তালেবান ইস্যুতে কঠিন জায়গায় ভারত-আমেরিকা
কাবুলে হামলার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা: তালেবান ইস্যুতে কঠিন জায়গায় ভারত-আমেরিকা
শ্রোতা/পাঠক! ২২ আগস্ট রোববারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম:
- কাবুলে আইএস হামলার আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের, সতর্কতা জারি-ইত্তেফাক
- বিস্ফোরক পরিদপ্তরে দুর্নীতির মহাবিস্ফোরণ-ঘুসের বস্তা খুলে হিসাব মেলাতে ব্যস্ত রব-যুগান্তর
- তাঁরা সবাই ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান, বিক্রি করেন আইস–ইয়াবা-প্রথম আলো
- বরিশাল পরিস্থিতির নতুন মোড়, ইউএনও-ওসির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন-মানবজমিন
- ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে বসুন্ধরা এমডিকে অব্যাহতি-কালের কণ্ঠ
এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:
- Vaccines: প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বুস্টার টিকা নেওয়া প্রয়োজন? কী বললেন এমস প্রধান-আনন্দবাজার
- নকল কোভিশিল্ড ছেয়ে গেছে কলকাতা এবং অন্যান্য শহরে! কেন্দ্রকে চিঠিতে সতর্কবার্তা হু’র-আজকাল
- জাতির ভিত্তিতে জনগণনার দাবিকে সামনে রেখে একমঞ্চে নীতীশ-তেজস্বী, চিন্তায় BJP-সংবাদ প্রতিদিন
তাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু’টি বিষয়ের বিশ্লেষণে যাব।
কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:
বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর
কাবুলে আইএস হামলার আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের, সতর্কতা জারি-ইত্তেফাক
আফগানিস্তানের কাবুলে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলার আশঙ্কা করছে। এজন্য তারা মার্কিন নাগরিকদের কাবুল বিমানবন্দর এড়ানোর জন্য সতর্ক করেছে। রবিবার (২২ আগস্ট) এসব জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।প্রতিবেদনে বলা হয়, বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, মার্কিন প্রতিনিধি যাদের ব্যক্তিগতভাবে আসতে বলবেন তারাই যেন যাত্রার জন্য আসেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলেছেন, পরিস্থিতি দেখছেন, বিকল্প পথ খুঁজছেন। আইএসের আক্রমণের সম্ভাব্য হুমকি সম্পর্কে আর কোনো বিবরণ দেওয়া হয়নি এবং গোষ্ঠীটি প্রকাশ্যে কাবুলে হামলা চালানোর হুমকিও দেয়নি।
তালেবান ইস্যুতে কঠিন জায়গায় দাঁড়িয়ে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক-মানবজমিন
তালেবানকে দমন করা এবং সন্ত্রাস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ভারত-আমেরিকার কৌশলগত অবস্থান এই মুহূর্তে আগের থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। এমনটাই মনে করছেন ইন্দো-আমেরিকান আইনজীবী আর ও খান্না। প্রতিনিধি পরিষদে সিলিকন ভ্যালির প্রতিনিধিত্বকারী খান্না ডেমোক্রেটিক ভাইস চেয়ারম্যান পদে আসীন। খান্না বলেছিলেন যে তিনি জাতীয় সুরক্ষায় ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। কিন্তু এখন ভারতীয়দের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন- আমরা কী করব? ভারত সরকার জানিয়েছে, আমাদের নীতি, ‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ’। সত্যিকথা বলতে, ‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ’ ছাড়া অন্য কোনও নীতি গ্রহণের কি কোনও উপায় রয়েছে? আমেরিকা কেন এমন করল? এর সবটাই ভারতের বিদেশমন্ত্রণালয়ের কাছে অপ্রত্যাশিত! ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আফগানিস্তানে ভারপ্রাপ্ত আমেরিকার বিশেষ প্রতিনিধি যখন তালেবানের ডেপুটি লিডার মৌলানা আবদুল গণি বরাদরের সঙ্গে দোহাতে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন, তখন ঠিক হয়েছিল যে, আমেরিকার সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। সেই সময় মার্কিন মসনদে বসে আছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। সে কথাই জো বাইডেন বললেন ২০২১-এর ১৪ এপ্রিল, আমেরিকা ৯/১১-র বার্ষিকীর আগেই নিঃশর্তে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে।