কথাবার্তা: 'করোনায় বিশ্বের প্রায় ৮০ কোটি মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে'
-
পত্রপত্রিকার পাতার গুরুত্বপূর্ণ খবরের বিশ্লেষণ
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ১৩ এপ্রিল সোমবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি বাবুল আখতার। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- বেড়েছে পরীক্ষা বেড়েছে করোনা শনাক্ত, মৃত্যু ৫ জনের-দৈনিক প্রথম আলো
- সেনাপ্রধানের ১৬ দফা নির্দেশনায় করোনা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সেনাবাহিনী-দৈনিক ইত্তেফাক
- সিঙ্গাপুরে আরও ১২৫ জন বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত-দৈনিক মানবজমিন
- চিকিৎসকের চেয়ে কাজের বুয়া বেশি সম্মান পায় –কুয়েত মৈত্রীর বরখাস্ত চিকিৎসক -দৈনিক যুগান্তর
- বকেয়ার দাবিতে লকডাউনের মধ্যেও বিভিন্ন স্থানে গার্মেন্ট শ্রমিকদের বিক্ষোভ -বাংলাদেশ প্রতিদিন
- ৩০ হাজার কোটি টাকা প্যাকেজের নীতিমালা জারি-দৈনিক সমকাল
ভারতের শিরোনাম:
- দেশে তিনশো ছাড়াল করোনায় মৃত্যু, মহারাষ্ট্রেই মৃত প্রায় দেড়শো-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
- করোনার জেরে ৩ দশকের সর্বনিম্ন হতে পারে ভারতে বৃদ্ধির হার, বিশ্ব ব্যাংকের আশঙ্কা -দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
- তুলনামূলক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতের মৃত্যুর হারে অশনি সঙ্কেত-দৈনিক আজকা
পাঠক/শ্রোতা! এবারে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাব।
১) সরকারের প্যাকেজে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী উপেক্ষিত- এ মন্তব্য করেছে সিপিডি। আপনি কী বলবেন?
২) বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতেই সৌদি আরব যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে- এমন কথা বলছে ইয়েমেনের হুথিরা। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর।

বিশ্বের প্রায় সব মিডিয়ায় বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের খবরই প্রধান খবর হিসেবে পরিবেশিত হয়েছে।
বিশ্বের ১১০ টি দেশ ও অঞ্চলে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। আজ পর্যন্ত বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ১,১৪,২৫৩ জন, আক্রান্তের সংখ্যা ১৮,৫৩,৩৫৭ জন।দৈনিক যুগান্তর লিখেছে আশা জাগছে ইতালিতে, কমছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা । ফ্রান্সেও কমছে বলে মিডিয়ার খবরে এসেছে। তবে ইত্তেফাক লিকেছে, বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৪ ঘন্টায় আরও ১৫১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। চীনেও নতুন সংক্রমণিত হয়েছে শতাধিক মানুষের মধ্যে। এদিকে প্রিন্স উইলিয়াম বলেছেন, ব্রিটেন এমন সংকটে আগে কখনও পড়েনি। আর দৈনিক মানবজমিনের একটি খবরের শিরোনাম-বৃটেনে বাংলাদেশিরা নজিরবিহীন সংকটে। ইত্তেফাকের একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম এরকম যে, করোনার পাশাপশি বিশ্বের ক্ষুধার বিরুদ্ধেও চলছে লড়াই।
বৃটেনে বাংলাদেশিরা নজিরবিহীন সঙ্কটে, তবুও...-দৈনিক মানবজমিনের এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, বৃটেনজুড়ে থাকা লাখ লাখ বাংলাদেশির জীবনে এমন কঠিন সময় অতীতে কখনও আসেনি। প্রায় অর্ধশত বছর ধরে লন্ডনে তাদের বাস। তারা ডুয়েল সিটিজেন। দুই দেশের সমাজ ও রাজনীতিতে বৃটিশ-বাংলাদেশিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, বন্যা কিংবা মানবতার যে কোনো সঙ্কটে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশরা ঝাঁপিয়ে পড়েন সর্বোতভাবে। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনার এই সময়ে আজ তারা বড় বিপদে। ঘরবন্দি, কর্মহীন অবস্থায় জীবন কাটছে চরম অনিশ্চয়তায়। তুলনামূলক প্রশান্তিময় জীবনে আচমকা ঝুঁকিতে তারা!

