এখনই তোমাকে দেখাব বেহেশতে আমার অবস্থান: ইমাম সাজ্জাদ (আ)
https://parstoday.ir/bn/radio/uncategorised-i37228-এখনই_তোমাকে_দেখাব_বেহেশতে_আমার_অবস্থান_ইমাম_সাজ্জাদ_(আ)
আজ হতে ১৪০০ চন্দ্রবছর আগে ৩৮ হিজরির এই দিনে (৫ ই শাবান) মদিনায় জন্ম গ্রহণ করেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)'র পবিত্র আহলে বাইতের সদস্য হযরত আলী ইবনে হুসাইন (আ.) তথা ইমাম জাইনুল আবেদিন (আ.)। জাইনুল আবেদিন ছিল তাঁর উপাধি যার অর্থ সাধকদের অলঙ্কার বা সৌন্দর্য।
(last modified 2025-09-29T12:37:45+00:00 )
মে ০২, ২০১৭ ২০:৫৯ Asia/Dhaka
  • এখনই তোমাকে দেখাব বেহেশতে আমার অবস্থান: ইমাম সাজ্জাদ (আ)

আজ হতে ১৪০০ চন্দ্রবছর আগে ৩৮ হিজরির এই দিনে (৫ ই শাবান) মদিনায় জন্ম গ্রহণ করেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)'র পবিত্র আহলে বাইতের সদস্য হযরত আলী ইবনে হুসাইন (আ.) তথা ইমাম জাইনুল আবেদিন (আ.)। জাইনুল আবেদিন ছিল তাঁর উপাধি যার অর্থ সাধকদের অলঙ্কার বা সৌন্দর্য।

অত্যধিক সিজদার জন্য তিনি ইমাম সাজ্জাদ নামেও খ্যাত। ইরানসহ বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে তাঁর পবিত্র জন্ম-বার্ষিকী। 

কারবালার মহাবিপ্লবের সময় তিনি সেখানে থাকা সত্ত্বেও অসুস্থতার কারণে এই জিহাদে অংশ নিতে পারেননি এবং মহান আল্লাহর ইচ্ছায় জল্লাদদের হাতে পড়েও অলৌকিকভাবে বেঁচে যান (যাতে নবী-বংশ টিকে থাকে ও মানুষ তাঁদের মাধ্যমে সুপথ পেতে পারে)।

পিতা ইমাম হুসাইন (আ.)'র পর নতুন ইমাম হিসেবে তিনি কুফা ও দামেস্কে জালিম শাসকদের দরবারে বীরত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়ে তাদের আতঙ্কিত করে তুলেন। তাঁর বীরত্বপূর্ণ ভাষণের প্রেক্ষাপটে গণ-বিদ্রোহের ভয়ে আতঙ্কিত জালিম ইয়াজিদ কারবালা থেকে বন্দী করে আনা নবী-পরিবার ও ইমামের সঙ্গীদেরকে মুক্তি দিতে এবং তাঁদেরকে সসম্মানে মদীনায় পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়।

ইসলাম ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা ও চেতনা রক্ষা ইমাম জাইনুল আবেদিনের ইসলামী সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের কাছে চিরঋণী।

'সহিফায়ে সাজ্জাদিয়া' নামে তাঁর দোয়া ও মুনাজাতের অমর গ্রন্থটি আত্মিক পরিশুদ্ধি ছাড়াও সামাজিক এবং রাজনৈতিক সংস্কারের নানা দিক-নির্দেশনায় সমৃদ্ধ। ইমামের রেখে যাওয়া 'রিসালাতাল হুক্বুক্ব' শীর্ষক অধিকার সংক্রান্ত নির্দেশনা মানবাধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার ঘোষণার চেয়েও বিস্তারিত ও আধ্যাত্মিক ঔজ্জ্বল্যে ভরপুর। 

মহান আল্লাহকে অশেষ ধন্যবাদ যিনি মানবজাতিকে উপহার দিয়েছেন এমন এক নিষ্পাপ মহামানব। 

অশেষ সালাম ও দরুদ পেশ করছি এই মহান ইমামের শানে এবং সবাইকে জানাচ্ছি মুবারকবাদ। 

ইমাম জাইনুল আবেদিন (আ.)'র জীবনে বহু মু'জেজা বা অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে।

