অক্টোবর ০২, ২০২০ ১৭:৫৪ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ । আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ২ অক্টোবর শুক্রবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • বাংলাদেশের উত্তরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, দুর্ভোগে বানভাসিরা- দৈনিক ইত্তেফাক
  • কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর-সমকাল
  • চিকিৎসার জন্য দুবাই গেলেন অর্থমন্ত্রী-কালের কণ্ঠ
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ১২ টাকায় পড়ে, ইটস আমেজিং-উপাচার্য-প্রথম আলো
  • খোলামেলা জায়গায় করোনার সংক্রমণ কম,বদ্ধ জায়গায় বেশি-দৈনিক মানবজমিন
  • বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের সেনা সমাবেশে নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ফল-ফখরুল-মানবজমিন
  •  এমসি কলেজে গণধর্ষণ: স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছে ৩ আসামি -দৈনিক যুগান্তর
  • বাংলাদেশের ধনিয়া যাচ্ছে মহাকাশে-বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারতের শিরোনাম:    

  • রাহুলের সঙ্গে পুলিশের আচরণ গণতন্ত্রের গণধর্ষণের সমান! সঞ্জয় রাউতের মন্তব্যে বিতর্ক -সংবাদ প্রতিদিন
  • হাথরসকাণ্ডে এককাট্টা বিরোধীরা -দৈনিক আজকাল
  • করোনায় মৃতের সংখ্যা লাখের দোরগোড়ায়, আশা জাগাচ্ছে সুস্থতার হার-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা

পাঠক/শ্রোতা ! এবারে চলুন, বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। 

হাজার হাজার প্রবাসীর সৌদি ফেরা অনিশ্চিত-দৈনিক ইত্তেফাক

স্বয়ংক্রিয় মেয়াদ বাড়ানোর কোনো ঘোষণা দেয়নি সৌদি সরকার কফিলের আবেদন না থাকলে রি-এন্ট্রি ভিসা দেবে না দূতাবাস ভিসা ও কফিলের নিয়োগ না থাকলে ‘কিছু করার নেই’ :পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে ছুটিতে আটকে পড়া সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভিসা ও আকামার (কাজের বৈধ অনুমতিপত্র) মেয়াদ বাড়ানোর কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা গতকাল বৃহস্পতিবার অবধি দেয়নি সৌদি সরকার। ফলে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভিসা ও আকামার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া হাজার হাজার প্রবাসীর সৌদি আরবে তাদের কর্মস্থলে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

আকামার মেয়াদ অথবা কর্মচারীর জন্য কফিল বা চাকরিদাতার আবেদন না থাকলে রি-এন্ট্রি ভিসা দেবে না বলে জানিয়েছে ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাস। এতে করে গত এক সপ্তাহ যাবত্ যেসব প্রবাসী রাজপথে বিক্ষোভ করে আসছিলেন, তাদের বিক্ষোভ থামছে না। তারা বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো আশ্বাসবাণীতে আশ্বস্ত থাকতে পারছেন না। অনেকে হতোদ্যম হয়ে ঢাকা থেকে আবারও গ্রামে ফিরে গেছেন।

সীমান্তে মিয়ানমারের সৈন্য সমাবেশ দেশের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ফল’-দৈনিক যুগান্তর

সীমান্তে মিয়ানমারের সৈন্য সমাবেশের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা গণহত্যা ও জাতিগত নিপীড়ন নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার তিন বছর পূর্তির প্রাক্কালে মিয়ানমার বাংলাদেশ সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ সংকট সমাধানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিক ফল। তিনি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আ. লীগ ‘ধর্ষণ-দুর্নীতিতে’, বিএনপি আক্রান্ত ‘মাজাভাঙা রাজনীতিতে’: ডা. জাফরুল্লাহ-দৈনিক মানবজমিন

রাজপথের বিরোধী দল বিএনপিকে আবারও রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি করোনায় আক্রান্ত, মাঠে নামার মেরুদণ্ড তাদের নেই। তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকেও করোনায় আক্রান্ত উল্লেখ করে বলেন, সরকার ও বিএনপি উভয়েই বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত। সরকার করোনায় আক্রান্ত ধর্ষণ আর দুর্নীতিতে। আর বিএনপি করোনায় আক্রান্ত মাজাভাঙা রাজনীতিতে। এই করোনা থেকে সবাইকে বের হয়ে আসতে হবে। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ধর্ষণের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ফোরামের মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিএনপি এতোটাই করোনাগ্রস্ত যে, তারা রাস্তায় নামতে পারে না। বর্তমানে প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের জাতি চরম দুর্দশায় আছে। এ থেকে মুক্তির একটাই পথ আমি দেখি, আমাদের সবাইকে রাস্তায় নামতে হবে।’

