গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৬ : ছাত্রদের নতুন কর্মসূচি
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i104412-গোপালগঞ্জে_বিশ্ববিদ্যালয়_ছাত্রী_গণধর্ষণ_গ্রেপ্তার_৬_ছাত্রদের_নতুন_কর্মসূচি
বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। জেলা শহর এবং আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
(last modified 2025-11-28T10:09:50+00:00 )
ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২ ১৯:০৬ Asia/Dhaka
  • গোপালগঞ্জে শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬
    গোপালগঞ্জে শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬

বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। জেলা শহর এবং আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন  জানান, র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা গতকাল শুক্রবার গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চাকিয়ে  ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত রাকিব মিয়া ওরফে ইমন, পিয়াস ফকির, প্রদীপ বিশ্বাস, নাহিদ রায়হান, মো. হেলাল ও তূর্য মোহন্তকে গ্রেপ্তার করেছে।

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা স্থানীয় একটি অপরাধ চক্রের সদস্য এবং সেটির নেতৃত্বে রয়েছেন রাকিব। তারা সবাই গোপালগঞ্জ ও তার আশপাশের এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। এই চক্র মাদকসেবন, জুয়ার সঙ্গেও জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও রয়েছে।

তাদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে খন্দকার আল মঈন জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ইজিবাইক দিয়ে নবীনবাগ হেলিপ্যাড সংলগ্ন এলাকায় যাওয়ার পথে অপরাধীরা মেয়েটিকে তার বন্ধুর সঙ্গে দেখে গাড়ি থামিয়ে তাদের নাম-পরিচয় জানতে চান। এ সময় তারা মেয়েটিকে উদ্দেশ করে অশালীন মন্তব্য করেন। এ নিয়ে মেয়েটির বন্ধুর সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা বন্ধুকে মারধর করে মেয়েটিকে একটি ভবনে নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন।

এদিকে, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ছাত্রীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্থানীয় লোকজনের হামলার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি  আজ সকালে   বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে টুঙ্গিপাড়া-গোপালগঞ্জ সড়কে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব বলেন, ‘বাংলাদেশের আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য এই পৈশাচিক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। বঙ্গবন্ধুর জন্মভূমি গোপালগঞ্জ থেকে সারা দেশে এ নজির সৃষ্টি করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই মিলে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে দাবির প্রতি সোচ্চার থাকব। আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই, যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই নিরাপদ থাকবে; শিক্ষা, গবেষণা, উন্মুক্ত চিন্তার সুযোগ পাবে। এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সেই নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করব।’শিক্ষার্থীরা সহিংসতা ও উচ্ছৃঙ্খলতা পরিহার করে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে তিনি জানান।

শিক্ষার্থীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

এর আগে  বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা গত বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা থেকে ঘোনাপাড়ায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। শিক্ষার্থীরা দিনভর ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে বিকেল ৫টার দিকে তাঁরা ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে অবরোধ তুলে নেন।

গতকাল শুক্রবার বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর চার দফা দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো, শিক্ষার্থীদের বেঁধে দেওয়া ২৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে জনসমক্ষে তাঁদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা ও সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী স্থানীয় লোকজনকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।

ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ক্যাম্পাসে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বহিরাগতদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করা এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশাসন, পুলিশ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করা । একই সাথে  সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে  শিক্ষার্থীরা।

আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা আবার সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, ছয়জনকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের একটি দাবি পূরণ হয়েছে। বাকি তিন দফা পূরণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবে তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি ছয়জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আমাদের চারটি দাবির মধ্যে একটির আংশিক পূরণ হয়েছে। বাকি দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/গাজী আবদুর রশীদ/২৬