জুলাই ০৬, ২০২১ ১৩:২৬ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ৬ জুলাই মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম:

  • একদিকে লকডাউন, অন্যদিকে বেড়েছে চলাচল, ঢাকার রাস্তায় যানজট –মানবজমিন
  • মতামত‘সংসার ভাঙচুর, পরিবার আটক, জীবন নিয়ে খেলা’-প্রথম আলো
  • ১৬ বছরে পাচার ১১ লাখ কোটি টাকা!--কালের কণ্ঠ
  • করোনা কেড়ে নিল ৪০ লাখ মানুষের প্রাণ -যুগান্তর
  • যুক্তরাষ্ট্রে স্বাধীনতা দিবস উৎসবের মাঝেই গুলিতে নিহত ১৫০ -ইত্তেফাক
  • এবার ট্রেনে করে ঢাকায় আসবে কোরবানির পশু-বাংলাদেশ প্রতিদিন

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:

  • মহারাষ্ট্রে মহারাজনীতি, শিবসেনার চালে কি আপাতত’নিরাপদ’ উদ্ধব সরকার-আনন্দবাজার
  • দৈনিক ২০ হাজার ভ্যাকসিনের ঘাটতি কলকাতায় উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা-আজকাল
  • মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে জল্পনার মধ্যেই শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করলেন মোদি-সংবাদ প্রতিদিন

এবার বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ কমাতে দেশটির সরকারঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনের আজ ষষ্ঠ দিন। প্রায় সব জাতীয় দৈনিকে এ সম্পর্কিত নানা খবর পরিবেশিত হয়েছে। তবে মানবজমিনের শিরোনাম বেড়েছে চলাচল, ঢাকার রাস্তায় যানজট। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে,কঠোর বিধিনিষেধের ষষ্ঠদিন চলছে। তবে আজ রাস্তায় মানুষের চলাচল গত কয়েকদিনের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তৈরি হয়েছে যানজট। সড়কে দেখা গেছে, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, ট্রাক, মিনি ট্রাক, রিকশা, ভ্যানগাড়ির দীর্ঘ সারি। প্রতিটি সিগন্যালেই দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়িও তেমন চোখে পড়েনি। শিল্প কারখানা, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন অফিস খোলা থাকায় অনেককেই বের হতে হচ্ছে। উল্লেখ্য, করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় গত ১লা জুলাই থেকে সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। করোনার পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় গতকাল কঠোর বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ১৪ই জুলাই পর্যন্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

করোনার অন্যান্য খবর-করোনার হটস্পট সারাদেশ। অস্বীকারে মারাত্মক পরিণাম, বস্তি, গ্রাম, গরিব করোনা সর্বত্র ।করোনার সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যু। সারা দেশই এখন করোনার হট স্পট। দেশে একদিনে করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুতে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। সর্বোচ্চ ১৬৪ জনের মৃত্যু এবং রেকর্ড সংখ্যক ৯ হাজার ৯৬৪ জন শনাক্ত হয়েছে গতকাল। রামেক হাসপাতালে একদিনে আরও ১৯ জনের মৃত্যু। খুলনায় একদিনে আরও ১৭ জনের মৃত্যু। স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই সিলেটে।আইসিইউয়ের জন্য হাহাকার সিলেটে। ভালো খবর- স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন চলতি মাসেই ১০ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসছে। এদিকে করোনা ভ্যাকসিন নেয়ার ক্ষেত্রে ঢাকার জবাবের অপেক্ষায় রয়েছে রাশিয়া। সবচেয়ে ভালো খবর-করোনা মহামারির মধ্যেও রপ্তানি আয় বেড়েছে। 

লকডাউন 

প্রথম আলোর মতামত কলাম-‘সংসার ভাঙচুর, পরিবার আটক, জীবন নিয়ে খেলা’- লেখক ও সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ তার মতামত কলামে লিখেছেন, 