এ সময় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ারও আহ্বান জানান। ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, দেশে যেভাবে ধর্ষণ আর গণধর্ষণ করছে ছাত্রলীগের ছেলেরা, তাতে এ দেশের মা-বোনেরা আর শান্তিতে থাকতে পারছে না। কোথাও শান্তিতে বের হবে, তারও উপায় নেই। অন্যদিকে দুর্নীতি যেভাবে ছড়িয়েছে তাতেও সাধারণ মানুষের আর বাঁচার উপায় নেই। দেশে সুশাসন থাকলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সারা দেশে এভাবে ধর্ষণ-গণধর্ষণের মহোৎসব চালাতে পারতো না বলেও দাবি করেন তিনি।

এমসি কলেজে গণধর্ষণ: স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছে ৩ আসামি-দৈনিক যুগান্তর

সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানিবন্দি দিচ্ছে তিন আসামি। তারা হলেন- প্রধান আসামি সাইফুর এবং অন্য দুই আসামি অর্জুন লস্কর ও রবিউল।শুক্রবার বিকালে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী।

উত্তরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি দুর্ভোগে বানভাসিরা-দৈনিক ইত্তেফাক

উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নদনদীর পানি বৃদ্ধিতে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ। গাইবান্ধায় আবারও বাঁধ ও সড়ক ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। রাজশাহীর বাগমারায় ৫০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ধসে গেছে ২০০ বাড়িঘর। নাটোরের সিংড়ায় দুটি বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, বিলীন হয়েছে বেশকিছু বাড়িঘর। সিরাজগঞ্জে আবারও যমুনার পানি বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত চরাঞ্চলের মানুষ।

 এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত: 

রাহুলের সঙ্গে পুলিশের আচরণ গণতন্ত্রের গণধর্ষণের সমান! সঞ্জয় রাউতের মন্তব্যে বিতর্ক-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

রাহুল গান্ধীর উপর ‘হামলা’ আসলে গণতন্ত্রের গণধর্ষণের সমান। হাথরাসের গণধর্ষণ এবং কংগ্রেস নেতাদের ‘পুলিশি হেনস্তা’র প্রতিবাদ করতে গিয়ে মাত্রা ছাড়ালেন শিব সেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত । কংগ্রেস নেতার গতকালের তথাকথিত হেনস্তাকে তিনি ‘গণতন্ত্রের গণধর্ষণ’ বলে বর্ণনা করে ফেললেন। তাঁর এই শব্দচয়ন নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, গতকাল হাথরাসের নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীদের আটকে দেয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। মহামারী আইন এবং ১৪৪ ধারার দোহাই দিয়ে বারবার তাঁদের ফিরে যেতে অনুরোধ করা হয়। তা সত্বেও রাহুলরা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার জন্য জোরাজুরি করলে পুলিশ এবং কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়। সেই ধ্বস্তাধ্বস্তির মধ্যেই মাটিতে পড়ে যান রাহুল। কংগ্রেসের অভিযোগ তাঁকে হেনস্তা করা হয়েছে, কলার ধরে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে কাল থেকেই তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। বহু নেতা এই ইস্যুতে রাহুল গান্ধীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। দেশজুড়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছে কংগ্রেসও।

‘আজ বিকেল পাঁচটায় মোদির জবাবদিহি চাইব’, হাথরসকাণ্ডে হুঁশিয়ারি চন্দ্রশেখরের-দৈনিক আজকাল

হাথরসকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাবদিহি চাইতে আজ বিকেল পাঁচটায় ইন্ডিয়া গেটের সামনে জমায়েতের ডাক দিলেন ভীম আর্মির সুপ্রিমো চন্দ্রশেখর আজাদ। তাঁর তির্যক মন্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা দেশের মেয়েদের পক্ষে বিপজ্জনক। শুক্রবার সকালে চন্দ্রশেখর মোদির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘যে উত্তর প্রদেশ থেকে নির্বাচিত হয়ে সংসদে গিয়েছেন মোদি, সেখানেরই হগাথরসের একটি মেয়ের প্রতি এই নৃশংসতা দেখা গেল। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হল, তাঁর হাড়গোড় ভেঙে দেওয়া হল। এবং তাঁর দেহ আবর্জনার মতো পুড়িয়ে দেওয়া হল। যখন উত্তর প্রদেশে মানবাধিকার ভঙ্গ হল তখন কেন প্রধানমন্ত্রী কোনও কথা বললেন না। ‌মেয়েটি বা তার পরিবারের আর্তনাদ প্রধানমন্ত্রী শুনতে পাননি। আপনি কতদিন নীরব থাকবেন? আপনাকে উত্তর দিতেই হবে। আপনার নীরবতা আমাদের মেয়েদের পক্ষে বিপজ্জনক’। এরপরই এদিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ মোদির কাছ থেকে জবাবদিহি চাইতে ইন্ডিয়া গেটের সামনে ভীম আর্মির সদস্যদের জমায়েতের ডাক দেন আজাদ। নীরবতা ভেঙে মোদিকে কথা বলতেই ন্যায়বিচারের জন্য বলে মন্তব্য করেছেন আজাদ।

হাথরসকাণ্ডে এককাট্টা বিরোধীরা-দৈনিক আজকাল

হাথরসকাণ্ড এবং তারপর বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধীকে বাধা দেওয়ার উত্তর প্রদেশ পুলিশের মারমুখী আচরণের নিন্দায় মুখর সব বিরোধীরাই। শুক্রবার শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘রাহুল গান্ধী একজন জাতীয় রাজনৈতিক নেতা। আমাদের সঙ্গে কংগ্রেসের মতানৈক্য থাকতে পারে কিন্তু তাঁর প্রতি পুলিশের আচরণকে কেউ সমর্থন করবে না, ওনার কলার ধরে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, এটা তো একরকম গণতন্ত্রের গণধর্ষণ।দেশ রাহুলের প্রতি এই আচরণ কখনও ক্ষমা করবে না।’ 

কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলট শুক্রবার বলেন, ‘এই প্রথম দেখলাম পুলিশ, প্রশাসন আর সরকার ইচ্ছা করে প্রমাণ মেটানোর চেষ্টা করছে আর ওখানকার জেলাশাসক ওনার পরিজনদের হুমকি দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী এবং পুরো প্রশাসন বিরোধী কণ্ঠস্বর চাপা দিতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি।’দিল্লির মুখমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এদিন সকালে বলেন, ‘হাথরসের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং মৃতার পরিবারের প্রতি সরকারের আচরণও অনুচিত।

দৈনিক আনন্দবাজারের খবরে লেখা হয়েছে, হাথরসের পর ভাদোহী, ফের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ যোগী-রাজ্যে। দৈনিকটির অন্য একটি খবরের শিরোনাম এরকম-রাহুলকে গলাধাক্কা, হাথরস ঘিরে তপ্ত রাজনীতি, হস্তক্ষেপ হাইকোর্টের।

শীতের লাদাখে পাতালে তেলের ট্যাঙ্ক, প্রস্তুত ভারতীয় সেনা-দৈনিক আনন্দবাাজর পত্রিকা

চিনা ফৌজ নয়। শীতের লাদাখে সবচেয়ে বড় শত্রু প্রকৃতি। প্রতিকূল পরিবেশের মোকাবিলা করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) কৌশলগত অবস্থানগুলি দখলে রাখতে তাই এখন চূড়ান্ত পর্বের প্রস্তুতি চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা।

সেনা সূত্রের খবর, আসন্ন শীতে লাদাখের এলএসি-তে মোতায়েন সেনার জন্য শীতের উপযোগী পোশাক ও অন্যান্য সরঞ্জাম এবং রসদ পাঠানোর পাশাপাশি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে পরিকাঠামো নির্মাণে। লাদাখের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ তেলের ট্যাঙ্ক। এই ‘আন্ডারগ্রাউন্ড ফুয়েল ডাম্প’-গুলির প্রতিটির ধারণক্ষমতা ৪ লক্ষ লিটার করে। সেগুলিতে পৃথক ভাবে মজুত করা হচ্ছে সেনাদের রান্নার কেরোসিন, টি-৯০ ট্যাঙ্ক আর বিএমপি-২ ‘ইনফ্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকল্’-এর ডিজেল এবং অ্যাপাচে হেলিকপ্টারের ‘অ্যারো টার্বাইন ফুয়েল’। রয়েছে শীতে ব্যবহারের উপযোগী বিশেষ শ্রেণির ডিজেল। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের (আইওসি) তৈরি এই ডিজেল হিমাঙ্কের নীচে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও কার্যকরী থাকে।

