অক্টোবর ০১, ২০২০ ১৭:৫৩ Asia/Dhaka

প্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ১ অক্টোবর বৃহষ্পতিবারের কথাবার্তার আসরে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতেই ঢাকা ও কোলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রধান প্রধান বাংলা দৈনিকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিরোনাম তুলে ধরছি।

প্রথমে বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • নতুন নতুন এলকা প্লাবিত, লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি-দৈনিক ইত্তেফাক
  • স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দিনরাত পরিশ্রমের ফলে করোনা নিয়ন্ত্রণে-স্বাস্থ্যমন্ত্রী-দৈনিক কালের কণ্ঠ
  • হাসপাতাল ছেড়ে সিআরপিতে ওয়াহিদা খানম-প্রথম আলো
  • সংসদ নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদন সঠিক নয়-ওবায়দুল কাদের-দৈনিক সমকাল
  • ভারত থেকে আনা পঁচা মাংসের দুর্গন্ধে কাহিল চট্টগ্রাম বন্দর-মানবজমিন
  • জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ-দৈনিক যুগান্তর

ভারতের শিরোনাম:

  • হাথরসের ধর্ষিতার গলা টিপে শিরদাঁড়া ভেঙেছিল ৪ জন, বলছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট-দৈনিক আজকাল
  • রাহুলকে গলাধাক্কা, শেষে গ্রেফতার যোগীর পুলিশের-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • লাদাখ সীমান্তে মোতায়েন ‘নির্ভয়’, লালফৌজের উপর অগ্নিবর্ষণ করবে এই ক্ষেপণাস্ত্র -সংবাদ প্রতিদিন

শ্রোতাবন্ধুরা! এবারে চলুন বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

ভারত থেকে আনা পঁচা মাংসের দুর্গন্ধে কাহিল চট্টগ্রাম বন্দর-মানবজমিন

ভারত থেকে আমদানি করা কনটেইনারভর্তি পঁচা মাংসের দুর্গন্ধে ত্রাহি অবস্থা চট্টগ্রাম বন্দরে। কেউ সেখানে যেতে পারছে না। ফলে বন্দরের কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। এ তথ্য জানিয়েছেন সেখানে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা।

বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক আক্কাছ আলী জানান, পঁচা মাংসের দুর্গন্ধে গত ৪-৫ দিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে কর্মরত শ্রমিকরা শ্বাস নিতে পারছেন না। তাদের এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। পরিবহণ শ্রমিকরা সেখানে যেতে না চাওয়ায় বন্দরের কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।বন্দর সূত্র জানায়, ঢাকার সিআর দত্ত সড়কে অবস্থিত ইগলু ফুডস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে এক কনটেইনার মহিষের মাংস আমদানি করে।

কনটেইনারটি ইয়ার্ডে রাখার পরপরই পঁচা দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে।  বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষ পরিবেশ অধিদপ্তরের কমর্কর্তাদের অবহিত করে।

দুর্নীতির খবরে দৈনিক ইত্তেফাকের শিরোনাম এরকম-অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানের ১২০০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন। বিস্তারিত খবরে বলা হয়েছে, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন শুরুর মধ্যেই করোনার বিস্তারে অর্থনৈতিক কার্যক্রম গতি হারায়। ফলে এই সময়টিতে ফাঁকি রোধে বড় ধরনের কোনো অভিযানে নামেনি রাজস্ব বিভাগ। তবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ধীরে ধীরে চালু হওয়ার পর ফাঁকি রোধে নতুন অর্থবছর থেকে মাঠ পর্যায়ের অফিসের বাইরে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকির হদিস মিলছে। গত জুলাই ও আগস্ট মাসে ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগ রাজধানী ছাড়াও চট্টগ্রামের বাণিজ্য অধ্যুষিত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫১টি প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ৩২ কোটি টাকার ফাঁকি উদঘাটন হয়েছে। এ তালিকায় রয়েছে ব্যাংক, বীমাসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে কিছু সরকারি ব্যাংকেরও ফাঁকি ধরা পড়েছে। অন্যদিকে শুল্ক গোয়েন্দার অভিযানেও আরো অন্তত বেশকিছু আমদানি চালানে মিথ্যা ঘোষণায় প্রায় ১৫০ কোটি টাকার ফাঁকি বের হয়েছে। এছাড়া গোয়েন্দা অভিযানে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানিপণ্য খোলাবাজারে বিক্রির তথ্যও বের হয়েছে। এসব অভিযানের কারণে ক্ষেপেছে ফাঁকিবাজদের একটি অংশ ও তাদের সহযোগীরা।