আসলে, আমেরিকা ভেবেছিল, এই সময়ে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া ভাল। তার কারণ, যে-সরকার আফগানিস্তানে ছিল, তারা দুর্নীতির কারণে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা হারিয়েছিল। আর, আমেরিকাও নানা আর্থিক সমস্যায় জেরবার। সেখানকার নাগরিকরা মনে করেছে, আমেরিকার ইরাক, আফগানিস্তানে নাক গলানোর দরকারটা কী! কিন্তু তালেবানরা ক্ষমতার স্বাদ পেয়েই, মার্কিন সেনা চলে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে, এভাবে রক্তক্ষয়ের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলের জন্য বিস্ফোরণ ঘটাবে- তা বাইডেন প্রশাসনের কাছে প্রত্যাশিত ছিল না। এখন তালেবান সরকার কী চরিত্রের হবে, তা নিয়েও অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। এক হতে পারে, প্রচণ্ড কট্টরবাদী তালেবান সরকার, যা শুধু পাকিস্তান নয়, চীন ও রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণেও থাকবে। আবার অন্যদিকে হামিদ কারজাই বা আবদুল্লার মতো ব্যক্তিত্ব যদি সেই সরকারের মধ্যে থাকেন এবং মিলিজুলি একটা সরকার হয়- তাহলে সেখানে ভারতের নিয়ন্ত্রণও অসম্ভব নয়। সুতরাং, সব শেষে বলতে হয় খুব সাবধানে এখন পা ফেলতে হবে। এটা এমন একটা ইস্যু, যা বিশ্ব রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে।
দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে,আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার বিপজ্জনক, অপ্রয়োজনীয় পদক্ষেপ- টনি ব্লেয়ার
ডিবির তদন্ত-নকল ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছে মিটফোর্ডকেন্দ্রিক চক্র-প্রথম আলো
মো. রবিন পাঁচ বছর ধরে ঢাকার মিটফোর্ড এলাকার বিল্লাল শাহ মার্কেটে ওষুধের পাইকারি ব্যবসা করছেন। ওই মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে তিনি বেশ জনপ্রিয়। এখন তিনি মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু তিনি যে সারা দেশে নকল ও ভেজাল ওষুধ ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত, একথা জানা ছিল না ব্যবসায়ীদের। একাধিক ব্যবসায়ীর ভাষ্য, পাঁচ বছর ব্যবসা করেই প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তাঁর উত্থান নিয়ে কানাঘুষাও চলছিল।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করে বলছে, রবিন দেশের জেলা এবং উপজেলায় জীবন রক্ষাকারী ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের ভেজাল ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এমন অভিযোগে গত ১২ জুলাই তাঁকেসহ চক্রের ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ফয়সাল হোসেন নামের এক ওষুধ ব্যবসায়ীও রয়েছেন। শুধু এই দুজন নন, এই চক্রে আরও কয়েকজন ওষুধ ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছেন বলে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে।
অভিযানে এই চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের জীবন রক্ষাকারী ওষুধসহ বহুল প্রচলিত ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার অন্য ছয়জন হলেন নাসির উদ্দিন, মো. ওহিদুল, মামুন কারাল, আবু নাঈম, মো. ইব্রাহিম ও ফয়সাল মোবারক।
ডিবির কর্মকর্তারা জানান, সাভার, পিরোজপুর ও নীলফামারীতে চারটি কারখানায় এসব ভেজাল ওষুধ তৈরি করা হয়। এগুলোর মধ্যে সাভার ও পিরোজপুরের দুটি কারখানায় অভিযান চালানো হয়েছে। কারখানা দুটির মালিক ফয়সাল মোবারক। তিনি ইউনানি ব্যবসার লাইসেন্স নিয়ে ভেজাল ওষুধ তৈরি করছিলেন। অন্য দুটি কারখানার মধ্যে একটির মালিক চক্রের প্রধান ইমরানুল ইসলাম ওয়াহিদ। অন্য কারখানার অবস্থান নীলফামারীর সৈয়দপুরে। আতিয়ার নামের এক কেমিস্ট ওই কারখানার মালিক। তাঁর দেওয়া ফর্মুলাতেই চারটি কারখানায় নকল ওষুধ তৈরি হয়। চক্রের প্রধান ইমরানুল এবং কেমিস্ট আতিয়ার এখনো গ্রেপ্তার হননি।
বরিশাল পরিস্থিতির নতুন মোড়, ইউএনও-ওসির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন-মানবজমিন