সেনার একটি সূত্রের খবর, লেহ্‌ থেকে হেলিকপ্টারে খাবার, ফলের রসের প্যাকেট, জ্বালানি তেলের সঙ্গেই প্রবল শীতের হাত থেকে বাঁচার জন্য তাঁবু, গরম কাপড়ের সেনা পোশাক, বিশেষ জুতো, বরফে ব্যবহারের সানগ্লাস পৌঁছে দেওয়ার কাজ এখন শেষপর্বে। পাঠানো হচ্ছে বাড়তি সেনাও। ওই সূত্র জানাচ্ছে, চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র মোকাবিলায় লাদাখের ৮২৬ কিলোমিটার লম্বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর আপাতত ৫০ হাজার ভারতীয় সেনা মোতায়েন রয়েছে। যাতে প্রয়োজনে আরও সেনা দ্রুত এলএসিতে পাঠানো যায়, তার জন্য এখন থেকেই কয়েক হাজার অতিরিক্ত সেনা লাদাখের বিভিন্ন ঘাঁটিতে পাঠিয়ে রাখার কাজ চলছে।

লেহ্ থেকে দাবরুক, শিয়োক হয়ে দৌলত বেগ ওল্ডি (ডিবিও) বায়ুসেনা ঘাঁটি পর্যন্ত বিস্তৃত নয়া সড়কপথে দুর্গম সেনা চৌকিগুলিতে রসদ, জ্বালানি ও সামরিক সরঞ্জাম পৌছনোর কাজে প্রায় ৮,০০০ ট্রাক ব্যবহার করছে ভারতীয় সেনা। সাহায্য নেওয়া হচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনার ‘সি-১৩০জে হারকিউলিস’ এবং ‘আইএল-৭৬’ পরিবহণ বিমানের। ফরওয়ার্ড পোস্টগুলিতে পাঠানো হচ্ছে ‘চিনুক’ এবং ‘এমআই-২৬’ পরিবহণ হেলিকপ্টার। এলএসি বরাবর বিভিন্ন স্থানে নজরদারির জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘মোবাইল এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল ইউনিট’। মনিটর-যুক্ত এই ব্যবস্থা সিয়াচেনেও ব্যবহার করে ভারতীয় সেনা।

এই বিপুল পরিমাণ সেনার জন্য প্রয়োজনীয় পানীয় জলের সংস্থান করা কঠিন কাজ। শীতকালে জমে যাওয়া নদী ও পাহাড়ি ঝোরাই মূল ভরসা। কিন্তু পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে লাদাখে ভূগর্ভস্থ জলের উৎসগুলিও খোঁজার কাজ চলছে পুরোদমে। সেনার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বাসস্থান ও রসদ সরবরাহ সংক্রান্ত ছোটখাটো কিছু সমস্যা থাকলেও শীতের মোকাবিলার জন্য মোটামুটি ভাবে আমরা প্রস্তুত।’’ তিনি জানান, গত সাড়ে তিন দশকে সিয়াচেন হিমবাহের অভিজ্ঞতা এ ক্ষেত্রে ভারতীয় সেনার কাজে এসেছে।

পৃথিবীর উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র সিয়াচেনে পাক হামলা ঠেকাতে বছরভরই মোতায়েন থাকে ভারতীয় সেনা।কারাকোরাম পর্বতের প্রায় ১৯ হাজার ফুট উচ্চতায় শীতের মরসুম কাটানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে ভারতীয় সেনার অনেক অফিসার এবং জওয়ানের। তখন সেখানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমে যায়। অন্যদিকে, পূর্ব লাদাখে শীতের মরসুমে তাপমাত্রা হয় মাইনাস ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে খাপ খাওয়াতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এ ক্ষেত্রে চিনা ফৌজ অভিজ্ঞতায় নিরিখে অনেক পিছিয়ে বলেই অনুমান। পূর্ব লাদাখের এলএসি-তে যুদ্ধের প্রস্তুতির দায়িত্বে রয়েছে ভারতীয় সেনার ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোর’-এর উপর। এই বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল অরবিন্দ কপূরের কথায়, ‘‘শুধু ভারত নয়,এই রকম চরম প্রতিকূল আবহাওয়ার যুদ্ধের প্রস্তুতিতে বিশ্বে জুড়ি নেই আমাদের কোরের।’’#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২


 

ট্যাগ