খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে ‘বিদেশি চাপ’ নিয়ে যা বললেন কাদের
মার্কিন স্যাংশন: শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতি দৃঢ় সমর্থন চীনের
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ১৪ জুন বুধবারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- মার্কিন স্যাংশন: শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতি চীনের সমর্থন-মানবজমিন
- খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে ‘বিদেশি চাপ’ নিয়ে যা বললেন কাদের-যুগান্তর
- জামায়াতকে নিয়ে আওয়ামী লীগ খেলছে: রুমিন ফারহানা-যুগান্তর
- ৩০ সংগঠনের বিবৃতি-জগন্নাথের শিক্ষার্থী খাদিজাকে ঈদুল আজহার আগে মুক্তি দেওয়ার দাবি-প্রথম আলো
- ৫ শতাধিক হজযাত্রীর টাকা নিয়ে উধাও এজেন্সি-ইত্তেফাক
- এখন জঙ্গিবাদের নিম্ন ঝুঁকিতে বাংলাদেশ : এটিইউ প্রধান -কালের কণ্ঠ
কোলকাতার শিরোনাম:
- উত্তপ্ত ভাঙড়, নীরব অভিষেক-গণশক্তি
- কোটিপতিরা কেন দলে দলে ভারত ছাড়ছেন? এ বছরে ৬,৫০০ জন কোন কোন দেশে পাড়ি দিতে পারেন? -আনন্দবাজার পত্রিকা
- ফের রক্তাক্ত মণিপুর, হিংসার বলি অন্তত ৯! গুরুতর আহত বহু -সংবাদ প্রতিদিন
শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি-
কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:
১. বিরোধপূর্ণ জমিতে বিপণিবিতান নির্মাণ করছে বগুড়া জেলা পরিষদ। এটি দৈনিক প্রথম আলোর খবর। কী বলবেন আপনি?
২. মার্কিন ডলার থেকে দূরে সরার লক্ষ্য স্বর্ণ কেনা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে চীন। প্রশ্ন হচ্ছে- মার্কিন ডলার থেকে কী আসলেই সরে আসা সম্ভব?
বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর
খালেদা জিয়ার বিষয় আমাদের অভ্যন্তরীণ, বাইরের হস্তক্ষেপ যুক্তিসংগত নয়: কাদের-প্রথম আলো
খালেদা জিয়ার বিষয় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ, এ বিষয়ে দেশের বাইরে কোনো হস্তক্ষেপ যুক্তিসংগত নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রোড সেফটি-বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলকে একটি চিঠি লিখেছেন। গত সোমবার তাঁরা ওই চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং চলমান সংকটের টেকসই ও গণতান্ত্রিক সমাধানের জন্য বিএনপিসহ অন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আলোচনার কথাও বলা হয়। আজ সেই বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কারও অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করি না। আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বাইরের হস্তক্ষেপ যুক্তিসংগত বলে আমরা মনে করি না। খালেদা জিয়ার ব্যাপারে এটাও আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখন বেগম জিয়ার ব্যাপারে তাঁর অসুস্থতা নিয়ে যতটা তাদের উদ্বেগ, তার চেয়ে মনে হয়, তাঁকে নিয়ে রাজনীতি করাটাই এযাবৎ তাদের বড় চর্চা বলে মনে করি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই বিচার কার্যক্রম যখন শুরু হয়েছে, তখন অহেতুক বিলম্ব, প্রলম্বিত করা, অনুপস্থিত থাকা বিচারকার্যকে বিলম্বিত করেছে। তারা খালেদা জিয়ার জন্য কিছু করতে পারেনি এবং বাইরে তেমন কোনো আন্দোলন বাংলাদেশের রাজপথে করতে পারেনি যে তাতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। বিষয়টি আমাদের আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেখছেন। তাঁরাই উচ্চপর্যায়ে কথা বলছেন।’
জামায়াতকে নিয়ে আওয়ামী লীগ খেলছে: রুমিন ফারহানা-যুগান্তর
দশ বছর পর হঠাৎ করে ঢাকায় বড় সমাবেশের মাধ্যমে রাজনীতিতে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। সরকারি অনুমতি নিয়ে গত ১০ জুন ঢাকায় প্রকাশ্যে সমাবেশ করেছে জামায়াত। এই সমাবেশের পর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন।
সরকারের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকেই। জামায়াত ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন বিএনপির আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য ও দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহসম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
সম্প্রতি গণমাধ্যম তার কাছে জানতে চায় যে, ১০ বছর পর হঠাৎ জামায়াতকে মাঠে কীভাবে দেখা গেল।
প্রশ্নোত্তরে রুমিন বলেন, জামায়াতকে ১০ বছর পর মাঠে দেখতে পারাটা কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক স্পষ্ট করে বলেছেন— এটা আমাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিক কারণেই অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। জামায়াতের ব্যাপক সমর্থন আছে। আপনারা একটু অপেক্ষা করেন। সামনে আরও কিছু দেখবেন। আরও অনেক কিছু হবে। এ কথা দিয়ে তিনি স্পষ্ট করেছেন— কীভাবে জামায়াত ১০ বছর পর সমাবেশ করতে পেরেছে।
তা ছাড়া খুবই আশ্চর্যের মতোই ছিল। জাতীয় পার্টির সমাবেশ সরিয়ে তাদের জায়গা দেওয়া হয়। এটা করা হচ্ছে নির্বাচনের কিছু দিন আগে । তা হলে নিশ্চয় বুঝতে আর বাকি নেই ।
তিনি আরও বলেন, সরকার নিশ্চিত নয় যে এবারের নির্বাচনে বড় কোনো দল অংশ নেবে কিনা। বিএনপির কথা খুব পরিষ্কার যে, এ সরকারের অধীন কোনো নির্বাচন নয়। এ ক্ষেত্রে সরকার জামায়াতকে কাজে লাগাতে চায়।
মার্কিন স্যাংশন: শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতি চীনের সমর্থন-মানবজমিন