শিরোনামটা এমন হতে পারত। লকডাউন না মানায় ২০টি সংসার আটক, কয়েক শ পরিবার ভাঙচুর, টেনেহিঁচড়ে চলছে জীবন, হাসপাতালে মৃত্যুর সুবন্দোবস্ত। তবে ছাপা হয়েছে অন্য ছবি, অন্য কথা। নাটোরের নলডাঙা থানার পুলিশ লকডাউনে চায়ের দোকান খোলায় অনেকগুলো কেটলি জব্দ করেছে। বিভিন্ন জায়গায় রিকশা উল্টিয়ে রাখার ছবি আসছে। কিছুদিন আগে অনেক অনেক অটো রিকশা চুরমার করা হলো। দিনমজুরেরা খোরাকির খোঁজে বের হওয়ায় কান ধরে ওঠবস করানো হচ্ছে। মধ্যবিত্তরা জরিমানা খাচ্ছে। একজন বৃদ্ধ গৃহপরিচারিকা ছয় ঘণ্টা হেঁটে ঢাকার এক বাসায় কাজ করতে আসছেন এই বৃষ্টির মধ্যে। কেটলি নয়, আসলে আটক হয়েছে পরিবারের আয়, রিকশা নয় আসলে ভাঙচুর হয়েছে সংসারের খাদ্যপ্রণালি। পায়ে হাঁটা মানুষ আর অক্সিজেন না পেয়ে মারা যাওয়া রোগী একই অবহেলার যুগল শিকার।

বলা হচ্ছে, সবই করা হয়েছে করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য। বলা হচ্ছে না যে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গাফিলতি আর সরকারি অদূরদর্শিতার খেসারত দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। এই অকহতব্য বাস্তবতার জন্ম অবহেলায়। এবারের লকডাউন কঠোর থেকে কঠোরতর হওয়ার আগে অনেক সময় হাতে ছিল। ঢাকার শহর কেন, বড় শহরগুলোও অনেক মানুষের জন্য ভাতের হোটেল ছাড়া আর কিছু না। কিন্তু সেই রাজধানীতে সঞ্চয়হীন দরিদ্র মানুষকে কোনোরকম সাহায্য ছাড়াই ঘরে আটকে থাকতে বলা হলো। কিন্তু তারা মানবে কেন?

করোনার সংক্রমণ কমানোয় লকডাউনের বিকল্প নেই। সময়ে–সময়ে এটা দরকার। কিন্তু সেটা পরিকল্পিত হতে হবে। ত্রাণ ও সাহায্য ছাড়া মানুষকে লম্বা সময় ঘরবন্দী করে রাখা যাবে না। যাদের ঘরই নেই বা যা আছে তা খুপরির সমান, তাদের কি ঘরে থাকার উপায় আসলেই আছে?

কেরানীগঞ্জের কৃষক রহমান মিয়া বলছিলেন, ‘যারা রিকশা চালায়া খাইতো তাগো ঘরে কি কিছু জমা থাহে? এমুন চললে এরা ছুরি নিয়া রাস্তায় বাইরাবো, সন্ধ্যার পরে ছিনতাই করব।’ নবাবগঞ্জের সিংজুড় বাজারের খালেক চিশতী আগে ভ্যানে করে প্লাস্টিকের খেলনা বেচতেন মেলায় বা ওরসে। গত দুই বছরই তিনি ঘরে বসা। মেলা বন্ধ, ওরসও হয় না। শেষে রাস্তার পাশে দোকান সাজিয়ে বসেছেন। কিন্তু গ্রামের মধ্যে কে কিনবে খেলনা? বাড়িতে তাঁর তিন ছেলে, এক স্ত্রী। প্রতিদিনের ভরণপোষণ কীভাবে চালাবেন? তাঁর বাড়িতে খাজা বাবার দরবার ছিল। এলাকায় আলাদা সম্মান পেতেন। দোকানে আগে বাকিও পেতেন। এখন আর দেয় না কেউ।