দৃশ্যত বাংলাদেশের তুলনায় বৃটেনের সঙ্কট শতগুন বেশি। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৮৪ হাজারের বেশি মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত। মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৭শ ৩৭ জনের প্রাণ গেছে। লন্ডন মিশনের হিসাব মতে, কেবল হাসপাতালেই ৪৫ বাংলাদেশির প্রাণ কেড়েছে প্রাণঘাতি করোনা। বাসা-বাড়িতে কিংবা ওল্ডহোমে আগে থেকে অন্য রোগ-শোকে ভোগে এই সময়ে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের হিসাব বাদ।
করোনায় সারা দুনিয়ায় দেখা দিতে পারে দুর্ভিক্ষ: জাতিসংঘ-দৈনিক যুগান্তরের এ খবরে লেখা হয়েছে, মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে চলছে লকডাউন। মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে খাদ্য উৎপাদনে।পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকটের কারণে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। খবর সিএনএনের।
করোনায় সৃষ্ট ভয়ঙ্কর মহামারী রুখতে বিশ্বজুড়ে যেভাবে লকডাউন জারি করা হয়েছে, এর জেরেই অনভিপ্রেত খাদ্য সংকট তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থা এফএও।
আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটি জানায়, খাবারের অভাব এখন বোঝা না গেলেও লকডাউনের পর খাদ্যে প্রকট অভাব দেখা দিতে পারে।একটি সমীক্ষা বলছে, বিশ্বব্যপী প্রায় ৮০ কোটি মানুষ ইতিমধ্যে খাদ্য সংকটে ভুগছেন।করোনা আতঙ্কে বিশ্বের বহু দেশে সম্পূর্ণ লকডাউন চলছে। বন্ধ আন্তর্জাতিক সীমান্ত। আকাশপথ পুরোপুরি বন্ধ, ব্যবসাবাণিজ্যেরও একই হাল।
জাতিসংঘের আশঙ্কা, এর জেরে বিশ্বজুড়ে খাদ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে। ফলে যেসব দেশে প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন হয় না, যাদের খাদ্যের জন্য অন্য দেশের ওপর নির্ভর করতে হয়, সেসব দেশ চরম সমস্যায় পড়তে পারে। দেখা দিতে পারে দুর্ভিক্ষ।
জাতিসংঘের খাদ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত কমিটির আশঙ্কা, খাদ্যের এই সংকটে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবেন গরিব ও প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ।এই উদ্ভূত সংকট থেকে রক্ষা পেতে দ্রুত বিশ্বজুড়ে খাদ্য পরিবহনের ব্যবস্থা করা উচিত বলে মনে করছে জাতিসংঘের ওই কমিটি।
করোনা বাংলাদেশ:
প্রথমআলোসহ বিভিন্ন দৈনিকের খবর- বেড়েছে পরীক্ষা বেড়েছে করোনা শনাক্ত, মৃত্যু ৫ জনের।দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০৩ জনে এবং মৃত্যু বেড়ে হয়েছে ৩৯ জন। দৈনিক যুগান্তর লিখেছে, করোনা –কাজ বন্ধ, দুর্ভোগ নিন্ম আয়ের মানুষদের। তাদের প্রধান দুশ্চিন্তা হচ্ছে বাসা ভাড়া ও খাবার নিয়ে। এদিকে বেতনের দাবিতে রাস্তায় গার্মেন্ট শ্রমিকরা –বিক্ষোভে উত্তাল টঙ্গী গাজীপুর ও চট্টগ্রাম। তাছাড়া ৩৪ জেলা ও রাজধানীর ৭৫ টি এলাকায় সক্রমণ ছড়িয়েছে এবং বিভিন্ন জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে কমপেক্ষে ১৫ জন মারা গেছে বলে ইত্তেফাকে খবর এসেছে।
হাতে কাটা পা, চালের খনি! এরপর কি?-দৈনিক মানবজমিনের মত মতান্তরে লেখা হয়েছে, অবিশ্বাস্য। অমানবিক। হাতে কাটা পা নিয়ে মিছিল করছে অমানুষের দল। মুখে আবার জাতীয় শ্লোগান জয়বাংলা। এর আগে এরাই প্রতিপক্ষ একজনের পা ধারালো অস্র দিয়ে কুপিয়ে কেটেছে। এতেও সন্তুষ্ট নয়, মিছিল থেকে একজন বলছে, এভাবেই কেন মাথাটা কেটে আনা হলো না। সত্যিইতো মাথাটা কেটে আনলে সেটা হাতে নিয়ে মিছিল করা যেতো! অন্যরা বাপের বেটা বলে প্রশংসা করত। আফসোস।
সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের কাজ এটা! ভাবতেও গা শিহরে উঠে। শুরু হয় হৃদ কম্পন। মধ্য যুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে এ চিত্র। ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নবীনগরের ঘটনা এটি। গতকাল দলবেধে মানুষ নামের এসব প্রাণীর তাণ্ডব দেখেছে দেশবাসী। অন্যদিকে একই জেলার সরাইলেও হয়েছে দুদল গ্রামবাসীর শক্তি প্রদর্শন। দেশীয় অস্র নিয়ে তারা একে অন্যের উপর আক্রমন চালিয়ে উল্লাস করেছে। তাদের থামাতেও পুলিশকে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে হয়েছে। হায় সেলুকাস! কি বিচিত্র এ দেশ। শুধু কি তাই? না আরো আছে। যখন করোনার থাবায় কাবু বিশ্ব। দেড় লাখ ছুঁই ছুঁই লাসের সংখ্যা। দেশে দেশে চলছে লকডাউন। কারফিউ। সেখানে বাংলাদেশে করোনায় দুঃস্থ ও অসহায়দের জন্য বরাদ্দ করা চাল চুরিতে মেতে উঠেছে একদল জনপ্রতিনিধি। গতকালই ভোলার লালমোহনে এক ইউপি সদস্যের বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আবিষ্কার করেছে চালের খনি। মাটি খুড়ে তা উদ্ধারও করা হয়েছে। শুধু ইউপি সদস্যের বাড়িতে নয়, চৌকিদারের বাড়িতেও এমন খনি পাওয়া গেছে। এসব কাজে জড়িত কোথাও কোথাও চেয়ারম্যানও। ইতিমধ্যে এক ইউপি চেয়ারম্যানসহ দুই মেম্বারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়েও চাল আত্মসাতের দায়ে এক ইউপি সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়। ওদিকে গতকালই জামালপুরে ট্রাক ভর্তি ত্রাণের মালামাল লুট করে নিয়েছে জনতা। এসব জনতা যখন চোখের সামনে দেখছেন তাদের জন্য বরাদ্দ করা মালামাল তাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে তখন তারা ভরসা হারিয়ে ফেলে। দিশাহারা হয়ে পড়ে। এ থেকেই হয়তো তারা নিজেরাই ট্রাক থামিয়ে ত্রাণের মাল নিয়ে যায়। কিন্তু এটাও অন্যায়। মহা অন্যায়। তারা অবশ্য বলেছে, ঘরে খাবার নেই। সরকার ত্রাণ দিচ্ছে শুনছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা ত্রাণ পাইনি। করোনা আমাদের পঙ্গু বানিয়ে দিয়েছে। কর্মহীন করে দিয়েছে। গোটা পৃথিবীর মানুষ জানে ভয়ঙ্কর করোনা মরণ ছোবল দিয়েছে। সবাইকে ঘরে ঠেলে দিয়েছে। এর কোন ওষুধ এখনো আবিষ্কার হয়নি। বিজ্ঞানীরা এর ভেকসিন আবিস্কারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। আপাতত এর একমাত্র ওষুধ ঘরে থাকা। যে যতবেশি ঘরে থাকবে সে ততবেশি নিরাপদ। এটা সবাই জানার পরও শক্তির মহড়ায় নামে। প্রকাশ্যে এমনভাবে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে পা কেটে নেয়ার পর উল্লাস করা, কাটা পা হাতে নিয়ে মিছিল করা কি কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব? কিন্তু ওরা তা পেরেছে। ওরা তাহলে কেমন মানুষ? সরাইল ও নবীনগরের দুটি ঘটনাই ঘটেছে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লড়াই। মরনব্যাধি ভয়ঙ্কর করোনাও এদের রুখতে পারেনি। এই লকডাউনের মধ্যে মৃত্যুকে পাশে রখে এরপর কি দেখতে হয় কে জানে।
এদিকে, বিভিন্ন দৈনিকে লেখা হয়েছে, নবীনগরে পা কেটে নেয়ার ঘটনায় মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ৪৩ জন।
এবার ভারতের কয়েকটি খবর তুলে ধরছি
দেশে তিনশো ছাড়াল করোনায় মৃত্যু, মহারাষ্ট্রেই মৃত প্রায় দেড়শো-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
এ খবরে লেখা হয়েছে, দেশে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার থেকে ৯ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়ে গেল মাত্র দু’সপ্তাহে। সোমবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আরও ৭৯৬ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ফলে গোটা দেশে আক্রান্তের সংখ্যা এখন মোট ৯ হাজার ১৫২। দেশে মৃত্যু হয়েছে মোট ৩০৮ জনের। এর মধ্যে কেবল মাত্র মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৪৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন আরও ৩৫ জন।
দেশে রোজই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক ছবি ধরা পড়েছে মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং তামিলনাড়ুতে।
