নবী-বংশের সদস্য ইমাম মাহদির পিতার জীবন ও ক'টি মু'জিজা
(last modified Sat, 15 Dec 2018 15:05:10 GMT )
ডিসেম্বর ১৫, ২০১৮ ২১:০৫ Asia/Dhaka
  • নবী-বংশের সদস্য ইমাম মাহদির পিতার জীবন ও ক'টি মু'জিজা

 ৮ই রবিউসসানি জন্ম নিয়েছিলেন  বিশ্বনবী (সা)'র পবিত্র আহলে বাইতের সদস্য একাদশ ইমাম তথা ইমাম মাহদির পিতা ইমাম হাসান আসকারি (আ.)।

    
এই শুভদিন উপলক্ষে সবাইকে জানাচ্ছি সালাম ও মুবারকবাদ এবং বিশ্বনবী (সা.) ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইতের শানেও পেশ করছি অশেষ সালাম আর দরুদ। 

বর্তমান জামানার ইমাম তথা দ্বাদশ ইমাম- হযরত ইমাম মাহদির  (আ.) শ্রদ্ধাভাজন পিতা ইমাম হাসান আসকারি (আ.) ২৩২ হিজরির এই দিনে তথা ৮ই রবিউসসানি পবিত্র মদিনা শহরে জন্ম নিয়েছিলেন । শাসকদের চাপের মুখে ইমাম আসকারি (আ.) ও তাঁর পিতা ইমাম হাদি (আ.) প্রিয় মাতৃভূমি মদিনা শহর ছেড়ে আব্বাসীয়দের তৎকালীন শাসনকেন্দ্র সামেরায় আসতে বাধ্য হন।
তাঁর পিতা হলেন দশম ইমাম হযরত হাদি (আ.) ও মাতা ছিলেন মহীয়সী নারী হুদাইসা (সালামুল্লাহি আলাইহা)।

সামেরায় তৎকালীন শাসকদের সামরিক কেন্দ্র তথা 'আসকার' অঞ্চলে কঠোর নজরদারির মধ্যে ইমাম আসকারি (আ.)-কে বসবাস করতে হয়েছিল বলে তিনি আসকারি নামেও পরিচিত ছিলেন। কঠোর প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও ইমাম হাসান আসকারি (আ.) অশেষ ধৈর্য নিয়ে তাঁর অনুসারীদেরকে জ্ঞানগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক দিকসহ সব ক্ষেত্রেই পথ-নির্দেশনা দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।

পিতা ইমাম আলী নাকি তথা হাদি (আ.)'র শাহাদতের পর ইমাম হাসান আসকারি (আ.) ২২ বছর বয়সে ইমামতের দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি ৬ বছর ধরে ইসলামী জাহানের পথপ্রদর্শকের দায়িত্ব পালনের পর মাত্র ২৮ বছর বয়সে ২৬০ হিজরিতে শাহাদত বরণ করেন।

অবশ্য তাঁর ছয় বছরের ইমামত বা নেতৃত্ব ইসলামকে দিয়েছে আরও একটি গৌরবময় সোনালী অধ্যায়। জালিম শাসকদের ব্যাপক দমন-পীড়ন ও তাদের সৃষ্ট অসংখ্য বাধা আর শ্বাসরূদ্ধকর পরিস্থিতি সত্ত্বেও মহান আল্লাহ তাঁর ধর্মের সংরক্ষকদের মাধ্যমে ইসলামের আলোকে ছড়িয়ে দিয়েছেন সত্য-সন্ধানী ও খোদা-প্রেমিক মানুষদের অন্তরে। 