এখনও থমথমে বরিশাল। নতুন মোড় নিয়েছে পরিস্থিতি। বরিশাল সদরের ইউএনও মুনিবুর রহমান, কোতোয়ালি থানার ওসি ও আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলার আবেদন করা হয়েছে। আজ সকালে বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ আবেদন করা হয়। মামলা দুটির বাদী হয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন ও বিসিসির কর্মচারী বাবুল। দুটি মামলায়ই সদরের ইউএনও মুনিবুর রহমান, কোতোয়ালি থানার ওসি আনোয়ার হোসেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ইউএনওর বাসভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার সদস্যসহ ৮ জন করে আসামি করা হয়েছে। আদালত সূত্র জানিয়েছে, বিচারক এখনও মামলার আবেদনটি গ্রহণ করেননি। এদিকে ইউএনও বাসভবনের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ২১ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
সরজমিন দেখা যায়, ইউএনওর বাসভবনের সামনে ১২ জন পুলিশ ও ৮ জন আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
কাজে ফিরেছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বাসভবনের সামনের পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক।
বিস্ফোরক পরিদপ্তরে দুর্নীতির মহাবিস্ফোরণ-ঘুসের বস্তা খুলে হিসাব মেলাতে ব্যস্ত রব-যুগান্তর
নাম আব্দুর রব। তিনি জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের একজন পরিদর্শক। বর্তমান কর্মস্থল সিলেট। তবে প্রেষণে আছেন ঢাকায়। ১৯৯৪ সালে তিনি উচ্চমান টিএ (টেকনিক্যাল অ্যাসিসট্যান্ট) পদে চাকরিতে যোগদান করেন। তখন তার সর্বসাকুল্যে মাসিক বেতন ছিল প্রায় ১৬শ টাকা। দুই দফায় পদোন্নতি পেয়ে এখন তিনি গুরুত্বপূর্ণ এই পরিদপ্তরের পরিদর্শক। বর্তমান পদে তার মূল বেতন ৩৮ হাজার ৮৯০ টাকা। বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতাসহ এখন সর্বসাকুল্যে পাচ্ছেন ৫৬ হাজার ৩৯০ টাকা। চাকরির শুরু থেকে গত জুলাই পর্যন্ত চিকিৎসা ও বাড়িভাড়াসহ মোট বেতনভাতা পেয়েছেন প্রায় ৭০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভবিষ্যতহবিল, কল্যাণ তহবিল ও যৌথ বিমায় কেটে নেওয়া হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা। এসব বাদ দিয়ে তার নিট বেতন উত্তোলন ৫৭ লাখ টাকার কিছু বেশি। অথচ দুর্নীতি দমন কমিশন শুধু দলিলমূল্যেই এই কর্মকর্তার সম্পদ পেয়েছে প্রায় ৭ কোটি টাকার। যদিও বেনামি সম্পদ যুক্ত করলে অন্তত শতকোটি টাকার মালিক তিনি। তার ঘুসের পরিমাণ এতই বেশি যে, বস্তায় ভরে সেই টাকা রাখতে হয় তাকে।
তাঁরা সবাই ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান, বিক্রি করেন আইস–ইয়াবা-প্রথম আলো
ক্রিস্টাল মেথ (আইস) সেবন ও বিক্রির অভিযোগে রাজধানীর বনানী, উত্তরা, বনশ্রী ও খিলগাঁও থেকে ১০ জনের একটি নেটওয়ার্কের সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জানাচ্ছে, ৫০০ গ্রাম আইস থেকে ১ লাখ ইয়াবা তৈরি করা সম্ভব। গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে আজ শনিবার ভোর চারটা পর্যন্ত অধিদপ্তর এই অভিযান চালায়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আটটি মামলা করবে।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে বিশেষায়িত এই সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ হলো, এই মুহূর্তে ইয়াবার চেয়ে তারা অভিযানে ক্রিস্টাল মেথ বা আইস পাচ্ছে বেশি। এটি দেখতে তালমিছরির মতো এবং ১ গ্রাম আইস দিয়ে ৫০০ ইয়াবা তৈরি করা সম্ভব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা অভিভাবকদের অনেকেই এখনো ক্রিস্টাল মেথ বা আইস চেনেন না। আর কাঁচামাল নিয়ে এসে ইয়াবা তৈরি করা সহজ। এ দুই কারণে ক্রেতা–বিক্রেতাদের একটা অংশ এখন ইয়াবার চেয়ে ক্রিস্টাল মেথ বা আইস সংগ্রহে আগ্রহী হয়ে উঠছে। তারা বলছে, ঢাকায় ক্রিস্টাল মেথ বা আইসের কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণ করে সাত–আটজনের একটি দল।
সেই দলের একজন সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁর এই গ্রেপ্তার অভিযানকে সহজ করেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর প্রথমে একটি ফোন নম্বর পায়, সেই নম্বরের সূত্র ধরে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযানগুলো চালানো হয়।
