সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২০ ১৬:৩৭ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ । আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • সীমান্তে হঠাৎ বেড়েছে মাদক চোরাচালান- দৈনিক ইত্তেফাক
  • ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে বরিশালে দুই পুলিশ বরখাস্ত-সমকাল
  • ইতালিতে বাংলাদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা--বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • অস্ত্র মামলায় পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে শেষ হলো সাক্ষ্য গ্রহণ- কালের কণ্ঠ
  • রাশিয়ায় জন সাধারণের জন্য করোনার টিকা উন্মুক্ত- প্রথম আলো
  • মসজিদে বিস্ফোরণ-গ্যাস পাইপ লাইনে লিকেজ, খনন কাজ ফের শুরু-দৈনিক মানবজমিন
  • সরকার পরিবর্তন চাইলে বিএনপিকে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষার আহ্বান কাদেরের-দৈনিক যুগান্তর

ভারতের শিরোনাম:    

  • লাদাখে পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর, প্রভাব ফেলবে সম্পর্কে, মস্কো বৈঠকরে আগে বললেন জয়শঙ্কর-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
  • ২ দিনে দ্বিতীয়বার, যোগীর রাজ্যে গণধোলাইয়ে মৃত্যু দলিতের-দৈনিক আজকাল
  • ভারত নয়; সীমান্তে গুলি চালিয়েছিল চীনা ফৌজই, পাল্টা দাবি ভারতীয় সেনার-সংবাদ প্রতিদিন

পাঠক/শ্রোতা ! এবারে চলুন, বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। 

বিশ্ব করোনা পরিস্থিতি

প্রথমে বিশ্ব করোনার সর্বশেষ খবর:  ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী করোনায় এখন পর্যন্ত বিশ্বে মৃত্যু ৮ লাখ  ৯৬ হাজার ছাড়াল এবং আক্রান্তও ২ কোটি ৭৫ লাখের বেশি। মোট সুস্থ্য হয়েছেন ১ কোটি ৯৫ লাখের বেশি মানুষ।

ভারতে করোনার সর্বশেষ খবরে দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, ২৪ ঘণ্টায়  করোনা সংক্রমণ কমে ৭৫ হাজারে নামল এ সময়ে ১১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃত্যু ৭২,৭৭৫ হাজার ছাড়াল। আর মোট আক্রান্ত ৪২ লাখ ৮০ হাজার ছাড়াল।  

বাংলাদেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন ৩৬ জন। মোট মৃত্যু-৪৫১৬, মোট আক্রান্ত ৩ লাখ ২৭ হাজার ৩৫৯ জন।

রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিন উন্মুক্ত

এদিকে, করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে প্রায় সব দৈনিকের খবরে লেখা হয়েছে,রাশিয়ায় জনসাধারণের জন্য করোনার টিকা উন্মুক্ত করা হয়েছে।

সীমান্তে হঠাৎ বেড়েছে মাদক চোরাচালান-দৈনিক ইত্তেফাক

ফেনসিডিল আসছে ৪২ পয়েন্ট দিয়ে চারটি পয়েন্টে জমজমাট ইয়াবা পাচার স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় বিক্রি হচ্ছে দেদার

Image Caption

 

সীমান্তে হঠাত্ বেড়েছে মাদকের চোরাচালান। দেশের ৩২টি জেলার ৪২টি পয়েন্ট দিয়ে বেশি আসছে ফেনসিডিল। টেকনাফের ৩০টি পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবা আসছে। তবে চারটি পয়েন্টে এখন ইয়াবা পাচার জমজমাট। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একশ্রেণির কর্মকর্তার সহায়তায় এসব মাদক সারা দেশে বিক্রি হচ্ছে দেদার। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আহসানুল জব্বার ইত্তেফাককে জানান, কোস্টগার্ড, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান ইতিমধ্যে জোরদার করা হয়েছে। সম্প্রতি বিপুলসংখ্যক মাদক উদ্ধার হয়েছে। মাদক নির্মূলে সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, মাদক নির্মূল করতে যা যা দরকার, সবই করা হবে।

