মুনিয়ার মৃত্যু রহস্য! বসুন্ধরার এমডির কল রেকর্ডের ফরেনসিক চেয়ে নোটিশ
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ৩ মে সোমবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- বিধি নিষেধ আবারও বাড়ল, চলবে না দূরপাল্লার বাস-দৈনিক প্রথম আলো
- খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট, সিসিইউতে স্থানান্তর-কালের কণ্ঠ
- পদ্মার পাড়ে লাশের সারি, হস্তান্তরের অপেক্ষা-মানবজমিন
- বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস আজ -দৈনিক ইত্তেফাক
- মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ৩ মামলার রিমান্ড আবেদনের শুনানি ৯ মে-দৈনিক যুগান্তর
- কথা বলা অপরাধ হলে জেল-জুলুম-ফাঁসি দিয়ে দেন: ডা. জাফরুল্লাহ -বিডি প্রতিদিন
ভারতের শিরোনাম:
- খেলা হবে! খেলা হল? আনন্দবাজার পত্রিকা
- পুনর্গণনা দিলে প্রাণ সংশয়, নন্দীগ্রামের ভোটকর্তার বার্তা দেখালেন মমতা -আনন্দবাজার পত্রিকা
- নন্দীগ্রামে জিতলেন শুভেন্দু, তবে 'বাজিগর' মমতাই-সংবাদ প্রতিদিন
- অক্সিজেনের অভাবই দায়ী! কর্নাটকের হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় ২৪ কোভিড রোগীর মৃত্যু –আজকাল
শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাব।
কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:
১. আজ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। এ দিনে দৈনিক প্রথম আলোকে দেয়া সাক্ষাৎকার ড. শাহদীন মালিক বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে বরেছেন, “আইনটি গণমাধ্যমকে কঠিন অবস্থায় ফেলেছে।” কী বলবেন আপনি?
২. ‘মার্কিন অস্ত্র না থাকলে সৌদি আরব আরো আগে ইরানের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাইত’- একথা বলেছেন খোদ মার্কিন সিনেটর ক্রিস মারফি। তার এ বক্তব্য সম্পর্কে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:
পদ্মায় ২৬ জনের প্রাণহানি-স্পিডবোটের চালক আটক, ৮ জনের পরিচয় মিলেছে-ইত্তেফাক/প্রথম আলো/যুগান্তর
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার ফেরিঘাটে আজ সোমবার সকালে বালুবাহী বাল্কহেডের সঙ্গে স্পিডবোটের সংঘর্ষের ঘটনায় ২৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত ৫ জনকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ভর্তি ৫ জনের মধ্যে একজন ওই স্পিডবোটের চালক শাহ আলম। তাঁকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে নিহত ২৬ জনের মধ্যে আজ বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ।
শ্বাস কষ্ট বেড়ে যাওয়ায় সিসিইউতে খালেদা জিয়া-মানবজমিন/কালের কণ্ঠ
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে তাকে সিসিইউতে নেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক মানবজমিনকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ম্যাডামকে সিসিইউতে নেয়া হয়েছে। ওনার হালকা শ্বাসকষ্ট ছিলো। এর আগে রোববার রাতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড বৈঠকে বসে। আগে যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে তা নিয়ে মেডিকেল বোর্ড পর্যালোচনা করে। পরে তারা নতুন কিছু পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন।গত ১০ই এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়।
এরপর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চিকিৎসা শুরু হয়। ১৪ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর দ্বিতীয় বারের মতো খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট হলেও ফলাফল পজিটিভ আসে। এরপর ২৭শে এপ্রিল তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়।
মোসারাতের সঙ্গে বসুন্ধরার এমডির কল রেকর্ডের ফরেনসিক চেয়ে নোটিশ-প্রথম আলো

কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান ওরফে মুনিয়ার সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কল রেকর্ড ফরেনসিক পর্যালোচনার জন্য আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। স্বরাষ্ট্রসচিব বরাবর আজ সোমবার এই নোটিশটি পাঠানো হয়। নোটিশের ভাষ্য, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান ও নুসরাত জাহান মুনিয়ার মধ্যে কথোপকথনের একটি রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। ওই কল রেকর্ডে সায়েম সোবহান যেসব শব্দ ভিকটিম মুনিয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন, তা যেকোনো নারীর জন্য অত্যন্ত অপমানজনক। উল্লিখিত কল রেকর্ড ফরেনসিক পর্যালোচনার জন্য এবং যদি ফরেনসিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, ওই ‘অশ্লীল শব্দ’ প্রয়োগকারী ব্যক্তি সায়েম সোবহান, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে যেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান ওই আইনি নোটিশ পাঠান। রেজিস্ট্রি ডাকযোগে স্বরাষ্ট্রসচিব বরাবর ওই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে জানিয়ে ইয়াদিয়া জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশের উল্লিখিত বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম না দেখা গেলে পরে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এর আগে ২৬ এপ্রিল রাতে গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাতের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মোসারাতের বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করেন। এ মামলার একমাত্র আসামি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর।
এই মামলার পরদিন সায়েম সোবহান আনভীরের বিদেশযাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করে পুলিশ, ওই আবেদন সেদিন মঞ্জুর করেন আদালত। এর মধ্যে ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন আনভীর। ওই ঘটনায় ২ মে মুনিয়ার ভাই আশিকুর রহমান হত্যা মামলা নিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন।
এবার শারুনের বিরুদ্ধে মুনিয়ার ভাইয়ের মামলা-যুগান্তর
কলেজ শিক্ষার্থী মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে নাজমুল করিম চৌধুরী শারুনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আবেদন করা হয়েছে।
রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভুঁইয়ার আদালতে এ মামলার আবেদন করেন মুনিয়ার ভাই আশিকুর রহমান।
গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন মুনিয়ার বড় বোন বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে গুলশান থানায় একজনকে আসামি করে মামলা করেছিলেন।
মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুনিয়া ও শারুনের কথোপকথনের কয়েকটি স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে হুইপপুত্র শারুন চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
শারুন সাংবাদিকদের জানান, মুনিয়ার সঙ্গে তার পরিচয় ছিল। গত বছর হোয়াটসঅ্যাপে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে মেয়েটি। তখন শারুন তাকে জানান- মুনিয়া যার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন, সেই একই ব্যক্তির সঙ্গে তার সাবেক স্ত্রীর সম্পর্ক ছিল।
এদিকে, মুনিয়া হত্যা মামলার ফরেনসিক রিপোর্ট পেতে আরও দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই রিপোর্ট হাতে পেলেই উন্মোচিত হবে মুনিয়ার মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য।
ফেসবুক লাইভে যা বললেন মুনিয়ার বড় বোন-ইত্তেফাক

মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাতে ফেসবুক লাইভে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানান মুনিয়া ঘটনার দিন ফোন করে বলছিল, ‘আপু তোমরা কখন আসবা, আমার অনেক বিপদ।’
নুসরাত জাহান জানান, মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) মুনিয়ার কুমিল্লায় চলে আসার কথা ছিল। কিন্তু তার আগের দিনেই বিপদের কথা ফোনে জানতে পারি।