এবারের বাজেটে কি এই সব মানুষের কথা চিন্তা করে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে? অর্থনীতিবিদ রাশেদ আল-মাহমুদ তিতুমীর লিখেছেন, ‘সর্বজন খাত—সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে প্রকৃত বরাদ্দ আগের চেয়ে কমেছে। সংঘবদ্ধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের করপোরেট করে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ছোট কারবার উপেক্ষিত থেকেছে। সাধারণ মানুষেরও করে ছাড় দেওয়া হয়নি।...সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে আগের বছরের চেয়ে বরাদ্দ ১৩ শতাংশ বেড়েছে। নতুন ১৪ লাখ মানুষকে এর আওতায় আনা হয়েছে। নগর দরিদ্রসহ আড়াই কোটি নতুন দরিদ্রের জন্য তা অপ্রতুল। উপরন্তু, বরাদ্দকৃত অর্থের বেশির ভাগ অংশ সরকারি কর্মচারীদের পেনশন, সঞ্চয়পত্রের সুদ প্রভৃতি প্রদানে যাবে।’ (প্রথম আলো, ৫ জুন, ২০২১)

আমরা দেখেছি গত ১০ বছরে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কম ছিল না। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠান দুদকই বলেছে, সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির খাতগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। চিকিৎসক নেতাদের অভিযোগ, আমলারা সব করেন, তাঁদের কথা শোনা হয় না। স্বাস্থ্য খাতে জিডিপিতে আমাদের বরাদ্দের অনুপাতে মালদ্বীপের চেয়েও কম। আর এই রোববারের প্রথম আলোর সংবাদ শিরোনাম হয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন সব দিচ্ছি, কিন্তু কোথাও কিছু নেই। ৫২ শতাংশ হাসপাতালে আইসিইউ নেই।

কিন্তু ধনী বেড়েছে, টাকা পাচার বেড়েছে। বেড়েছে মানুষের জীবন নিয়ে নিষ্ঠুর উদাসীনতা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং কী বিস্ময়কর বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও অন্যান্য ভাতার পরিমাণ জনপ্রতি ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। বিশ্বাস হয়? এই স্যাটেলাইট উন্নয়নের যুগে ৫০০-৮০০ টাকায় কারও কি চলতে পারে? সরকারি প্রতিবেদনই বলছে, যোগ্য না হয়েও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ভাতা নেন ৪৬ শতাংশ সুবিধাভোগী। জনসংখ্যার সঠিক ডেটাবেইস নেই এই ডিজিটাল বাংলাদেশে। ফলে অনিয়ম ও চুরির সুযোগ অবারিত।

এখনকার কথা থাক। আগামী দিনে করোনার কারণে বাংলাদেশ ১৬ লাখ কর্মসংস্থান হারাতে পারে। আসন্ন সময়ের প্রস্তুতির কী অবস্থা? গত বছরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পোশাকশিল্পে ৭০ হাজার কর্মসংস্থান হারিয়ে গেছে এবং গত বছরের শেষ পর্যন্ত ১০ লাখ কর্মসংস্থান হারিয়ে যাওয়ার কথা। বহির্বিশ্বে চাহিদা সংকোচনের কারণে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে ২০ লাখ কর্মী, যার বেশির ভাগই নারী, কাজ হারাতে পারেন। খাদ্যনিরাপত্তাহীন থাকবেন ৫ কোটি মানুষ। এসব বলেছেন, জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তর এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির সাবেক পরিচালক অর্থনীতিবিদ সেলিম জাহান। এর অর্ধেক আশঙ্কাও যদি ফলে যায়, তা কী মাত্রার জাতীয় দুর্ভোগ আর নৈরাজ্য তৈরি করতে পারে? 

এ নিয়ে কোনো রূপরেখা–রোডম্যাপ ইত্যাদি কি হয়েছে? সেলিম জাহান মনে করেন, অভুক্ত পরিবারগুলোর এক মাসের খাদ্য সুরক্ষার জন্য ৬ হাজার কোটি টাকা লাগবে বলে প্রাক্কলিত হয়েছে। এভাবে আগামী ছয় মাসের জন্য লাগবে ৩৬ হাজার কোটি টাকা, অর্থনৈতিক প্রণোদনার জন্য বরাদ্দ টাকা থেকে এর অর্থায়ন করা যেতে পারে। (বণিক বার্তা, মে ২৮,২০২১)