সংসদ নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদন সঠিক নয়-ওবায়দুল কাদের-দৈনিক সমকালের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, 'সংসদে একচ্ছত্র ক্ষমতার চর্চা জোরদার হয়েছে'-ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের  (টিআইবি) দেওয়া এমন প্রতিবেদন সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্যভিত্তিক নয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সেতু ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারিত অংশের  অনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।ওবায়দুল কাদের বলেন, বিরোধী দলগুলোর সদস্য সংখ্যা কম হলেও তাদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হচ্ছে, সকল কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে।

তিনি বলেন, জনগণের ভোট নিয়ে তারা যদি আসন সংখ্যা বাড়াতে না পারে তার দায় তো সংসদের নয়।

জাতিসংঘে মিয়ানমারের মিথ্যাচার, কড়া প্রতিবাদ বাংলাদেশের-দৈনিক যুগান্তরের এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনে বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যাচার করেছে মিয়ানমার। বাংলাদেশ ওই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে কড়া জবাব দিয়েছে। ঢাকা বলেছে, আবারও আমরা মিয়ানমারের নির্জলা মিথ্যাচার আর বানোয়াট বক্তব্য প্রত্যক্ষ করলাম।

জাতিসংঘে জবাব দেয়ার অধিকারের বিধানের আওতায় মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর দফতরের মন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের একজনকর্মকর্তাজানান, রাখাইন রাজ্যের ঘটনা এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমারের বক্তব্য শুধু সাজানোই নয়; বরং পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর। বাংলাদেশ এই ভিত্তিহীন অভিযোগ, মিথ্যাচার এবং বিকৃত তথ্যকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করছে।

৯ মাসে ধর্ষণের শিকার ৯৭৫ জন নারী, গণধর্ষণ ২০৮-দৈনিক মানবজমিন

ধর্ষণ: প্রতীকী ছবি

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৯৭৫ জন নারী। এরমধ্যে একজনের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৭৬২ জন এবং গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২০৮ নারী। এছাড়া ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৪৩ জন এবং আত্মহত্যা করেছেন ১২ নারী। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংগঠনটি আরো জানায়, গত ৯ মাসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১৬১ নারী। এর মধ্যে যৌন হয়রানরি কারণে ১২ নারী আত্মহত্যা করেছেন। আর যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৩ নারী এবং ৯ পুরুষ নিহত হয়েছেন।

আসক জানায়, এ সময়কালে দেশে যৌন হয়রানি ও সহিংসতা, ধর্ষণ ও হত্যা, পারিবারিক নির্যাতন, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, গৃহকর্মী নির্যাতন, এসিড নিক্ষেপসহ নারী নির্যাতনের অনেক ঘটনা ঘটেছে।

দৈনিকটির অন্য একটি খবরে লেখা হয়েছে, ধর্ষণ মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি গ্রেপ্তার।বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সবুজ আল সাহবা।বুধবার রাতে মিরপুর মডেল থানায় এক তরুণীর দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে ফাতেমা ঝুমুর (৩৫) নামে এক নারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, মামলার পর রাতেই রাজধানীর একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগ নেতা সবুজকে ও বিবি ফাতেমা ঝুমুরকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়।

 ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

হাথরসে দলিত কিশোরীর শ্লীলতহানি নিয়ে উত্তাল যোগীর রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। এ সম্পর্কিত নানা খবর পরিবেশিত হয়েছে ভারতের সব বাংলা দৈনিকে। প্রায় সব দৈনিকের খবরে লেখা হয়েছে হাথরসের পথে কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও সাংসদ রাহুল গান্ধীকে। দৈনিক আজকালের খবরে এ সম্পর্কে লেখা হয়েছে, তাঁরা হাথরাসে নিগৃহীতার বাড়ি আসছেন বলে আগে থেকেই জারি ছিল ১৪৪ ধারা। বন্ধ করা হয়েছিল দিল্লি–উত্তরপ্রদেশ সীমান্ত। করোনার দোহাই দেওয়া হয়েছিল। তাতেও দমেননি রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। 

সাবেক কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী

পথে আটক করা হয় তাঁদের গাড়ি। থামানো যায়নি। গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করেন। বেগতিক দেখে লাঠি চালায় পুলিশ। রাহুলের অভিযোগ, তাঁর ওপরেও লাঠি চার্জ করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস সাংসদকে গ্রেপ্তার করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

প্রশাসনের  তরফে এক অফিসার জানিয়েছিলেন, কোভিড রুখতেই নাকি ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জারি থাকবে এই নিয়ম। 

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিগৃহীতার গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না সংবাদ মাধ্যমকেও। এক অফিসার জানিয়েছে, বেশ কয়েক জন পুলিশ কর্মীর করোনার উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত। শুধু তাই নয় সমাজবাদী পার্টির কর্মীরা নিগৃহীতার বাড়ি পৌঁছনোর চেষ্টা করেছিলেন। তাঁদের ওপরও লাঠি চালায় পুলিশ। 

এদিকে হাথরাসের এসপি বিক্রান্ত বীর এএনআই–কে জানিয়েছেন, আলিগড় হাসপাতাল তরুণীর যে মেডিক্যাল রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে ধর্ষণের কথা নেই। তবে মারধরের কথা রয়েছে। ‘‌তাঁরা ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন। এখন চিকিৎসকরা ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। জানিয়েছেন, এফএসএল রিপোর্ট পেলে তাঁরা মতামত দিতে পারবেন।’‌ তিনি আরও জানিয়েছেন, এদিন বিশেষ তদন্তকারী দল (‌সিট)‌ তরুণীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে। ঘটনাস্থলেও গেছে। 

১৪ সেপ্টেম্বর মা, ভাইয়ের সঙ্গে ক্ষেতে ঘাস কাটতে গেছিলেন তরুণী। এক ফাঁকে তাঁকে গলায় ওড়না জড়িয়ে বাজরার ক্ষেতে নিয়ে যায় চার উচ্চবর্ণ যুবক। সেখানে গণধর্ষণ করে। চলে নৃশংস অত্যাচার। কিছুক্ষণ পরে পরিবারের লোকজন তাঁকে নগ্ন, রক্তাক্ত অবস্থায় ক্ষেতে পড়ে থাকতে দেখেন। জিভ কাটা হয়েছিল তাঁর। একাধিক হাড় মেরে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। 

হাথরসের ধর্ষিতার গলা টিপে শিরদাঁড়া ভেঙেছিল ৪ জন, বলছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট-দৈনিক আজকাল

জিভ কাটা। একাধিক হাড় ভেঙে গুঁড়ো। পক্ষাঘাত হয়ে নড়াচড়ার ক্ষমতা নেই। তবু দু’‌ সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়েছিলেন। শেষরক্ষা হয়নি। মঙ্গলবার দিল্লির সফদরজঙ হাসপাতালে মারা যান হাথরাসে ধর্ষিত ২০ বছরের তরুণী। এবার তাঁর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এল। 

তাতে বলা হয়েছে, গণধর্ষণের পর দলিত তরুণীর গলা টিপে ধরেছিল উচ্চবর্ণের চার যুবক। তাতে সার্ভিক্যাল স্পাইন অর্থাৎ শিরদাঁড়া গুরুতর আহত হয়েছিল। তরুণী ধর্ষিত হয়েছিলেন বলেও নিশ্চিত করেছে রিপোর্ট। এর আগে উত্তরপ্রদেশের এক পুলিশ অফিসার ধর্ষণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না এলে ধর্ষণ হয়েছে কিনা নিশ্চিত হওয়া যাবে না। 

