Pars Today
১৩৮০ চন্দ্র-বছর আগে ৬১ হিজরির ৭ মহররম ইয়াজিদ বাহিনীর সেনাপতি ওমর ইবনে সাদ হযরত ইমাম হুসাইন (আ.) এবং তাঁর পরিবার ও সঙ্গীদের জন্য ফোরাত নদীর পানি বন্ধ করে দেয়।
১৩৮০ বছর আগে ৬১ হিজরির এই দিনে (৫ মহররম) বসরা ও কুফায় নিযুক্ত ইয়াজিদের গভর্নর ইবনে জিয়াদের নির্দেশে হাসিইন বিন নুমাইর চার হাজার (মতান্তরে ৩৮০০) অশ্বারোহী সেনা নিয়ে কারবালায় আসে হযরত ইমাম হুসাইন (আ.) এবং তাঁর সঙ্গীদের ক্ষুদ্র দলটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে।
১৩৮০ বছর আগে ৬১ হিজরির এই দিনে (চতুর্থ মহররম) কুফায় নিযুক্ত ইয়াজিদের নরপিচাশ গভর্নর ইবনে জিয়াদ ‘কাজি শুরাইহ’ নামের এক দরবারি আলেম ও প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে নেয়া ফতোয়ার ভিত্তিতে হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)-কে হত্যার জন্য জনগণকে উস্কানি দিয়েছে।
আজ হতে ১৩৮০ চন্দ্র বছর আগে ৬১ হিজরির এই দিনে (৩ মহররম) ইমাম হুসাইনের (আ) কাফেলাকে ঘেরাও করতে কারবালায় আসে উমাইয়া কমান্ডার ওমর সাদ। তার সঙ্গে আসে চার হাজার সেনা।
সাইয়্যেদ ইবনে তাউস প্রণীত 'লোহুফ' বইয়ের ভাষ্যমতে, ৬১ হিজরির দশই মহররম ইয়াজিদের অনুগত বাহিনী ওমর বিন সা'দের নেতৃত্বে যুদ্ধ শুরু করে। এ অবস্থায় ইমাম হুসাইনের (আ.) সঙ্গীরা বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে বহু ইয়াজিদি সেনাকে হত্যার পর খোদাদ্রোহী এই সেনাদলের সম্মিলিত হামলার মুখে ক্ষতবিক্ষত ও রক্তাক্ত অবস্থায় একে একে ভূমিতে লুটিয়ে পড়ে শহীদ হন।
তেহরানের জুমা নামাজের অস্থায়ী খতিব বলেছেন, ইমাম হুসাইন (আ) ইরান, ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন ও বাহরাইনের জনগণের আদর্শ এবং তিনি বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষকে পৌরুষত্য ও বীরত্বের শিক্ষা দিয়েছেন।
সাইয়েদ ইবনে তাউস বলেন, যখন ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর পরিবারের যুবকদের ও বন্ধুদের লাশ দেখতে পেলেন তখন তিনি শহীদ হওয়ার জন্য দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিলেন এবং উচ্চ কণ্ঠে বললেন, “কেউ কি আছে আল্লাহর রাসূলের পরিবারকে রক্ষা করবে? তওহীদবাদী কেউ কি আছে যে আল্লাহকে ভয় করবে আমাদের বিষয়ে? কোন সাহায্যকারী কি আছে যে আল্লাহর জন্য আমাদেরকে সাহায্য করতে আসবে? কেউ কি আছে যে আমাদের সাহায্যে দ্রুত আসবে আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কারের বিনিময়ে?”
কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের অংশগ্রহণে আজ (বৃহস্পতিবার) ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পালন করা হচ্ছে মহান আশুরা। এর আগের দিন অর্থাৎ গতকাল পালন করা হয়েছে আশুরার পূর্বদিন তথা তাসুয়া।
মহান আল্লাহর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা যে তিনি আমাদেরকে আবারও মহান আশুরা সম্পর্কে জানার ও এ বিষয়ে আলোচনা শোনার সুযোগ দিয়েছেন। কারবালার মহাবিপ্লব সম্পর্কিত আমাদের গত কয়েক পর্বের আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট যে এ মহাবিপ্লব তথা আশুরা-বিপ্লবের রয়েছে বহুমাত্রিকতা।
আজ মহান তাসুয়া বা আশুরার পূর্ব দিন। ১৩৭৯ বছর আগে এই দিনে অর্থাৎ ৬১ হিজরির নয়ই মহররম কুফায় ইয়াজিদের নিযুক্ত কুখ্যাত গভর্নর ইবনে জিয়াদ ইমাম হুসাইন (আ.)’র ছোট্ট শিবিরের ওপর অবরোধ জোরদারের ও হামলার নির্দেশ দেয়।