আসিফ নজরুলকে হুমকির ঘটনায় বিশিষ্ট নাগরিকদের নিন্দা-মানবজমিন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক আসিফ নজরুলের একটি ফেসবুক পোষ্টকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ও তাদের একটি সহযোগী সংগঠন তাঁর বিরুদ্ধে যে বিদ্বেষমূলক ও আক্রমণাত্মক ভূমিকা গ্রহণ করেছে তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা মনে করি এমন আক্রমণাত্মক অবস্থান বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে সংবিধানে প্রদত্ত তাঁর চিন্তা, বিবেক ও বাকস্বাধীনতার স্পষ্ট লংঘন যা দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারসমূহের চর্চার প্রতি প্রত্যক্ষ হুমকি ও মত প্রকাশের বিরুদ্ধে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টির নিন্দনীয় অপপ্রচেষ্টার অংশ। অধ্যাপক আসিফ নজরুল এর ফেসবুক পোস্ট সম্পর্কে যে কেউ ভিন্ন মত পোষণ করতে পারেন তবে তা করতে হবে নিয়মতান্ত্রিক ও শোভনীয় প্রক্রিয়ায়, আক্রমণাত্মকভাবে নয়।
বাক-স্বাধীনতা চর্চার কারণে সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠনের কিছু নেতা-কর্মী অধ্যাপক আসিফ নজরুলের বিভাগীয় কার্যালয়ে চেয়ারপার্সন অফিসে তালা ও বিভিন্ন উস্কানিমূলক পোস্টার লাগিয়ে দেয়, তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করার প্রকাশ্য হুমকি প্রদান করে এবং শাহবাগ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক ও মনগড়া একটি অভিযোগ দায়ের করে, যা তাঁকে অহেতুক হয়রানী ও হেয় করার শামিল। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক, দাম্ভিক ও উগ্র আচরণ নাগরিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর নগ্ন আক্রমণ যার ভয়াবহ পরিণতি বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের মৃত্যুর মতো মর্মান্তিক ঘটনা। আর এসব কারণেই প্রতি বছরই রিপোর্টার্স উইদআউট বর্ডারসের মত আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপে মত প্রকাশের স্বাধীনতার সূচকে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাচ্ছে এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
আমরা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের চিন্তা, বিবেক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে রুদ্ধ এবং শিক্ষাঙ্গনের স্বাধীনতা সংকোচিত করার এসব প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদের উপর হামলা, শিক্ষাঙ্গনের স্বাধীনতা হরণ ও অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে হুমকি দেয়া দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানাচ্ছি।
বাক-স্বাধীনতাসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকারের উপর অব্যাহত হুমকি হয়ে থাকা নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ধারাগুলোর বিলুপ্তির দাবি করছি এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে অধ্যাপক আসিফ নজরুলসহ সকল নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রদত্ত বিভিন্ন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এই নিবর্তনমূলক আইনের উদ্দেশ্যমূলক প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারের কাছে আহবান জানাচ্ছি। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের পাঠানো বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতারা হলেন-
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ট্রাস্টি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র; সুলতানা কামাল, মানবাধিকার কর্মী; আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব; ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, সাবেক গর্ভনর, বাংলাদেশ ব্যাংক; ড. হামিদা হোসেন, মানবাধিকার কর্মী; খুশী কবির,সমন্বয়কারী, নিজেরা করি; শাহীন আনাম, নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন; ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ; রাশেদা কে. চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক, গণস্বাক্ষরতা অভিযান; ড. বদিউল আলম মজুমদার, সম্পাদক,সুজন; শামসুল হুদা, নির্বাহী পরিচালক, এএলআরডি; শিরিন হক, সদস্য,নারীপক্ষ; অধ্যাপক পারভীন হাসান, উপাচার্য,সেন্ট্রাল উইমেন্স বিশ্ববিদ্যালয়; ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, অর্থনীতিবিদ; ড. মুস্তাফিজুর রহমান, অর্থনীতিবিদ; জেড আই খান পান্না, আইনজীবী; হাসনাত কাইয়ুম, আইনজীবী; সারা হোসেন, আইনজীবী; সালমা আলী, আইনজীবী ও সভাপতি, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি; সুব্রত