যেমন, অসুস্থ ব্যক্তিকে অলৌকিকভাবে সুস্থ করা, অদৃশ্যের খবর বলে দেয়া বা জানা, বন্দী অবস্থায় আবদুল্লাহ বিন মারোয়ানের প্রহরীদের কাছ থেকে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

১. আবু খালিদ কাবুলি ইমাম সাজ্জাদ (আ.)'র সান্নিধ্যে এসেছিলেন দুই বার। তিনি অন্য কাউকে ইমাম মনে করতেন। দ্বিতীয় সাক্ষাতের সময় ইমাম (আ.) তাকে বলেন: যদি তুমি চাও তাহলে বেহেশতে আমার অবস্থান এখনই তোমাকে দেখাব।

এরপর ইমাম তাঁর হাত মুবারক আবু খালিদের চোখের ওপর বুলালেন। আবু খালিদ নিজেকে বেহেশতে দেখতে পেল এবং সেখানে নানা প্রাসাদ ও নদ-নদী দেখতে পেল। এরপর ইমাম আবারও খালিদের চোখে হাত বুলান, আর সঙ্গে সঙ্গে খালিদ নিজেকে আবারও ইমামের সামনে দেখতে পেল।

২.কুখ্যাত জালিম ও রক্তপিপাসু হাজ্জাজ বিন ইউসুফ উমাইয়া শাসক আবদুল মালিককে লিখেছিল: আপনি যদি আপনার রাজত্বের ভিত্তিকে মজবুত করতে চান তাহলে আলী বিন হুসাইনকে হত্যা করুন।

জবাবে আবদুল মালিককে গোপন চিঠিতে লিখে পাঠান: 'বনি হাশিমের রক্তপাত কোরো না। কারণ, বনি হাশিমের লোকদের হত্যা করে আবু সুফিয়ানের বংশধরদের রাজত্বকে তেমন টেকসই বা স্থায়ী করা যাবে না।' 

কিন্তু এর কয়েকদিন পরই আবদুল মালিক ইমামের কাছ থেকে একটি চিঠি পান। ওই চিঠিতে লেখা ছিল: 'তুমি যেই চিঠিতে বনি হাশিমের রক্ত রক্ষার কথা হাজ্জাজকে লিখেছ সে সম্পর্কে আমি জানাতে পেরেছি।....' আবদুল মালিক এই চিঠির তারিখের সঙ্গে নিজের সেই গোপন চিঠির তারিখেরও মিল খুঁজে পান।

৩.একবার ইমাম যখন হাজ্জাজ বিন ইউসুফের মাধ্যমে বাগদাদে বন্দী ছিলেন তখন তার সঙ্গে থাকা এক বন্দী নিজ সন্তানদের কথা ভেবে খুবই কাঁদছিল। ইমাম তখন তাকে প্রস্তাব দেন যে, তুমি কি তোমার স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে নিজের ঘরে দেখা-সাক্ষাৎ করতে চাও? ওই বন্দী এই প্রস্তাব শুনে আরো বেশি কেঁদে ওঠে। এরপর ইমাম তাঁর হাতের ওপর ওই ব্যক্তিকে হাত রাখতে বলেন এবং চোখ বন্ধ করতে বলেন। সে তা করলে কয়েক মুহূর্ত পরই ইমাম বললেন: এবার চোখ খোল। চোখ খোলার সঙ্গে সঙ্গে সে নিজেকে নিজের ঘরে দেখতে পেল। ইমাম বললেন: যাও পরিবারের সদস্য ও সন্তানদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করে তাদের খোঁজ-খবর নাও। সে তাই করল খুশি মনে। তার পরিবার তাকে ইমাম জাইনুল আবেদিনের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে তাঁর অবস্থা বর্ণনা করায় সবাই কাঁদতে থাকে। এ অবস্থায় লোকটি আবার ইমামের কাছে ফিরে এলে তিনি তাকে আবারও একই পদ্ধতিতে কারাগারে ফিরিয়ে আনেন। #

পার্সটুডে/মু.আ.হুসাইন/২