করোনা নিয়ে দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের কয়েকটি খবর তুলে ধরছি। করোনার ত্রাণেও জালিয়াতি চলছে। অনলাইন লেনদেনে নজার রাখার নির্দেশে দিলেন পুলিশ কমিশনার। এদিকে নবান্ন –রাজভবনের সঙ্গে লকডাউনে ইতি টানুন-মমতাকে এভাবে কটাক্ষ করলেন ধনকড়। করোনার গ্রাস থেকে বহু মানুষকে প্রাণে বাঁচিয়েছে সংবাদমাধ্যম বলে জানিয়েছে দৈনিকটি।সংবাদ প্রতিদিন লিখেছে, মানবিকতার দৃষ্টান্ত হস্টেলে আটকে পড়া ৯৬ দৃষ্টিহীন পড়ুয়াকে খাবার পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী।তাছাড়া একটি নজিরবিহীন উদ্যোগের খবর দিয়েছে।সেটি হচ্ছে উপসর্গহীন আক্রান্তের সেবায় নিযুক্ত হলেন করোনা জয়ীরা।
তুলনামূলক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতের মৃত্যুর হারে অশনি সঙ্কেত-দৈনিক আজকাল
বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে,চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা সংক্রমণে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, করোনা মানেই মৃত্যু নয়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, করোনায় মৃত্যুর হার শতকরা ৩.২ শতাংশ। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে দেশের আমজনতার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলার মতো এক পরিসংখ্যান সামনে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, এখন আক্রান্ত ও মৃত্যুর যে হার, তা একই পর্যায়ে চীন, ইতালি, জার্মানি এবং মার্কিন মুলুকের চেয়ে খারাপ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)–র দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, বিশ্বে করোনা–আক্রান্ত সবচেয়ে বেশি, এমন দেশ চীন, ইতালি, জার্মানি ও আমেরিকায় যখন আক্রান্তের সংখ্যা ভারতের মতো ছিল, তখন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল অত্যন্ত কম।
লকডাউন: ভারতে ৫ সন্তানকে গঙ্গায় নিক্ষেপ করলেন মা! দৈনিক এই সময়
লকডাউনে কাজ বন্ধ। তাই ৫ সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে পারেননি ভারতের এক দিনমজুর মা। শেষ পর্যন্ত তিনি বাধ্য হয়ে ৫টি সন্তানকেই গঙ্গায় ছুড়ে ফেলেছেন। পত্রিকাটিতে ‘সন্তানদের গঙ্গায় ছুড়ে ফেললেন মা’ শীর্ষক খবরে বলা হয়, দিনমজুরের কাজ করতেন মা। লকডাউনে বন্ধ সেই আয়। পাঁচ বাচ্চার মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে তাদের গঙ্গায় ছুড়ে ফেলে দিলেন মা! মর্মান্তিক এই ঘটনা উত্তরপ্রদেশের ভাদোহির জাহাঙ্গিরাবাদ গ্রামের।
সেখানে শনিবার গভীর রাতে মঞ্জু যাদব নামে ওই মহিলা বাচ্চাদের গঙ্গার ঘাটে নিয়ে গিয়ে ছুড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ। সেই সময় গঙ্গায় বেশ কয়েকজন মাছ ধরছিলেন।
বাচ্চাদের চিৎকার শুনেছিলেন তারাও। কিন্তু মহিলাকে ডাইনি ভেবে জাল ফেলে পালান। স্থানীয় সূত্রে খবর, রাতভর গঙ্গার ঘাটেই বসেছিলেন ওই মহিলা। রবিবার সকালে পুলিশের কাছে গিয়ে নিজেই সব কথা বলেন। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে গঙ্গায় তল্লাশি শুরু করে। রবিবার দুপুরে ১২ বছরের মেয়েটির দেহ উদ্ধার হলেও বাকি চারজনের খোঁজ মেলেনি। বাকি চারজনের বয়স ৩ থেকে ১০ বছরের মধ্যে।
মহিলাকে জেরা করেই পুলিশ জানতে পারে, দিনমজুরের কাজ করতেন তিনি। লকডাউনের পর থেকে বাচ্চাদের বেশ কিছুদিন খেতে দিতে পারেননি। তাই তাদের মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত। প্রতিবেশীদের বক্তব্য, স্বামী মৃদুল যাদবের সঙ্গে মঞ্জুর ঝগড়া লেগেই থাকত। লকডাউনে কাজ হারানোর পর তা আরও বেড়েছিল। শনিবার রাতেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। রাগ ও অসহায়তা থেকেই মহিলা এ কাজ করেছেন বলে ধারণা স্থানীয়দের। মহিলাকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তার মানসিক অবস্থাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লকডাউনের জেরে কয়েক কোটি মানুষ চাকরি হারাবেন, সে আশঙ্কাবার্তা শোনা যাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের এই ঘটনা যেন সেই অশনি সঙ্কেতেরই বার্তাবহ।
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৩