এসময় কান্নাজরিত কণ্ঠে নুসরাত জাহান বলেন, আমরা যখন গুলশানের ফ্ল্যাটে ছুটে যাই, দেখি ভিতর থেকে দরজা বন্ধ। ঐসময় ফোনও বন্ধ ছিল মুনিয়ার। পরে দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করি আমরা। দরজা ভাঙ্গতে গিয়ে এতো জোরে শব্দ হচ্ছে অথচ ভিতর থেকে কোনো শব্দ হচ্ছিল না। নুসরাত জাহানের ভাষায়, এসময় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। দরজা ভেঙ্গেই দেখি ঝুলন্ত অবস্থায় মুনিয়া। পা দুটি বিছানায়, হালকা বাঁকানো ছিল। বিছানা একদম পরিপাটি ছিল। মনে হচ্ছিল কেউ সেট করে রেখে দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
এবার ভারতের কয়েকটি খবর তুলে ধরছি:

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল উত্তর নানা খবরই আজ বিশেষ গুরুত্বসহ প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন দৈনিকে। আনন্দবাজার পত্রিকার ব্যানার শিরোনাম- খেলা হবে!খেলা হল? দৈনিকটির অপর এক খবরে তৃণমূলের ভূমিধস বিজয় সম্পর্কে বিশ্লেষণে লিখেছে, তিন ‘ম’ এবং ‘ম’মতা, চতুর্ময়েই ধরাশায়ী বিজেপি। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, ভোটের আগে ও পরে যত সমীক্ষা হয়েছে, তার কিছুই ‘সত্যি’ প্রমাণিত হয়নি। যে সব সমীক্ষা তৃণমূলকে অনেক এগিয়ে রেখেছিল, সেখানেও সংখ্যাটা ২১৩–র ধারেকাছে ছিল না। কিন্তু একজন বরাবর বলে গিয়েছেন, এ বার সরকার গড়ার থেকে অনেকটা বেশি শক্তি থাকবে তাঁর সঙ্গে। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবারের নির্বাচনের ফলাফল বলে দিল, বাস্তবিকই ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’। আর বাংলার মেয়েও বোঝালেন, তিনিই চেনেন বাংলার মন।

কিন্তু কী ভাবে এল এই সাফল্য? পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণের জন্য আরও একটি সময় লাগবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তবে প্রাথমিক ভাবে একটা কথা স্পষ্ট বেশ কয়েকটি ‘ম’ জিতিয়েছে ‘ম’ আদ্যাক্ষরের মমতাকে। এর একটি ‘ম’ যদি মুসলমান ভোট হয় তবে আর একটি মহিলা ভোট। বিজেপি প্রথম থেকেই রাজ্যে প্রকাশ্যে ধর্মীয় মেরুকরণের পথ ধরে। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ থেকে দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরা বারবার মমতাকে এবং তৃণমূলকে মুসলমান সম্প্রদায়ের তোষণকারী বলে এসেছে। না, ‘সংখ্যালঘু’ শব্দ এখানে প্রযোজ্য নয়। মমতাকে সরাসরি ‘বেগম’ বলে সম্বোধন করে নির্দিষ্ট একটি ধর্মের দিকেই যে ইঙ্গিত করা হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও একটি ‘ম’ অতীতেও মমতার সহায় হয়েছে। সেটি মহিলা ভোট। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের হ্যাট্রিকের পিছনেই শুধু নয়, বিরোধী দল থাকার সময়েও যাবতীয় সাফল্যের পিছনে মহিলা ভোট সহায় হয়েছে মমতার। না, তিনি মহিলা বলেই শুধু নয়, কালীঘাটের মেয়ের ‘অগ্নিকন্যা’ এবং মুখ্যমন্ত্রী হওয়াটাকে রাজ্যের মানুষ বরবারই শ্রদ্ধার চোখে দেখেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বললে আরও একটা বিষয় স্পষ্ট হয় যে, ‘মমতা’ নামটার মধ্যেই একটা টান আছে। নানা কাজে তাঁকে যখন ‘হঠকারী’ বলে তোপ দেগেছেন অনেকে, তখন আবার অনেকেই সেই কাজের মধ্যে ‘মমত্ব’ দেখতে পেয়েছেন। কারণ যাই হোক না কেন, একজন মহিলাকে হারাতে এত ‘খ্যাত’ পুরুষের দলবদ্ধ প্রচেষ্টাকেও হারাতে চেয়েছেন আটপৌরে মহিলারা। হুইলচেয়ার নিয়ে লড়াই করা মেয়েটাকেই আঁচল ভরে ভোট দিয়েছেন তাঁরা।
নন্দীগ্রামে জিতলেন শুভেন্দু, তবে 'বাজিগর' মমতাই-সংবাদ প্রতিদিন
দিনভর টানাটানি। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রামে ঠিক যেন সাপলুডোর খেলা! শেষ অবধি পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipore) এই কেন্দ্রে জিতলেন শুভেন্দু অধিকারী। ব্যবধান মোটে ১,৯৫৬। তবে নিজের কেন্দ্রে জিতলেও আর কোথাও বিজেপিকে (BJP) বিশেষ সুবিধা করে দিতে পারলেন না তিনি। বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমাণ করে দিলেন, ‘হার কে জিতনে ওয়ালেকো বাজিগর ক্যাহতে হ্যায়!’
