এতজন অগ্নিনির্বাপণকর্মীর প্রাণহানির পর ফায়ার সার্ভিসের আধুনিকায়ন, আরও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন বলে মনে করেন কি না—এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। তিনি বলেন, ‘এখনকার ফায়ার সার্ভিস আগের মতো নয়। এখন তারা আর ঘণ্টি বাজানো বাহিনী নয়, একটি অত্যাধুনিক বাহিনী। আগে আগুন নেভার পর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে হাজির হতো। এই বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে সরকার। সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরও কাজ চলছে।’

ডিপোতে আগুন নিয়ন্ত্রণে অগ্নিনির্বাপণ বাহিনীর সাহসিকতার প্রশংসা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা অকুতোভয়, বলেন তিনি। সিলেটে জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযান ও এফআর টাওয়ারে ফায়ার সার্ভিসের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তাঁরা জীবনের পরোয়া করেন না, ডাক এলে একমুহূর্ত দেরি করেন না।’

গত শনিবার রাতে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আগুন লাগার ৬১ ঘণ্টা পর আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানান ঘটনাস্থলে উপস্থিত সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম।

আগুন নিয়ন্ত্রণের সময় নিখোঁজ হন ফায়ার সার্ভিসের সদস্য শফিউল ইসলাম, রবিউল ইসলাম ও ফরিদুজ্জামান । এই অগ্নিকাণ্ডে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে কলকারখানায় আগুন লাগলেও এবারই প্রথম ফায়ার সার্ভিসের এত কর্মীর প্রাণহানি ঘটল। এখন পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যুর খবর আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে বাহিনীটি। আজ সকাল পর্যন্ত নিখোঁজ তিনজন। তা ছাড়া মুমূর্ষু অবস্থায় আরও দুজন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: আইজিপি-যুগান্তর

সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনের পর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ।  মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামে গিয়ে ডিপো এলাকা ঘুরে দেখার পর সাংবদিকদের প্রশ্নের উত্তর এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। 

আইজিপি বেনজীর বলেন, এত ফায়ারম্যান এ পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনায় মারা যাননি। নিহত ও আহতদের প্রতি আমাদের সমবেদনা। অনেকে মানাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। চিকিৎসা শেষে বোঝা যাবে কেমন ক্ষতি তাদের হয়েছে। এ বিষয়ে কী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানতে চাইলে পুলিশ প্রধান বলেন, “ইতোমধ্যে সরকার তদন্ত কমিটি করেছে। ফায়ার সার্ভিসও তদন্ত কমিটি করেছে। তদন্ত রিপোর্ট এলে আইনি কার্যক্রম শুরু করা হবে।”

শনিবার রাতে আগুন লাগার পর থেকে সেখানে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরাও অংশ নিচ্ছেন অগ্নি নির্বাপন ও উদ্ধার তৎপরতায়। পাশাপাশি ডিপো থেকে রাসায়নিক দূষণ যাতে ছড়াতে না পারে, সে বিষয়ে কাজ করছে সেনাবাহিনীর একটি দল। আইজিপি বলেন, আশা করি দ্রুততম সময়ে উদ্ধার কাজ শেষ হবে। তবে এখনো পরিস্থিতি পুরো নিরাপদ নয়।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, ডিপোর কর্তৃপক্ষ সেখানে ২৭টি কন্টেইনারে রাসায়নিক থাকার কথা জানিয়েছে। এর মধ্যে আটটি পুড়ে গেছে এবং সাতটি শনাক্ত করে সরিয়ে রাখা হয়েছে। রাসায়নিক থাকা অন্তত ১২টি কন্টেইনার এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

হত্যার হুমকি, পুলিশি পাহারায় কোথায় গেলেন সালমান’-ইত্তেফাক

সালমান খানের বাবা সেলিম খান প্রতিদিনের মতো রবিবারও প্রাতঃভ্রমণে বের হন। সকালে হাঁটাহাঁটির মাঝে একটি জায়গায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তিনি। তখন ওই জায়গায় তাদের হত্যার হুমকির চিঠিটি পাওয়া যায়। হুমকি চিঠি পাওয়ার পর থেকেই বাড়ানো হয়েছে সালমান খানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কোনোরকম ছাড় দিতে রাজি নয় মুম্বাই পুলিশ।

সোমবার (৬ জুন) মুম্বাইয়ের কালিনা এয়ারপোর্টে পুলিশি নিরাপত্তায় দেখা যায় সালমান খানকে। এর আগের দিন সালমান খান ও তার বাবা সেলিম খান হুমকি চিঠি পান।

ইনস্টাগ্রামে শেয়ার হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে এয়ারপোর্টে সালমানের গাড়ি ঢুকতেই সেখান থেকে প্রথমে নেমে আসেন এক পুলিশ অফিসার। তারপর সালমানকে গাড়ি থেকে বের করে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ছিলেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী শেরাও।

মুম্বাইয়ের কালিনা এয়ারপোর্টে পুলিশি নিরাপত্তায় সালমান খান। 

সালমান খান কালো টি-শার্টের উপর নিল চেক শার্ট পরে আছেন। সঙ্গে ডেনিম প্যান্ট। করোনার নতুন নিয়ম মেনে মুখে মাস্কও পরেছিলেন তিনি। এরপর পাপারাজ্জিদের দেখে হাত নাড়েন ভাইজান। জানা গেছে ব্যক্তিগত প্লেনে হায়দ্রাবাদে গেছেন সালমান নিজের নতুন ছবির কাজের জন্য।