চৌধুরী, আইনজীবী; তবারক হোসেইন, আইনজীবী; ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট; এম হাফিজউদ্দিন খান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা; প্রফেসর আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; গীতিয়ারা নাসরীন, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ড. সুমাইয়া খায়ের, অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ড. শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ড. নাইমা হক, অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ড. সি আর আবরার, অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ড. তাসনিম সিদ্দিকী, অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ড. সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ফেরদৌস আজিম, অধ্যাপক, ইংরেজী বিভাগ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়; ড. বিনা ডি কস্টা, অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি; ড. ইমরান মতিন, উন্নয়ন গবেষক; নিনা গোস্বামী, পরিচালক, কর্মসূচী, আইন ও সালিশ কেন্দ্র; ড. ফষ্টিনা পেরেরা, মানবাধিকার কর্মী; শারমীন মুরশিদ, মানবাধিকার কর্মী; গোলাম মনোয়ার কামাল, নির্বাহী পরিচালক, আইন ও সালিশ কেন্দ্র; ড. সামিনা লুৎফা, সহযোগী অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ড. জোবায়েদা নাসরিন, সহযোগী অধ্যাপক,নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; কাজী মাহফুজুল হক শিপন, সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; তাসনিম সিরাজ মাহবুব, সহযোগী অধ্যাপক, ইংরেজী বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; নাসরিন খন্দকার, সহযোগী অধ্যাপক,নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ড. সাদাফ নূর, সহযোগী অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; মাইদুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক, সমাজতত্ত্ব বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; ড. নোভা আহমেদ, গবেষক; ড. স্বপন আদনান, প্রফেসারিয়াল গবেষণা সহযোগী, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়; ড. রুশাদ ফরিদী, সহকারী অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; মো. সেলিম হোসেন, সহকারী অধ্যাপক, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; জাকির হোসেন, প্রধান নির্বাহী,নাগরিক উদ্যোগ; রেজাউল করিম চৌধুরী, নির্বাহী, কোস্ট; মো. নূর খান লিটন, মানবাধিকার কর্মী; মাহরুখ মহিউদ্দিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইউনিভাসির্টি প্রেস লি; রেজাউর রহমান লেলিন, অধিকারকর্মী ও গবেষক; হানা শামস আহমেদ, গবেষক; ড. নায়লা জেড খান, পরিচালক, ক্লিনিক্যাল নিউরোসাইন্স সেন্টার, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন; ড. শহিদুল আলম, আলোকচিত্রী; রেহনুমা আহমেদ, লেখক; অরূপ রাহী, সঙ্গীতশিল্পী, লেখক; মাহমুদ রহমান, আলোক চিত্রী, ম্যাপ-ফটো; সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আইনজীবী,বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও প্রধান নির্বাহী, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
কি লিখেছিলেন- অধ্যাপক আসিফ নজরুল? তিনি তার স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন,‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর ধরনের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে।’ ড. আসিফ নজরুলের এক লাইনের এই ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে বসুন্ধরা এমডিকে অব্যাহতি-যুগান্তর
ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দায়ের করা মোসারাত জাহান মুনিয়ার আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে যৌক্তিক কারণ না থাকায় খারিজ করা হয়েছে পুলিশ প্রতিবেদনের ওপর দেওয়া বাদী নুসরাত জাহান তানিয়ার নারাজির আবেদন। গতকাল বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের হাকিম রাজেশ চৌধুরী এই আদেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার ওসি আবুল হোসেনের দাখিল করা প্রতিবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বাদীপক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত পরবর্তী সময়ে আদেশের জন্য রেখে দেন।