ইমাম  হাসান আসকারি (আ.)'র যুগে জালিম আব্বাসীয় শাসকরা সব ক্ষেত্রেই ন্যায় নীতি থেকে বহু দূরে সরে গিয়েছিল। কিন্তু জনগণ একথা শুনেছিল যে, ইমাম হাসান আসকারি (আ.)'র সন্তান ইমাম মাহদির (আ.) মাধ্যমে গোটা বিশ্ব জুলুম আর অন্যায়-অবিচার থেকে মুক্তি পাবে। শাসক গোষ্ঠীও এই খবরের কথা জানতো। তাই তারা ইমাম ও জনগণের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টির চেষ্টা জোরদার করে এবং ইমামের যেন কোনো সন্তান জন্ম নিতে না পারে সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু এতসব বাধা সত্ত্বেও ইমাম হাসান আসকারির (আ.)'র সন্তান তথা মানবজাতির শেষ ত্রাণকর্তা ইমাম মাহদি (আ.) জন্ম গ্রহণ করেন মহান আল্লাহর বিশেষ ইচ্ছায় ঠিক যেভাবে ফেরাউনের বাধা সত্ত্বেও মুসা (আ.)'র জন্মগ্রহণকে ঠেকানো সম্ভব হয়নি।  

ইমাম মাহদি (আ.)'র জন্মের পর ইমাম হাসান আসকারি (আ.) মুসলিম সমাজকে ভবিষ্যৎ নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলার জন্য দিক-নির্দেশনা দেন। এ ছাড়াও ইমাম নানা কুপ্রথা ও ভুল চিন্তাধারা সম্পর্কে মুসলমানদের সন্দেহ দূর করেন এবং খাঁটি মুহাম্মাদি ইসলামের চিন্তাধারা তুলে ধরেন। ইমাম জ্ঞান-পিপাসুদেরকে জ্ঞানের স্বচ্ছ ও বাস্তব ঝর্ণাধারায় পরিতৃপ্ত করতেন। জ্ঞানগত বিতর্কে তাঁর যুক্তি ছিল অকাট্য ও মোক্ষম।  

আব্বাসীয়দের মন্ত্রী আহমাদ বিন খাক্বান ইমাম হাসান আসকারি (আ.)'র যোগ্যতা, গুণ ও কারামত সম্পর্কে বলেছেন: ' বিনম্রতা, চারিত্রিক ও নৈতিক পবিত্রতা এবং মহানুভবতার মত ক্ষেত্রগুলোতে মানুষের মধ্যে তাঁর মত আর কাউকে দেখিনি। তিনি এত উচ্চ সম্মানের অধিকারী যে শত্রু ও বন্ধু সবাই তাঁর প্রশংসা করতেন।'  

ইমাম হাসান আসকারি (আ.)'র নামাজের উচ্চ পর্যায়ের কোয়ালিটি অন্যদেরকে আল্লাহর ইবাদতে আকৃষ্ট করত। দেখা গেছে কারাগারের জল্লাদরা তাঁর নামাজ ও রোজায় প্রভাবিত হয়ে পাকা নামাজি হয়ে গিয়েছিল। 
 
ইমাম হাসান আসকারি (আ.) এর চারিত্রিক পবিত্রতা ও ব্যক্তিত্বের মাধুর্য তাঁর অনুসারীদের ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট করতো। অন্যদিকে মুনাফিক এবং বিচ্যুতরা বিকর্ষিত হত। 

ইমাম হাসান আসকারি (আ.) ইমামতির ছয় বছরে আব্বাসীয় শাসকদের তিনজনকে পেয়েছিলেন। এরা ছিল মোতায, মোহতাদি এবং মোতামেদ। ইমাম এদের স্বেচ্ছাচারিতা চুপ করে সহ্য করেন নি, যার ফলে তারা ইমামের ওপর রুষ্ট হয়ে পড়ে। সে কারণে তাঁকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে। কিন্তু তারপরও ইমাম বলদর্পি শাসকদের কাছে মাথা নত করেননি। অবশেষে জালিম মোতামেদ ইমামকে গোপনে বিষ প্রয়োগ করে। ফলে ইমাম ২৬০ হিজরির ৮ ই রবিউল আউয়াল শাহাদত বরণ করেন । মোতামেদ এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি গোপন রাখতে চেয়েছিল যাতে গণ-বিদ্রোহ দেখা না দেয়। 

ইমামের মৃত্যু সংবাদ যখন ছড়িয়ে পড়ল তখন সমগ্র সামেরার অলি-গলি, রাস্তাঘাট জনতায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। সর্বত্র শোনা যাচ্ছিল কান্না ও চিৎকার। সর্বস্তরের মানুষ শোক প্রকাশের উদ্দেশ্যে বের হয়ে পড়ে। সামেরা যেন সেদিন কিয়ামতের মাঠে পরিণত হয়। 
ইমামের শাহাদতের পর ইমাম মাহদি (আ.) আত্মপ্রকাশ করে ই পিতার জানাজার নামাজ পড়ান। 

