নভেম্বর ১৩, ২০২৩ ১১:৪৬ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ১৩ নভেম্বর সোমবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর অনলাইন ভার্সন ও ই পেপারের বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। পরে বিস্তারিত খবরে যাব।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • গাজায় ইসরায়েলি হামলা: শিশুদের জন্য এমন প্রাণঘাতী সংঘাত সাম্প্রতিক সময়ে দেখেনি বিশ্ব-প্রথম আলো
  • আরেক পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু, কান্না থামছে না স্ত্রী-সন্তানের-ইত্তেফাক
  • প্রশাসন-পুলিশ  ও শিক্ষা ক্যাডার-পদোন্নতির উৎসব ভোটের আগে-যুগান্তর
  • গত মে-সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ১ কোটি ১৯ লাখ মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে: এফএও-ডেইলি স্টার বাংলা
  • শেখ হাসিনা কি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির কাছে আত্মসমর্পণ করবেন?–মানবজমিন অনলাইন

কোলকাতার শিরোনাম:

  • মসজিদে যাওয়ার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন জয়নগরের তৃণমূল নেতা-সংবাদ প্রতিদিন
  • মোদীর অমৃতকালে নেই কাজ, বাড়ে ক্ষুধার্তের ভিড় -গণশক্তি
  • দামের ঝাঁঝ-আনন্দবাজার পত্রিকা

শিরোনামের পর এবার বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক  উত্তপ্ত পরিস্থিতি, আন্দোলন সংঘাত, গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলন এবং গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়-এই তিনটি বিষয় সম্পর্কিত খবরই  আজকের জাতীয় দৈনিগুলোর অনলাইন এবং প্রিন্ট ভার্সনের প্রধান খবর হিসেবে পরিবেশিত হয়েছে। প্রথমে গাজা নিয়ে আল জাজিরার বরাত দিয়ে  প্রথম আলোর খবর- ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত আজ সোমবার ৩৭তম দিনে পড়েছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ১১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৪ হাজার ৫০০টির বেশি শিশু রয়েছে। গত অক্টোবর মাসের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শিশুদের প্রাণহানি নিয়ে তখনকার রোমহর্ষক তথ্যমতে, ২০১৯ সাল থেকে বিশ্বের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোয় নিহত শিশুর বার্ষিক সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে গাজায় তিন সপ্তাহে নিহত শিশুর সংখ্যা। ইসরায়েল আকাশপথে হামলার পাশাপাশি গাজায় স্থল অভিযান চালাচ্ছে। ফলে গাজায় সাদা কাফনে মোড়ানো ছোট ছোট মৃতদেহের সংখ্যা বেড়ে চলছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে শিশুসন্তান হারানো ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর মাতম। সেখানে হাসপাতালে মানবিক বিপর্যয় চলছে।

যুগান্তরের খবরে লেখা হয়েছে, গাজায়-লাশের কবর দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

গাজার পরিস্থিতি প্রতি মুহূর্তে ভয়াবহ হচ্ছে। পুরো অঞ্চল ধরে তৈরি হয়েছে মানবিক বিপর্যয়। হাসপাতাল থেকে বের হলেই হামলা চালাচ্ছেন ইসরাইলি স্নাইপাররা। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক যে, ১০০ নিহতের মরদেহ কবর দিতেও পারছে না আল শিফা হাসপাতাল। এরই মধ্যে জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বড় দুটি হাসপাতাল আল শিফা ও আল কুদস বন্ধ হয়ে গেছে।  ফিলিস্তিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।  স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা ফিলিস্তিনের বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিউজ এজেন্সিকে গাজার হাসপাতালের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন।  তিনি বলেন, আল শিফা হাসপাতালের কর্মীরা প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।  হাসপাতালের মেঝে এতটাই রক্তে ভেসে যায় যে, তা পরিষ্কার করাও সম্ভব হচ্ছে না কর্মীদের।  এরই মধ্যে ওই হাসপাতালের তিনজন নার্সের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে শুধু হাসপাতাল বন্ধ করেই ক্ষান্ত হননি ইসরাইলি সেনারা। স্নাইপাররা হাসপাতালের চারদিক তাক করে আছেন। যে কাউকে পেলেই গুলি চালাচ্ছেন। 

গত ৭ অক্টোবর হামলা শুরুর পর ফিলিস্তিনে জ্বালানি ঢুকতে দেয়নি ইসরাইল।  জ্বালানি না থাকায় বিদ্যুতের অভাবে আল শিফা হাসপাতালে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে দুজন শিশু। এরই মধ্যে কয়েক দিন ধরে হাসপাতালের চারদিকে অবস্থান নিয়েছে ট্যাংক, ড্রোন। প্রতি মুহূর্তে হামলা চলছে। 

এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অবরুদ্ধ গাজাকে জ্বালানি দিতে চাইলেও না নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে সশস্ত্র ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস।

রাজনীতির খবরে প্রথম আলোতে লেখা হয়েছে, চতুর্থ দফার অবরোধ

ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে পাঁচটি বাসে আগুন।বিস্তারিত খবরে বলা হয়েছে, কখনো ভোরে, কখনোবা দুপুরে, আবার কখনো রাতে—বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা কিছুতেই থামছে না। বিএনপির ডাকা চতুর্থ দফার অবরোধের প্রথম দিনে সারা দেশে এমন ঘটনা অন্তত পাঁচটি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকাতেই গতকাল রোববার তিনটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। অবরোধের সমর্থনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা।বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বিভিন্ন দল এবং জোটের পক্ষ থেকেও মিছিল–সমাবেশ হয়েছে।এর আগের তিন দফার অবরোধের মতো এবারের অবরোধেও দেশজুড়ে বিভিন্ন সড়কে পুলিশ–র‌্যাব ও বিজিবির টহল ছিল। পাশাপাশি অবরোধে নাশকতা ঠেকাতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মিছিল–সমাবেশ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।তবে বাসে আগুন দেওয়ার পেছনে সরকারের লোকজন জড়িত বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি।