সায়েম সোবহান আনভীরকে অব্যাহতি দিয়ে দেওয়া আদালতের আদেশের পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিবাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তুহিন হাওলাদার বলেন, ‘সায়েম সোবহান আনভীর দেশের একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী এবং শীর্ষস্থানীয় ব্যাবসায়িক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। দেশে-বিদেশে তাঁর ব্যাপক সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে। তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করা এবং বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যাবসায়িক ক্ষতিসাধনের হীন উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্তমূলকভাবে তাঁকে এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। পুলিশ দীর্ঘ তিন মাসের তদন্তে আসামি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগের সপক্ষে গ্রহণযোগ্য কোনো প্রমাণ পায়নি। পুলিশ প্রতিবেদন গ্রহণ ও আদালতের আদেশে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে এই চক্রান্তে বাদী নুসরাত জাহান তানিয়ার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী দেশি-বিদেশি শক্তিশালী চক্র। যারা দেশের গণতন্ত্র চায় না, উন্নয়ন চায় না, তারা এসব চক্রান্তে শামিল হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তারা নানাবিধ কুৎসা ও অপপ্রচার ছড়াতে থাকে। বাদী নুসরাতও সরাসরি এসব টক শো ও অনলাইন সভায় যোগ দিয়ে নানা অপপ্রচার করেন। আজ (বুধবার) আদালতের আদেশে বসুন্ধরার এমডি অব্যাহতি পাওয়ার মধ্য দিয়ে তাদের এসব চক্রান্ত মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার মাধ্যমে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু মামলার তদন্তে আসামির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় আসামিকে অব্যাহতির সুপারিশ করে গুলশান থানা পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে, এই প্রতিবেদন দীর্ঘ পর্যালোচনা করে গ্রহণ করা হলো। একই সঙ্গে যৌক্তিক কারণ না থাকায় বাদিনীর নারাজির আবেদন খারিজ করা হলো। আসামিকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।’আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরা বলেন, ‘এই আদেশের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো, মুনিয়ার আত্মহত্যার প্ররোচনার জন্য যাঁকে আসামি করা হয়েছে তিনি আদতেই এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। আত্মহত্যার প্ররোচনার কোনো ঘটনা এখানে ঘটেনি।’উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি বাড়ি থেকে কুমিল্লার কোতোয়ালি থানা এলাকার উজিরদিঘির পাড় এলাকার বাসিন্দা মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার দিন একটি বিলাসবহুল পাজেরো জিপে করে কয়েকজন আইনজীবী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ গুলশান থানায় হাজির হন তাঁর বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া। তাঁরা পুলিশের ওপর নানামুখী চাপ তৈরি করে এবং প্রাথমিক তদন্ত না করেই তড়িঘড়ি করে ‘আত্মহত্যার প্ররোচনা’ দেওয়ার অভিযোগ এনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। মামলার অভিযোগে প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই বসুন্ধরা গ্রুপের এমডিকে আসামি করে মামলা নেয় পুলিশ। মামলার পরপরই বিভিন্ন টেলিভিশন টক শো ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বাদী ও তাঁর সহযোগীরা বসুন্ধরা গ্রুপের এমডিসহ বিভিন্নজনকে জড়িয়ে ষড়যন্ত্র ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিতে থাকেন। এতে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগেই আসামি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুনিয়ার চ্যাটিংয়ের কয়েকটি স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে। এসব স্ক্রিনশটে দেখা যায়, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন হোয়াটসঅ্যাপে মুনিয়াকে লিখেছেন, ‘তুমি কিছু করলে বসুন্ধরা গ্রুপ শেষ হয়ে যাবে।’ এ ছাড়া বিভিন্নজনকে ব্ল্যাকমেইল করে মুনিয়ার টাকা দাবির কিছু স্ক্রিনশটও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়াও মুনিয়া ও মামলার বাদী নুসরাতের সঙ্গে বিভিন্নজনের চ্যাটিং ও ফোনের কল রেকর্ড পাওয়া যায়। যাতে বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনার প্রমাণ মেলে। এ ছাড়া মামলার বাদী নুসরাতের সঙ্গে শারুন চৌধুরী গোপন চুক্তি করেন। শারুন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডিকে ফাঁসানোর জন্য ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগের খবরও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যাবসায়িক প্রতিপক্ষ কিছু গ্রুপ নুসরাতকে এই ষড়যন্ত্রে মদদ জোগায় বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া গত ২৬ এপ্রিল গুলশান থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলাটি হওয়ার পর থেকেই সরকারবিরোধী চক্র এখান থেকে সুযোগ নেওয়ার অপচেষ্টা করে। দেশে ও দেশের বাইরে অনলাইনে সরকারবিরোধী চক্র নানামুখী অপতৎপরতা শুরু করে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত একটি চক্র মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় বিচার দাবি করে ডাকা মানববন্ধনে সরকার পতনের ডাক দেয়। ওই সমাবেশে বিএনপির অঙ্গসংগঠন মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি ও সূত্রাপুর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফরিদ উদ্দিন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, নাগরিক ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোশারফ হোসেনসহ বিএনপির বেশির ভাগ নেতাও বক্তব্য দেন।
এ ছাড়া ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড’ নামের একটি সংগঠন নুসরাতকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা বিষোদগার করে। এক পর্যায়ে তারা পুলিশকে হুমকি দেয়। ওই সময় বাদীর আইনজীবী বলেন, ‘আমরা পুলিশের তদন্ত মানি না। পুলিশের এই মামলার তদন্ত করার এখতিয়ার নেই।’ পরে জানা যায়, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে নাজমুল করিম চৌধুরী ওরফে শারুনের দেওয়া টাকায় ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনের পরই টাকার ভাগাভাগি নিয়ে আয়োজকদের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়।
এদিকে মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর বড় ভাই আশিকুর রহমান সবুজ গত ২ মে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় জাতীয় সংসদের হুইপের পুত্র নাজমুল করিম চৌধুরী শারুনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে গুলশান থানায় সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে দায়ের করা আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলার তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত হত্যা মামলার তদন্ত স্থগিত রাখার আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা বলেন, এখন আদালতের আদেশ অনুযায়ী শারুনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলার তদন্ত শুরু হবে।
ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত
জাতির ভিত্তিতে জনগণনার দাবিকে সামনে রেখে একমঞ্চে নীতীশ-তেজস্বী, চিন্তায় BJP-সংবাদ প্রতিদিন
জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবি নিয়ে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) দ্বারস্থ হতে চলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। সোমবার সকাল ১১টায় নীতীশের নেতৃত্বে বিহারের একটি সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল মোদির সঙ্গে দেখা করবে। সেই দলে থাকছেন বিহারের বিরোধী দলনেতা তথা রাজ্য সরকারের কট্টর সমালোচক আরজেডি’র তেজস্বী যাদবও (Tejaswi Yadav)।
চলতি আগস্ট মাসের শুরুতেই নীতীশ জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের তরফে জাতিগত ভিত্তিতে জনগণনার (Caste-based Census) ব্যবস্থা না করা হলে বিহার নিজের মতো করেই সেই কাজ করবে। শনিবার নীতীশ জানিয়েছেন, “জাতিগত জনগণনার দাবি নিয়ে বিহারের সমস্ত রাজনৈতিক দলের তরফে ১০ জন সদস্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। সেই তালিকা ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাব, যে জনগণনার কাজ শুরু হতে চলেছে তা যাতে জাতিগত ভিত্তিতে করা হয়। এতে সুবিধা পাওয়া যাবে। দেশের অন্যত্রও তেমনটা হলে অনেকেই উপকৃত হবেন। কেন্দ্র আমাদের অনুরোধের ভিত্তিতে কী পদক্ষেপ করে, তার জন্য অপেক্ষা করব।” নীতীশের বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর দল জেডিইউ কেন্দ্র সরকারের শরিক দল। তাঁদের জাতিগত জনগণনার দাবিকে প্রধানমন্ত্রী কীভাবে সামলাবেন, সেদিকে নজর থাকবে সকলেরই।