ইমাম হাসান আসকারি (আ.)'র অনেক মু’জিজা বা অলৌকিক কর্মকাণ্ডের কথা জানা যায়। যেমন, তিনি মানুষের মনের অনেক গোপন কথা বা বাসনা জেনে তাদের সেইসব বাসনা পূরণ করেছেন, অদৃশ্যের অনেক খবর দিয়েছেন, নানা ভাষাভাষী ভৃত্যদের সঙ্গে তাদের নিজ নিজ ভাষায় কথা বলেছেন। 

ইমাম হাসান আসকারি (আ.)'র অনেক মু’জিজা ও অদৃশ্য কর্মকাণ্ডের কথা জানা যায়। যেমন, তিনি মানুষের মনের অনেক গোপন কথা বা বাসনা জেনে তাদের সেইসব বাসনা পূরণ করেছেন, অদৃশ্যের অনেক খবর দিয়েছেন, নানা ভাষাভাষী ভৃত্যদের সঙ্গে তাদের নিজ নিজ ভাষায় কথা বলেছেন। ইমামের সবগুলো মু’জিজা তুলে ধরলে একটি বই লেখার দরকার হবে। আমরা এখানে ইমামের কয়েকটি মু’জিজা বা অলৌকিক ক্ষমতার ঘটনা তুলে ধরব।

ইমামের একটি মু'জিজার ঘটনা এরূপ যে, মুহাম্মাদ ইবনে আইয়াশ বলেন,একদিন আমরা কয়েকজন একত্রে বসে ইমাম হাসান আসকারি (আ.)'র মু'জিজা সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। আমাদের মাঝে অবস্থানরত এক এক নাসিবি তথা বিশ্বনবী (সা,)'র আহলে বাইতের বিদ্বেষী বলল: আমি কয়েকটা প্রশ্ন কালিবিহীন কলম দিয়ে লিখব। যদি ইমাম জবাব দিতে পারেন তাহলে বিশ্বাস করব যে তিনি সত্যিকারের ইমাম। আমরা সে কথা মত কতগুলো বিষয় লিখলাম নাসিবির কালিবিহীন কলমে। আর নাসিবি তার প্রশ্নগুলো লিখল একই কলমে। আমরা সেগুলো ইমাম হাসান আসকারি (আ.)'র কাছে পাঠালাম। ইমাম সবগুলো প্রশ্নের উত্তর লিখে পাঠালেন এবং নাসিবির কাগজের ওপর তার নাম, তার বাবার নাম ও তার মায়ের নাম লিখে পাঠালেন। নাসিবি তা দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেললো। তাঁর হুশ ফিরে আসার পর সে ইমামের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করল ও ইমামের একনিষ্ঠ অনুসারীদের মধ্যে শামিল হল। (কাশফুল গাম্ম, খণ্ড-৩, পৃ-৩০২)

আবু হাশিম জা’ফরি বলেন: একবার চেয়েছিলাম ইমাম আসকারি (আ.)’র কাছে একটি আংটি তৈরি করার মত সামান্য রূপা সাহায্য চাইব। ইমামের সাক্ষাতে গেলাম, বসলাম। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম সম্পূর্ণ ভুলে গেলাম। এরপর যখন আসার জন্য রওনা হলাম ইমাম আমাকে একটি আংটি দিয়ে বললেন, রূপা চেয়েছিলে, আমি নাগিন (মহামূল্যবান পাথর-বিশিষ্ট আংটি) দিলাম এবং আংটির মজুরি অতিরিক্ত লাভ হিসেবে পেলে। তোমার মঙ্গল হোক। বললাম: হে আমার মাওলা, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আপনি আল্লাহর অলি ও আমার ইমাম। আপনার অনুসরণ আমার ধর্মীয় কর্তব্য। তিনি বললেন: হে আবুল হাশিম, আল্লাহ তোমায় ক্ষমা করুক। (উসুলে কাফি, খণ্ড-১, পৃ-৫১২)