পুনর্গণনা দিলে প্রাণ সংশয়, নন্দীগ্রামের ভোটকর্তার বার্তা দেখালেন মমতা-আনন্দবাজার পত্রিকা
ভোট মিটে গেলেও নন্দীগ্রাম নিয়ে তরজা শেষ হওয়ার লক্ষণ নেই। সেখানে গণনায় কারচুপি হয়েছে বলে রবিবার থেকেই অভিযোগ করে আসছে তৃণমূল। এ বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, প্রাণনাশের হুমকি রয়েছে বলে পুনর্গণনার নির্দেশ দিতে ভয় পাচ্ছেন নন্দীগ্রামের রিটার্নিং অফিসার।’’ সোমবার কালীঘাটে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূল নেত্রী। সেখানে রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির মেসেজ কথোপকথন তুলে ধরেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘এক জনের কাছ থেকে এসএমএস পেয়েছি। নন্দীগ্রামের এক রিটার্নিং অফিসার জানিয়েছেন, বন্দুকের নলের মুখে কাজ করতে হচ্ছে। তিনি যদি পুনর্গণনার নির্দেশ দেন, তাহলে তাঁর প্রাণ সংশয় হতে পারে। নন্দীগ্রামে মেশিন পাল্টে দেওয়া হয়েছে।’’
ঠিক কার সঙ্গে রিটার্নিং অফিসারের ওই কথা হয়েছে, তা যদিও খোলসা করেননি মমতা। তবে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে আদালতে যাবেন তাঁরা। তত ক্ষণ পর্যন্ত ভিভিপ্যাট, ব্যালট এবং ইভিএম আলাদা আলাদা করে সরিয়ে রাখতে হবে। তদন্ত করে দেখা হবে, সেগুলিতে কোনও বিকৃতি ঘটানো হয়েছে কি না। মমতা বলেন, ‘‘৮ হাজারের উপর এগিয়ে থাকার মার্জিন এক নিমেষে কী করে শূন্য হয়ে যায়? ইচ্ছা করে সার্ভার ডাউন করে রাখা হয়েছিল। না হলে সারা বাংলার এমন ফলাফল, আর নন্দীগ্রামে আলাদা ফল কী ভাবে হয়?’’