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। বাড়ছে সংক্রমণের ভীতিও। কিন্তু করোনার এই দুর্যোগকালেও বসে নেই মাদক কারবারিরা। নিত্যনতুন কৌশলে মাদকের চোরাচালান আসছে। কখনো ত্রাণবাহী কিংবা জরুরি পণ্যবাহী যানে; মাছ ধরার ট্রলার, কাভার্ড ভ্যান, কখনো পায়ুপথে, কখনো যানবাহনের ইঞ্জিনের কাভারে করে গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে গাঁজা, ফেনসিডিল কিংবা ইয়াবা। করোনার মধ্যে মাদকসেবীদের জন্য হোম ডেলিভারিও হচ্ছে। করোনাকালে রাজধানীসহ সারা দেশে অপরাধ কমলেও হঠাত্ মাদকের চোরাকারবার বেড়ে গেছে। ইতিমধ্যে সবজি, চাল, ডাল ও অ্যাম্বুলেন্সে স্থানান্তর হচ্ছে ইয়াবা।

প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ইয়াবা, ফেনসিডিলের চালান ধরা পড়ছে। ইত্তেফাকের ৩২টি সীমান্তবর্তী জেলার প্রতিনিধিরা জানান, প্রতিদিনই মাদকের চালান আসছে। নৌ ও সড়কপথে এসব মাদক সারা দেশের গ্রাম পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। তবে নৌপথে বেশি যাচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, রাজশাহী, যশোর ও সাতক্ষীরা দিয়ে ফেনসিডিল বেশি আসছে। ইতিমধ্যে বগুড়ায় মাদকের বড় চালান ধরেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া দিয়ে গাঁজা ও ফেনসিডিল বেশি আসছে। অন্যদিকে পার্বত্য অঞ্চলের ২৫ কিলোমিটার অরক্ষিত। এসব পথ দিয়ে অস্ত্র ও মাদক আসছে। বিশেষ করে টেকনাফের চারটি পয়েন্ট দিয়ে বেশি ইয়াবা আসছে। টেকনাফ সীমান্তবর্তী নাফ নদীর ওপারে হলো ইয়াবার কারখানা। দুই দেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পর্যায়ে একাধিকার বৈঠক হলেও ঐ সব কারখানা বন্ধ হয়নি। প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয় না। টেকনাফ থেকে এসব ইয়াবা নৌপথে বরিশাল, পিরোজপুর হয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও মোংলা-খুলনায় চলে যাচ্ছে।

৪২ জনকে ডিঙিয়ে জ্যেষ্ঠ সুপারের দায়িত্বে, কারাপ্রধানকে ক্ষুব্ধদের চিঠি-দৈনিক প্রথম আলো

জ্যেষ্ঠতার তালিকায় ৪২ জনকে ডিঙিয়ে নারায়ণগঞ্জের কারা তত্ত্বাবধায়ক সুভাষ কুমার দাশকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জ্যেষ্ঠ জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। এ ঘটনায় কারা অধিদপ্তরে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা কারা মহাপরিদর্শককে জানিয়েছেন, এতে অধিদপ্তরের চেইন অব কমান্ড দুর্বল হয়ে পড়বে।

৩ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতির পক্ষে সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব মো. মনিরুজ্জামানের সই করা একটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়। ওই প্রজ্ঞাপনে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের কারা তত্ত্বাবধায়ক সুভাষ কুমার দাশকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে নিয়োগের কথা বলা হয়।একই প্রজ্ঞাপনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা জ্যেষ্ঠ জেল সুপার (চলতি দায়িত্ব) ইকবাল কবির চৌধুরীকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার (চলতি দায়িত্ব) পদে বদলির কথা বলা হয়েছে।

কারা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, স্বাধীনতার আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে উপমহাপরিদর্শক পদে কর্মরত ব্যক্তিরা কারাগারের দায়িত্ব পেতেন। স্বাধীনতার পর জ্যেষ্ঠ জেল সুপার পদ তৈরি করা হয় এবং তাঁদের হাতে কেন্দ্রীয় কারাগারগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছাড়া হয়।

২০১৯ সালের ২ জুলাই কারা অধিদপ্তরের প্রথম শ্রেণির পদের জ্যেষ্ঠতার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। ওই তালিকায় চলতি দায়িত্বে নয়জন সিনিয়র জেল সুপার রয়েছেন।

সরকারি কর্মকর্তা: তাঁরা আক্রান্ত, জনগণের নিরাপত্তা কোথায়-সৈয়দ আবুল মকসুদের লেখা এ শিরোনামের নিবন্ধটি দৈনিক প্রথম আলোতে পরিবেশিত হয়েছে। 