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থানের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েই কথা বলেছেন এমন না। তিনি কথা বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের হয়ে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল বিশ্বের হয়ে। চীনের সরকারি সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল টাইমসকে তিনি এ কথা বলেছেন। ওই সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের ফেসবুক পেইজে প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে প্রশ্নোত্তর আকারে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিভাগের উপপরিচালক ওয়াং ওয়েনবিনের মন্তব্য প্রকাশ পেয়েছে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, সম্প্রতি আমরা জানতে পেরেছি যে, বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- র্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে তিনি ধাঁধার মতো দেখতে পেয়েছেন। আর নিষেধাজ্ঞা যেন একটা খেলার মতো। তিনি আরও বলেছেন, যেকোনো দেশের সরকারকে উৎখাতের ক্ষমতা তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) আছে। নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশ ভীত নয়। যেসব দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেবে তাদের কাছ থেকে কোনো কিছু কেনা বন্ধ করতে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে চীনের মন্তব্য কি? জবাবে ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যের বিষয়ে আমরা জানি। প্রকৃতপক্ষে নিজেদের বর্ণবাদী বৈষম্য, অস্ত্র নিয়ে সহিংসতা, মাদকের বিস্তার নিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট দেশ চোখ বন্ধ করে রাখে। তারাই আবার গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের কথা বলে বাংলাদেশ এবং অনেক উন্নয়নশীল দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে হস্তক্ষেপ করছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশি জনগণের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েই কথা বলেছেন এমন না। তিনি কথা বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের হয়ে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল বিশ্বের হয়ে। চীন এবং বাংলাদেশ ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা, আভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র বিষয়ক স্বাধীন নীতি সমুন্নত রাখতে বাংলাদেশকে আমরা দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি। জাতীয় বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খায় এমন উন্নয়নের পথ অনুসরণে সমর্থন করি। সব রকম আধিপত্য এবং ক্ষমতার রাজনীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ও অন্য দেশগুলোকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত আমরা। একই সঙ্গে আমরা জাতিসংঘকেন্দ্রীক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা জোর দেয়া আন্তর্জাতিক শৃংখলা, জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতির ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণের মৌলিক নিয়ম এবং মানবজাতির জন্য একটি অভিন্ন ভবিষ্যত গড়ে তুলতে কাজ করবো।
কোলকাতার কয়েকটি খবরে বিস্তারিত:
মোদির রাজ্যে নৃশংসতা! স্ত্রীকে খুন, মেয়ের দেহ ১০ টুকরো করে নর্দমায় ফেলল ‘গুণধর’ বাবা-সংবাদ প্রতিদিন
স্ত্রী ও কন্যাকে খুন করেছেন। সেখানেই শেষ নয়, টুকরো করে কুচিয়েছেন কন্যার দেহও। মেয়ের দেহের টুকরো নর্দমায় ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অবশেষে গ্রেপ্তার করা হল গুজরাটের (Gujarat) ওই অভিযুক্তকে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, প্রচুর ক্রাইম সিরিজ দেখেই স্ত্রী ও কন্যাকে খুনের ছক কষেছিল ওই ব্যক্তি।
ফের রক্তাক্ত মণিপুর, হিংসার বলি অন্তত ৯! গুরুতর আহত বহু-সংবাদ প্রতিদিন
ফের রক্তাক্ত মণিপুর (Manipur)। উত্তর-পূর্ব রাজ্যের খামেলক গ্রামে ভয়াবহ হিংসার বলি হলেন অন্তত ৯ জন। আহত ২৫। বেসরকারি সূত্রের দাবি, মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে ১১-তে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এমনটাই জানা যাচ্ছে।পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই গ্রামে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হয়। স্বাভাবিক ভাবেই সেই সময় বহু গ্রামবাসীই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন কিংবা রাতের খাওয়া সারছিলেন। অতর্কিত আক্রমণে লন্ডভন্ড হয়ে যায় গ্রাম।
কোটিপতিরা কেন দলে দলে ভারত ছাড়ছেন? এ বছরে ৬,৫০০ জন কোন কোন দেশে পাড়ি দিতে পারেন? -আনন্দবাজার
ধনী ভারতীয়দের মধ্যে দেশ ছাড়ার প্রবণতা বাড়ছে। বাড়ছে, প্রথম বিশ্বে গিয়ে থিতু হওয়ায় তৎপরতা। ‘হেনলি প্রাইভেট ওয়েলথ মাইগ্রেশন রিপোর্ট ২০২৩’ জানাচ্ছে, গত এক বছরের হিসাবে দেশ ছাড়তে চলেছেন অন্তত ৬,৫০০ জন ‘মিলিয়নেয়ার’ (যাঁদের সম্পদের পরিমাণ অন্তত ১ মিলিয়ন বা ১০ লক্ষ ডলার অর্থাৎ ৮ কোটি টাকা) ভারতীয়! গত ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক সমীক্ষা সংস্থা ‘হেনলি এবং পার্টনার্স’ এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, রাশিয়া, চিন এবং ভারতের কোটিপতিদের মধ্যে দেশ ছাড়ার প্রবণতা গত কয়েক বছর ধরে দ্রুত বেড়েছে।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১৪