শুধু তাই নয়, ভোটপর্বে পুলিশ প্রশাসনের একটা অংশ বিজেপি-র হয়ে কাজ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন মমতা। তাঁদের রাজধর্ম পালনের আর্জি জানান তিনি। ভোটপর্বে নির্বাচন কমিশনের আচরণও পক্ষপাতদুষ্ট ছিল বলে মন্তব্য করেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কবে শপথগ্রহণ করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? জানালেন পার্থ-সংবাদ প্রতিদিন
বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে রাজ্যে প্রত্যাবর্তন হয়েছে তৃণমূলের। কবে হবে নতুন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। উঠছিল প্রশ্ন। সোমবার বিকেলে তৃণমূল ভবন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে সেই সম্ভাব্য দিনক্ষণ জানিয়ে দিলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানালেন, নতুন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ নিতে পারেন ৫ মে।
বাংলার ফলাফল নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-সংবাদ প্রতিদিন

মোদি নাকি মমতা? একুশের নির্বাচন জিতে কে নেবেন বাংলার দখল? এটাই ছিল লাখ টাকার সওয়াল। দীর্ঘ খেলা শেষে ভোটের গণনায় বাংলার রং সবুজ। আর ফলাফল সামনে আসার পরই সৌজন্য বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। টুইট করে জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূলকে।
রবিবার টুইটারে মোদি (Narendra Modi) লেখেন, “বাংলায় জয়ের জন্য মমতা দিদি ও তৃণমূলকে শুভেচ্ছা। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সবরকম চাহিদা পূরণের চেষ্টা করবে কেন্দ্র। পাশাপাশি কোভিড মোকাবিলাতেও রাজ্যের পাশে থাকবে সরকার।” তবে বাংলায় উল্লেখযোগ্যভাবে বিজেপির আসন সংখ্যা বাড়াকেই ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন মোদি। দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতেও বার্তা দিলেন মোদি। টুইট করেন, “আমাদের দলকে আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য আমি বাংলার ভাইবোনদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। গতবারের তুলনায় এবার উল্লেখযোগ্যভাবে আমাদের আসন সংখ্যা বেড়েছে। এভাবেই মানুষের জন্য কাজ করে যাব আমরা। নিজেদের সেরাটা দিয়ে লড়ার জন্য আমার দলের প্রত্যেক কর্মীকেও সাধুবাদ জানাই।”
অক্সিজেনের অভাবই দায়ী! কর্নাটকের হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় ২৪ কোভিড রোগীর মৃত্যু-আজকাল
কোভিড রোগীরা শুধু ওই মারণ ভাইরাসেই মারা যাচ্ছেন না। হাসপাতাল বা আইসোলেশন সেন্টারে আগুন লেগে, অক্সিজেনের অভাবেও বহু রোগী মারা গিয়েছেন। গুজরাট, মহারাষ্ট্রে কোভিড হাসপাতালে আগুন লেগেছে। দিল্লিতে হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে মারা গিয়েছেন ২২ জন রোগী। এবার কর্নাটকের এক সরকারি হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন ২৪ জন। অভিযোগ, অক্সিজেনের অভাবেই এই কাণ্ড।
কর্নাটকের চামারাজানগরের ঘটনা। চামারাজানগরের ডেপুটি কমিশনার ড. এম আর রবি জানিয়েছেন, অক্সিজেনের অভাবেই এই মৃত্যু কিনা তা এখনও জানা যায়নি। ‘সবাই অক্সিজেনের অভাবে মারা গিয়েছেন, একথা বলতে পারব না।’ যদিও মৃতের পরিজনরা এসব শুনতে নারাজ। তাঁরা হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের শাস্তিও দাবি করেছেন।
এবার মমতার নেতৃত্বে মোদিকে হঠাতে প্রস্তুত বিরোধীরা!-আনন্দবাজার পত্রিকা
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিশাল জয়ের পর এবার জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতির আভাস দিয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক শিবির। আর সেই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রোববার তৃণমূলের জয় স্পষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভারতের বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের শীর্ষ নেতারা মমতাকে বার্তা পাঠিয়েছেন। তারা মনে করছেন, মোদির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রধান মশালটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে চলে এসেছে।
বিরোধী নেতাদের উচ্ছ্বাস, অভিনন্দন এবং বিবৃতি থেকে স্পষ্ট, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের লড়াইটা এখনও থেকেই শুরু হয়ে গেল তৃণমূল নেত্রীকে সামনে রেখে।
