অক্টোবর ২১, ২০২২ ১১:৫২ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ২১ অক্টোবর শুক্রবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শিরোনাম:

  • ১৪ ঘণ্টা পর জানা গেল বাস ধর্মঘটের কারণ-মানবজমিন
  • বিশিষ্টজনদের অভিমত-পরিবহণ বন্ধ অশোভন অনাকাঙ্ক্ষিত-যুগান্তর
  • খুলনায় গণসমাবেশ বাধা ঠেলে খুলনামুখী বিএনপির কর্মীরা -প্রথম আলো
  • চলমান সংকটে বাড়তে পারে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব-ইত্তেফাক
  • ব্যয় সংকোচন-বিসিএস প্রশাসন ও পুলিশের ১২০ কর্মকর্তা অবসরের ঝুঁকিতে-কালের কণ্ঠ
  • সাত সংকটের মুখে বাংলাদেশ-বাংলাদেশ প্রতিদিন

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:

  • বাংলা, বিহার ভেঙে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল! ফাঁস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের গভীর ষড়যন্ত্র-সংবাদ প্রতিদিন
  • সবাইকেই শিক্ষার কথা ভাবতে হচ্ছে’, মোদির স্কুল পরিদর্শনকে খোঁচা কেজরিওয়ালের- আনন্দবাজার পত্রিকা

এবার বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

মতামত-ভাত ও ভোট: দুই অধিকার নিশ্চিত করার বুদ্ধি- প্রথম আলোর মতামত কলামে আনিসুল হক একটি চিঠি সামান্য এডিট করে তুলে ধরেছেন, সেই চিঠির ভাষ্য- আমাদের সামনে আজ দুটো গুরুতর প্রশ্ন। একটা হলো, আগামী বছরের শেষে যে নির্বাচন হওয়ার কথা, সেটাতে জনগণের ভোটের অধিকার কায়েম হবে কি না, মানে ভোটটা ভালো হবে কি না। আরেকটা জীবন-মরণ প্রশ্ন। আগামী বছর বাংলার মানুষ পেটপুরে খেতে পারবে কি না।

চিঠির শুরুটা এমন, প্রিয় আনিসুল হক,

 সালাম নেবেন। ‘আশা করি ভালো আছেন’ কথাটা আশা করে বলতে পারলাম না। দোয়া করি ভালো থাকুন। নিচের লেখাটা দয়া করে প্রকাশ করবেন।

ভাতের অধিকার। ভোটের অধিকার। রাষ্ট্র জনগণকে এই দুই অধিকার দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। নেতৃবর্গ সোচ্চার। এই অধিকার যদি নিশ্চিত করা যায়, জনগণ খুশি, নেতারা তৃপ্ত এবং গৌরবান্বিত। নেতাদের মুখে যখন খই ফুটতে থাকে—‘আমরা জনগণের ভাতের অধিকার, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। ওরা তো কেড়ে নিয়েছিল,’ তখন সেই খই জনগণের চোখেমুখে এসে খোঁচার মতো লাগে না, খোঁটার মতো লাগে না, বরং জনতা হাসিমুখে হইহুল্লোড় করে খই-মুড়ি খায়।

ব্যয় সংকোচন-বিসিএস প্রশাসন ও পুলিশের ১২০ কর্মকর্তা অবসরের ঝুঁকিতে-কালের কণ্ঠের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের তিনটি ব্যাচের অন্তত ৯০ জন কর্মকর্তা এবং পুলিশ প্রশাসনের ১৫তম ব্যাচের ৩৩ জন কর্মকর্তা রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন কারণে নানা সময়ে পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন। তাঁরাই এখন মূলত সরকারের অবসরে পাঠানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এরই মধ্যে অবসরে পাঠানো তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মকবুল হোসেন প্রশাসন ক্যাডারের দশম ব্যাচের কর্মকর্তা ছিলেন। আর পুলিশে পদোন্নতিবঞ্চিত ছিলেন ১২তম ব্যাচের দুজন কর্মকর্তা।

তাঁদের দুজনকেই অবসরে পাঠানো হয়েছে। বাকি যে এসপিকে অবসরে পাঠানো হয়েছে তিনি ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা এবং বঞ্চিতদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ ছিলেন। এই ব্যাচের কর্মকর্তারা এখন অতিরিক্ত আইজিপি ও ডিআইজি পদে পর্যন্ত আছেন।