Image Caption

এতে তিনি লিখেছেন,দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হত্যাচেষ্টার ঘটনাটি স্রেফ একটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে দেখা যায় না। দেশে হামেশাই বহু বাড়িতে ও অফিসে চুরি হয়ে থাকে। আগে মানুষের ঘরদোর কাঁচা ছিল বলে সিঁধ কেটে চুরি হতো। এখন সব পাকা দালানকোঠা। সিঁধ কাটার উপায় নেই। তাই রাতবিরাতে দরজা-জানালা ভেঙে চোর ঢোকে। ইউএনওর বাসভবনে সে রকম একটি ‘চুরি’ হয়েছে। তবে এমন আত্মভোলা চোর যে মালপত্র না নিয়ে গৃহকর্ত্রী ও তাঁর বৃদ্ধ বাবাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখম করেছে। যে আঘাত তিনি পেয়েছেন, মৃত্যু ছিল অবধারিত। আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে গেছেন। আজকাল চোর হাতুড়ি নিয়ে চুরি করতে যায়।

এই ঘটনায় ‘মূল সন্দেহভাজন’সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশে কোনো বড়সড় অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলেই চটজলদি যখন কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়, তখন মানুষের স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে জজ মিয়ার ছবি। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অমর সৃষ্টি জজ মিয়া। তবে সঠিক তদন্ত হলে অ-জজ মিয়াদের খুঁজে বের করাও কঠিন নয়।শনিবার অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এটি কোনো চুরির ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ডের অভিপ্রায় নিয়ে ইউএনওকে আক্রমণ করা হয়েছে। কারণ, যখন ইউএনও এবং তাঁর বাবাকে আঘাত করা হয়, তখন দুর্বৃত্তরা কোনো সম্পদ চুরি করেনি বা বাসা থেকে কোনো জিনিস খোয়াও যায়নি। এমনকি তাঁর বিছানার ওপর পড়ে থাকা মোবাইলটিও নেয়নি। এটি একটি পরিকল্পিত আক্রমণের ঘটনা। এ ঘটনার সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে। তাঁর এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করা কঠিন।

সব পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা কারণে একধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, তা আমরা জানি। অবৈধ দখলকারীদের যখন তাঁরা উচ্ছেদ করেন, তখন তাঁদের শত্রু সৃষ্টি হয়। অবৈধ বালুমহালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে তাঁদের শত্রু বেড়ে যায়। মহাপ্রকল্প নির্মীয়মাণ পদ্মা সেতুর নিচ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বাধা দেওয়ার কর্তৃত্ব ইউএনওর। তা দিলেই হন বিরাগভাজন। সে বিরাগ শুধু মনে মনে নয়, তার প্রকাশ্য রূপ খুবই অশোভন। সব কর্মকর্তারই ব্যক্তিগত মান–মর্যাদা রয়েছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অপমানিত হতে কার ভালো লাগে! আমাকে অনেক কর্মকর্তা বলেছেন, অনেক সময় বিষ খেয়েও বিষ হজম করতে হয়।বর্তমান করোনা মহামারির সময় মাঠপর্যায়ের অনেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও পুলিশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন এবং করে যাচ্ছেন। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের অনেক কর্মকর্তা ও পুলিশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পুলিশ ও তাঁদের পরিবারের সদস্য মারা গেছেন শতাধিক।তবে রাষ্ট্রের কোনো কিছুই সামগ্রিক অবস্থার বাইরে নয়। সুশাসনের ঘাটতি থাকলে সমাজে ও রাষ্ট্রযন্ত্রে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। সমাজ নষ্ট হয়ে যায়। একশ্রেণির মানুষের নৈতিক অবক্ষয় ঘটেছে মারাত্মক রকম। কয়েক বছর আগে এক ইউএনও আমাকে ফোনে জানান, তিনি সালোয়ার-কামিজ পরে এক সুপারমার্কেটে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন। কয়েকজন বখাটে তাঁকে উত্ত্যক্ত করে। তিনি বলেন, দয়া করে এসব নিয়ে লিখুন। তাঁকে বলেছি লিখে লাভ নেই। যে অ্যান্টিবায়োটিকে রোগ সারবে তা নকল, কেরানীগঞ্জের কারখানায় তৈরি।

বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ উধাও হয়ে গেছে। প্রত্যেকেই তাঁর নিজ নিজ পদে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রত্যেকেরই উপযুক্ত মর্যাদা প্রাপ্য। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্ব সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ প্রশাসনের জন্য বড় বাধা। উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে ইউএনওর এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে ডিসির অনেক ক্ষেত্রেই মতবিরোধ প্রকট। পরিবেশ, নদী রক্ষা ও অন্যান্য বিষয়ে কাজ করতে গিয়ে উভয় পক্ষের বিরোধের স্বরূপ দেখতে পেয়েছি।

সরকারি দলের নেতা ও ক্যাডারদের দলপতিদের দৌরাত্ম্য এখন সীমা অতিক্রম করেছে। শুধু তাঁরা নন, অনেক সময় তাঁদের মা-বাবা ও শ্বশুর-শাশুড়ি, ভাইবোন, শালা-শালির অনৈতিক আবদার পূরণ না করার পরিণাম হয় খুবই অশুভ। ক্ষেত্রবিশেষে অসময়ে অপ্রত্যাশিত বদলির আদেশ।

উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে যাঁরা প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক দায়িত্ব পান, তাঁরা রাষ্ট্রের সম্পদ। ব্রিটিশ আমলে মাথার ওপরে ঔপনিবেশিক সরকার থাকলেও কর্মকর্তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতেন। সেই অধিকার ও সুযোগ তাঁদের দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা তার অপব্যবহার করতেন না। সে জন্য তাঁদের দাপট ছিল খুব বেশি। পাকিস্তান আমলে রাজনীতিকদের চেয়ে আমলারা বেশি ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন।বর্তমানে রাজনীতিতে যে শূন্যতা, তার জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তারা দায়ী নন। তাঁরা নাগরিকদের নিরাপত্তা দেন। তাঁদের নিরাপত্তা যদি বিঘ্নিত হয়, জনগণের নিরাপত্তা বলতে আর কিছু থাকে না।

 এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত: 

লাদাখ উত্তেজনা

লাদাখে গুলি চালানো নিয়ে ভারত-চীন পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের খবর ভারত –বাংলাদেশের সব পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। দৈনিক আনন্দবাজারের শিরোনাম-ফের প্ররোচনা, প্যাংগং এ শূন্যে গুলি চালিয়ে ভারতকেই দুষল চীন। সংবাদ প্রতিদিন লিখেছে, ভারত নয় , সীমান্তে গুলি চালিয়েছে চীনা ফৌজই-পাল্টা দাবি ভারতীয় সেনার।

লাদাখে ভারতীয় সেনারা গুলিবর্ষণ করেছে, অভিযোগ চীনের

Image Caption

লাদাখের বিরোধপূর্ণ সীমান্তে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা ভেঙে ভারতীয় সেনারা ফাঁকা গুলি ছুড়েছে বলে অভিযোগ করেছে চীন। প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণ তীরে সোমবার দুপক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন তারা। খবর রয়টার্স। মঙ্গলবার চীনের সামরিক বাহিনীর দাফতরিক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বাহিনীটির পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ডের মুখপাত্র ঝ্যাং শুইলি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে চীনের সীমান্ত রক্ষীরা ‘পাল্টা পদক্ষেপ’ নেয়। তবে চীনের সীমান্ত রক্ষীদের নেয়া ‘পাল্টা পদক্ষেপ’ কী ছিল, চীনের সৈন্যরাও সতর্কতামূলক গুলি ছুড়ছে কি না, বিবৃতিতে এসব পরিষ্কার করে বলা হয়নি।লাদাখের বিরোধপূর্ণ সীমান্তে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা ভেঙে ভারতীয় সেনারা ফাঁকা গুলি ছুড়েছে বলে চীন যে অভিযোগ করেছিল তা অস্বীকার করেছে ভারত।

চীনা বাহিনীই আগে গুলি চালিয়েছে, দাবি ভারতের

ভারতীয় সেনা বাহিনীর দাবি, চীনের বাহিনীই প্রথম গুলি চালিয়েছে। ভারত শুধু তার জবাব দিয়েছে। এ ঘটনার পর প্যাংগং লেক এলাকায় ভারত বিপুল সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করতে শুরু করেছে। ভারতীয় সেনা সূত্রের বরাতে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, সোমবার রাতে চীনের সেনাবাহিনী ভারতের ‘দখলে’ থাকা একটি পাহাড়ের চূড়া দখলের চেষ্টা করে। কিন্তু ওই চূড়ায় মোতায়েন রয়েছে ভারতীয় সেনা। ওই অভিযানের সময় শূন্যে গুলি চালায় চীনের বাহিনী। পাল্টা জবাব হিসেবে সতর্কতামূলক গুলি চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনীও।