সোমবার খান পরিবারের বান্দ্রার গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টও ঘুরে দেখেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পাঞ্জাবের গায়ক সিধু মুসেওয়ালার মৃত্যুর পর কোনোরকম ঝুঁকি নিতে রাজি না মহারাষ্ট্র সরকার। মুম্বাই পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় পাণ্ডে জানিয়েছেন, ‘এই চিঠি ভুয়া কি না, তা এত দ্রুত বলা সম্ভব নয়। লরেন্স বিষ্ণোয়ি গ্যাং নিয়ে কিছু বলাই মুশকিল।’

জানা গেছে, সালমানের জন্য কেউ ছেড়ে গিয়েছেন একটি বেনামি চিঠি। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতিদিন সকালে নিজের বডিগার্ডদের নিয়ে হাঁটতে বের হন সালমান। একটি নির্দিষ্ট লোকেশনে গিয়ে বিরতিও নেন। সেখানেই একটা বেঞ্চে ছেড়ে যাওয়া হয়েছে সেই বেনামি চিঠিটি। যা খুঁজে পায় সালমানের নিরাপত্তারক্ষীরা। সেই কাগজে লেখা ছিল, ‘মুসেওয়ালা-র মতো অবস্থা করে দেব’। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

বিজেপি নেত্রীর কু-মন্তব্যের জের, তীব্র নিন্দা এবার তালিবান মুখপাত্রেরও!  -আজকাল 

বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক কাটতেই চাইছে না।

হজরত মহম্মদকে নিয়ে অসম্মানজনক কথা বলায় রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল কানপুর। সৌদি আরবের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশ থেকেও ধেয়ে আসে নিন্দার ঝড়। এবার এই নিয়ে মুখ খুলল আফগানিস্তানের শাসক তালিবানও। নূপুর শর্মার মন্তব্যের কড়া নিন্দা করে তালিবদের মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ বলেছেন, ‘আমরা ভারত সরকারের আর্জি জানাচ্ছি এই ধরনের ধর্মান্ধদের পবিত্র ইসলাম ধর্মকে অপমান এবং মুসলিমদের উসকানি দেওয়া থেকে আটকানো হোক।’

মুজাহিদ আরও বলেন, ‘ভারতে শাসকদলের এক আধিকারিকদের নবি মহম্মদকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করছে ইসলামিক এমিরেটস অফ আফগানিস্তান।’ এ পর্যন্ত নূপুর শর্মা এবং আরও এক বিজেপি মুখপাত্রের মন্তব্যের নিন্দা করেছে ১৪টি দেশ। তারা হল— রয়েছে ইরান, ইরাক, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, জর্ডন, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাহরিন, মলদ্বীপ, লিবিয়া, এবং ইন্দোনেশিয়া। 

পাকিস্তানের সদ্যনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছিলেন, ‘আমাদের ভালবাসার নবিকে নিয়ে ভারতের বিজেপি নেতার মন্তব্যের তীব্র ভাষায় নিন্দা করছি। বার বার বলেছি, ধর্মাচরণের স্বাধীনতাকে পদদলিত করছেন মোদি, মুসলিমদের নিপীড়ন করছেন। বিশ্বের উচিত ব্যাপারটা খেয়াল করা এবং ভারতকে তিরস্কার করা। পবিত্র নবির প্রতি আমাদের ভালবাসা সর্বোচ্চ। তাঁর প্রতি ভালবাসা এবং শ্রদ্ধায় প্রত্যেক মুসলিম নিজের জীবন দিতে পারে।’   

মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্যের জের, গোয়া থেকে গ্রেপ্তার ইউটিউবার রোদ্দুর রায়-সংবাদ প্রতিদিন

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) অশ্লীল ভাষায় আক্রমণের অভিযোগে অবশেষে গ্রেপ্তার জনপ্রিয় ইউটিউবার রোদ্দুর রায়। আজ, মঙ্গলবার তাঁকে গোয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করে কিংবা ইউটিউব (Youtube) ভিডিও করে বিতর্ক তৈরি করেন রোদ্দুর। সম্প্রতি ফেসবুক লাইভ করেছিলেন তিনি। দেড় ঘণ্টার সেই লাইভে একাধিক বিষয়ে কথা বলেন। নিজস্ব ভঙ্গিতেই আক্রমণ করেন বিভিন্ন বিশিষ্টজনকে। সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। লাইভে মুখ্যমন্ত্রীকে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করেন রোদ্দুর রায়। অশ্রাব্য শব্দ প্রয়োগ করা হয় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সারাধণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কেও। যার জেরে গত ৩ জুন রোদ্দুরের বিরুদ্ধে চিৎপুর থানায় এফআইআর করেন তৃণমূল নেতা ঋজু দত্ত। 

এফআইআরে অভিযোগকারী জানিয়েছিলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন রোদ্দুর রায়। সেই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবিও জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা। পুলিশের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। সেই মতোই লালবাজার থেকে একটি দল পৌঁছায় গোয়ায়। আর এদিন তাঁকে গ্রেপ্তার করেন লালবাজারের পুলিশ আধিকারিকরা। কলকাতায় তাঁকে আনা হবে বলে খবর। সেই সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং অন্যান্য সম্পত্তির পরিমাণও।

পার্সটুডে/বাবুল আখতার/৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