একাধিক সাবেক সরকারি কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অবসরে পাঠানো হলে পুলিশের ক্ষেত্রে এই হিসাব ২৭তম ব্যাচ পর্যন্ত যেতে পারে বলে গুঞ্জন আছে। কারণ এই ব্যাচের কর্মকর্তারা এখন মাঠ পর্যায়ে পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সে ক্ষেত্রে ২৭তম ব্যাচ পর্যন্ত ধরলে পুলিশে বঞ্চিত কর্মকর্তার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ২২৫ জনের মতো। কিন্তু এত কর্মকর্তাকে তো আর একসঙ্গে অবসরে পাঠানো সম্ভব নয়; যদিও তাঁদের সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

আবার প্রশাসন ক্যাডারে জেলা প্রশাসক পদ বিবেচনায় নিলে ২৪তম ব্যাচের পর্যন্ত যাঁরা বঞ্চিত হয়ে আছেন তাঁরাও ঝুঁকির হিসাবে যুক্ত হবেন। এই হিসাবে ঝুঁকিতে থাকবেন আরো তিন শর বেশি কর্মকর্তা। প্রশাসনের এত বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তাকে হয়তো অবসরে পাঠাবে না সরকার। কিন্তু অবসরের চলমান প্রক্রিয়ার কারণে এসব কর্মকর্তা আতঙ্কে বা শঙ্কায় আছেন।

সরকারের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, এই কর্মকর্তাদের সরকার পদোন্নতি দিচ্ছে না। কিন্তু তাঁদের পেছনে প্রতি মাসে বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে। তবে সরকার স্পষ্ট কোনো কারণ না বলায় প্রশাসনের ভেতরে অস্থিরতা চলছে।

আবার আরেক পক্ষ বলছে, গত ১৪ বছরে পদের চেয়ে অনেক বেশি কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারে অতিরিক্ত সচিবের পদ আছে ২১২টি। এর বিপরীতে কর্মকর্তা আছেন ৪২৭ জন। যুগ্ম সচিব পদ ৪৩৩টি। কর্মকর্তা আছেন ৭১৬ জন। উপসচিবের পদ আছে এক হাজার ৭৩টি। এই পদে কর্মকর্তা আছেন এক হাজার ৬৩৩ জন। ফলে পদোন্নতিবঞ্চিত হয়ে হতাশায় থাকা সবাইকে অবসরে পাঠালেও প্রশাসনে কর্মকর্তা সংকট হবে না। বরং কিছুটা শৃঙ্খলা ও সমন্বয় বাড়বে। এত বেশি না হলেও পুলিশের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা চলছে।গত চার দিন সচিবালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকে এখন সহকর্মীদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করছেন। অনেকে কাজে মনোযোগ দিতে পারছেন না। এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, ‘সময় ভালো না, নাম উল্লেখ করে কিছু লিখবেন না। ’

আইনজীবী মনজিল মোর্শেদ বলেন, সরকার কেন অবসরে পাঠাচ্ছে তা বলে দেওয়াই ভালো। না বলার ফলে প্রশাসনে অস্থিরতা তৈরি হবে। এতে সরকারে কাজও ব্যাহত হবে।

অবসরে পাঠানোর যেসব কারণ এখন পর্যন্ত আলোচনায় আছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে সুবিধাভোগী বা ওই সময় নিয়োগপ্রাপ্ত এবং এসব কারণে গত ১৪ বছর পদোন্নতিবঞ্চিত, দেশে-বিদেশে সরকারি তথ্য পাচার, অনিয়ম, অসদাচরণ ও নিষ্ক্রিয়তা।

২২ অক্টোবর খুলনায় বিনপির সমাবেশ, এদিকে ঐ দিন বাস ধর্মঘটের ঘোষণায় নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ সম্পর্কে মানবজমিনের আজকের শিরোনাম- ১৪ ঘণ্টা পর জানা গেল বাস ধর্মঘটের কারণ। খবরে লেখা হয়েছে, বুধবার দুপুর ১২টায় খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সোনাডাঙার প্রধান সময় নিয়ন্ত্রকের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কারণ জানানো হয়।খুলনায় আগামী ২১ ও ২২শে অক্টোবর আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।এর আগে মঙ্গলবার রাত ১০টায় খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি ও খুলনা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের যৌথ সভায় বলা হয়েছে, হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়ক মহাসড়কে অবৈধভাবে নসিমন, করিমন, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিআরটিসি’র গাড়ি চলাচল করছে। ২০শে অক্টোবরের মধ্যে প্রশাসন কর্তৃক অবৈধ নসিমন, করিমন, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিআরটিসি’র যত্রতত্র কাউন্টার বন্ধ করা না হলে ২১ ও ২২শে অক্টোবর মালিক সমিতির সব রুটের গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে।এদিকে আগামী ২২শে অক্টোবর খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি। বাস চলাচল বন্ধ রাখার এই সিদ্ধান্তকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলছেন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। তবে  কোনো ষড়যন্ত্রই গণসমাবেশ প্রতিহত করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।’