‘লাদাখের পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর' প্রভাব ফেলবে সম্পর্কে, মস্কো বৈঠকের আগে বললেন জয়শঙ্কর

Image Caption

বুধবার মস্কোয় বৈঠকে বসছেন ভারত ও চিনের বিদেশমন্ত্রী। তার দু’দিন আগে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থা ‘অত্যন্ত গুরুতর’ বলে মন্তব্য করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সীমান্তে এই উত্তেজনার প্রভাব নয়াদিল্লি-বেজিং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অবধারিত ভাবে পড়বে বলেও মনে করেন বিদেশমন্ত্রী। সমস্যার সমাধানে এবং সম্পর্কের উন্নতিতে রাজনৈতিক স্তরে গভীর ভাবে আলোচনা এবং সীমান্তে উত্তেজনা কমানো দরকার বলেও মনে করেন কূটনীতিক-রাজনীতিবিদ জয়শঙ্কর।

বৃহস্পতিবার মস্কোয় বসছে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলন। সেখানে আট দেশের বিদেশমন্ত্রীরা আলোচনা করবেন। তার ফাঁকেই বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র বৈঠক হওয়ার কথা। তার আগে সোমবার নয়াদিল্লিতে একটি সংবাদ মাধ্যম আয়োজিত আলোচনা চক্রে বিদেশমন্ত্রী বলেন, সীমান্তের উত্তেজনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক থেকে আলাদা করা যায় না। পর্যবেক্ষকদের মতে, মস্কোয় নয়াদিল্লি-বেজিং আলোচনার আগে বিদেশমন্ত্রীর এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

সম্পত্তি বেচার অভিযান শুরু করেছেন মোদি, LIC’র ‘বেসরকারিকরণ’ নিয়ে তোপ রাহুলের

করোনা, বিদেশনীতি, বেকার সমস্যা এবং জিডিপি (GDP) সঙ্কোচনের পর এবার বিকেন্দ্রীকরণ বা বেসরকারিকরণ। ফের কেন্দ্রের মোদি সরকারকে তিব্র কটাক্ষে বিঁধলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। তাঁর অভিযোগ কেন্দ্র, একটা সরকারি সম্পত্তি বিক্রির অভিযান শুরু করেছে। এবং এরপর সেই অভিযানের বলি হবে এলআইসি।

মঙ্গলবার এক সংবাদপত্রের খবর শেয়ার করে টুইট করেন রাহুল। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, শীঘ্রই নিজেদের ভাগে থাকা এলআইসির ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করতে চলছে কেন্দ্র। যা কেন্দ্রের বৃহত্তর বিকেন্দ্রীকরণ বা বেসরকারিকরণের পরিকল্পনারই অংশ। রাহুল অভিযোগ করেন, “প্রধানমন্ত্রী সরকারি সম্পত্তি বেচার অভিযান চালাচ্ছেন। নিজের তৈরি আর্থিক সমস্যার ক্ষতিপূরণ করার জন্য ধীরে ধীরে সব সরকারি সম্পত্তি বিক্রি করে দিচ্ছে সরকার। সাধারণ নাগরিকদের ভবিষ্যৎ এবং সুরক্ষাকে শিকেয় তুলে এলআইসি বিক্রি করার এই সিদ্ধান্ত লজ্জাজনক।”

২ দিনে দ্বিতীয়বার, যোগীর রাজ্যে গণধোলাইয়ে মৃত্যু দলিতের-দৈনিক আজকালের  শিরোনাম। আর সংবাদ প্রতিদিন লিখেছে, মর্মান্তিক! মেয়েকে বিক্রির গুজবে প্রৌঢ়কে পিটিয়ে খুন, যোগী রাজ্যে দু’দিনে গণপিটুনিতে মৃত ২। 