ত্রাণ ও সহায়তা ছাড়া লকডাউন সরকারও চালাতে পারে না, এমনকি চায়ও না। গত বছরের লকডাউনের অভিজ্ঞতা নিয়ে গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. তারিক ওমর আলী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মির্জা হাসান ও যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান ইউনিভার্সিটির নওমি হাসান। আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক যে সিদ্ধান্তে তাঁরা পৌঁছেছেন, তা হলো এই: বাংলাদেশের নাগরিকেরা প্রথমে স্বেচ্ছায়ই লকডাউনের নিয়ম মান্য করেছিল। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তারা দেখল সরকারি ত্রাণ ব্যবস্থা অস্বচ্ছ ও অকার্যকর। প্রশাসনকে তখন লকডাউনের কড়াকড়ি উঠিয়ে নিতে দেখা গেল এবং নীতিনির্ধারকেরাও নীরবে এই নীতি থেকে সরে এলেন।

এবারও সেটাই হওয়ার আশঙ্কা বেশি। রাষ্ট্রের কোনো পদক্ষেপের গ্রহণযোগ্যতা তখনই বাড়ে, যখন রাষ্ট্র সংকটে নাগরিকদের সুরক্ষা দেয়। তা না দিতে পারলে জনবিক্ষোভ এড়াতে আবার সব শিথিল করা হবে। ইতিমধ্যে তার আলামতও দেখা যাচ্ছে। প্রথম আলোর আজকে রোববারের অনলাইন সংবাদ বলছে, এত এত জরিমানা, হয়রানি, ধরপাকড়ের পরও ‘চতুর্থ দিনে রাস্তায় গাড়ি-মানুষ-রিকশা কিছুটা বেড়েছে’। ভাত দিতে না পারলে কিল মারার গোঁসাই হওয়ার দুর্বুদ্ধি কেউ করবে না। কিন্তু মূল প্রশ্নের তো মীমাংসা হলো না! টিকা, অক্সিজেন, হাসপাতালের বেড, লকডাউন এবং অর্থনৈতিক সহায়তা ছাড়া কীভাবে মহামারির মহামৃত্যু ও মহাক্ষুধা ঠেকানো যাবে?

লকডাউন এক দুধারি তলোয়ার। এক ধারে আপনাকে স্বাস্থ্যবিধি কঠোর করতে হবে, অন্য ধারে মানুষ যাতে তা মানে, সে জন্য তাদের সুরক্ষা দিতে হবে। একটি ছাড়া অন্যটি অচল।

যুক্তরাষ্ট্রে স্বাধীনতা দিবস উৎসবের মাঝেই গুলিতে নিহত ১৫০-ইত্তেফাক

যুক্তরাষ্ট্রে সশস্ত্র সংঘাত বেড়েই চলেছে

যুক্তরাষ্ট্রে সশস্ত্র সংঘাত বেড়েই চলেছে। দেশটির সবচেয়ে বড় উৎসব স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের মাঝেই গোলাগুলির ঘটনায় কমপক্ষে ১৫০ জন নিহত হয়েছেন। গত ৭২ ঘণ্টায় রক্তাক্ত এই সহিংসতা হয়েছে। স্থানীয় সময় গত শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ৪০০ গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।

গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের এক প্রতিবেদন দাবি করেছে, তালিকা এখনও সম্পর্ণ হয়নি। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ভুক্তভোগী বা তাদের পরিবারকে সংগঠিত সহিংসতার তথ্য দিতে অনুরোধ জানিয়েছে একাধিক অঙ্গরাজ্যের পুলিশ। স্বাধীনতা দিবসের উৎসবের মাঝেই যুক্তরাষ্ট্রে রক্তাক্ত এই সংঘাতের ঘটনা বিরল।

করোনা কেড়ে নিল ৪০ লাখ মানুষের প্রাণ-যুগান্তর

কোভিড-১৯ মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্ব। রোজ লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু ৪০ লাখের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে। মঙ্গলবার করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান রাখা আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্যে এসব জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত করোনায় বিশ্বে মারা গেছেন ৪০ লাখ ৭৭৯ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩১ হাজার ১৪৮ জন।এর আগে ২৪ জুন মৃত্যু ৩৯ লাখ ছাড়ানোর খবর জানায় সাইটটি। অর্থাৎ, দুই সপ্তাহ পার হওয়ার আগেই মহামারিতে আরও ১ লাখ মৃত্যু দেখলো বিশ্ব।