মুহাম্মাদ ইবনে রাবি শাইবানি বলেছেন: একবার আহওয়াজে (ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ) এক দ্বিত্ববাদীর সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয়েছিলাম। এরপর সামেরা গিয়েছিলাম। ওই দ্বিত্ববাদীর যুক্তির কিছু প্রভাব আমার ওপর পড়েছিল। ফলে একত্ববাদের ওপর কিছু সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। একদিন আহমদ ইবনে খুসাইব-এর বাড়িতে বসেছিলাম এমন সময় ইমাম হাসান আসকারি (আ.) এক সভা থেকে এলেন। তিনি আমাকে লক্ষ্য করলেন এবং আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে বললেন: আল্লাহ এক এবং তাঁকে অদ্বিতীয় মেনে নাও। আমি বেহুশ হয়ে পড়লাম। (কাশফুল গাম্ম, ইমামগণের আধ্যাত্মিক অধ্যায়, খণ্ড-৩, পৃ-৩০৫)

আবু হামজা বলেন, অনেকবার দেখেছি ইমাম তাঁর খাদেমদের সঙ্গে (যারা বিভিন্ন দেশী, যেমন, তুর্কি, রুমি, রাশিয়ান ও অন্যান্য ভাষাভাষী ছিল) তাদের নিজ নিজ ভাষায় কথা বলতেন। আমি অবাক হয়ে যেতাম এবং মনে মনে বলতাম... ইমাম মদিনার অধিবাসী অথচ কিভাবে তিনি এত ভাষায় কথা বলেন।

ইমাম আমার দিকে ফিরে বললেন: মহান আল্লাহ তাঁর প্রতিনিধিদের অন্যান্য সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং সব কিছুর ওপর জ্ঞান দান করেছেন।(আল্লাহর মনোনীত) ইমামগণ নানা ভাষা, নানা বংশ পরিচয় ও জরুরি বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক অবগত থাকেন। যদি এ রকম না হত তাহলে সাধারণ মানুষ ও ইমামগণের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকতো না। (ইরশাদ, শেখ মুফিদ, পৃ-৩২২)

আবু হাশিম জাফরি বলেন: এক ব্যক্তি ইমামকে প্রশ্ন করেন নারী কেন অবহেলিত যে পিতার সম্পদের দুই ভাগ পায় ছেলে অথচ নারী পায় মাত্র এক ভাগ? ইমাম বলেন: এর কারণ, জিহাদ করা, সাংসারিক খরচাদি চালানো পুরুষের দায়িত্ব এবং ভুলবশত: কাউকে হত্যা করলে তার জরিমানা তথা দিয়া দেয়াও পুরুষের ওপর অর্পিত হয়। আর এসব কিছুই নারীর দায়িত্ব বহির্ভূত।

আবু হাশিম বলেন, আমি মনে মনে বললাম এর আগে শুনেছি যে ইবনে আবিল উজজা ইমাম সাদিক্ব (আ.)’র কাছে ঠিক একই প্রশ্ন করেছিল এবং ঠিক এরকম জবাবই পেয়েছিল। ইমাম আসকারি (আ.) তখন আমার দিকে ফিরে বললেন: হ্যাঁ, ঠিক একই প্রশ্ন ইবনে আবিল উজজা করেছিল। আমাদের যে কারো কাছেই (বিশ্বনবী-সা. ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইতের সদস্যদের) যখন একই প্রশ্ন করা হয় তার উত্তরও আমরা একই রকম দিয়ে থাকি। পরবর্তী ও পূর্ববর্তী ইমামের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। জ্ঞানগত বিষয়ে আমাদের প্রথম ও শেষ সমমর্যাদার অধিকারী, তবে হযরত মুহাম্মাদ(সা.) ও আমিরুল মু’মিনিন আলী (আ.)’র বিশেষত্ব ও মর্যাদা অতুলনীয়। (কাশফুল গাম্ম, খণ্ড-৩, পৃ-৩০৩)