এ খবরে লেখা হয়েছে, আবারও যোগীর রাজ্যে প্রকাশ্যে গণধোলাইয়ে  সর্বেশ দিবাকর নামের এক দলিত মারা গেছেন।  দু’দিনে দ্বিতীয়বার। সেই ভিডিও ভাইরাল। বিরোধীরা কট্টরপন্থীদের দিকে আঙুল তুলেছে। পুলিশ যদিও মানেনি। উত্তরপ্রদেশের মণিপুরিতে ভাড়া থাকতেন তিনি। ঠেলায় করে মিষ্টি ফেরি করতেন। বাড়িতে তাঁর সঙ্গে থাকত ১৬ বছরের মেয়ে। সে পরিচারিকার কাজ করত। পাশাপাশি স্থানীয় স্কুলে পড়াশোনাও করত। রোববার দিবাকরের বাড়িতে ঢুকে ছাদে নিয়ে গিয়ে মারধর করতে থাকে কয়েকজন। পাশের বাড়ি থেকে তোলা হয়েছে সেই ভিডিও।

জানা গেছে, করোনার কারণে রোজগার থমকে গেছিল দিবাকরের। পেট চালানো দায় হয়েছিল বাবা–মেয়ের। দিন কয়েক আগে বাধ্য হয়ে মেয়েকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে আসেন। রটনা হয়, নিজের মেয়েকে বিক্রি করেছেন দিবাকর। সেই রটনার জেরেই মারধর কিনা জানা যায়নি। ভিডিওতে দেখা গেছে, দিবাকর বারবার ক্ষমা চাইছেন। হাত জোড় করছেন। তাও তাঁকে রেহাই দেওয়া হয়নি। মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পরেও লাথি, ঘুষি চলেছে। পুলিশ এসে তাঁকে স্থানীয় হাসাপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে মারা যান তিনি। বিরোধী সমাজবাদী দল দাবি করেছে, অভিযুক্তরা দক্ষিণপন্থী।

কঙ্গনাকে ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা কেন, মহুয়ার নিশানায় কেন্দ্র-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার

বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতকে ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার বিরোধিতায় এ বার সরব হলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ‘টুইট করে সময় কাটানো’ বলিউড তারকাদের ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা দিয়ে খামোকা অর্থের অপচয় করা হচ্ছে কেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উদ্দেশে এই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন তিনি।

কঙ্গনাকে নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে সোমবার দিনভর তর্ক বিতর্কের সাক্ষী থেকে থেকেছে টুইটার। রাতে তা নিয়ে সরব হন মহুয়া মৈত্রও। তিনি লেখেন, ‘‘ভারতে প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যায় ১৩৮ জন পুলিশ রয়েছেন। সাধারণ মানুষকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বের ৭১টি দেশের মধ্যে নীচের দিক থেকে ভারত পঞ্চম স্থানে রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, এর চেয়ে ভাল কোনও কাজে কি সরকারি অর্থ ব্যবহার করা যেত না?’’

সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুকে হাতিয়ার করে গত দু’মাস ধরে বলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা, পরিচালক এবং প্রযোজকদের লাগাতার আক্রমণ করে আসছেন কঙ্গনা। তদন্তে মুম্বই পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে আসছেন তিনি। তার মধ্যেই সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের শিবসেনা-এনসিপি এবং কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেন তিনি। মহারাষ্ট্রের বর্তমান সরকারের আমলে মুম্বই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে পরিণত হয়েছে, সেখানে থাকতে ভয় পাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন কঙ্গনা।

তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই শিবসেনা ও এনসিপি নেতৃত্বের সঙ্গে বাগযুদ্ধ চলছে কঙ্গনার। কঙ্গনার মুম্বইয়ে থাকা উচিত নয় বলে পাল্টা মন্তব্য করেছেন এনসিপি নেতা অনিল দেশমুখ। কঙ্গনাকে অকৃতজ্ঞ বলে কটাক্ষ করেছেন শিবসেনার সঞ্জয় রাউতও।

সেই পরিস্থিতিতে হিমাচল প্রদেশের বাড়ি থেকে মুম্বইয়ে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন বলে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন কঙ্গনা। তার পরই তাঁকে ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র, যার আওতায় সর্বক্ষণ কঙ্গনার নিরাপত্তায় থাকবেন সিআরপি জওয়ানরা। এক জন ব্যক্তিগত নিরাপত্তা অফিসার-সহ ১১ জন সশস্ত্র পুলিশ ও কম্যান্ডো তাঁকে ঘিরে থাকবেন। এই প্রথম বলিউডের কোনও তারকা ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা পেলেন।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৭

ট্যাগ