শেখ হাসিনা কি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির কাছে আত্মসমর্পণ করবেন?-মানবজমিন অনলাইনের এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নেতৃত্বাধীন বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ ক্রমেই বাড়ছে। যার ফলে পুলিশের গুলিতে ডজন খানেক মানুষের মৃত্যু, জনগণের সম্পদ ধ্বংস, ধর্মঘট, অবরোধ এবং ৮০০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করার ঘটনা ঘটেছে। বিরোধীরা হাসিনার পদত্যাগ এবং জানুয়ারিতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন।পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলেছে, মাসিক বেতন তিনগুণ করার দাবিতে  হাজার হাজার পোশাক শ্রমিকদের  আন্দোলন। এই রাজনৈতিক অস্থিরতা ভারতের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলেছে।

গার্মেন্টেসএ অস্থিরতা। শ্রমিকরা বেশ কয়েকদিন ধরে রাস্তায় তীব্র আন্দোলন করছে।অনেক ঘটনা ঘটে গেছে এরইমধ্যে। ইত্তেফাক ও  প্রথম আলোসহ বেশ কয়েকটি দৈনিকের এ  খবরে লেখা হয়েছে, আরেক শ্রমিকের মৃত্যু,তবু কেন গুলি, প্রশ্ন স্ত্রীর, ভেজা চোখ সন্তানের।‘আমার স্বামী তো ছিলেন পোশাক কারখানায় সুপারভাইজার। শ্রমিক আন্দোলনে যাননি, তিনি শ্রমিকনেতাও ছিলেন না। তাহলে কেন তাঁকে গুলিতে ঝাঁজরা করে মেরে ফেলল?’

প্রশ্নটি পোশাকশ্রমিক জালাল উদ্দিনের (৪০) স্ত্রী নার্গিস আক্তারের।জালাল গত বুধবার গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় ‘ছররা গুলিতে’ আহত হয়েছিলেন। গত শনিবার দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। 

এ নিয়ে বিক্ষোভে গাজীপুরে দুজন পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু হলো। গত বুধবার মারা যান পোশাকশ্রমিক আঞ্জুয়ারা খাতুন (৩০)।এদিকে বিক্ষোভে ভাঙচুরের ঘটনায় শনিবার রাতে ২২৪ জন পোশাকশ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আর গাজীপুর ও আশুলিয়ায় এ পর্যন্ত ৩৫ মামলা হয়েছে। এসব মামলায় নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে গতকাল সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভে বিএনপির ইন্ধন রয়েছে।মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত ২৩ অক্টোবর থেকে পোশাকশ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন।

ছয় সংস্থার সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈঠক কঠোর হওয়ার পরামর্শ ভুয়া ঋণের বিরুদ্ধে-যুগান্তর

বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, দেশের ব্যাংক খাতের অবস্থা ভুয়া ঋণের কারণে এখন খুবই নাজুক। বিশেষ করে বেনামি ঋণ কয়েক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তাই যাচাই-বাছাই ছাড়া নতুন ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকার দাবি জানিয়েছে সরকারের ছয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।সব মিলিয়ে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ হবে ৪ লাখ কোটি টাকার বেশি, শতাংশ হারে যা প্রায় ৩০ শতাংশ।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত 

মসজিদে যাওয়ার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন জয়নগরের তৃণমূল নেতা-সংবাদ প্রতিদিন

বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, কালীপুজো কাটতে না কাটতেই ফের রক্তাক্ত রাজ্য। ফের শুটআউট। কাকভোরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন জয়নগরের তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিন লস্কর। মসজিদে যাওয়ার পথে মৃত্যু তাঁর। কে বা কারা তাঁকে খুন করল তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ এখনও পর্যন্ত একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তাঁর স্ত্রী বামনগাছি পঞ্চায়েতের প্রধান।  যারা এই খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিধায়ক। এই ঘটনার নেপথ্যে বিরোধীদের ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে’র গন্ধই পাচ্ছেন বিধায়ক।

মোদীর অমৃতকালে নেই কাজ, বাড়ে ক্ষুধার্তের ভিড়-গণশক্তি পত্রিকা

বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, মোদী দেশে কি রকম  অমৃতকাল  টেনে নামিয়েছেন যেখানে কেন  ৮০ কোটি মানুষের নিজের খাদ্য কেনার ক্ষমতাটুকু নেই? মোদীর নির্বাচনী প্রচারে ফের পাঁচ বছরের জন্য বিনামূল্যে খাদ্যশস্য ঘোষণা করায় এই প্রশ্ন উঠে এসেছে। মোদীর ঘোষিত অমৃতকালেই ধসেছে দেশের অর্থনীতি। ভারতকে বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি গড়ে তোলার যে স্বপ্ন দেখানো হয়েছে তা অস্তাচলে চলে গেছে বলা যায়।  মোদীকে বিশ্বগুরু হিসাবে তুলে ধরার বিজেপি প্রচারও অনেকটা প্রহসন হয়ে গেছে। পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনী প্রচারে মোদীর রাজনৈতিক অর্থনীতির পরস্পর বিরোধী যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১৩

ট্যাগ