ইমাম হাসান আসকারি (আ) সামেরা থেকে অলৌকিকভাবে উত্তর ইরানের গোরগানে যান যার দূরত্ব এক হাজার কিলোমিটারেরও বেশি। ‘কাশফুল গাম্মা ফি মারিফাতিল আয়িম্মা’ নামক বইয়ে আলী ইবনে ঈসা আল ইরবিলি লিখেছেন: জাফর ইবনে শারিফ বলেছেন, আমি হজ করার পর সামারায় ইমামের কাছে এসে বলি যে জুরজান তথা গোরগানের জনগণ আপনার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আগ্রহী। আপনি সেখানে সফর করে তাদের সম্মান দেখাতে পারেন। ইমাম বললেন, ১৭ দিন পর তেসরা রবিউসসানি শুক্রবারে তুমি তোমার  জন্মভূমিতে বা নিজ এলাকায় পৌঁছবে। গোরগানে পৌঁছে জাফর ইমামকে সেখানে দেখতে পেয়ে অবাক হয়ে গেলেন।  এরিমধ্যে নাজার ইবনে জাবির নামের এক ব্যক্তি তার অন্ধ ছেলের অন্ধত্ব দূর করতে ইমামকে অনুরোধ করেন।  ইমাম হাসান আসকারি (আ) ওই অন্ধ বালকটির চোখের ওপর হাত a তার অন্ধত্ব দূর হয়ে যায়। সেই একই দিনে ইমাম মাহদির পিতা সামেরায় ফিরে যান। 

ইমাম হাসান আসকারির মূল্যবান কয়েক'টি বাণী দিয়ে শেষ করবো আজকের এই আলোচনা। তিনি বলেছেন :আল্লাহর অত্যধিক প্রশংসা করবে ও আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করবে। মৃত্যুর কথাও বেশি বেশি স্মরণ করবে ও তা ভুলবে না; বেশি বেশি কুরআন পাঠ করবে এবং রাসূল (সা.) ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইতের  উদ্দেশে বেশি বেশি দরুদ পাঠাবে, কারণ, তাঁদের শানে দরুদ পাঠানোতে রয়েছে দশটি নেকি ও কল্যাণকর প্রভাব।

- যে ব্যক্তি কাউকে গোপনে উপদেশ দেয় সে যেন তাকে অলংকার পরালো, আর যে ব্যক্তি সকলের সামনে প্রকাশ্যে তার সমালোচনা করলো, শুধু তার বদনামই করলো সংশোধন করতে পারলো না।
- ধৈর্যেরও একটা সীমা আছে যদি তা অতিক্রম করা হয় তাহলে বিপদের আশংকা আছে।

 অসংখ্য দরুদ ও রহমত বর্ষিত হোক ইমাম হাসান আসকারি (আ.)'র ওপর। তার শুভ জন্মদিন উপলক্ষে আবারও সবাইকে জানাচ্ছি সালাম ও মুবারকবাদ। 

[উল্লেখ্য,  শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদের অনেক ধর্মীয় নেতা ও চিন্তাবিদ মনে করেন মানবজাতির শেষ ত্রাণকর্তা হযরত ইমাম মাহদি (আ.) প্রায় ১২০০ বছর আগে জন্ম গ্রহণ করেছেন। তিনি বিশ্বনবী (সা.)’র পবিত্র আহলে বাইতের বংশ ধারায় হযরত ইমাম হুসাইন-আ.’র নবম বংশধর তথা ১১ তম ইমাম হযরত ইমাম হাসান আসকারি (আ.)’র পুত্র। মহান আল্লাহর নির্দেশে তিনি হযরত ঈসা (আ.)’র মত অদৃশ্য হয়ে যান। বিশ্বব্যাপী অন্যায়-অবিচার প্রতিরোধের লক্ষ্যে তিনি আবার ফিরে আসবেন এবং হযরত ঈসা নবী (আ.) তাঁর পেছনে নামাজ পড়বেন। অবশ্য ঠিক কখন আবারও তার আবির্ভাব ঘটবে মহান আল্লাহ ছাড়া কেউ তা জানেন না, যদিও তাঁর পুনরাবির্ভাবের কিছু লক্ষণ বা আলামতের কথা হাদিসে এসেছে। তিনি সারা বিশ্বে ইসলাম ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন। মহান আল্লাহ তাঁর পুনরাবির্ভাব ত্বরান্বিত করুন। ] #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১৫

খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন 

ট্যাগ