আর যুগান্তরের এ সম্পর্কিত খবরে লেখা হয়েছে, বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে সরকার নানা কৌশলে বাধার সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামে গণপরিবহণ বন্ধ না করলেও সমাবেশে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। ময়মনসিংহের সমাবেশে বাধার পাশাপাশি আগের দিন পূর্বঘোষণা ছাড়াই বন্ধ করে দেওয়া হয় সব সড়কপথের যানবাহন।

শনিবার খুলনার সমাবেশকে সামনে রেখে ডাক দেওয়া হয়েছে পরিবহণ ধর্মঘটের। আজ ও আগামীকাল খুলনা বিভাগের আন্তঃজেলা বাস-মিনিবাস বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, সমাবেশে যাতে লোকসমাগম হতে না পারে, সেজন্যই সরকারের নির্দেশে পরিবহণ মালিকরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, পরিবহণ মালিকদের ডাকা ধর্মঘট যৌক্তিক নয়। রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্যই তারা এমন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এর পেছনে সরকারের ইন্ধন রয়েছে। এভাবে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া ঠিক নয়।

এতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে, বাড়বে দূরত্ব; যা একসময় সহিংসতায়ও রূপ নিতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোকে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের সুযোগ দেওয়া উচিত। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দাঁড়িয়েছে-এক দল করেছে তাই আমিও করব। যুগান্তরের সঙ্গে আলাপকালে বিশিষ্টজনরা এমন মত তুলে ধরেন।

দৈনিক ইত্তেফাকের অর্থনীতির খবরে লেখা হয়েছে, চলমান সংকটে বাড়তে পারে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব। এ খবরে পয়েন্ট আরও বলা হয়েছে, বর্তমান সংকটে সরকারের উদ্যোগগুলো সঠিক, কিন্তু পর্যাপ্ত নয় বলে উল্লেখ করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সমস্যা মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি হলেও সংকট সমাধানে সরকার স্বল্পমেয়াদি উদ্যোগ নিচ্ছে। বর্তমানে জ্বালানিসংকট, বিদ্যুত্সংকট, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট পরবর্তীকালে  আরো অন্যান্য খাতেও দেখা দিতে পারে। এর প্রভাবে দেশে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। ফলে রাজনৈতিক সংকটে রূপ নিতে পারে বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।

শিক্ষাবিষয়ক খবর- ইত্তেফাকে লেখা হয়েছে, ছাত্রীকে হেনস্তা, মধ্যরাতে ইবি ছাত্রীদের আন্দোলন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) খালেদা জিয়া হলের এক আবাসিক ছাত্রীকে ছাত্রলীগকর্মীর থাপ্পড় মারার অভিযোগে মধ্যরাতে আন্দোলনের নামে ইবি ছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুই শতাধিক ছাত্রী হল প্রাঙ্গণে অভিযুক্তের বিচার দাবিতে আন্দোলনে নামে। এদিকে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যুর জেরে হামলার ঘটনায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করেছেন রামেক প্রশাসন।

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

বাংলা, বিহার ভেঙে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল! ফাঁস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের গভীর ষড়যন্ত্র-সংবাদ প্রতিদিনের এ খবরে লেখা হয়েছে, বাংলা ভাগ! সেই সঙ্গে বিহারও!

দুই রাজ্যের কিছু অংশ নিয়ে নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের কাজ শুরু করল কেন্দ্র। তবে প্রকাশ্যে নয়। সূত্রের খবর, চুপিসারে বঙ্গভঙ্গের প্রাথমিক তোড়জোড় চালাচ্ছে দিল্লি। সর্বভারতীয় একটি দৈনিকে তথ্যটি ফাঁস হতেই তীব্র বিরোধিতা করেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল (TMC)। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) অভিযোগ, বিজেপি পরাজয় হজম করতে পারছে না বলেই প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে চক্রান্ত করে বঙ্গভঙ্গের কথা ভাসিয়ে দিচ্ছে। বাংলা ও বিহার, এই দুই রাজ্য এখন বস্তুতই বিজেপির কাছে কঠিন জমি। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিহারে নীতীশ কুমার-তেজস্বী যাদব জুটি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে মোদির অশ্বমেধের ঘোড়া থামিয়ে দেওয়ার জন্য এই ত্রয়ীই যথেষ্ট। আর সেটা আঁচ করেই নয়া চাল চেলেছে গেরুয়া শিবির, অমিত শাহর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক গোপনে শুরু করে দিয়েছে দুই রাজ‌্য ভেঙে নয়া কেন্দ্রশাসিত রাজ্য গঠনের প্রস্তুতি।