তবে রয়টার্সের পরিসংখ্যানে মৃত্যুর সংখ্যা ৪০ লাখের ঘর পার হয়েছে আরও আগেই। সে হিসেবে, এ পর্যন্ত বিশ্বে মারা গেছে ৪১ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ। আর জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, ৩৯ লাখ ৮৩ হাজার ৬৪০ জন।

করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য মতে, তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত হয়েছে ৩ কোটি ৪৫ লাখ ৯৮ হাজার ৩৬১ জন ও মারা গেছে ৬ লাখ ২১ হাজার ৩৩৫ জন। আক্রান্তে দ্বিতীয় ও মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত মোট সংক্রমিত হয়েছেন ৩ কোটি ৬ লাখ ১৮ হাজার ৯৩৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৩ হাজার ৩১০ জনের। আক্রান্তে তৃতীয় এবং মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত করোনায় এক কোটি ৮৭ লাখ ৯২ হাজার ৫১১ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ২৫ হাজার ২২৯ জনের।

মহামারিতেও বাড়লো রপ্তানি আয়-মানবজমিন

মহামারিকালে রপ্তানি আয়ে বড় উল্লম্ফন নিয়ে শেষ হলো ২০২০-২১ অর্থবছর। গত ৩০ জুন শেষ হওয়া এই অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৮৭৫ কোটি ৮৩ লাখ (৩৮.৭৬ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে। এই অঙ্ক ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে ১৫.১০ শতাংশ বেশি।

সর্বশেষ জুন মাসে ৩৬৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের জুন মাসের চেয়ে ৩১.৭৭ শতাংশ বেশি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক, পাট ও পাটপণ্য, চামড়া ও চামড়াপণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্লাস্টিক পণ্য, রাসায়নিক পণ্য ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফেরার কারণেই সার্বিকভাবে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।মূলত তৈরি পোশাক এবং পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়ার কারণেই সার্বিক রপ্তানি আয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে গত অর্থবছরে।তবে লক্ষ্যের চেয়ে ৬.৮৯ শতাংশ পিছিয়ে আছে।পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমাদের পোশাকের বড় বাজার ইউরোপ-আমেরিকায় করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। মানুষজন আগের মতো কেনাকাটা শুরু করেছে। সে কারণেই মোটামুটি একটা ভালো প্রবৃদ্ধি নিয়ে অর্থবছর শেষ হয়েছে।

১৬ বছরে পাচার ১১ লাখ কোটি টাকা!-কালের কণ্ঠ

অর্থপাচার

অর্থপাচার থামছে না। আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অঙ্কটি বড়ই হচ্ছে। গত ১৬ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে অন্তত ১১ লাখ কোটি টাকা। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এই অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগও মুখ থুবড়ে পড়েছে। একটি ঘটনায় মাত্র ২১ কোটি টাকা ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। কারণ হিসেবে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার কথা বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। অবশ্য জিএফআইয়ের তথ্য আস্থায় নিতে রাজি নন সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থপাচারের প্রকৃত চিত্র আরো ভয়াবহ। বর্তমানে এমন অনেক খাতে অর্থপাচার হচ্ছে, যা জিএফআই আমলে নেয় না।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ বিষয়ে কালের কণ্ঠ’র অনুসন্ধানী সেলকে বলেন, বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারে গ্লোবাল সংস্থাগুলো যে তথ্য দিয়ে থাকে, সেগুলো সঠিক নয়। এগুলোর কোনো যৌক্তিকতাও নেই। এ বিষয়ে তারা কখনো নথিপত্রও দিতে পারেনি। অনুমানের ভিত্তিতে কথা বললে তো হবে না। মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা টাকা পাচারের জন্য আইন করিনি। কেউ যাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বা টাকা বিদেশে পাচার না করে, সে জন্যও দেশে বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিয়ে দেশে বৈধভাবে ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রায় ১৫ হাজার জনগোষ্ঠী এখন বৈধভাবে সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করছেন। দেশেই টাকা বিনিয়োগ করছেন। অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ায় এখন আর টাকা পাচার হয় না। বরং দেশেই বিনিয়োগ হয়।’

 ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

মহারাষ্ট্রে মহারাজনীতি, শিবসেনার চালে কি আপাতত’নিরাপদ’ উদ্ধব সরকার-আনন্দবাজার পত্রিকার এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে,জল্পনা চলছিল গত কয়েক মাস ধরেই। পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনাকে ‘পাখির চোখ’ করে মহারাষ্ট্রে শিবসেনা-এনসিপি কংগ্রেসের জোট’মহা বিকাশ আগাড়ি’তে ভাঙন ধরাতে চাইছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের কয়েক দফায় দিল্লি যাত্রা এবং নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকব সেই জল্পনায় আরও ইন্ধন জুগিয়েছিল। কিন্তু গতকাল বিধানসভার কার্যনির্বাহী স্পিকারকে হেনস্থার অভিযোগে ১২ জন বিজেপি বিধায়ককে ১ বছরের জন্য সাসপেন্ড করার ঘটনায় আপতাত সেই সম্ভাবনা হিমঘরে চলে গেল বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।পাশাপাশি , তাদের ধারণা এই পদক্ষেপের ফলে পরিষদদীয় পাটিগণিতের হিসেবে শিবসেনা নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের অবস্থান আপাতত’নিরাপদ’।

মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে জল্পনার মধ্যেই শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করলেন মোদি-সংবাদ প্রতিদিন

বিজেপির (BJP) শীর্ষস্থান‌ীয় মন্ত্রী ও দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল তা বাতিল হয়ে গেল। মোদি সরকারের মন্ত্রিসভায় (Cabinet) রদবদল ও সম্প্রসারণ নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার এই বৈঠক ঘিরে কৌতূহল ছিল তুঙ্গে। কিন্তু সূত্রানুসারে, সেই বৈঠকটি এদিন হচ্ছে না।

মোদি মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই নানা জল্পনা শোনা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রায় ২০ জন নতুন মন্ত্রী শপথ নিতে পারেন, সরকারি সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। এর মধ্যে বাংলার তিন নেতানেত্রীকে নিয়েও গুঞ্জন রয়েছে। তাঁরা হলেন নিশীথ প্রামাণিক, শান্তনু ঠাকুর ও লকেট চট্টোপাধ্যায়। দলের তরফে তাঁদের দিল্লি ডেকে পাঠানোর খবরে এই গুঞ্জন তীব্র হয়েছে।এছাড়াও অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যাওয়া জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধ্রিয়া, লাদাখের সাংসদ জামিয়াং সেরিং নামগিয়াল কিংবা লোক জনশক্তি পার্টির নেতা পশুপতি পরসের মতো হেভিওয়েট নেতাদের নামও উঠে এসেছে জল্পনায়।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সর্বোচ্চ ৮১ জন সদস্য থাকতে পারেন। বর্তমানে সেখানে সদস্য সংখ্যা ৫৩। ফলে এখনও ২৮ জন মন্ত্রী শপথ নিতে পারেন। এই পরিস্থিতি বর্তমান মন্ত্রীদের পারফরম্যান্স নিয়ে আলোচনা করে মন্ত্রিসভায় প্রয়োজনীয় রদবদল ও সম্প্রসারণের বিষয়েই মঙ্গলবারের বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ছাড়াও ধর্মেন্দ্র প্রধান, প্রহ্লাদ যোশি, পীযূষ গয়াল, নরেন্দ্র সিং তোমারের মতো অন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদেরও থাকার ছিল বৈঠকে।গত ২০ জুনও প্রধানমন্ত্রী একটি বৈঠক করেন তাঁর গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের সঙ্গে। সেখানে গত ২ বছরে তাঁর সরকারের পারফরম্যান্সের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এরপর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে, আগামী বছরে পাঁচটি রাজ্যের নির্বাচন ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে হয়তো এবার মন্ত্রীসভায় রদবদল করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৬