ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩ ১৫:৩৬ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ১৩ ডিসেম্বর বুধবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। পরে বিস্তারিত খবরে যাব।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • সরকার কি আসলেই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুনছে -প্রথম আলো
  • খুলনায় আদালতের এজলাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা -ডেইলি স্টার বাংলা
  • বাংলাদেশ নিয়ে ৬ মানবাধিকার সংস্থার বিবৃতি প্রসঙ্গ জাতিসংঘে -ইত্তেফাক
  • আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী -মানবজমিন
  • সরকারি কর্মচারী ও ব্যবসায়ীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আতঙ্ক, যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী -যুগান্তর 

কোলকাতার শিরোনাম:

  • লোকসভায় হানাদারদের ধরে ফেললেন দুই সাংসদ! কী তাঁদের পরিচয়? -আনন্দবাজার পত্রিকা
  • সংসদে হামলাকারীরা বিজেপি সাংসদের অতিথি! মুখে ‘জয় ভীম’ স্লোগান -সংবাদ প্রতিদিন
  • সংসদ হামলার ২২তম বর্ষে সংসদে আবার হামলা -গণশক্তি
  • সংসদের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন-আজকাল

শিরোনামের পর এবার বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত তুলে ধরছি। প্রথম আলোতে সাংবাদিক কামাল আহমদের মতামত কলাম ছাপা হয়েছে। শিরোনাম এরকম- সরকার কি আসলেই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুনছে। এতে লেখা হয়েছে, নির্বাচন ঘিরে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এসব নিয়ে আমরা বিচলিত নই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচনের পরেও বিভিন্ন রকমের চাপ আসতে পারে। বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির অশুভ পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে।’

৯ ডিসেম্বর ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে ৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নির্বাচনী এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় বলেন, আগামী বছরের মার্চের দিকে দেশে ‘দুর্ভিক্ষ ঘটানোর’ দেশি-বিদেশি পরিকল্পনা রয়েছে। তাঁর বক্তব্যটি যে গুরুতর উদ্বেগ ও আশঙ্কার জন্ম দিতে পারে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে দেশে যখন উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে পড়েছে।

সরকার যেখানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কোনো সাফল্য দেখাতে পারছে না, তখন এ রকম উদ্বেগজনক আশঙ্কার কথা তথ্যভিত্তিক না হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সেসব তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। শুধু নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য বিদেশিদের ষড়যন্ত্রে তাল মিলিয়ে বিপর্যস্ত বিএনপি দেশে দুর্ভিক্ষ ঘটাতে পারে—এমন দাবি রাজনৈতিক প্রচারে সুবিধা দিলেও তা খুবই বিপজ্জনক একটি কৌশল।

সরকারি কর্মচারী ও ব্যবসায়ীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আতঙ্ক, যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী-যুগান্তরের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন একটি আদর্শ নির্বাচন হবে। নির্বাচনে অন্তত ৫০ শতাংশ ভোট পড়বে। বিএনপির অংশগ্রহণ না করাটা বড় কোনো ইস্যু হবে না। যুক্তরাষ্ট্র ‘ডকট্রিন অব রিয়েলিটি’তে বিশ্বাস করে। তারা বাস্তবতা অনুধাবন করবে। সরকারি কর্মচারী ও ব্যবসায়ীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আতঙ্ক নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেসব সরকারি কর্মকর্তার ছেলেমেয়ে বিদেশে থাকে, দুর্নীতি করে যারা বিদেশে বাড়িঘর করেছে; তাদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক রয়েছে। আর কিছু ব্যবসায়ীর মধ্যে মার্কিন ভিসানীতি কিছুটা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এর বাইরে আমাদের ভোটার বা জনসংখ্যার মধ্যে তেমন কোনো মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, ট্রেনে নাশকতা ও যানবাহনে আগুন দেওয়া নির্বাচন বন্ধের ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মাসে দেড় কোটি টাকা ‘চাঁদাবাজি’র ঘটনায় ওসির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু-প্রথম আলোর এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানা এলাকার ১৯৬ কারখানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে মাসে দেড় কোটি টাকা ‘চাঁদাবাজি’র অভিযোগে থানাটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কমিটির সদস্যরা ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে ওসির অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য জোগাড় করতে শুরু করেছেন। এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশের পরদিন পুলিশ সদর দপ্তর তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পুলিশ সুপার (এসপি) জহিরুল ইসলামকে কমিটির প্রধান করা হয়।পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ৭ ডিসেম্বর ওসি তোফায়েলকে সীতাকুণ্ড থানা থেকে সরিয়ে একই জেলার বাঁশখালী থানায় বদলি করা হয়েছে।

গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক

বাংলাদেশ নিয়ে ৬ শীর্ষ মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থার বিবৃতি প্রসঙ্গ উঠে এসেছে জাতিসংঘে। মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিককে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উদ্বেগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের এসব ইস্যু নিয়ে জাতিসংঘ অবগত আছে। তিনি বলেন, 'আমরা এই ইস্যুতে জড়িত রয়েছি।'

মুখপাত্র বলেন, আমরা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজনের আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি বাংলাদেশি যেন ভয়ভীতি ছাড়াই বা কোনো প্রতিক্রিয়া ছাড়াই ভোট দিতে পারে।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

লোকসভায় হামলা

হামলার বর্ষপূর্তিতে সংসদে বিশৃঙ্খলা-গণশক্তি পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, সংসদ হামলার ২২তম বর্ষে সংসদে ফিরল সংসদ হামলার স্মৃতি। বুধবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন ২ ব্যক্তি দর্শক গ্যালারি থেকে নীচে লাফ দিয়ে নামেন। তারপর হলুদ রঙের একটি স্প্রে ছড়িয়ে দিতে শুরু করেন তাঁরা। হলুদ রঙের ঝাঁঝালো ধোঁয়ায় ভরে যায় গোট সদন। এই ঘটনার জেরে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি শুরু করে দেন উপস্থিত ২০০’র কাছে সাংসদ। এই ঘটনার জেরে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে দিল্লির রাজনৈতিক মহলে।

সংসদে হামলাকারীরা বিজেপি সাংসদের অতিথি! মুখে ‘জয় ভীম’ স্লোগান-সংবাদ প্রতিদিন

লোকসভায় আতঙ্ক

বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, সংসদে হামলাকারীরা বিজেপি সাংসদের অতিথি! জানা যাচ্ছে, দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি মাইসুরুর বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার অতিথি। তাঁদের মুখে ছিল, ‘জয় ভীম’ স্লোগান। বুধবার, শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন লোকসভায় ছড়ায় আতঙ্ক। এদিন আচমকাই সেখানে ঢুকে পড়ে দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। তাদের কাছে গ্যাস ছোড়ার সরঞ্জাম ছিল বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনায় নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকেই। এদিকে, এই ঘটনায় উঠছে একাধিক প্রশ্ন। কীভাবে বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার পাস হাতে পায় হামলাকারীরা? কড়া নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে কীভাবে গ্যাস বম্ব নিয়ে ভেতরে পৌঁছয় অভিযুক্তরা?    এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। তিনি বলেন, “দিল্লি পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে আমদের চিন্তা ছিল ওই ধোঁয়া নিয়ে। তা কী ছিল বা কেমন ছিল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সেই ধোঁয়ায় বিশেষ কোনও কিছু ছিল না। তা প্রতিবাদ করার জন্যই ব্যবহার হয়েছিল। ফলে আতঙ্কের কারণ নেই।”

সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চে খারিজ দ্রুত শুনানির আর্জি, প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ মহুয়া-সংবাদ প্রতিদিনের এ খবরে লেখা হয়েছে, লোকসভায় টাকার বিনিময়ে প্রশ্নের অভিযোগ উঠেছিল মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে। এথিক্স কমিটির প্রস্তাব মেনে তৃণমূলের সাংসদকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর পরই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন মহুয়া। বুধবার বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কলের বেঞ্চে এ নিয়ে দ্রুত শুনানির আর্জি জানান তাঁর আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। দ্রুত শুনানি সম্ভব নয় বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে বলা হয়, মামলাকারী চাইলে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। বিচারপতি কলের নির্দেশ মেনে এর পরই প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে মেনশনিং করেন মহুয়ার আইনজীবী। দু-একদিনের মধ্যেই শুনানির আর্জি জানানো হয় তাঁর তরফে বলে খবর। যাতে প্রধান বিচারপতি বলেন, “ইমেল মারফত আবেদন করুন। আমরা বিষয়টি দেখছি।” যে পদ্ধতিতে তৃণমূল (TMC) সাংসদকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তার তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মহুয়া।#

 পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১৩

 

ট্যাগ