পশ্চিমবঙ্গে একুশের বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পরে বাংলা থেকে উত্তরবঙ্গকে আলাদা করার দাবি তুলছিল পদ্ম শিবির। বিজেপির সাংসদ ও বিধায়করা হামেশা দ্বিতীয়বার বঙ্গভঙ্গের পক্ষে সওয়াল করে আসছিলেন। বারবার এই বিতর্ককে ঘিরে বিস্তর জলঘোলাও হয়েছে, সরগরম হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। উলটোদিকে এর তীব্র বিরোধিতা করে আসছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার জানিয়েছেন, কোনওভাবেই বাংলাকে ভাগ হতে দেবেন না। প্রয়োজনে প্রাণ দিয়ে বঙ্গভঙ্গ রদ করবেন। উদ্যোগের বিরোধিতা করে বামেরাও। অভিযোগ, এমতাবস্থায় রাজনৈতিকভাবে মানুষের সমর্থন নিয়ে বাংলা দখল অধরা থেকে যাবে বুঝেই অমিত শাহ (Amit Shah) ও জে পি নাড্ডারা (JP Nadda) অন‌্য কৌশলের ভাবনাচিন্তা করেন। নয়া গেমপ্ল‌্যানের ফলশ্রুতি, কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকার সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে এভাবে ঘুরপথে বঙ্গের একাংশ দখলের কাজ শুরু হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রের ইঙ্গিত।

‘সবাইকেই শিক্ষার কথা ভাবতে হচ্ছে’, মোদির স্কুল পরিদর্শনকে খোঁচা কেজরিওয়ালের-আনন্দবাজার/সংবাদ প্রতিদিন

সামনেই ভোট গুজরাটে (Gujarat)। আর এই পরিস্থিতিতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Modi) দেখা গেল রাজ্যের এক সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের সঙ্গে। এরপরই তাঁকে প্রচ্ছন্ন খোঁচা মেরে আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal) টুইটারে লিখলেন, এটাই তাঁর ‘বড় প্রাপ্তি’। ঠিক কী লিখেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী, ‘আমি আজ খুব খুশি যে, দেশের সব দল ও নেতারা শিক্ষা ও স্কুল নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আশা করি, কেবল নির্বাচন সামনে এলেই শিক্ষার কথা বলা হবে, এমনটা হবে না। সব সরকার একসঙ্গে কাজ করলে পাঁচ বছরেই দেশের স্কুলগুলির উন্নতি হবে।’ সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির উদ্দেশে তিনি লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী স্যার, আমরা দিল্লিতে শিক্ষাক্ষেত্রে দারুণ কাজ করেছি। পাঁচ বছরে দিল্লির সব ক’টি সরকারি স্কুলেরই অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। দেশের সব স্কুলেরই উন্নতি হতে পারে পাঁচ বছরের মধ্যে। আমাদের এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা রয়েছে। দয়া করে সেই অভিজ্ঞতাকে সম্পূর্ণ ভাবে কাজে লাগান। আসুন সকলে মিলে দেশের জন্য কাজ করি।’

গত বুধবারই প্রধানমন্ত্রী মোদিকে দেখা গিয়েছিল গান্ধীনগরের আদালজে মিশন স্কুল অফ এক্সেলেন্সে। সেখানে ক্লাসে শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান তিনি। এরপরই কেজরিওয়ালের এই পোস্ট। সরাসরি কিছু না বললেও, আপ সুপ্রিমোর পোস্টে রয়েছে প্রচ্ছন্ন কটাক্ষ। ভোটমুখী গুজরাটে প্রধানমন্ত্রীর স্কুল পরিদর্শন কেবল ভোটের কথা মাথায় রেখেই কিনা, সেই প্রশ্নই তুলে দিলেন তিনি, মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। পাশাপাশি দিল্লিতে যে শিক্ষাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে, সেই কথাও মনে করিয়ে দিলেন। প্রসঙ্গত, গুজরাট নির্বাচনে ভাল কিছু করতে মরিয়া আপ। ইতিমধ্যেই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানকে নিয়ে গুজরাটে এসে আসন্ন নির্বাচনের রণকৌশল তৈরি করতে দেখা গিয়েছে কেজরিওয়ালকে। সব মিলিয়ে নির্বাচনের ঠিক আগে জোরদকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে ভোটরঙ্গ।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২১

 

ট্যাগ