Vaccines: প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বুস্টার টিকা নেওয়া প্রয়োজন? কী বললেন এমস প্রধান-আনন্দবাজার পত্রিকা
কোভিডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দু’টি টিকাই কি যথেষ্ট? নাকি তার পরেও বুস্টার টিকা নিতে হবে? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে দেশ জুড়ে। এ বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য নেই ভারতের হাতে। তবে আগামী বছরের মধ্যে এই সম্পর্কে সবিস্তারে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন এমস প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া।
তাঁর কথায়, “বুস্টার এখনই নিতে হবে কি না সে সম্পর্কে এখনও যথেষ্ট তথ্য আমাদের হাতে আসেনি। এমনকি বয়স্ক এবং গুরুতর অসুস্থদের ক্ষেত্রেও এই বুস্টার প্রয়োজন কি না সেই তথ্যও জানা যায়নি। কী ভাবে প্রতিরোধের মাত্রা আরও বাড়ানো যায় এবং দু’টি টিকাই যথেষ্ট কি না তা নিয়ে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন আছে।”
তবে এ নিয়ে গবেষণা শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানান এমস অধিকর্তা। তিনি জানান, পুরো তথ্য হাতে পেতে আরও কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। সম্ভবত আগামী বছরের মধ্যেই জানা যাবে বুস্টার টিকার প্রয়োজন আছে কি না। যদি নিতে হয় তা হলে কী ধরনের বুস্টার নিতে হবে এবং কাদের নেওয়া প্রয়োজন তা-ও জানা যেতে পারে বলে আশা করেছেন তিনি।
নকল কোভিশিল্ড ছেয়ে গেছে কলকাতা এবং অন্যান্য শহরে! কেন্দ্রকে চিঠিতে সতর্কবার্তা হু’র-আজকাল
ভারতকে বিপজ্জনক সতর্কবার্তা দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংখ্যা। কেন্দ্রকে তারা চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, সিরাম সংস্থার উৎপাদিত কোভিশিল্ড টিকার নকল বেরিয়েছে বাজারে এবং তা কলকাতা সহ দেশের একাধিক শহরে বিক্রি হচ্ছে। জুলাই এবং আগস্টে ভারত এবং আফ্রিকা থেকে ভুয়ো কোভিশিল্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে খবর। হু নাকি নিজেই পরীক্ষা করে দেখেছে, টিকাগুলি নকল।
কিছুদিন আগেই দেবাঞ্জন দেবের কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় হয় তোলপাড় হয় কলকাতায়। গোটা দেশের সামনে মুখ পোড়ে রাজ্যের। হু জানাচ্ছে, এমন ভুয়ো এবং নিম্ন মানের কোভিশিল্ড টিকার ছড়িয়ে পড়েছে গোটা পৃথিবীতেই। ফলে জনস্বাস্থ্য প্রবল ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
Afghan Crisis: মাসুদ-বাহিনীর হাতে ১০০ তালিবান হত? পঞ্জশিরে মাথা উঁচিয়ে বিলেতফেরত তরুণ-আনন্দবাজার পত্রিকা
আফগানিস্তানের পঞ্জশির এলাকায় মাসুদ-বাহিনীর হাতে ১০০ তালিবান খুন? এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি বিদেশি সংবাদমাধ্যমে। পঞ্জশিরের সিংহ বলে পরিচিত আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে তথা লন্ডনের কিংস কলেজের প্রাক্তনী আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বে ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট অব আফগানিস্তান তালিবানের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। আফগান সেনার একটি অংশ প্রত্যক্ষ ভাবে মাসুদ-বাহিনীর সঙ্গে তালিবান বিরোধী লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে। আফগানিস্তানে ক্রমশ তালিবান বিরোধী প্রতিরোধ মজবুত হচ্ছে বলে দাবি করছেন মাসুদ। তাঁর কথায়, আফগানিস্তান থেকে তালিবান-রাজ উত্খাত করা না গেলে ৯/১১-র পুনরাবৃত্তি হতে পারে। আর এবার জঙ্গি হামলার নিশানায় থাকতে পারে ইংল্যান্ড। যে দেশে দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন পঞ্জশিরের সিংহ-শাবক। তাই তালিবান বিরোধী যুদ্ধে প্রাণপণ ল়ড়াই করছে মাসুদ-বাহিনী।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২২