তরুণীর পরিবার জানিয়েছে, সার্ভিক্যাল স্পাইনে গুরুতর আঘাতের কারণে পক্ষাঘাত হয়ে গেছিল তাঁর। সে কারণে শ্বাসও নিতে পারছিলেন না।

যোগী আমলে ধর্ষণ করে খুনের রমরমা ‘উত্তমপ্রদেশ’-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা

তিন বছর আগেই উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সত্যি কথাটা কবুল করে ফেলেছিলেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী সুরেশকুমার খন্না, ‘‘যোগী আদিত্যনাথের মুখ্যমন্ত্রিত্বের প্রথম দু’মাসে রাজ্যে ৮০৩টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে!’’ সেটা ২০১৭ সালের জুলাই। যোগী সরকারের বয়স তখন মাত্রই চার মাস।

Image Caption

‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো’ (এনসিআরবি)-র তথ্য বলছে, পরবর্তী বছরগুলিতে দেশের বৃহত্তম রাজ্যে (জনসংখ্যার নিরিখে) ধর্ষণ-সহ যৌন হেনস্থার ঘটনার হার বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। সাধারণ দুষ্কৃতীদের পাশাপাশি অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন শাসকদলের নেতা, বিধায়ক মায় অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও!

যোগীর পূর্বসূরি অখিলেশ যাদবের মুখ্যমন্ত্রিত্বের শেষ পর্বে ২০১৬-র এপ্রিল থেকে ২০১৭-র জানুয়ারি পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশে ধর্ষণের ২,৯৪৩টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল। যোগী জমানায় প্রথম ১০ মাসেই (২০১৭-র এপ্রিল থেকে ২০১৮-র জানুয়ারি) তা ২৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৩,৭০৪টি।

গত অগস্টে প্রকাশিত এনসিআরবি রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যা ৫৯,৮৫৩। যা দেশের মধ্যে সর্বাধিক। এর মধ্যে ধর্ষণের মামলার সংখ্যা ৩,০৬৫টি। অর্থাৎ গড়ে দৈনিক প্রায় ১১ জন মহিলা ধর্ষিতা হন ওই রাজ্যে। রিপোর্ট বলছে, এঁদের মধ্যে ৩৪ জনকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে।

যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, ধর্ষণের প্রকৃত স‌ংখ্যা অনেক বেশি। বহু ক্ষেত্রেই রাজ্য পুলিশের ‘কৃতিত্বে’ আড়ালে থেকে যায় ধর্ষণের ঘটনা। বহু ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক প্রভাব কিংবা অর্থের ‘সৌজন্যে’ ধর্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা রুজু করেই দায় সারে যোগীর পুলিশ। ধর্ষিতা ‘নিচু জাতি’ কিংবা গরিব পরিবারের হলে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার সাহসও হয় না। সংবাদমাধ্যমের নজর না পড়লে থানার বাইরে ‘মিটমাট’ও হয়ে যায়! এমনকি, ধর্ষণের পরে খুনের ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলেও দেখানো হয়! যেমন এক আইনের ছাত্রীর দায়ের করা ধর্ষণের মামলার প্রেক্ষিতে গত বছর পুলিশ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা স্বামী চিন্ময়ানন্দকে গ্রেফতার করলেও তাঁর বিরুদ্ধে মামুলি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়।

এনসিআরবি-র রিপোর্ট আরও জানাচ্ছে, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে উত্তরপ্রদেশে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মোট সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৫৬,০১১ এবং ৫৯,৪৪৫। ২০১৭-র মার্চ মাসে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। সে বছর রাজ্যে ৪,৬৬৯টি ধর্ষণের মামলা দায়ের হয়েছিল। এর মধ্যে অন্যতম উন্নাও গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড। যে মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন বিজেপি-র বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গার। ২০১৮ সালে ধর্ষণের সংখ্যা সামান্য কমে দাঁড়ায় ৪,৩২২। এর মধ্যেও ৪১টি ক্ষেত্রে ধর্ষিতাকে খুন করা হয়েছিল।