সমাজবাদী পার্টি থেকে শিবসেনা, আপ থেকে ন্যাশনাল কনফারেন্স— সব শীর্ষ বিরোধী নেতারাই মোদি-অমিত শাহের সঙ্গে মমতার এই লড়াকু ভূমিকার অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন তাদের টুইট ও বিবৃতিতে।
দুর্দান্ত জয়ের জন্য মমতাকে অভিনন্দন এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ার টুইট করেছেন। তিনি বলেন, ‘আসুন, মানুষের কল্যাণের জন্য আমরা একত্রে কাজ করতে থাকি এবং সবাই মিলে এই মহামারি মোকাবিলা করি।’
আগামী বছরেই উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। পশ্চিমবঙ্গের পর এই বিধানসভা ভোটও ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের প্রশ্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই মনে করা হচ্ছে।
এই রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তথা এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব বলেন, ‘বাংলার সচেতন মানুষ, লড়াকু নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের অক্লান্ত পরিশ্রম করা নেতা ও কর্মীদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। তারা বিজেপির ঘৃণার রাজনীতিকে বাংলায় হারিয়েছেন। বিজেপি যে ভাবে অপমানজনক ঠাট্টার সুরে ‘দিদি ও দিদি’ বলেছে, আজকের ফল তার মুখের মতো জবাব।’ ‘হ্যাশট্যাগ দিদি জিও দিদি’ তিনি জুড়েছেন তার এই টুইটের সঙ্গে।
অখিলেশের সহনেতা কিরণময় নন্দ তো বলেছেন, ২০২৪ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত তার দল।
বিরোধী শিবিরের অধিকাংশ নেতা মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গের এই রায় বিজেপির ‘এক রাষ্ট্র এক দল’ অথবা হিন্দুরাষ্ট্র গঠন সংক্রান্ত প্রচারের বিরুদ্ধে একটি জিহাদ।
তৃণমূল নেতা সুখেন্দুশেখর রায়ের ভাষ্য, ‘এ দিনের এই ফলাফল আঞ্চলিক আশার জয়। বিজেপির দিল্লি-কেন্দ্রিকতা এবং গোটা দেশকে দিল্লির বশংবদ করে তোলার বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ ভোট দিয়েছেন। গোটা দেশের ক্ষমতাকে দিল্লির করিডরে কুক্ষিগত করার প্রয়াসের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন।’
শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গই নয়, কেরালা বা তামিলনাড়ুর ভোটেও ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের বিরুদ্ধে, আঞ্চলিক শক্তির বিকাশের পক্ষেই ফলাফল দেখা গেছে মনে করছেন তারা।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁন্ধী তামিলনাড়ুতে জয়ের জন্য স্ট্যালিনকে অভিনন্দন জানালেও মমতার জয় নিয়ে কোনো কথা বলেননি। পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেসের ব্যর্থতা নিয়েও কিছু বলতে শোনা যায়নি তাকে।
তবে দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা মমতা এবং বাংলার মানুষকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘বিজেপির টাকা এবং পেশীশক্তি এবং বিভেদকামী রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াইটা ছিল। রাজ্যের মানুষ ঘৃণা এবং বিভেদের বদলে শান্তি এবং সৌভ্রাতৃত্বকেই বেছে নিয়েছেন।’
শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের মনে করেন, ‘বাংলার বাঘিনি একাই লড়ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা তাকে হারাতে পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছিলেন। সব শক্তিকে হারিয়ে তিনি জয়ী হয়েছেন।’
তৃণমূল নেত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ ও বিএসপি নেত্রী মায়াবতীও।
তৃণমূল নেত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছে কাশ্মীর। পিডিপি প্রেসিডেন্ট মেহবুবা মুফতির টুইট, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের কর্তাদের অভিনন্দন এই জয়ের জন্য। বিভেদকামী এবং ধ্বংসকামী শক্তিকে হারানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে কুর্ণিশ।
এনসির প্রবীণ নেতা ওমর আবদুল্লা বলেছেন, ‘মমতা দিদিকে অভিনন্দন। বিজেপি এবং পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন, রান্নাঘরের বেসিনসহ প্রায় সব কিছুই আপনার দিকে ছুড়েছিল! আপনি রয়ে গিয়েছেন। আগামী পাঁচ বছরের জন্য শুভ কামনা রইল।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৩
- বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।