রাহুলকে গলাধাক্কা, শেষে গ্রেফতার যোগীর পুলিশের-আনন্দবাজার পত্রিকা

বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে,আশঙ্কাই সত্যি হল। হাথরসের পথে গ্রেফতার করা হল রাহুল গাঁধীকে। তার আগে দেওয়া হল গলাধাক্কা। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ধাক্কায় মাটিতে পড়েই যান সনিয়া-তনয়। শেষ খবর, হাথরসের নির্যাতিতার বাড়ি যেতে না দিয়ে রাহুলকে মাঝপথ থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তার আগে পথের মধ্যেই পুলিশের সঙ্গে রাহুলের তর্কাতর্কি শুরু হয়। কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার রাহুলকে বলে, ‘‘আপনি ১৪৪ ধারা ভাঙছেন।’’ পাল্টা রাহুল বলেন, ‘‘১৪৪ ধারার অপব্যবহার করছেন আপনারা।’’

এ দিন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী-সহ কংগ্রেস নেতা-নেত্রীদের প্রতিনিধি দলের একটি কনভয় হাথরসের পথে রওনা হয়। মাঝপথে তাদের প্রথমে আটকে দেওয়া হয়। কিন্তু নাছোড় রাহুল-প্রিয়ঙ্কাও। তাঁরা স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে হেঁটেই রওনা দেন হাথরসের দিকে। রাহুল-প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে ছিলেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীও। দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ হাইওয়ের উপরেই তাঁদের কনভয় আটকে দেওয়া হয়। 

আগে থেকেই রাহুল-প্রিয়ঙ্কা ঘোষণা করেছিলেন হাথরসে যাওয়ার কথা। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার ১৪৪ ধারা জারি করে যোগী সরকার। তাতেও কর্মসূচি বাতিল করেননি কংগ্রেস নেতা-নেত্রীরা। রাহুল-প্রিয়ঙ্কার কনভয় গ্রেটার নয়ডায় আসতেই আটকে দেওয়া হয়। সেখানে গাড়ি থেকে নেমে উত্তরপ্রদেশ-দিল্লি হাইওয়ে ধরে হাঁটতে শুরু করেছেন তাঁরা। রাহুল প্রিয়ঙ্কাকে যেখানে আটকানো হয়েছে, সেখান থেকে হাথরসের দূরত্ব প্রায় ১৪০ কিলোমিটার। সেখান থেকে কিছু দূরে এগনোর পরেই রাহুল-প্রিয়ঙ্কাদের আটকায় পুলিশ। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। রাহুলকে গলাধাক্কা দিতেও দেখা যায় পুলিশকে। পরে গ্রেফতার করা হয় কংগ্রেস সাংসদকে।

লাদাখ সীমান্তে মোতায়েন ‘নির্ভয়’, লালফৌজের উপর অগ্নিবর্ষণ করবে এই ক্ষেপণাস্ত্র-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের এ খবরে লেখা হয়েছে,

‘ড্রাগন’কে উচিত শিক্ষা দিতে লাদাখ সীমান্তে (LAC) ‘নির্ভয়’ মিসাইল মোতায়েন করল ভারত। আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও ফৌজে অন্তর্ভুক্তি হয়নি ক্ষেপণাস্ত্রটির। কিন্তু হানাদার চিনা বাহিনীকে জবাব দিতে অন্তর্ভুক্তির আগেই বেশ কয়েকটি মিসাইল ইউনিট প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় মোতায়েন করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। 

জানা গিয়েছে, আগামী মাসেই সপ্তম দফার পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হবে নির্ভয় মিসাইলের। তারপরই ভারতের স্থলসেনা ও নৌসেনার হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হবে এই ক্ষেপণাস্ত্র। কিন্তু চিনের সঙ্গে লড়াইয়ের আবহে সীমান্তে প্রতিরক্ষা ও আক্রমণের ক্ষমতা বৃদ্ধ করতে অনুষ্ঠানের আগেই বেশ কয়েকটি নির্ভয় মিসাইল সিস্টেম মিতায়েন করেছে নয়াদিল্লি।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১
 

ট্যাগ